ছবি: মহেশ্বর মণ্ডল
কে, কে ওখানে? সাড়া দাও বলছি! নইলে কিন্তু...’’
‘‘চু-উ-উ-প! এত চেঁচাচ্ছেন কেন? বাঘ-ভালুক নই, সে তো দেখতেই পাচ্ছেন।’’
‘‘কে তুমি? কী চাও এত রাতে? উপরেই বা এলে কী করে? হাতের পোঁটলায় কী?’’
‘‘খবরদার! ধমক দেবেন না মশাই। এসে যখন পড়েইছি, তখন কী করে এলাম, সে বিত্তান্ত নাই বা শুনলেন। কেন এসেছি? সে কথা বলছি, তবে...’’
‘‘তবে কী?’’
‘‘চেল্লামেল্লি করলে কিন্তু স্রেফ ফটো হয়ে যাবেন...’’
‘‘হুমকি দিচ্ছ আমায়? অ্যাঁ? তোমার হুমকিতে আমি ভয় পাই না! কী চাও তুমি?’’
‘‘বলছি তো সব বলব। এক গ্লাস জল খাওয়াবেন? না কি তাও...’’
‘‘ভারী ল্যাঠা তো! বলা নেই, কওয়া নেই মাঝরাতে বাড়ি বয়ে এসে হুজ্জুতি! ওইখানে চুপটি করে দাঁড়াও। এক পাও এগোবে না। পোঁটলায়
হাত গলিয়েছ কী চেঁচিয়ে লোক
জড়ো করব।’’
‘‘ফালতু মাথাগরম করবেন না, ব্যাপারটা... পেরাইভেট।’’
‘‘ফাজলামো হচ্ছে? মুখটাও তো দেখতে পাচ্ছি না অন্ধকারে। এই হয়েছে এক লোডশেডিং।’’
‘‘এ মুখ কি দেখবার না দেখাবার সার? তা ছাড়া আমাদের লাইনে মুখ দেখানোর নিয়ম নেই।’’
‘‘তোমাদের লাইন? মানে? নামটাও তো বললে না।’’
‘‘মানুষ হয়ে যখন জন্মেছি সার, তখন নাম-ধাম তো থাকবেই। তবে আমাদের পরিচয় নামে নয়... কামে।’’
‘‘কামটা কী-ই-ই-ই? সেটা তো বলবে না কি...’’
‘‘নিজের মুখে বলতে চাই না সার। সময়ে ঠিক টের পাবেন।’’
‘‘বুঝেছি, সোজা আঙুলে ঘি...’’
‘‘এ কী? এত রাত্তিরে আবার কাকে ফোন...’’
‘‘পুলিশে, পুলিশে হ্যান্ডওভার করব। মজা টের পাবে।’’
‘‘পু... পুলিশ! হা- হা- হা, লাভ নেই, পাবেন না।’’
‘‘কেন, ফোনের লাইন কেটে দিয়েছ বুঝি?’’
‘‘তা কেন! দেখছেন না বিষ্টিতে চারদিক ভাসছে! পুলিশও ভাসছে... হা- হা...’’
‘‘থামো তো ছোকরা। ও কী, পকেটে হাত কেন?’’
‘‘ধমকাচ্ছেন কেন সার, বিড়ি বের করছি। ধরাই একটা। জলে ভিজে হাত-পা কালিয়ে গিয়েছে। চলবে নাকি লাল সুতোর বিড়ি একটা? ও আপনাদের তো আবার বিড়িটিড়ি চলে না, পেস্টিজ যাবে। যাগ্গে, কী যেন বলছিলেন, কেন এসেচি? এসেচি আপনারই সেবা... ধ্যাত তেরি! দেশলাইটা ভিজে ন্যাতা। একটু আগুন দেন তো।’’
‘‘আগুন! ইচ্ছে করছে তোমার মুখে নুড়ো জ্বেলে...’’
‘‘নুড়ো... ওপরওয়ালা আগেই জ্বেলে রেখেছে! না হলে কাজকম্মো বেশ করছিলাম, বয়সকালে দেখতে-শুনতেও খারাপ ছিলাম না। সাইটফেসটা তো অনেকটা শারুক খানের মতন ছিল। আর ওই দেখেই তো পুঁটি... কী আর বলব সার... এক্কেবারে দিওয়ানা।’’
‘‘পুঁটি! সে কে?’’ ‘‘লাভার ছিল।’’
‘‘ছিল কেন, এখন নেই?’’
‘‘নাহ্! ক’দিন ঘোরাঘুরি, ফুচকা, রেস্টুরেন, সিনেমা, নৌকায় দক্ষিণেশ্বর... তার পর গনশাকে বিয়ে করে ফুড়ুৎ! বড্ড ভালবাসতুম ওকে।’’
‘‘তোমাকে ছেড়ে দিল কেন?’’
‘‘ছাড়বে না, কারখানায় লক-আউট হয়ে গেল... বেকারের সঙ্গে কে প্রেম করবে?’’
‘‘আর চাকরি-বাকরি জোটাতে পারলে না? ছোটখাটো ব্যবসাপত্তর?’’
‘‘আর লেকচার ঝাড়বেন না তো সার। কে চাকরি দেবে, এই বাজারে? বেবসা করব, পুঁজি কোথায়? এক নেতার পাল্লায় পড়লাম। শালা বললে, ইলেক্সানে জিতিয়ে দিলে একটা হিল্লে করে দেবে। শেষে মাডার কেসে ফেঁসে সাত বছরের ঘানি...’’
‘‘তুমি মার্ডার করেছ?’’
‘‘ফল্স কেসে ফাঁসাল ওই শালা নেতা। বললে, ‘দেখতে-দেখতে সাত বছর কেটে যাবে। ছাড়া পেলে তোর একটা কিছু করে দোবই।’ ’’
‘‘দিল না বুঝি?’’
‘‘শুয়োরের নাতি চিনতেই পারল না! শেষে শিয়ালদা এস্টেশানে মুটেগিরি শুরু করলাম।’’
‘‘সেটা ছেড়ে দিলে কেন? কারও মাল সটকাতে গিয়ে ধরা পড়ে গিয়েছিলে নির্ঘাত?’’
‘‘আরে না! এক দিন গনশা, পেছন থেকে চিনতে না পেরে, ‘কুলি, কুলি’ বলে ডাকলে। পুঁটিকে নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছিল বোধায়। অনেক দিন বাদে পুঁটিকে দেখলাম। কী সুন্দর লাগছিল! ও আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। একটা কথাও বললে না। শেষে গনশাই বললে, ‘কী রে, আর কোনও কাজ পেলি না?’
‘‘মাথায় আগুন জ্বলে গেল। বললাম, ‘মালপত্তর চাপিয়ে দে। গাড়ি ছাড়ার সময় হল।’
‘‘নামার সময় গনশা আমার হাতে একশোটা টাকা গুঁজে দিলে। আবার মাথা গরম হয়ে গেল। ন্যায্য ভাড়া নিয়ে বাকিটা ফেরত দিয়ে বললাম, ‘যা রেট, তাই নেব,’ আর দাঁড়াইনি...
‘‘ভাবতে পারেন সার, শেষ পর্যন্ত গনশা! যে কিনা ইশকুলে আমার চেয়েও রদ্দি মাল ছিল। নেহাত বাপের গুল-কয়লার বেবসা ছিল তাই...’’
‘‘তোমার বাবার? তেমন কিছু ছিল না বুঝি?’’
‘‘ছিল। খকখক কাশি, চণ্ডাল রাগ আর লেকচার।’’
‘‘না, মানে উনি কী করতেন?’’
‘‘দেশের কাজ। পলটিকাল সাফার না কী যেন বলে, তাই ছিল। পেনসেন, পেনসেন করে গরমেন্টের ঘরে ছুটে ছুটে জুতো হাফসোল। মাত্র দু’মাস সে টাকা ভোগ করেই... মালটা টেঁসে গেল।’’
‘‘কী হল, আবার বিড়ি! তুমি দেখছি ফুঁকেই শেষ হয়ে যাবে।’’
‘‘আমরা যমেরও অরুচি সার, নইলে সুসাইট করতে গিয়েও...’’
‘‘কী হল... কিছু বলবে?’’
‘‘না, মানে আর তো দাঁড়াতে পারছি না। একটু বসব?’’
‘‘বসবে? তা বোসো, তবে তোমার পোঁটলা থেকে দূরে... হ্যাঁ, হ্যাঁ, ওখানটায় বোসো। বোতলে জল আছে খেয়ো। তার পর বলো, সুইসাইড না কী যেন বলছিলে?’’
‘‘গলায় ফাঁস লাগিয়ে গাছ থেকে ঝুলতে যাব, ডাল ভেঙে নীচে কেলিয়ে পড়লুম। কোথাকার এক সাধু, আশপাশেই ছিল বোধায়, আমায় তুললে। বললে, ‘বেটা, জিন্দেগি জিনে কে লিয়ে, মরনে কে লিয়ে নেহি। আজা মেরা সাথ...’ তার চ্যালা হয়ে ঘুরলাম বছরখানেক পাহাড়ে, জঙ্গলে। শালা বহুত জ্ঞান দিলে। তাতেই যেন একটু আশার আলো দেখলাম।’’
‘‘তিনি রোজগারের কোন রাস্তা বাতলে দিলেন বুঝি? দৈব ওষুধ, মাদুলি, কবচ, তাবিজ...’’
‘‘না, না, সে সব কিছু নয়। তবে একটা জিনিস বুঝে গেলাম। দয়া এক দিন-দু’দিনের। দুনিয়ায় সব কিছু ছিনিয়ে নিতে হয়। এমনিতে কোনও শালা কিচ্ছু দেবে না।’’
‘‘কেন দেবে এমনিতে? সবাই খাটছে, তুমিও খাটো।’’
‘‘খাটতে তো আমিও চাই সার। কারখানায় কাজ করছিলুম, লকাউট হয়ে গেল। কুলিগিরি করছিলুম, বন্দু দয়া দেখালে, টিটকিরি মারলে! বিজনেস করব, তার পুঁজি নেই। কী করব, বলুন!’’
‘‘তাই বলে ছিনতাই করবে? এ তো অন্যায়।’’
‘‘কিসের অন্যায়? ঘরে মা, আইবুড়ো বোন। তিনটে পেট, চালাতে তো হবে! নিজেরও তো কিছু শখটখ আছে! দিন না একটা কাজ জোগাড় করে। আপনি তো মশাই গরমেন্টের সার্বিস করেন।’’
‘‘চাকরিবাকরি দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’’
‘‘তবে থোক কিছু ট্যাকা
ধার দেন, বেবসা করে শোধ দোব, মাইরি বলছি।’’
‘‘সামান্য মাইনের চাকরি আমার, টাকা কোথায়?’’
‘‘হা- হা- হা...’’
‘‘এতে হাসির কী হল?’’
‘‘মাসমাইনেয় হাত পড়ে না কি আপনার? রেজেস্টারি আপিসে যে ক’টা টাকা মাইনে পান, সেই টাকায় জমি কিনে একতলার ওপর দোতলা ওঠে? পাথর দিয়ে মোড়া ঘর, এত ফান্নিচার, বছরে দুবার বৌ-বাচ্চা নিয়ে বেড়াতে যাওয়া... হয় এত সব? তার ওপর দু’-দু’টো সংসার চালানো...’’
‘‘কী বলতে চাও?’’
‘‘চটছেন কেন, বলছি। কিন্তু পেটে তো কিছু দিতে হয়। খালি পেটে কি কথা হয়?’’
‘‘তা তো বটেই, দাঁড়াও ঘরে কী আছে দেখি।’’
‘‘এই নাও... দু’টো রুটি ছিল আর কিছু মিষ্টি। এর বেশি আর কিছু নেই।’’
‘‘বাসি বোঁদে!! এই আপনার মিষ্টি! সার, গরিব হতে পারি কিন্তু বাসি বোঁদে খাই না। একটু আচার-টাচার হয় না?’’
‘‘আচার নেই, সস চলবে?’’
‘‘দ্যান, তাই দ্যান খানিকটা। এক বোতল জলও দেবেন।’’
‘‘হ্যাঁ, দু’টো সংসার না কী যেন বলছিলে...’’
‘‘বলতে লজ্জা করছে সার। ছোটমুখে ভদ্দরলোকের কেচ্ছা... তা ছাড়া আপনি ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। এখন এ সব কথা পাঁচকান হলে...’’
‘‘পাঁচকান হবে কী করে? আছি তো আমরা দু’জন। ল্যাজে খেলিয়ো না, খেতে খেতে বলে ফেলো।’’
‘‘কঁওলাকে মনে আয়ে তো?’’
‘‘কমলা! কোন কমলা?’’
‘‘ওই যে সোমত্ত বয়েহে বেধবা হয়ে আপনার বায়ি রাতদিনের কাজে লাগল... দুমাহ যেতে না যেতেই...মাগির পেট হল, বাচ্চাটা খসাতে চেয়েছিলেন আপনি। কিন্তু কঁওলা... বেঁকে বসল। এত দিনে সে মেয়ে... দিব্যি ডাগর-ডোগরটি... সেই কমলার সংসারও তো আপনিই...’’
‘‘এ হে, বৃষ্টির ছাঁট লাগছে গায়ে। সরে এসে না হয় ঘরের ভিতরেই বোসো। তা তুমি তো দেখছি ভাই অনেক খবরই রাখো!’’
‘‘পুলিশের ইনফরমারের কাজ করেছি না! সিগ্রেট হবে একটা?’’
‘‘একটা কেন ভাই, পুরো প্যাকেটটাই রাখো না। একটা দাও, আমিও ধরাই।’’
‘‘হ্যাঁ, এবার বলো তো বাপু কেন এসেছ এখানে?’’
‘‘কী মনে হয়?’’
‘‘কী আবার, বাড়ি ফাঁকা পেয়ে চুরি করতে এসেছ।’’
‘‘আমাকে শুদু চোর মনে হল? এসেছি আপনার দেনার হিসাবনিকাশ বুঝে নিতে।’’
‘‘কোনও দেনাই নেই, তার আবার হিসেব কিসের?’’
‘‘আছে, আছে... দু’-নম্বরি ইনকামের জন্য সমাজের কাছে আপনার একটা দেনা আছে না!’’
‘‘শালা, উজবুক পেয়েছিস? অনেক ক্ষণ থেকে সহ্য করছি তোর বেয়াদপি। দাঁড়া...’’
‘‘এ কী, এ কী, কী করছেন সার, বাইরে থেকে দরজাটা বন্ধ করলেন কেন? ভাল হচ্ছে না। এই দরজা কিন্তু আপনাকে নিজের হাতে খুলতে হবে বলে দিচ্ছি। দেখছেন এটা?’’
‘‘ও ছুরিই দেখা আর পিস্তলই বের কর। কী করবি আমার? বন্ধ ঘরে খেলা কর তোর ছুরি নিয়ে। আমি এক্ষুনি পুলিশে...’’
‘‘দাঁড়ান সার, আপনি পুলিশ ডাকুন ক্ষতি নেই। হাতকড়া পড়বে কিন্তু আপনারই।’’
‘‘ভয় দেখাচ্ছিস! দোষ করলি তুই আর হাতকড়া পড়বে আমার?’’
‘‘বেশ তো, ডেকেই দেখুন না পুলিশকে।’’
‘‘কেন, কী করবি?’’
‘‘সুসাইট। এই দেখুন ছুরি, মরতে ভয় পাই না, জানেন তো।’’
‘‘সে তো খুব ভাল কথা। তুই মরলে একটা আপদ বিদেয় হয়।’’
‘‘কথাটা ভেবে বলছেন তো?’’
‘‘এতে ভাবাভাবির কী আছে?’’
‘‘তার পর পুলিশ এসে যখন দেখবে বাইরে থেকে বন্ধ করা ঘরের ভিতরে লাশ, বাড়িতে আপনি ছাড়া অন্য কোনও লোক নেই, তখন কেসটা আর সুসাইট থাকবে? খুনের দায়ে হাতকড়া পড়বে না আপনার?’’
‘‘কোন লেভেলে ওঠাবসা আমার জানিস? সব্বার মুখ বন্ধ করে...’’
‘‘কিন্তু পাড়ার ছেলেদের? তাদের জানিয়েই তো এসেছি। তারা তো তপনদাকে নিয়ে থানা ঘেরাও
করবে, তখন!’’
‘‘কে তোর তপনদা?’’
‘‘যার সঙ্গে ভোটে লড়ছেন...’’
‘‘তুই এত ধূর্ত, এত শয়তান!’’
‘‘তা হলে সার, ছুরি বসাই বুকে?’’
‘‘দাঁড়াও, দাঁড়াও ভাই। জীবন নিয়ে ছেলেখেলা করতে নেই।’’
‘‘লোক ডাকার চেষ্টা করেছেন কী অমনি সুসাইট করব। এ বার দরজাটা খুলে দ্যান।’’
‘‘এ... এই দিলাম। কত, কত টাকা নিলে আমায় রেহাই দেবে।’’
‘‘ছোট ভাই.. দুজ্জোগের রাতে এসেছে, সেই হিসেবে যদি বিশ-পঁচিশ খুশি হয়ে তুলে দ্যান...’’
‘‘শোনো, আজ মাসের সাতাশ, ঘরে অত ক্যাশ নেই, তুমি হাজার চারেক রাখ... কী হল, মুখ ভ্যাটকালে কেন?’’
‘‘আপনার আবার মাসের পোথম আর শেষ।’’
‘‘আচ্ছা। না হয় পাঁচই নাও। সামনে ইলেকশন, বোঝোই তো খরচখরচা আছে।’’
‘‘ও কী! ও কী! আবার ছুরি বের করছ কেন?’’
‘‘মরা ছাড়া রাস্তা নেই, সার।’’
‘‘আঃ। ও ছুরি বরং আমার বুকেই বসিয়ে দাও, শান্তি পাই।’’
‘‘টাকার জন্য ভাবছেন কেন সার, ভোটে জিতলে অমন বিশ-পঁচিশ হাজার আপনি ঘণ্টায় ঘণ্টায় পয়দা করবেন। তখন আর জ্বালাতন করতে আসব না।’’
‘‘এ... এই ধরো ঝেড়েঝুড়ে সতেরো ছিল। একটা কথা ভাই, যা জেনেছ, শুনেছ সব চেপে যাবে, বুঝেছ? তোমার পোঁটলাটায় কী আছে বললে না?’’
‘‘নিজেই দেখুন না।’’
‘‘এ কী! আমার টাইমপিস, মোবাইল, টর্চ, হাতঘড়ি— এগুলো কখন গ্যাঁড়ালে? মোবাইলটা নিয়ো না ভাই, খুব শখের জিনিস। ক’দিন আগেই কিনেছি।’’
‘‘বড়লোকের শখ দু’দিন ছাড়া পাল্টায়, আর একটা কিনে নেবেন সার। ছিম কাটটা খুলে রেখেছি ওই টেবিলের ওপর।’’
‘‘আর এই টেপরেকর্ডার? এটা আবার কার?’’
‘‘গ্যাঁটের পয়সায় কেনা সার। এত ক্ষণ আমাদের যা কথা হল, তা সব তোলা আছে। আবার আপনাকে কখন দরকার হয় না হয়... বলছিলেন না গুরু কী শিখিয়েছিল, গুরু আমায় বশীকরণ শিখিয়েছিল— বশ করার জাদু। ওই বাঁশি বাজল, চলি সার।’’
‘‘বাবু!’’
‘‘কে রে, ভোলা? দুধ নিয়ে এসেছিস? দরজা খোলা ছিল... কী রে! কী দেখছিস, অমন হাঁ করে?’’
‘‘বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, বাবু?’’
‘‘কেন, কোন দুঃখে?’’
‘‘না, মানে একতলার ঘর বেবাক খালি। মাল বোঝাই গাড়ি একটা এইমাত্র চলে গেল, তাই ভাবলুম...’’
‘‘ঘর খালি মানে! কী বলছিস রে তুই ভোলা...’’
‘‘বাবু, ও বাবু, বাবু! কী আপদ! অজ্ঞান হয়ে গেল না কি? বাবু, বাবু, ও বাবু...’’
ছবি: মহেশ্বর মণ্ডল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy