ছবি: পিয়ালী বালা
আমি একজন ব্যস্ত মানুষ। অফিসে আমার বিস্তর খ্যাতি। প্রতিবেশীরা আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকায়। জীবনে আমার কাজ আর টাকা ছাড়া বিশেষ কিছু নেই। এমনকি ছুটির দিনেও আমি ল্যাপটপে মুখ গুঁজে থাকি। আমার ব্যাঙ্কে টাকা উপচে পড়ে। মাসে দু’-তিনবার আমি অফিসট্যুরে ইউরোপ অথবা অ্যামেরিকা যাই, রাতে ভাল স্কচ হুইস্কি না হলে ঘুম আসে না। আমি একজন উচ্চবিত্ত ভদ্রলোক বিশেষ।
চূড়ান্ত পেশাদার দৌড়বীরও কখনও-সখনও ট্র্যাকে ছোটার সময় পিছন ফিরে তাকিয়ে ফেলে। এই একবার তাকানোর জন্যে অনেক সময় সে হেরেও যায়। আবার কখনও আবিষ্কার করে, আসলে কোনও প্রতিযোগিতাই হচ্ছিল না। ফাঁকা মাঠে শুধু সে একাই কেবল ছুটছে আর কেউ কোথাও নেই। প্রতিযোগিতা হয়তো অন্য কোথাও হচ্ছে অথবা হয়নি, হবে না কখনও, সে জানতে পারেনি। ফাঁকা গ্যালারির দিকে তাকিয়ে সেইসময় বিশ্বজয়ী দৌড়বীর হাঁটুতে মুখ গুঁজে কাঁদতে বসে।
এ আমার এক রাতের গল্প। আমার ব্যস্ত জীবনের একঘেয়ে রাত্রিগুলোর মধ্যে মাত্র একটা রাত।
অফিস থেকে বেরতে দেরি হয়েছে আজ। রাত প্রায় এগারোটা। আগামী কালের ক্লায়েন্ট মিটিংয়ের একটা প্রেজ়েন্টেশন নিয়ে আটকে গিয়েছিলাম। এই মিটিংটা আমার উন্নতির জন্যে খুব গুরুত্বপূর্ণ। বছরশেষের সাতঅঙ্কের বোনাসটা এই প্রেজ়েন্টেশনের উপর ডিপেন্ড করছে। আমার গাড়িটা সার্ভিসিংয়ে গিয়েছে, অ্যাপবেসড ট্যাক্সি বুক করেছি, অফিস থেকে আমার ফ্ল্যাট প্রায় একঘণ্টার পথ। এইসময় রাস্তায় ট্র্যাফিক নেই, গাড়িতেই আবার ল্যাপটপ খুলে বসি। শেষ স্লাইডটা একটু ডাল লাগছে। চোখ বন্ধ করে সেটার কথাই ভাবছিলাম। ঠিক এই সময়ে ইলির মুখটা মনে পড়ল।
ইলি আমার মেয়ে, আজ রাত ঠিক বারোটা বাজলেই সে ছয় বছর ছুঁয়ে ফেলবে। আমি ইলির জন্যে কেক কিনেছি, ব্ল্যাকফরেস্ট।
স্লাইডটা ঠিক করে নিয়েছি। এখন আমি জানলা দিয়ে বাইরের দিকে চেয়ে আছি, গাড়ি ইকো পার্ক ক্রস করছে, রাস্তার পাশে দু’হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে আছে ক্রাইস্ট-দি-রিডিমার, আমি ড্রাইভারকে এসিটা বন্ধ করতে বলে জানালার কাঁচটা নামিয়ে দিই। গা এলিয়ে দিয়ে চোখবন্ধ করে ফেলি। চোখদুটো খুব ক্লান্ত আমার।
একনম্বর গেটের সামনে ঘটনাটা ঘটল। আমি তখন জানালার বাইরে উদাস চোখে তাকিয়ে আছি। আমার চোখের সামনে টাকাপয়সার খুব জটিল একটা হিসেব। আমার গাড়ির পাশ দিয়ে শব্দ করে হাইস্পিডে একটা বাইক চলে গেল। বাইকের উপর একমুঠো প্রেম। মেয়েটা পিছন থেকে জাপটে ধরে আছে ছেলেটাকে। ওদের বাইক আমাদের গাড়িটাকে পেরনোর ঠিক পরেই একটা ষোলো চাকার লরি বাঁদিক থেকে এসে ওদের উপরে উঠে পড়ল। একদম চোখের সামনে ঘটল ঘটনাটা। দেখলাম বাইকটা উল্টে আছে। লরির চাকায় ছেলেটা আটকে গিয়েছে, ওকে নিয়েই লরিটা এগিয়ে চলেছে।
মুহূর্তের মধ্যে ছেলেটা টুকরো-টুকরো হয়ে ছড়িয়ে পড়ল গোটা রাস্তায়। লরিটাকে আটকানো যায়নি। সে চলে গিয়েছে। লরির চাকায় হয়তো এখনও মাংস লেগে আছে। মেয়েটার কিচ্ছু হয়নি, শুধু ওর হাত থেকে মৃত্যু এসে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে ভালবাসাকে। আমি সাক্ষী রইলাম। আমার গাড়ি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। গভীর রাতের রাস্তায় আকস্মিক যানজট তৈরি হয়েছে। তাকিয়ে দেখি পাশের গাড়ির জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে এক মহিলা বমি করছেন। রাস্তার মধ্যে একটা তীব্র আতঙ্ক, মেয়েটা এখন রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে। আর কোনও শব্দ নেই, শুধু একটা মেয়ের আর্তনাদ। কয়েকজন পথচলতি মানুষ ওকে সামলানোর চেষ্টা করছে, পারছে না।
আমি চোখ বন্ধ করতে চাইছি। এই সমস্ত ঘটনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইছি, স্বার্থপরের মতো অফিস অথবা ইলার কথা ভেবে নিজেকে অন্যমনস্ক করতে চাইছি, কিছুতেই পারছি না। বারবার রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ওই মেয়েটার দিকে চোখ চলে যাচ্ছে। একসময় দেখলাম ও পড়ে গেল, হয়তো জ্ঞান হারিয়েছে।
এরপর পুলিশ এল, অ্যাম্বুল্যান্স এল। রাস্তার একদিক দড়ি দিয়ে ঘিরে অন্যদিক দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা হল, আকস্মিক থেমে যাওয়া শহর আবার চলতে শুরু করল, হর্নের আওয়াজ, অ্যাম্বুল্যান্সের সাইরেন, মানুষের ব্যস্ততা। আমি এবারে জানালার কাচটা তুলে দিলাম, ভিতর থেকেই দেখলাম রক্তের দাগ বহুদূর অবধি চলে গিয়েছে। যাওয়ার পথে একঝলক মেয়েটাকে দেখতে পেলাম। নীল জিন্স, হলুদ টপ। কয়েকজন ধরাধরি করে ওকে অ্যাম্বুল্যান্সে তুলছে।
কলিংবেল টিপতেই ছুট্টে এসে দরজা খুলে দেয় আমার মেয়ে, আমার কোমর জড়িয়ে ধরে বলে, ‘‘পাপা হ্যাভ ইউ বট দ্য কেক?’’ আমি ভুলে যাই আমি মৃত্যু দেখে ফিরছি। ইলিকে কোলে তুলে ওর গালে চুমু খাই। সামনে ভিতর ঘরের দরজা ধরে দাঁড়িয়ে আছে রিনা, আমার স্ত্রী। রিনার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে, ওকে এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে আমার অস্বস্তি হয়।
তিনজনের সংসার। আমার আর রিনার মধ্যে ইলি একটা সেতু, ওর জন্যেই আজ সারা বাড়ি বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছে। অন্যদিন ইলি ন’টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে। আজ ওর চোখে ঘুম নেই। নিজের ষষ্ঠ জন্মদিন নিয়ে ইলি খুব উত্তেজিত। আমি বিনব্যাগে আধশোয়া হয়ে ইলিকে দেখছিলাম। ইলি কেমন তরতর করে বেড়ে উঠছে! ও যখন আরও বড় হয়ে যাবে, তখন বুঝতে পারবে ওর মা-বাবার সম্পর্কটা স্বাভাবিক নয়। তখন হয়তো আমি আর রিনা আলাদা থাকব। ইলিকে তখন মা-বাবার মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে, ইলি ওর মায়ের কাছেই মানুষ, মাকেই বেছে নেবে ও। একটা ইরানি সিনেমা থেকে মেয়ের নাম রেখেছিলাম ইলি। ওকে নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। মনে আছে, নার্সিংহোমে ডাক্তারবাবু যখন প্রথম ওকে আমার কোলে তুলে দিয়েছিল, আমি আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলাম। অথচ সেই চূড়ান্ত সুখ আমি ধরে রাখতে পারিনি। সেদিনের পর থেকে আমিই দ্রুত বদলে গিয়েছি। ততদিনে উন্নতির শিখরে চড়ার নেশায় পেয়ে বসেছে আমাকে।
আমি বাংলা ভালবাসতাম। প্রথম যৌবনে আমার সাহিত্যে অনুরাগ ছিল। আমার উপর রাগ করেই বুঝি রিনা ইলির গায়ে কখনও বাংলার আঁচ লাগতে দেয় না। ইস্কুলে ইলির ফার্স্ট ল্যাঙ্গুয়েজ ইংরেজি, সেকেন্ড হিন্দি। আমি কখনও পিটিএম আটেন্ড করি না, আমি কখনও মেয়ের সঙ্গে বইখাতা খুলে বসি না। কাজেই ইলির লেখাপড়া নিয়ে কথা বলা আমার সাজে না। আমি শুধু ওর নামটুকু দিয়েছি। ইলির জীবনে বাকি সব ওর মা। ইলি এখনও সব বোঝে না। একসময় নিশ্চয়ই বুঝবে, ওর জীবনে ওর বাবা একমুঠো টাকা ছাড়া আর কিছুই নয়। যেদিন বুঝবে, সেদিন আর গভীর রাতে বাড়ি ফিরলে ‘পাপা!’ বলে ইলি আমার কোমর জড়িয়ে ধরবে না।
ইলি আর ওর মা টেবিল সাজিয়ে ফেলেছে। ছ’টা মোমবাতি জ্বালানো হয়েছে। আমি শুনতে পাই, রিনা চাপা স্বরে ইলিকে বলছে, ‘‘আস্ক পাপা টু জয়েন আস...’’ ইলি দৌড়ে আসে আমার কাছে, আমার হাত ধরে টানাটানি করে, ‘পাপা প্লিজ কাম... কাম না...’ আমি ইলির হাত ধরে টেবিলের কাছে আসি। ইলি এক ফুঁয়ে নিভিয়ে ফেলে ছ’টা বছর। আমি আর রিনা একসঙ্গে হাততালি দিয়ে উঠি। রিনা এবং আমি একসঙ্গেই ইলিকে কেক খাওয়াই। এই সময় রিনার সঙ্গে আমার চোখাচুখি হয়। রিনার চোখে আমি শুকনো প্রেম দেখতে পাই। ও ভাল নেই, আমি জানি। আমরা কেউই ভাল নেই।
সারাদিন চূড়ান্ত ব্যস্ততা, সন্ধের মৃত্যুদৃশ্য, তারপর বাড়ি ফিরে ইলির জন্মদিন পালন, রিনার সঙ্গে চোখে-চোখে কষ্টযাপন... একদিনে কতগুলো জীবন কাটিয়ে ফেলেছি আমি? রিনা ইলির সঙ্গে শুয়ে পড়েছে। ওদের ঘর এখন অন্ধকার। আমার ঘর অনেক দিন ধরেই আলাদা।
শুয়েই পড়েছিলাম। চোখ বন্ধ করতেই সেই হলুদ টপ পরা মেয়েটা চোখের সামনে ভেসে উঠল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সে চিৎকার করছে। বিছানায় শুয়ে থাকতে-থাকতে কেমন কুঁকড়ে গেলাম। কিছুতেই চোখের সামনে থেকে যায় না সেই মেয়ে। এরকম সময়ে রিনার অভাব অনুভব করি। আজ যদি আমি এতটা একা না হতাম, যদি রিনা আমার পাশে থাকত এই সময়, তা হলে হয়তো এমন অসহায় লাগত না। রিনার সঙ্গে আমার সুখের দিনগুলো ভাবার চেষ্টা করি। বিয়ের পর ওকে নিয়ে শান্তিনিকেতন ঘুরতে গিয়েছিলাম। কোপাইয়ের জলে পা ডুবিয়ে রিনা গান গেয়েছিল। কী গান যেন... আঃ! মনে পড়ছে না কিছুতেই।
অনেক দিন পর এই রাতে আমার রিনাকে ভালবাসতে ইচ্ছে হয়। তখনই মোবাইল বেজে ওঠে। তিথি ফোন করেছে। তিথি আমার অফিসের জুনিয়র, আমি তিথির ম্যানেজার। তিথির সঙ্গে আমার অবৈধ সম্পর্ক আছে। তিথি প্রোমোশন চায়। ও আমার মতো গাড়ি-বাড়ি চায়, আর আমার সময় কাটানোর জন্যে একটা মেয়ে দরকার— সরল সমীকরণ।
তিথি মাঝে-মাঝে এমন গভীর রাতে ফোন করে। ও জানে আমার একাকিত্বের কথা, ও ভাবে এমন নিঝুমরাতে ফোন করলে ওর প্রোমোশন পাওয়ার রাস্তা সহজ হবে। আমরা দু’জনের কেউই বোকা নই। আমরা দু’জনেই জানি আমরা শুধুমাত্র স্বার্থের কারণে কাছাকাছি এসেছি। প্রয়োজন মিটে গেলে আমরা একে অপরকে ছুড়ে ফেলে দেব। তবু এই রাতে তিথির ফোন পেয়ে আমি খুশি হই।
ফোন ধরতেই তিথি সুরেলা গলায় বলে, ‘‘কী করছ?’’
প্রত্যুত্তরে আমিও কণ্ঠে মদ মিশিয়ে ফেলি, ‘‘তোমার কথাই ভাবছিলাম... অনেক বছর বাঁচবে তুমি তিথি...’’
‘‘ন্যাকামি কোরো না...’’
‘‘সত্যি বলছি বিশ্বাস করো...’’
‘‘বৌ ঘুমিয়ে পড়েছে?’’
‘‘হ্যাঁ। এখন শুধু তুমি আর আমি...’’
তিথির বর অফিস ট্যুরে হায়দরাবাদে। এই দিনগুলোতেই তিথি এমন মধ্যরাতে ফোন করে। এমন একলা রাতগুলোয় আমি অনেকসময় তিথির ফ্ল্যাটে চলে যাই। আজ যাইনি কারণ ইলির জন্মদিন। তিথির সঙ্গে কথা বলতে আজ ভাল লাগছিল না। রিনাকে ভালবাসার দিনগুলো আজ বড্ড মনে পড়ছে। কিন্তু ফোন রেখে দিলে আমি আবার এই অন্ধকার ঘরে একা হয়ে যাব। একা হয়ে গেলেই আবার সেই হলুদ টপ, নীল জিন্সের মেয়েটা চোখের সামনে এসে দাঁড়াবে, আমি তিথির সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে থাকি...
এইসময়ে ফোনে বিপবিপ আওয়াজ শুনে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখি পাশের ঘর থেকে রিনা ফোন করছে। এত রাতে! আমার ফোন ওয়েটিং পেয়েও রিনা ফোন কেটে দেয় না, বরং ফোন করে যেতে থাকে, একবার দু’বার তিনবার...
তিথি ওপ্রান্ত থেকে কথা বলে যাচ্ছে, ‘‘হ্যালো... কী হল, উত্তর দিচ্ছ না যে? শুনতে পাচ্ছ না? হ্যালো...’’ আমি নীরব হয়ে ফোনের স্ক্রিনের দিকে চেয়ে আছি, আমি যেন শুনতে পাচ্ছি এই মুহূর্তে রিনা কী শুনছে, ‘‘ইয়োর কল ইজ় অন ওয়েট...’’
রিনা বোধ হয় আমার কাছে আসতে চেয়েছিল এই রাত্রে, আমিও যেতে চেয়েছিলাম, হল না।
ফোন সুইচড অফ করে আমি ল্যাপটপ খুলে প্রেজ়েন্টেশনটা দেখতে থাকি, মনে হল দরজায় একবার ঠক্ঠক্ করে আওয়াজ হল। উঠে গিয়ে দরজা খুললাম। কেউ নেই। রিনার ঘরের আলো নেভানো। আমি ওর দরজার কাছে গিয়ে খুব আসতে করে ডাকলাম, ‘‘রিনা...’’
কোনও উত্তর নেই। নিজের ঘরে ফিরে আসি। ভোর হচ্ছে।
পরের দিন সকালে সব কিছু একেবারে একরকম, কোথাও এমন কিছু নেই যা ব্যতিক্রম।
রিনা ইলিকে নিয়ে ইস্কুলে চলে যায়। ইলি ‘‘বাই পাপা’’ বলে আমার দিকে হাত নাড়াতে-নাড়াতে গাড়িতে চাপে। আমি রিনার
দিকে একবার তাকিয়েছিলাম, কিন্তু না, এই সকলে রিনা একবারও
ফিরে তাকায় না আমার দিকে।
ভাল নই, আমি একেবারেই ভাল প্রেমিক হতে পারিনি। ভাল পাপা হতেও পারিনি।
গাড়িতে বসে আছি। আমার কোলে ল্যাপটপ খোলা। আমি টাইয়ের নব ঠিক করছি বাঁ হাতে, খুব ইম্পর্ট্যান্ট একটা প্রেজ়েন্টেশন, বোনাসের অঙ্কটাও বিরাট বড়। গাড়িটা সেই রাস্তাটাই আসতে দেখলাম, রাস্তার কোথাও একবিন্দুও রক্ত পড়ে নেই। কেউ দেখে কখনও বুঝতেই পারবে না, এই রাস্তায় হলুদ টপ নীল জিন্স পরা একটা মেয়ে গভীর রাতে চিৎকার করে কেঁদেছিল।
কোথায় যাচ্ছি আমি? কিসের এত তাড়া আমার? আর কতটা পথ বাকি আছে? একরাতের কতকগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমাকে হঠাৎ কেন এমন করে নাড়িয়ে দিল জানি না। গাড়ির মধ্যেই ল্যাপটপ বন্ধ করে হঠাৎ হাউহাউ করে কেঁদে ফেলি, পা গুলো বুকের কাছে জড়ো করে কেমন কুঁকড়ে যাই।
ড্রাইভার রাস্তার পাশে গাড়ি দাঁড় করিয়ে আমার দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকায়, ‘‘কেয়া হুয়া সাব?’’
আমি সাদা চোখে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে, বলি, ‘‘কুছ নেহি... তুম চলতে রহো...’’
গাড়ি স্টার্ট হয়, আমি আবার ল্যাপটপ খুলে বসি। প্রতিযোগিতা চলতে থাকে। একটা অন্ধকার
রেসিং ট্র্যাক, একটা বাইক, আর একটা লরি...
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy