ছবি: প্রীতম দাশ
পাড়াটার সব কিছু এখনও বদলায়নি। সেই কবেকার রাস্তা এক রকম ভাবেই সাপের মতো শুয়ে রয়েছে। পুরনো কয়েকটি বাড়ি আজও রয়েছে। পরিবর্তনের মধ্যে চোখে পড়ে অনেক বাড়িই রংচটা। কোথাও বা আবার পুরনো পলেস্তারা খসে পড়েছে। কিছু পুরনো বাড়ি ভেঙে বহুতল মাথা চাড়া দিয়ে উঠে কেমন যেন উদ্ধত ভাবে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে ব্যস্ত। উত্তর কলকাতার এই পাড়ায় এই ধরনের বহুতল আজও কেমন বেমানান।
এখানেই সায়ন্ত দাশগুপ্ত তার জীবনের শৈশব এবং যৌবনের অনেকটাই কাটিয়েছে। পরে, এই পাড়ার ভাড়াবাড়ি ছেড়ে চলে এসেছে দক্ষিণ কলকাতায়। শহরে থাকলেও এ প্রান্তে আর আসাই হয় না। আসবেই বা কোথায়? যত দূর সে জানে, তার পুরনো বন্ধুবান্ধব আর কেউ নেই। তবু কোথাও একটা টান পুরনো পাড়ার জন্য সে অনুভব করে।
সায়ন্ত যে এখানে কোনও নির্দিষ্ট কাজে এসেছে তা নয়। ক’দিন ধরেই মাথায় তার কেমন ভূত চেপেছে। অফিস যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পরেই মনে হচ্ছে, অফিসে গিয়ে আজ আর কোনও কাজ নেই। তার পর বাস থেকে নেমে উদ্দেশ্যহীন ভাবে বিশ বছর আগের কলেজ জীবনের মতো শহরের এ-দিক ও-দিক ঘুরে, সিনেমা দেখে, বন্ধুদের বাড়ি দেখা করে রাতে বাড়ি ফিরছে। খারাপ লাগছে না। বছরের শেষ মাস। অনেক ছুটিই পাওনা। সেই ছুটিগুলো এ ভাবেই শেষ করতে চায় সে। স্ত্রী অপর্ণা বাইরে বেড়াতে যাওয়ার বায়না ধরেছিল। কিন্তু যেতে গেলে অর্থের প্রশ্নও ওঠে। তা ছাড়া সামনেই মেয়ের বারো ক্লাসের পরীক্ষা।
পাইকপাড়ার এক দিকে রাজা মণীন্দ্র রোড। মাঝখানে টালা পার্ক। রাজা মণীন্দ্র রোডের সমান্তরাল টালা পার্ক অ্যাভিনিউ টালা পার্কের গা ঘেঁষে চলে গিয়েছে। এই রাস্তাতেই সোজা যেতে যেতে হঠাৎ করেই একটি কানা গলি উড়ন্ত ঘুড়ির মতো আটকে গিয়ে লাট খেতে খেতে ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। ডাকঘরের ঠিকানায় ওই গলিকে খেলাৎবাবু লেন বলা হয়। কিন্তু আদৌ আদি পুরনো ওই গলির সঙ্গে তার কোনও অস্তিত্ব আছে কি না তা বলা মুশকিল। এখানেই একটা ছোট বাড়ির একতলার ঘরে সায়ন্ত ভাড়া থাকত। গলি যাই হোক না কেন, সে বড় মায়াবী। বিশেষ করে শীতের কুয়াশা মেখে রাতের ম্লান আলোয় রাস্তাটি বড় রহস্যময় হয়ে উঠত। কত দিন রাতে কোচিং থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই রাস্তায় দাঁড়িয়ে এই দৃশ্য উপভোগ করেছে সে। তাদের পাড়ায় বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দা ছিলেন মধুবাবু। খুব ভাল লোক। তাঁর ছেলে সমীরণ তার বাল্যবন্ধু। তারা ওই পাড়া ছাড়ার আগেই এই বাড়ি বিক্রি করে মধ্যমগ্রামে চলে গিয়েছিল। তার পর থেকে আর কোনও যোগাযোগ নেই তাদের। এ রকম কত স্মৃতি যে শীতের ঝরা পাতার মতো আজ ভিড় করছে তার মাথায়!
এখন দুপুর। শীতের মিষ্টি রোদে গা ভেজাতে ভালই লাগে। এ বার শহরে উত্তরে হাওয়ার দাপট খুব বেশি। রোদে দাঁড়ালেও শরীরে সূর্যের তাপ গায়ে না লাগার মতো। ফাঁকা এই জায়গায়াটায় দাঁড়ালে দেখা যায় পার্কের দু’চারটি প্রাচীন গাছ পাতা নিয়ে জোরে জোরে তাদের মাথা দোলাচ্ছে।
এই পাড়া বরাবরই শান্ত। দুপুরের দিকে লোকজন খুব একটা চলাফেরা করে না। সায়ন্ত গলির ভিতরে তাদের পুরনো বাড়ির সামনে যাবে বলে সবে পা বাড়িয়েছে, হঠাৎ পিছন থেকে এক মহিলাকণ্ঠে কে ডাকল, ‘‘আরে বুবুদা না!’’ সায়ন্তর ডাকনাম অনেক। তার মধ্যে একটি হল বুবু। একমাত্র পাইকপাড়াতেই এই নামে তাকে অনেকেই জানে। ফলে, তাকে এখানে এই নামে যে লোকে ডাকবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু এত দিন পরেও যে কেউ তা মনে রাখতে পারে তা ভাবলেই ভাল লাগে।
ঘাড় ঘোরাতেই সে দেখল, তারই বয়সি এক মহিলা হাসছে। একটু থমকে গিয়ে ভদ্রমহিলাই বললেন, ‘‘চিনতে পারছ না? আমি অতসী।’’ বুকের মধ্যে ধড়াস করে উঠল সায়ন্তর। সেই অতসী! কত পাল্টে গিয়েছে। তবুও রয়ে গিয়েছে মিষ্টি মুখের আদলটা, সেই কোঁকড়ানো লম্বা চুল। সায়ন্তকে কিছু বলতে হয়নি। গড়গড় করে সে নিজেই বলে চলল, ‘‘মাসিমা মেসোমশাইয়ের খবর কী? কেমন আছেন তাঁরা? তোমরা এখন কোথায় আছ? কী করছ?’’ এক সঙ্গে এতগুলো প্রশ্ন... তাও আবার অতসী জিজ্ঞেস করছে। কথা প্রসঙ্গে সায়ন্ত জানতে পারল, অতসী ইতিহাসে এমএ পাশ করেছে। তার বিয়ে হয়েছে বিডন স্টিটে। একটাই পুত্রসন্তান। পাইকপাড়ার পুরনো বাড়িতে তার বাবা আর মা থাকেন। দু’জনেরই বয়স হয়েছে। কাজেই তাঁদের দেখতে প্রায়ই অতসীকে বাপের বাড়িতে আসতে হয়। এ দিনও এসেছিল। ওরাও এই পাড়ার অনেক পুরনো বাসিন্দা। গলির ঠিক পিছনে অতসীদের বাড়ি ছিল। এত দিন পরেও অপরিবর্তিত।
সায়ন্তর চোখের সামনে থেকে হঠাৎ যেন পর্দা সরে গেল। সকালবেলা বাইরের ঘরে জানালার সামনে সায়ন্ত পড়তে বসত। বাড়ির সামনে দিয়ে সকালে পড়তে যেত অতসী। সায়ন্ত জানত অতসীর পায়ের শব্দ। যখনই সে তার পায়ের শব্দ পেত, তখনই পড়া থামিয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকত। তাকে দেখার জন্য সে বসত জানালায়। শুধু পড়তে যাওয়ার সময়েই নয়, অন্য সময়ে ওই গলির রাস্তায় অতসীকে দেখার জন্য সায়ন্ত অনেক বারই দাঁড়িয়ে থেকেছে। কিন্তু আশ্চর্য, এক বারের জন্যও কথা বলেনি কেউ। শুধু এক বার অতসীর চোখে চোখ পড়তেই অতসী এমন সলজ্জ হাসি হেসেছিল, যেন গভীর মেঘের মধ্যে থেকে ফিকে আলোর রেখা। হাসির অর্থই বা কী তা সে বুঝতে পারেনি। তার পর থেকে সব চুপচাপ। কত দিন কেটে গিয়েছে। সায়ন্তরা ফ্ল্যাট কিনে দক্ষিণে চলে এসেছে। এত দিন পরে আবার দেখা।
এক বার সায়ন্তর বন্ধু সন্দীপ বলেছিল, ‘‘ভাল লাগলে একটা চিঠি দে। দেখ কী করে?’’
কথা শুনে সায়ন্ত বলেছিল, ‘‘আমাকে একটা প্রেমপত্র
লিখে দিস।’’
সন্দীপ ধমক দিয়ে বলেছিল, ‘‘অত লাজুক হলে আর প্রেম করতে হবে না। কোথায় নিজে গিয়ে প্রোপোজ় করবি। তা নয়। অন্য লোক চিঠি লিখবে, আর তুই তা দিবি!’’
অতসীকে তার চিঠি দেওয়া হয়নি। তবে, টালা পার্কের মধ্যে এক দিন এক দুপুরবেলায় একটি বড় অশ্বত্থ গাছের গুঁড়িতে লিখেছিল তার আর অতসীর নাম। অতসীর প্রতি ভালবাসা তার সেখানেই শুরু আর সেখানেই শেষ। শুধু তাই নয়, আজ পর্যন্ত আর কারও সঙ্গে প্রেম করা হয়ে ওঠেনি। বিয়ের পরে তার স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য প্রেম আছে ঠিকই। কিন্তু সেখানে আর অভিনবত্ব কোথায়? কোনও অজানাকে জানার মধ্যেই তো লুকিয়ে রয়েছে প্রেমের প্রকৃত স্বাদ। যে মেয়েটি কোনও দিন কোনও কথা বলেনি, সে আজ সত্যিই অনেক পাল্টে গিয়েছে। কিন্তু সায়ন্ত কি পাল্টেছে? নানা রকম আলটপকা কথা ভাবতে ভাবতে কেমন যেন উদাসীন হয়ে পড়েছিল সায়ন্ত। অতসীর ডাকে হুঁশ ফিরল তার, ‘‘এত চুপচাপ হয়ে গেলে যে বুবুদা!’’
‘‘না, এমনি।’’
‘‘তুমি বিয়ে করেছ বুবুদা? বৌদি কেমন?’’ এই বলে হাসতে লাগল অতসী।
কথাটায় বিরক্তই হল সায়ন্ত। গম্ভীর গলায় বলল, ‘‘ভাল।’’ এত ক্ষণ কথার মধ্যে যে অনুভূতির জাল গড়ে উঠেছিল, কোথাও তা ছিঁড়ে গেল বলে মনে হল। এত সাধারণ কথা কেন যে এত বেসুরো লাগল তা নিজেই বুঝতে পারল না সায়ন্ত। তা হলে সত্যিই কী অতসীকে নিয়ে সে মনে মনে কিছু ভেবেছে? সায়ন্ত বেশি কথা বলতে রাজি নয়। কারণ, অসতর্ক ভাবে তার কোনও দুর্বলতা প্রকাশ পাক সে চায় না। তা ছাড়া নিজেকেই সে প্রশ্ন করে, এখন এত কথা বলবেই বা কেন? অতসী তার এক জন পুরনো প্রতিবেশী ছাড়া আর কেউ নয়। অতসী নিজেই বকে চলল, আপাতত শ্বশুরবাড়ি যাব। তার পর আবার বিকেলের মধ্যে ফিরে এসে বাবা আর মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাব। প্রায়ই তাকে এমন ছোটাছুটি করতে হয়। এমন সমস্ত সাংসারিক কথা! দুপুরবেলা এমনিতেই এই অঞ্চলে বাস কম থাকে। বাস এলেও এত ভিড় যে ওঠাই যায় না। তত ক্ষণে তারা হাঁটতে হাঁটতে রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র রোডে পৌঁছেছে। পার্কের মুখে কয়েকটা ট্যাক্সি অলস ভাবে দাঁড়িয়ে। আজকাল অবশ্য ট্যাক্সি সচরাচর যেতে চায় না। গেলেও বেশি ভাড়া নেয়।
সায়ন্তর কী মনে হল, হঠাৎ করেই একটা ট্যাক্সি ডেকে বলল, ‘‘বিডন স্ট্রিট যাবে?’’ ট্যাক্সি-চালক রাজি হতেই সে দরজা খুলে অতসীকে ডাকল, ‘‘এস! তোমাকে পৌঁছে দিই।’’
‘‘সে কি! আমার ট্যাক্সির দরকার নেই। বাসেই যাব। তুমি কোথায় যাবে?’’
‘‘আমি তো বিডন স্ট্রিটেই যাব। ওখানে তোমাকে ছেড়ে দেব।’’
অতসী আর বাক্যব্যয় না করে ট্যাক্সিতে উঠে পড়ল। ট্যাক্সি চলতে লাগল তার নিজের গতি মেনেই। রাজা মণীন্দ্র রোডের রাস্তা এখন অনেক ভাল। যানজটহীন রাস্তায় ট্যাক্সি বেলগাছিয়া রোড ধরে শ্যামবাজার, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ হয়ে বিডন স্ট্রিটের মুখে পৌঁছতে সময় নিল মাত্র আধঘণ্টা। ওই আধঘণ্টার মধ্যেই সে জানল, অতসীর স্বামী অসুস্থ। তিনি কোনও কাজই করতে পারেন না। শাশুড়ি শয্যাশায়ী। তাই টিউশনি করেই তাকে সংসার চালাতে হয়। সায়ন্ত এক বার ভাবল ছেলেকে মিষ্টি খাবার নাম করে কিছু দেবে। তার পরেই ভাবল, না থাক। সেটা অপমান করা হবে হয়তো।
অতসী রাস্তার ধারে ট্যাক্সিকে দাঁড়াতে বলে নেমে এসে সায়ন্তকে বলল, ‘‘তুমি নামলে না বুবুদা!’’ সায়ন্ত বলল, ‘‘আমার তো নামার কথা নয়। আমি তো তোমাকে পৌঁছতেই এসেছি।’’
অতসী অবাক হয়ে তার দিকে চেয়ে বলল, ‘‘তবে তুমি যে বললে এখানে তোমার কাজ আছে!’’ সায়ন্ত কোনও উত্তর না দিয়ে একটু মুচকি হেসে অপ্রস্তুত হয়ে ট্যাক্সিতেই বসে রইল। কিছুক্ষণ পরে ট্যাক্সি-চালক জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘সাব! কিধার জায়েগা?’’ সায়ন্ত শান্ত গলায় বলল, ‘‘পাইকপাড়া।’’ ট্যাক্সিওয়ালা কিছু বলতে চাইছিল, সায়ন্ত বাধা দিয়ে বলল, ‘‘যা বলছি শোনো। নয়তো আমায় ছেড়ে দাও।’’
সারা রাস্তা জুড়ে তার সেই এক কথা মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে... অতসীকে কেন বলতে গেল তার বিডন স্ট্রিটে কোনও কাজ নেই। সে তো কোনও মিথ্যে কথা বলে নেমে যেতে পারত। অতসীর চাহনিতে ছিল এক অব্যক্ত ব্যঞ্জনা। যেন তার দুর্বলতা ধরা পড়ে গিয়েছে অতসীর চোখে। সে তো এটা না বললেই পারত। এমনও হতেই তো পারত, অতসী তাকে নিজের বাড়িতেই ডেকে নিত। এখন সে কী ভাবল! এ যেন এক দোটানা। সন্ধের পর অতসী পাইকপাড়ায় ফিরবে। তখন যে করেই হোক তাকে রাস্তায় ধরে জানাবে, সে ভুল করে এমন কথা বলেছে। আসলে এই মিথ্যে না বললে সে ট্যাক্সিতে উঠত না। সে যাতে তাড়াতাড়ি বিডন স্ট্রিটে আসতে পারে সেই কারণেই মিথ্যে।
শীতের সন্ধ্যা শহরে আচমকাই নেমে আসে। সায়ন্ত টালা পার্কে ঢুকল। দু’চার জন বৃদ্ধ আপাদমস্তক গরম কাপড়ে নিজেদের ঢেকে বৈকালিক ভ্রমণে ব্যস্ত। সায়ন্ত একটি বেঞ্চে বসল। সামনেই বনবীথি। ফুল আর ফলের গাছে ভর্তি। পাখিদের ঘরে ফেরার কিচিরমিচির। আবছায়া অন্ধকার ক্রমশ জমাট বাঁধতে বাঁধতে চারিদিক ঘিরে ধরছে। বৈদ্যুতিক আলো জ্বললেও তা নিভন্তই বলা চলে। এক পুরনো টান তাকে ফিরিয়ে এনেছে তার ছোটবেলার জগতে। ছেলেমানুষের মতো সে খুঁজে বার করতে চায় গাছের বল্কলে লেখা তার আর অতসীর নাম। সায়ন্তর মনে হল, কখনও যদি পার্কে বেড়াতে এসে অতসী দেখে ফেলে ওই লেখা, তা হলে কী হবে? পরক্ষণেই সে নিজের কাছেই প্রশ্ন করে, কত কাল আগের এই লেখা গাছের বল্কলে কি আর থাকবে? কত শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা ওই গাছের উপর দিয়ে গিয়েছে। গাছও তো মরে যেতে পারে।
সায়ন্তর গাছ চিনতে অসুবিধা হয়নি। পার্কের মধ্যভাগে আজও একই ভাবে দাঁড়িয়ে। তবে আধো-অন্ধকারে ভাল করে দেখা যায় না। অবশ্য সে লেখা অন্ধকারে খুঁজে পাওয়াও শক্ত। সায়ন্ত নিজেই তার উত্তর দিল, থাক! যা ছিল তা তো থেকেই যায়। নতুন করে মোছার কোনও প্রয়োজন নেই। অতসীর সঙ্গে দেখা হওয়ার সম্ভাবনাও কম। যদি বা কোনও সময়ে হয়, তা হলে তাকে সে এই বিষয়ে কোনও কথাই বলবে না। সায়ন্ত আর অতসী নামের পৃথিবীতে অজস্র পুরুষ এবং নারী আছে। এই সায়ন্তই যে লিখেছিল, তা অতসী জানবেই বা কী করে? এ বারে সায়ন্তর হাসি পেল। এই লেখার জন্যই ফিরে আসা। অথচ, সেই লেখাকেই আর সে ছুঁতে চায় না। অতসীর কাছে এখন সে অধরাই থাকতে চায়। সেখানেই বোধহয় তার আনন্দ। কেন? তার উত্তর সে খুঁজে পেল না। দিনটা কেমন এক ঘোরের মধ্যে শেষ হয়ে গেল তাড়াতাড়ি।
এ বারে তাকে বাড়ি ফিরতে হবে। রাস্তায় একটু একটু করে ভিড় বাড়ছে। ফুটপাথের ধারে দোকানগুলোতে এক-একটা করে আলো জ্বলে উঠছে। অনেক মহিলা এবং পুরুষ সেজেগুজে পার্কে ঢুকছে। বেরচ্ছেও। রাস্তাতেও ভিড়। সায়ন্ত এক বার এত মানুষের মধ্যে খোঁজার চেষ্টা করল অতসীকে। হয়ত এখুনি কোনও বাস থেকে নেমে কিশোরীবেলার মতো ও রাস্তায় হেঁটে যাবে। ঠিক সেই সময়েই একটি বাস কোথা থেকে তার সামনে এসে দাঁড়াল। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সে বাসে উঠে পড়ল। দেরি হলে বাড়িতে সবাই চিন্তা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy