Advertisement
E-Paper

মিথ্যা সত্য

হিল্লে হল ছেলের। সে নিজেই করল। বন্ধুর সঙ্গে পার্টনারশিপে পাড়ার প্রোমোটারকে বিল্ডিং মেটিরিয়াল সাপ্লাইয়ের বিজ়নেস করবে। শুনেই স্মৃতি ঝিলিক দিল মনে।

ছবি: বৈশালী সরকার।

ছবি: বৈশালী সরকার।

বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৩
Share
Save

বাবু ফিরেছে?”

অন্যান্য সব পুরোহিতের মতোই নিজের নাম হারিয়েছেন গোপাল ভট্টাচার্য। বহু দিন ধরেই ‘ঠাকুরমশাই’ নামে পরিচিত। ভবানীপুর, লেক মার্কেটের দুটো বাড়ি আর চেতলা রোডের শীতলা মন্দিরে দু’বেলা নিত্যপুজো করেন। এ ছাড়াও বারোয়ারি পুজো আর শ্রাদ্ধে গীতাপাঠ। কালীঘাট লাগোয়া তিনকড়ি ঘোষ লেনের ভাড়াবাড়িতে দিন গুজরান।

একমাত্র ছেলে হওয়ায় অতিরিক্ত আদর, প্রশ্রয় পেয়েছিল দেবাশিস। সেই কারণেই বোধহয় পড়াশোনা ভাল করে হল না। চেতলা বয়েজ় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে আশুতোষ কলেজের আর্টস গ্র্যাজুয়েট। ছেলে যে কোনও চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে না, জানতেন গোপাল। বিশ্বাস রেখেছিলেন, সবারই কিছু না কিছু হিল্লে হয়, ওরও হবে।

নিজের হিল্লের আশায় গ্রাম ছেড়ে এসেছিলেন কলকাতায়। উঠেছিলেন পুরোহিত কাকার বাড়িতে। কলকাতার আকাশে নাকি টাকা ওড়ে। সেই টাকা ধরার আগেই আকাশ ছাইল কালো মেঘে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হলেন কাকা। বাবার নির্দেশ, উপকারীর ঋণ মেটানো অবশ্য কর্তব্য। কাকার ছেলে নেই, একটিমাত্র মেয়ে। নিতেই হল সংসারের ভার। পুরোহিত হওয়া ছাড়া সেই মুহূর্তে কোনও বিকল্প ছিল না। আকাশের টাকা আকাশেই রয়ে গেল, হিল্লে হল না।

হিল্লে হল ছেলের। সে নিজেই করল। বন্ধুর সঙ্গে পার্টনারশিপে পাড়ার প্রোমোটারকে বিল্ডিং মেটিরিয়াল সাপ্লাইয়ের বিজ়নেস করবে। শুনেই স্মৃতি ঝিলিক দিল মনে। নিজের না পারার স্মৃতি। ‘আমি পারিনি তো কী হয়েছে, ছেলে পারবে’— আবার জাগল আশা। প্রোমোটিংয়ের বাজার যথেষ্ট ভাল হওয়ায় এই বার নিশ্চিত ঘরে আসবে আকাশ-ধন।

উপার্জন-উত্তেজনায় গোপাল বিস্মৃত হলেন, ব্যবসায় বিনিয়োগ প্রয়োজন। ছেলে জানাল, বেশির ভাগ ইনভেস্টমেন্ট পার্টনারের হলেও লাখ পাঁচেক তাকে দিতেই হবে। শুনেই মাথায় যেন বাজ পড়ল গোপালের। কোথায় পাবেন এত টাকা? সংসার সচ্ছল ভাবে চললেও, সঞ্চয় যে প্রায় কিছুই নেই। হিল্লে ভেবেছিলেন, ঈশ্বরকৃপায় কোনও প্রাইভেট কোম্পানির চাকরি।

তবুও চেষ্টা করলেন। এ তো শুধু ছেলের হিল্লে নয়, নিজেরও স্বপ্নপূরণ। যজমান-বাড়ি, বন্ধুবান্ধবদের সাহায্য পেলেও, সব মিলিয়ে সিন্ধুতে বিন্দুমাত্র। বাপের সাধ্য যে এর বেশি আর নেই, বুঝতে নারাজ ছেলে। প্রথমে অভিমান, তার পর রাগ, শেষে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ।

স্ত্রী উমা সরল গৃহবধু। বিয়ে ঠিক করেছিলেন বাবা। বুঝিয়েছিলেন, গরিব ব্রাহ্মণের কন্যা উদ্ধারে মেলে দেব-করুণা। অতশত ভাবেননি গোপাল। প্রথম দর্শনেই পছন্দ হয়েছিল উমাকে।

পছন্দ যে ভুল হয়নি, বিয়ের কিছু দিন পরই টের পেয়েছিলেন। বিশেষ করে ছেলে হওয়ার পরে। মানুষ যে মানুষকে কতখানি ভালবাসতে পারে, উমাকে না দেখলে বোধহয় জানতেই পারতেন না। সারা ক্ষণ সন্তান প্রতিপালন আর স্বামীর সেবায় ব্যস্ত। নিজের কোনও চাহিদা তো নেই-ই, স্বামী-সন্তানের চাহিদা পূরণেই যেন মোক্ষপ্রাপ্তি। সংসারের বাইরে যে বিরাট একটা পৃথিবী আছে, তা জানেও না, জানতে চায়ও না। ঈশ্বরকৃপায় যেটুকু মিলেছে সেইটুকুতেই সুখী।

ছেলের ব্যবসার প্রয়োজনে হাতের চুড়ি দিতে চেয়েছিল উমা। নেননি গোপাল। ওই তো দু’গাছা ফিনফিনে সোনার চুড়ি, তাও বাবার দান। নিজে যা দেননি তা নেন কী করে? তা ছাড়া কতই বা দাম পাওয়া যেত? সিন্ধু থাকত বিন্দুতেই।

ছেলের অস্বাভাবিক আচরণে উমা উদ্বিগ্ন, তটস্থ। বারংবার অনুরোধ, ছেলের আবদার মিটিয়ে দিলেই মঙ্গল। অশান্তিতে জেরবার গোপাল স্থির করলেন, বাগনানের পৈতৃক জমি বেচে শান্তি ফেরাবেন।

বাদ সাধলেন দাদা নিতাই ভট্টাচার্য। কিছুতেই পৈতৃক জমিতে বাইরের লোক ঢুকতে দেবেন না। সাধ্য থাকলে নিজেই জমি কিনে ভাইপোর উপকার করতেন। তা ছাড়া গোপালের সম্বৎসরের ভাতের জোগান দেয় জমির ধান। বেচলে সংসার চলবে কী করে? সংসার যে চলার বদলে থমকে গিয়েছে, দাদাকে বোঝাতে পারলেন না গোপাল। চেতলা হাটের এক ব্যবসায়ীর কাছে ধার করলেন চড়া সুদে।

শুরু হল ব্যবসা। প্রথম কিছু মাস পরে টাকার মুখও দেখা গেল। ছেলে অবুঝ হলেও স্বার্থপর নয়। লভ্যাংশের বেশির ভাগটাই তুলে দেয় বাবার হাতে। সেই টাকায় গোপাল সুদ মেটায়, কখনও আসলের কিছুটা। মনে পড়ে ছোটবেলায় কাটা ঘুড়ি ধরার আনন্দ-স্মৃতি।

আনন্দ স্থায়ী হল না বেশি দিন। পার্টনারের সঙ্গে বাধল বিবাদ। টাকা না পরিশ্রম, কিসের গুরুত্ব অধিক হল না নির্ধারণ। তিক্ততা সেই পর্যায়ে পৌঁছল, যেখানে পৌঁছলে বিচ্ছেদ অনিবার্য। পার্টনারশিপ থেকে বিচ্ছিন্ন হল ছেলে।

পার্টনার ছাড়লেও, দেনা ছাড়বে কেন? সবাই যে হেতু ছেলেকে চেনে, তাই আসতে লাগল তাগাদা। ছেলে অসহায়। স্ত্রী জানায় ছেলের আত্মহত্যার অভিপ্রায়, সঙ্গে আকুল আকুতি। ধার বা সাহায্য পাওয়ার আর কোনও উপায় না থাকায় গোপাল শরণাপন্ন হলেন প্রোমোটারের। ভাগ্যক্রমে প্রোমোটার নিজেরই যজমান।

ব্যবসায় টাকাই মোক্ষ, সম্পর্ক তুচ্ছ— প্রোমোটারের সঙ্গে কথা বলে জানলেন গোপাল। বুঝলেন, ভক্তি আন্তরিকতা নিষ্ঠা যজমানের কাছে গুরুত্বহীন। টাকা দিয়েই মেটাতে হবে টাকার ঋণ। নিজের বাড়ি এবং পাড়ার সব পুজো করতে হবে এক টাকা দক্ষিণায়। বিনিময়ে প্রোমোটার পাওনাদারদের সামলে দেবে, ছেলের পেমেন্ট থেকে একটু-একটু করে ঋণ শোধ করবে আর নতুন করে ব্যবসা শুরু করার জন্য দেবে কিছু টাকা। প্রোমোটারের এই প্রস্তাবে রাজি হতেই হল গোপালকে। অক্ষত থাক নিজের অংশ, মায়ের নাড়ি-কাটা ধন।

শান্তি ফিরল সংসারে। প্রোমোটারের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া পুরোটা জানতে পারল না ছেলে। নতুন উদ্যমে শুরু করল ব্যবসা। একক মালিকানায় বাড়ল লাভ। নতুন ব্যবসার ঋণের সঙ্গে শোধ হতে লাগল চেতলা হাটের ব্যবসায়ীর ঋণও। বাড়তি প্রাপ্য অঢেল মাছ-মাংস-মিষ্টি। স্ত্রী খুশি, স্বপ্ন বোনে ছেলের বিয়ের।

“ফিরবে... তুমি খেয়ে নাও।”

রাতে এক সঙ্গে খাওয়াই বাড়ির প্রথা। চলেছিল অনেক দিন। বন্ধ হল ব্যবসা রমরমিয়ে চলার পরে। ছেলে শুরু করল মদ্যপান।

প্রথমটায় গুরুত্ব দেননি গোপাল। গ্রামে তেমন চল না থাকলেও কলকাতায় মদ্যপান অতি স্বাভাবিক। তা ছাড়া ব্যবসায় পরিশ্রমও প্রচুর। প্রায় দিনই রাত থাকতে বেরোতে হয়। ফিরতে দুপুর। ক্লান্তি কাটাতে একটু নয় খেলই।

‘একটু’ থাকল না এক সময়। বাড়তে-বাড়তে বেহেড মাতাল। বাড়িতে খায়ও না অর্ধেক দিন। যে দিন খায়, সে দিন খাইয়ে দিতে হয় উমাকে। চোখের জলে ছেলেকে খাওয়ায় মা। হয়তো ভাবে, এমন শাস্তি কোন পাপে?

বিষয়টা অপছন্দ হলেও কোনও রকমে সহ্য করছিলেন গোপাল। কিন্তু এক সময় সংসারে যখন টাকার জোগান কমতে শুরু করল, তখন বিচলিত হলেন। পর্যাপ্ত টাকা না পেলে ধার শুধবেন কী করে? চেষ্টা করলেন লাগাম হাতে নিতে।

বিফল চেষ্টা। তত দিনে সততা আর পরিশ্রম করার ক্ষমতায় ছেলে হয়ে উঠেছে প্রোমোটারের কাছের লোক। জুটেছে নতুন বন্ধু-দল। প্রোমোটারের দৌলতে কাউন্সিলার, এমএলএ, এমপি-দের কাছে অবারিত দ্বার। অর্জন করেছে পাড়ার যে কোনও সমস্যা তুড়ি মেরে সমাধান করার ক্ষমতা। সাফ জানিয়ে দিল— কোনও বাপের ব্যাটার হিম্মত নেই টাকা চাওয়ার।

সত্যিই কেউ চাইল না। মাস, বছর গেলেও প্রোমোটার বা চেতলা হাটের ব্যবসায়ী সুদ আসল কিছুই চাইল না। মনে বল পেলেন গোপাল। কিন্তু ছেলের এই উচ্ছৃঙ্খল যাপন তো মেনে নেওয়া যায় না। স্থির করলেন, যেমন করে হোক ছেলের বিয়ে দেবেন। যদি মতি ফেরে। তা ছাড়া উমার বড্ড শখ, নাতি-নাতনির সঙ্গসুখ পেয়ে পৃথিবী ছাড়ার। স্ত্রীকে পাত্রীর খোঁজ করতে বললেন গোপাল।

ছেলেকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া সাধ্যাতীত, তাই নেশা নিয়ন্ত্রণের জন্য শুরু করলেন বিশেষ পুজো, হোম-যজ্ঞ, মানত। এত দিনের নিষ্ঠা, ভক্তির প্রতিদান কি না দিয়ে থাকতে পারবেন ঈশ্বর? কত দুর্বিনীত অসুরদের বর দান করেছেন, সেই তুলনায় তিনি তো ভক্তিমান মানুষ।

বেশ কিছু দিন পরে গোপাল বুঝলেন, নির্বিষ মানুষকে নিয়ে দেবতারা আদৌ ভাবিত নন। বরং অসুরদের মতো বেপরোয়া হলেই বোধহয় ভাল হত। তত দিনে ছেলের হাল আরও খারাপ। সংসারে টাকা দেওয়া প্রায় বন্ধ। কোনও দিন বাড়ি ফেরে, কোনও দিন ফেরে না। এক সঙ্গে খাওয়া তো অলীক আশা। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলেই স্বস্তি।

ফিরল না এক রাতে। কালীপুজোর রাত। নিষ্ঠাভরে পুজো করেছেন গোপাল। গোপনে নিজের বুকের রক্ত অঞ্জলি দিয়েছেন দেবতার পায়ে। যদি মন ফেরে মায়ের, যদি কৃপাদৃষ্টি বর্ষণ করেন ছেলের প্রতি। আর তো কোনও পথ খোলা নেই। ব্যর্থ হয়েছে বশীকরণ চেষ্টাও।

দুঃসংবাদ আসার অলিখিত সময় বোধহয় ভোর। ভোরেই খবর এল ছেলের। লাশ হয়ে পড়ে আছে টালিগঞ্জ স্টেশনের কাছে। কে মারল, কেন মারল, জানা গেল না কিছুই। শুধু কানে এল উড়ো খবর।

মাঝেমধ্যে মদ খাওয়ানো আর বাড়তি খাতির করলেও, পেমেন্ট থেকে টাকা কেটেই যাচ্ছিল প্রোমোটার। হুঁশ ছিল না ছেলের। হুঁশ হতেই হিসাব চেয়েছিল। পোড়-খাওয়া প্রোমোটার দেখিয়ে দিল হিসাবের খাতা। পুরনো ঋণ শোধ হলেও নতুন ঋণ শোধ হতে সময় লাগবে ঢের। মানতে চায়নি ছেলে। হুমকি দিল সঙ্গ ত্যাগের। প্রমাদ গুনল প্রোমোটার। ছেলের যা এলেম, এই লাইনে যার কাছে যাবে, তারই উন্নতি হবে। হয়তো নিজেও প্রোমোটার বনে যেতে পারে কোনও দিন। নিকেশ করে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

উড়ো খবরে গোপালের নির্বিষ অন্তর গরলপূর্ণ। ফণা উঁচিয়ে তেড়ে গেলেন। ঋণ যদি থেকেও থাকে, কিছুতেই শোধ করবেন না। বরং সেই টাকা ব্যয় করবেন প্রোমোটারকে ফাঁসিকাঠে ঝোলাতে। পাপিষ্ঠের বাড়ি পুজো এড়াতে ছাড়বেন পাড়া।

জাদুবাঁশিতে প্রোমোটার নুইয়ে দিল ফণা। হাজার চেষ্টাতেও গোপাল কিছুই প্রমাণ করতে পারবেন না। আর পাড়া ছাড়ার তো প্রশ্নই নেই ঋণ শোধ না করে। বাড়াবাড়ি করলে বা পুলিশের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে, স্বামী-স্ত্রীর খুব তাড়াতাড়িই মোলাকাত হবে ছেলের সঙ্গে।

বাড়াবাড়ি দূর অস্ত, আর এক পা-ও এগোননি গোপাল। এক প্রিয়জনের জন্য কি বলি দেওয়া যায় অন্য প্রিয়জনকে? উদাস মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবেন, গরিব ব্রাহ্মণকন্যা উদ্ধারে মেলে দেব-করুণা। মনে পড়ে, সবারই কিছু না কিছু হিল্লে হয়, ওরও হবে।

আজও সাইকেল চালিয়ে ঘুরে-ঘুরে পুজো করেন গোপাল। না, ঈশ্বরের উপর আর নেই কোনও রাগ-অভিমান। সৃষ্টিকর্তা হয়তো সৃষ্টির মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন খুঁত। তাই ফিরিয়ে নিলেন। আবার পাঠাবেন মেরামত করে। গড়ে ভাঙা, ভেঙে গড়াই যে তাঁর নিত্য খেলা।

এখনও গুনতে হয় সুদ। প্রোমোটারের মতো চেতলা হাটের ব্যবসায়ীও মকুব করেনি ঋণ। আসল বোধহয় আর কখনও শোধ হবে না এই জীবনে।

জীবনের কথা ভাবলেই বুক কেঁপে ওঠে গোপালের। যদি নিজের ডাক আগে আসে, তা হলে উমার কী হবে? কী করে করবে ঋণশোধ? অবলা মানুষটা যে কিছুই বোঝে না বাস্তবের ঘোরপ্যাঁচ। ঈশ্বরের কাছে আর্তি জানান দীর্ঘায়ুর।

আড়ালে চোখের জল মুছলেন উমা। প্রায় বারো বছর ছেলে মারা গেলেও দশ বছর স্বামীকে দিয়ে আসছেন একই উত্তর। তিনি খেয়ে নিন... ছেলে তার সময় মতো ফিরবে। একটি বাক্যের মধ্যে স্বামী যদি ছেলেকে খুঁজে পায়, ক্ষতি তো কিছু নেই। সহধর্মিণী হিসেবে সুখে-দুঃখে স্বামীর পাশে থাকাই তো উচিত। তাই রোজ চোখের জলে করেন মিথ্যাচার।

ঘরে এসে ছেলের ছবির দিকে তাকালেন গোপাল। রোজই তাকান। করেন শান্তিকামনা। বছর দশেক আগে ছেলের শেষকৃত্য হয়ে যাওয়ার দিন কয়েক পর এক দিন বাড়ি ফিরে আনমনেই স্ত্রীকে করে ফেলেছিলেন অভ্যস্ত প্রশ্ন। ছেলে ফিরেছে কি না। পরক্ষণেই সাবলীল উত্তরে চমকে উঠেছিলেন। খানিক ধাতস্থ হয়ে ভাবলেন, এইটুকুতেই ছেলে যদি মায়ের মনে বেঁচে থাকে তো থাক না। তাই রোজ রাতে বাড়ি ফিরে করেন মিথ্যা প্রশ্ন। পান মিথ্যে উত্তর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Short story

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}