Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Dorst Novel

ডানায় ডানায়

। বিপ্লব তখনও একঘেয়ে সুরে বলে যাচ্ছে ওর সহকর্মীর বদ আচরণের আর বসের কাছে নিজেকে ভাল প্রতিপন্ন করার চেষ্টার কথা।

রূপক ঘটক
শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:০২
Share: Save:

বড় বিপদে পড়ল তমা। এ রকম হলে তো মুশকিল। ক্রমশ সে বাস্তবে ফিরে আসে। ভাবনার উড়ান অবতরণ করে। বিপ্লব তখনও একঘেয়ে সুরে বলে যাচ্ছে ওর সহকর্মীর বদ আচরণের আর বসের কাছে নিজেকে ভাল প্রতিপন্ন করার চেষ্টার কথা। সে জানলও না ভাবী বধূ ভেবে সে যার সঙ্গে কথা বলে যাচ্ছে, প্রাণ ওষ্ঠাগত অবস্থায় সে এর মধ্যেই অন্য লোককে পছন্দ করার কথা এক বার ভেবে নিল। মনে হতেই ফিক করে হেসে ফেলল তমা। বিপ্লব কথা থামিয়ে বলে, “তুই হাসছিস?”

তমা অপ্রস্তুত না হয়েই বলল, “হাসব না, তুই অবসর সময়েও অফিসের কথা ভুলতে পারছিস না! যাকে অপছন্দ করিস তার কথাই বলে যাচ্ছিস, হাসব না?”

শুনে বিপ্লব গোঁজ হয়ে বলে, “আমি অপছন্দের লোকেদের নিয়েই সব সময় ভাবি। যারা পছন্দের, তাদের কথা ভাবার দরকার হয় না। কিন্তু যারা মিথ্যে বলে, পিছনে বদনাম করে, আমার বিরুদ্ধে অন্যদের খেপিয়ে দেয়, আমি সব সময় তাদের কথা ভাবি। ভাবতে চাই না, কিন্তু মাথা থেকে বাদ দিতে পারি না। সব সময় মাথায় ঘোরে ওই মর্কটদুটোর কথা।”

এ বার তমা কোনও উত্তর দিতে পারে না। তার মনে হয়, বিপ্লব একটুও মিথ্যে বলছে না। এটা ওর প্রকৃতি। কিন্তু এটাও মানতে হবে, ও অকপট। তমা বুঝতে পারে, সে মন থেকে যাকে চায়, চায় সে সর্বগুণান্বিত নায়ক হবে। কিন্তু তার কাছে যারা এসে পৌঁছয়, তারা দোষে-গুণে ভরা। শুধু দোষ থাকলে বা গুণ থাকলে কাউকে বেছে নেওয়া বা বাতিল করা সহজ হয়। না হলে সব গুলিয়ে ঘণ্ট রাঁধা হয়ে যায়। সে নিজে তো সহজ মানুষ। সে শুধু তার জুড়িকে খুঁজে পেতে চায়। বিশ্বের বাকি লোকজন থাক না তাদের দোষ, গুণ, প্রতিভা নিয়ে। তার তাতে কিছু যায় আসে না। সে শুধু তার জোড়াটিকে খুঁজে পেলেই তাকে নিয়ে গাছের মগডালে বাসা বাঁধতে পারে, দিঘিজলে গা ভেজাতে পারে। এখন এই পরিণত বয়সে এসে সে যেন সেই বাসা বাঁধার জন্য ডাক শুনতে পায় মনের ভেতর থেকে, শরীরের মধ্য থেকে। এবং কী আশ্চর্য, যখনই সে তার বান্ধব বিপ্লবের সঙ্গে দেখা করে, তখনই তার মনে বেশি করে ফিরে আসে বল্লাল-প্রসঙ্গ। যখনই টেলিভিশনের একমুখী বক্তৃতার মতো কথা বলতে শুরু করে বিপ্লব, তখনই তার মনে যেন শুরু হয় বল্লাল-ভাষণ। কী আশ্চর্য দক্ষতায় সে শুষ্ক, নিষ্প্রাণ অবসরকে করে তুলেছিল সতেজ ও প্রাণবন্ত। এবং সামনে বিপ্লবকে দেখতে দেখতে তার মনে হয়, এই লোকটা কী বলবে, কী বলতে পারে, কী বলতে পারে না তা যদি আমার জানা হয়, তা হলে ওই লোকটা তার চেনা, যেন খু-উ-ব চেনা। ওই বল্লালও কী বলতে পারে, কী করতে পারে তার চেনা, জানা, বোঝা। শুধু তার নাম, ধাম, ঠিকানা, পেশা ইত্যাদি ব্যবহারিক দিকগুলোই যা চেনা নয়, জানা নয়। আজকাল তার কলেজের মেয়েদের মুখে একটা শব্দ খুব শুনছে সে, সোলমেট। কে জানে, বুড়িদির বলা ‘জুড়ি’রই প্রতিশব্দ কী না এটা! যার সঙ্গে শেষ দৃশ্যে একটাও সংলাপ রাখেনি তমা। এখন সে মরিয়া হয়ে উঠল তার পরিচয় জানতে।

প্রথমেই পাকড়াও করল গরিমাকে। তার প্রশ্ন শুনে সে বলল, “তুই তো চিনিস। ওই আমাদের সঙ্গে মুন্সিয়ারি গিয়েছিল যে লোকটা।”

তমা বলল, “আর কিছু?”

গরিমা বলল, “আমি নিজের ঝামেলায় পুরো পাগল হয়ে যাচ্ছি, এখন আধপাগলদের কী খোঁজ তোকে দিই বল তো! জীবেশকে জিজ্ঞেস কর... তবে হ্যাঁ, লোকটা আধপাগল তাতে কোনও সন্দেহ নেই।”

তমা মুখ স্বাভাবিক রেখে সেখানে হাসির প্রলেপ মাখিয়ে বলল, “কেন?”

গরিমা বলল, “আর বলিস না, আমি তো শুনে আঁতকে উঠলাম। কুমোরটুলিতে গিয়ে নাকি কোন মাটিতে ওরা কাজ করে, কোথা থেকে তা আসে, পোকা হয় কি না, এ রকম সব আজব প্রশ্ন করছিল!”

“তুই কী করে জানিস?”

“ওই তো সেকেন্ড ইয়ারের উদ্ভাস কোন পুজোর ঠাকুর আনতে কুমোরটুলিতে গিয়ে দেখেছে। আমায় বলল, ‘ম্যাম, মুন্সিয়ারির স্যর কেমন যেন!’”

“আমাদের এই কুমোরটুলি?”

“হ্যাঁ রে বাবা! তুই কি ভাবলি ও পাহাড়ের ফুল? ও-ও এই গড়পারেরই ভেতো বাঙালি। কলকাতার রাস্তায় প্রায় না হলেও বছরে এক-আধ বার দেখা হয়েই যায় আমার সঙ্গে। মানে বাস থেকে হয়তো এক ঝলক দেখলাম।”

“সে তো অন্য কেউও হতে পারে।”

“তোর কী হয়েছে বল তো? ও কী এমন স্বর্গীয় পারিজাত যে অন্যকে দেখতে গিয়ে ওকে দেখব?”

একটা বড়, খোলামেলা হলঘরে নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর টেবিল, চেয়ার সবচেয়ে খারাপ বিন্যাসে সাজালে যেমন দেখতে লাগবে, সেটাই তাদের টিচার্স রুম বলে তমার মনে হয়। সেখানে সে ও গরিমা, পাশাপাশি দুটো টেবিলে বসে। জীবেশ বসে আর একটু দূরের একটা টেবিলে। সেই টেবিলে রাশি রাশি বই, ফাইল, কাগজ, প্রজেক্টের খাতা অবিন্যস্ত ভাবে রাখা। সেখানে প্রজেক্টের খোলা খাতার ওপরই মাথা রেখে জীবেশ ঘুমোচ্ছিল, তমা গিয়ে ঠেলা দিয়ে বলল, “এখনও নম্বর জমা দিসনি?”

জীবেশ বলে, “আরে খাতা তো শেষই হয় না। এরা কলেজে গাঁতিয়ে ভর্তি করবে ছাত্রছাত্রী, আর আমরা খাতা দেখে মরি!”

তমা বলে, “তা তোর আর কী! তুই তো রাত ন’টা পর্যন্তও বসে খাতা দেখিস। কত সুনাম তোর!”

জীবেশ বলে, “হ্যাঁ, তুই তো রাত দুটো পর্যন্ত বাড়িতে জেগে জেগে থিসিসের কাজ করিস, সেই সুনাম কার হবে? কী বলতে এসেছিস, বল?”

“আরে, ওই যে ভদ্রলোক আমাদের সঙ্গে শিক্ষামূলক ভ্রমণটায় গিয়েছিলেন, ওঁর সম্বন্ধে কিছু জানিস তুই?”

“ন্যাকামো করছিস?”

“ন্যাকামো করব কেন?”

“এক সঙ্গে লাঞ্চ করবে, ডিনার করবে, আর এখন আমার কাছে এসে খোঁজ নিচ্ছ?”

“আহা, রাগ করছিস কেন, বল না।”

“আমি চিনি না, জানি না।”

“আবার রাগ করছিস! আচ্ছা শোন, তোর শর্মির খবর কী? মামলা এগোল কিছু?”

“ওরা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে।”

“তার মানে তো মামলা নিষ্পত্তির দিকে!”

“একদমই নয়। ওরা অস্বাভাবিক একটা অঙ্কের টাকা দাবি করছে।”

“সে কী? কেন?”

“আমার উকিল বলছে, ওরা ডিভোর্সের মামলাকে টেনে নিয়ে যেতে চায়।”

“তাই কি? তোর কী মনে হয়?”

“আমার তো মনে হয় উল্টো। মনে হয়, শর্মি আদৌ আর ডিভোর্সটা চাইছে না। চাইছে একটা আলোচনার রাস্তা। সেই জন্যই অসম্ভব একটা অঙ্ক লিখে দিয়েছে। কিন্তু মামলা উঠে গেলে উকিলের তো লাভ নেই, তাই আমার কথাটা ওরা মানছেই না।”

“তা হলে কী করবি?”

“দেখি, পরের দিন তো বিচারক আমাদের স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই ডেকেছেন... সে দিন যদি কথা হয়।”

“দ্যাখ, আমার মন বলছে, যা হবে ভালই হবে। তোরা অনেক দিন তো আলাদা, হতেই পারে, শর্মি এখন ওর ভুল বুঝতে পেরেছে। এক বার মুখোমুখি কথা বলে দেখ না!”

কথাটা বলে আর দাঁড়ায় না তমা। মুখে সে বলল বটে, শর্মি তার ভুল বুঝেছে, কিন্তু সেটা নেহাতই বলার জন্য বলা। ভুল কার, কারও সত্যিই কোন ভুল আছে কি না, তা কে জানে! তবে জীবেশের মুখে ‘স্বামী-স্ত্রী’ শব্দটা শুনে কেমন যেন লাগল। মনে হল, কাঙালের মতো সে সম্পর্কটা বাঁচানোর চেষ্টা করে চলেছে। একটা সম্পর্ক মানে তার কতগুলো স্তর! সামাজিক সম্মান, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, ব্যবহারিক জীবনের সুবিধে-অসুবিধে, সব কিছুর পর দু’টি নরনারীর শরীর ও মন! এতগুলো স্তরের একটা নড়বড় করলে অন্যটা তাকে টেনে ভারসাম্য রক্ষা করে? না কি অন্য স্তরগুলোকেও ঠেলে নাড়িয়ে দেয়? কে জানে!

জীবেশের টেবিল থেকে নিজের টেবিলের দিকে তিন-চার পা সে এগিয়েছে কি এগোয়নি, পিছন থেকে তার নাম ধরে ডাকল জীবেশ। সে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতে জীবেশ বলল, “আজেবাজে বকলেও লোকটা খারাপ নয়। দেরাদুনের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ায়। তবে পুরো খেপাটে। কী গবেষণা তা ও-ই জানে, প্রায়ই এখানে-ওখানে পাথর বা মাটি খুঁজতে চলে যায়। শুনেছি চাষিদের সঙ্গে মিলে মাটির চরিত্র খুঁজতেও দেখা যায় লাঙল কাঁধে। দেরাদুনে ক’দিন থাকে কে জানে, বাকি সব জায়গায় তাকে প্রায়ই দেখা যায়। এখানেও মাস, দু’মাস অন্তর এক বার করে আসে। অর্কবাবুর সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক। আমি এটুকুই জানি।”

ঘাড় ঘোরানো অবস্থা থেকে ফের জীবেশের দিকে ফিরল তমা। তার পর হাসল। কেউ বলবে, সে হাসি কৃতজ্ঞতার। কেউ বলবে, ভাসমান স্রোতে খড়কুটো খুঁজে পাওয়ার। তার হাসি একই সঙ্গে অস্পষ্ট, করুণ ও মৃদু দেখায়।

হেসে এগিয়ে আসার পর আরও এক বার তাকে ডাকল জীবেশ। এ বার একটু গলা নামিয়ে সামান্য ইঙ্গিতপূর্ণ হেসে বলল, “ভদ্রলোক এখনও বিয়ে করেননি। তবে যা বাউন্ডুলে, কোনও সুস্থ মহিলা ওকে পছন্দ করবে না। মানে, অসুস্থ, অস্বাভাবিক মহিলাদের রাস্তা ফাঁকা।”

এ বার আর উত্তর না দিয়ে ভুরু কুঁচকে সামান্য রাগ দেখিয়ে চলে এল তমা।

দীর্ঘতম দিন

আজ এমনিতে ছেলেমেয়েদের বিশেষ আসার কথা ছিল না ক্লাসে, সামনেই পরীক্ষা। তারা আসেওনি। তবে এমনি দিন হলেও তারা বিশেষ আসত বলে মনে হয় না। সকাল থেকেই মুখ ভার আকাশের। আকাশ গাঢ় অন্ধকার। মাঝে মাঝেই পশলা পশলা বৃষ্টি। তমা কলেজে এসে দেখল, তাদের শিক্ষক বাহিনীর অনেকেই ডুব দিয়েছেন। গরিমার কথা আলাদা, কলেজ তার ফুসফুস আর বাড়ি বন্ধ খাঁচা। বেরোতে না পারলে তার বুক ধুকপুক করে। ফাঁকা টিচার্স রুম দেখেই তমার মনে হল আজ অনেক ক্ষণ গল্প করবে গরিমার সঙ্গে। এত বড় ঘরটার বড় জোর সাত-আটটা টেবিলে মাথা দেখা যাচ্ছে। গরিমা এসেছে, জীবেশ আসেনি, অর্থনীতির ঘনাদা আজ পাঞ্জাবি পরে এসেছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মোটা চশমা পরা পূরবীদিও এসেছেন।

পৃথিবীর মাটিতে এক ফোঁটা বর্ষার জল পড়লেই তমার মনে বৈরাগ্য এসে যায়। ঠিক বৈরাগ্য নয়, উদাসীনতা। ঠিক উদাসীনতাও নয়, আসলে তার মন তখন একটু নড়ে যায়। হিসেবমাপা রুটিন এবং প্রথাগত কাজের বাইরে যে কোনও কিছুতেই তার তখন পরম উৎসাহ! নিজের টেবিল থেকেই এক বার জিজ্ঞেস করল গরিমাকে, “কী রে, দিনটা কেমন?”

গরিমা বলল, “ফালতু।”

“কেন রে? তুইও তো বৃষ্টি ভালবাসিস।”

“সে তো স্বাভাবিক বৃষ্টি। নিম্নচাপের বৃষ্টি ভাল লাগে না।”

শুনে হাঁ হয়ে যায় তমা। তাই তো! সে তো কখনও বর্ষার বৃষ্টি, প্রথম বর্ষার বৃষ্টি, একঘেয়ে বর্ষার বৃষ্টি, ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি, কালো মেঘের বৃষ্টি, কালবৈশাখীর বৃষ্টিকে আলাদা করেনি!

এমন সময় চিন্তাসূত্র কেটে জলে সপসপে হয়ে ভিজে ঘরে ঢুকল অর্কদা। তাদের কলেজের বাংলার শিক্ষক। ঘরে ঢুকে নির্বিকার চিত্তে সে ঘরের শেষ প্রান্তে নিজের টেবিলের দিকে চলে গেল। তার হাতের বন্ধ-করা ছাতা ফোঁটা ফোঁটা জল-চিহ্ন রাখতে রাখতে গেল। আশ্চর্য হয়ে গেল তমা! এ কেমন লোক, ছাতাও ভিজল, নিজেও ভিজল! না কি কারও মাথা বাঁচাতে ছাতা এগিয়ে দিয়েছিল? তমার মনে হল, এই ভদ্রলোক যেন বিপ্লবের বিপরীত শব্দ। এবং সেই মুহূর্তেই বিপ্লবের প্রসঙ্গ ভুলে মনে পড়ল, কাল জীবেশ এঁর কথাই বলেছিল, যার সঙ্গে বল্লালের বন্ধুত্ব আছে। বৃষ্টিভেজা, ঢিলেঢালা, কোনও কাজ সময়ে করে উঠতে না পারা অর্কবাবুই সেই বাউন্ডুলের আদর্শ বন্ধু হতে পারেন বলে মনে হল তার। অর্কবাবুর সঙ্গে দরকার ছাড়া বিশেষ কথা হয় না তার। এখন বল্লালের বিষয়ে যেচে পড়ে কথা জানতে চাওয়ার কোনও সূত্র খুঁজে পেল না সে। ফলে অর্কবাবু তাঁর টেবিলে বসে তাঁর কাজে মন দিতে পারলেন। আর প্রজেক্টের এক গুচ্ছ খাতা সামনে নিয়েও কাজে মন দিতে পারল না তমা।

গোটা চারেক খাতা দেখেছে কি দেখেনি, বিন্দুমাত্র মৌলিকত্ব না দেখিয়ে আন্তর্জাল থেকে টুকে দেওয়ার প্রবণতা দেখে মাথাটা বিরক্ত হতে শুরু করেছে, এমন সময় ফোন বাজল। টেবিলের ওপর রাখা ফোনের পর্দায় ভেসে উঠল বিপ্লবের নাম। বিপ্লব, এই সময়? কী কারণ হতে পারে? বাড়ি, গাড়ি, বিনিয়োগ?

ফোনটা ধরল তমা, “বল।”

“একটা বাড়ির খোঁজ পেলাম, তমা। টু বিএইচকে। কলকাতার মধ্যেই। অফিসের এক জনের জামাইবাবু বেচে দিয়ে ইউরোপ চলে যাবে।”

সে থামতে তমা বলল, “ও।”

তার উচ্ছ্বাসহীনতাকে যেন গ্রাহ্যই করল
না বিপ্লব। উল্টে তাকেই জিজ্ঞেস করল, “যাব এক বার দেখতে?”

তমা আবেগহীন কাষ্ঠল গলায় বলল, “যাবি। তুই ফ্ল্যাট কিনবি তো দেখতে যাবি না কেন?”

তার এই যান্ত্রিক উত্তরে কি আহত হল সে? হলে হোক। সে ন্যাকামো করতে পারবে না।

“আচ্ছা, দেখি...” বলে ফোন রেখে দিল বিপ্লব।

সে ফোন রাখল, তমাও ভুলে গেল তার প্রসঙ্গ। কষ্টেসৃষ্টে কোনও রকমে আরও দশ-বারোটা খাতা দেখল সে। তার পর ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল গরিমাও প্রজেক্ট খাতা সামনে খুলে বড় বড় হাই তুলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Dorst Novel
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy