Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
ধারাবাহিক উপন্যাস: পর্ব ২
Bengali Story

হাওয়ার আড়ালে

প্রাত্যহিক অভ্যেসে স্নান সেরে চায়ের কাপ বাগিয়ে সবে টিভির চ্যানেল সার্ফ করতে বসেছে আকিঞ্চন, বসেই উঠে দাঁড়াল। নজর প্রথমে নিজের মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে, তার পর স্ত্রীর দিকে, “আজ কী বলেছ মেহুকে?”

ছবি: পিয়ালী বালা।

ছবি: পিয়ালী বালা।

অজিতেশ নাগ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৫:১৬
Share: Save:

পূর্বানুবৃত্তি: শ্বশুর শ্যামলেন্দু, শাশুড়ি কেতকীবালা, আইনজীবী স্বামী আকিঞ্চন আর মেেয় মেহুলিকে নিয়ে কস্তুরীর সংসার। কেতকীবালা কস্তুরীর প্রতি অনুকূল মনোভাবাপন্ন নন। আকিঞ্চনের প্রশ্রয়ে স্বভাব বদলে যাচ্ছে আঠারো ছুঁইছুঁই মেহুলির। আকিঞ্চন বলে রেখেছে, আঠারোতম জন্মদিনে সে মেয়ের জন্য স্কটল্যান্ড থেকে উড়িয়ে আনবে ওয়াইনের বোতল। এক সকালে মায়ের রান্না পছন্দ না হওয়ায় পোর্সেলিনের প্লেট ছুড়ে মাটিতে ফেলে ভাঙে মেহুলি, সেখান থেকেই এ গল্পের শুরু।

ভিতরে তত ক্ষণে নরক গুলজার। ঘর ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। হালকা মদের গন্ধও পেল কস্তুরী। সেটাও কথা নয়। কিন্তু তার শাশুড়িমা দু’-একটি চোখা চোখা বাক্য নিক্ষেপ করায় মেহুলি দাঁত চেপে বলে ওঠে, “ফাকিং নেটিভ ভিলেজার!”

অস্ফুটে বলা কথাটা কেতকীবালার কানে না গেলেও কস্তুরীর কান এড়াল না। আর সহ্য হয়নি। কস্তুরী কেতকীবালার ব্যবহারে তিতিবিরক্ত হয়েই থাকে প্রায়শই, কিন্তু তা বলে বড়দের সম্মান জানাতে তার কসুর হয় না। আজ ইগনোর করলে মেহুলি মনে করবে এটাই স্বাভাবিক, ফের পরে কোনও দিন হয়তো পুনরাবৃত্তি ঘটাবে। মনে আছে, স্বভাবের বাইরে গিয়ে সে দিন মারাত্মক চেঁচিয়ে উঠেছিল কস্তুরী। মেহুলি মায়ের এই চেহারা কোনও দিন দেখেনি, দেখেনি কেতকীবালাও। ফলস্বরূপ কেতকীবালা তড়িঘড়ি একতলায় অদৃশ্য হয়ে গেলেন, মেহুলির বন্ধুরা সবাই একে একে বিদায় নিল আর মেহুলিও গুম মেরে গেল। কস্তুরীর প্রথমে কষ্ট হলেও পরে মনে হয়েছিল সে মেয়েকে অন্তত এটা বোঝাতে পেরেছে যে, কোনটা এই রায়বাড়ির সংস্কৃতির সঙ্গে যায় আর কোনটা যায় না। কস্তুরী বোঝেনি, এটা কালবৈশাখী আসার আগের পূর্বাভাস মাত্র।

প্রাত্যহিক অভ্যেসে স্নান সেরে চায়ের কাপ বাগিয়ে সবে টিভির চ্যানেল সার্ফ করতে বসেছে আকিঞ্চন, বসেই উঠে দাঁড়াল। নজর প্রথমে নিজের মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে, তার পর স্ত্রীর দিকে, “আজ কী বলেছ মেহুকে?”

কস্তুরী ওভেনে ডিমের ডালনা গরম করছিল। প্রথমটা বুঝতে পারল না।

“কী, জবাব দিচ্ছ না যে! কী বলেছ মেহুকে?”

আকিঞ্চনের এখন মুখ থমথম করছে। কস্তুরী বলল, “তোমাকে কে বলল?”

উত্তরে আকিঞ্চন মোবাইল দেখিয়ে বোঝাল মেহুলি হোয়াটসঅ্যাপ করেছে। কস্তুরী মনে মনে গুছিয়েই রেখেছিল, সেই মতো তার বক্তব্য শুরু করতে যাচ্ছিল, সেটুকুও যেন তর সইল না আকিঞ্চনের। লম্বা লম্বা পা ফেলে পৌঁছে গেল মেহুলির রুমে। খানিক পরে ফিরে এল।

তার পরে যে ভাষায় তাকে আক্রমণ করেছিল তার স্বামী, এখনও ভাবলে কস্তুরীর চোখ ভিজে আসে। কিছুতেই কিছু শুনতে চাইছিল না আকিঞ্চন। অপমানিত হওয়ার চাইতে বেশি অবাক হয়েছিল কস্তুরী। কোনও মতে বলতে পেরেছিল, “কী কাণ্ড! আমাদের নিজের মেয়ে বখে যাচ্ছে, সেটা আমাকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে? হাউ রিডিকিউলাস!”

“কিসের রিডিকিউলাস! মেহুলি জাস্ট তার বন্ধুদের নিয়ে কোয়ালিটি টাইম পাস করছিল, এই তো? আমার বয়সে আমিও করেছি। তোমার প্রবলেমটা কী?”

“মেয়ে শুধু আড্ডা দিলে কিছু বলার ছিল না। বন্ধুদের নিয়ে মেয়ে ড্রিঙ্ক করছিল। আর ইউ অ্যাওয়ার অব দ্যাট?”

“ইয়া। আই নো। প্রবলেমটা কোথায়? আমি ওকে পারমিশন দিয়েছি।”

“আকিঞ্চন!”

“লিসন। এটা রায়বাড়ি, তোমাদের মালবাজারের সো কলড সুপারস্টিশাস ফ্যামিলি নয়,” কেটে কেটে বলে আকিঞ্চন।

মুড খারাপ হলে এই কথা আকিঞ্চন উনিশ বছর আগেও বলত, এখনও বলে। আগে খুব মনে লাগত, এখন শকপ্রুফ হয়ে গেছে। কস্তুরী জানে ওটা আকিঞ্চনের ঢাল। তর্কে পেরে না উঠলে তখন এই রকম ব্যবহার করে। কস্তুরী হিমঠান্ডা গলায় বলল, “রায়বাড়ির নাবালক মেয়েরা স্মোক করে বুঝি! ওটাই বুঝি লেটেস্ট কালচার?”

থমকাল আকিঞ্চন। কিছু একটা বলতে গিয়ে আটকে গেল। গলা তুলে ডাকল মেয়েকে, “তুই স্মোক করছিলি?” মেহুলি জ্বলন্ত চোখে এক বার মায়ের দিকে তাকিয়ে নিল। কস্তুরী আশা করেছিল পিঠ বাঁচাতে মেয়ে মিথ্যে কথা বলবে। মেহুলি কিন্তু সে দিকে না গিয়ে মুখের উপর ঝাঁপিয়ে আসা চুল সরিয়ে জবাব দিয়েছিল, “হ্যাঁ, করেছি। তো?” এমন সপাট জবাবে থতমত খেয়ে গিয়েছিল আকিঞ্চনও। তার পর যেন আচমকা দম কুড়িয়ে আপাতকঠোর হয়েছিল, “ডার্লিং, প্লিজ় ডোন্ট স্মোক। আমি তোমাকে আগেও ওয়ার্ন করেছিলাম। ওয়াইন চলতেই পারে, বাট নো টোব্যাকো।”

“বাপি, জাস্ট টু অর থ্রি পাফস। দ্যাট’স অল।”

যেন খড়কুটো ধরে ফেলতে পেরেছে, এমন মুখ করে আকিঞ্চন বলেছিল, “ওহ! জাস্ট থ্রি! দেন ইট’স ওকে। বাট মেহু, নো ফারদার পাফস, নট আ সিঙ্গল ওয়ান। ওকে?” মাথা নেড়ে লাফাতে লাফাতে ঘরে চলে গিয়েছিল মেহুলি। আকিঞ্চনও ‘কেমন বকে দিলাম!’ মুখ করে কস্তুরীর দিকে তাকাতেই সে বলেছিল, “তুমি জানো আজ মেয়ে তোমার মা-কে কী বলেছে? বলেছে ফাকিং নেটিভ ভিলেজার।”

“সো? মা-বাবারা তো গ্রামেই থাকত। আজ ক্লাবে যাচ্ছে বলেই কি মা আধুনিকা হয়ে গেল না কি? আর… আজকালকার জেনারেশন কথায় কথায় ‘ফাকিং’ বলে। আমরা যেমন বলি ‘ইয়ে’, তেমন আর কী। তা ছাড়া মা-র আবার দরকার কী ছিল নাতনির ঘরে পা রাখার?”

মশা তাড়ানোর মতো করে হাত নাড়িয়ে আকিঞ্চন তরতর করে নীচে নেমে গেল। কস্তুরী দাঁড়িয়ে থাকে। এই মানুষের কাছে ‘ফাকিং’ আর ‘ইয়ে’ একই। আকিঞ্চন এখন নীচে গেল। কস্তুরী জানে, ছেলে মা-কে কিছুই বলবে না।

কেতকীবালা তৈরি হয়েই আছে কস্তুরীর বিষয়ে কিছু বলার জন্য, আকিঞ্চন তাতে সামান্য ইন্ধন-সংযোগ করবে মাত্র। আদতে মেহুলির ব্যাপারে কিছুই বলবে না। মাকে মায়ের মতো করে বোঝাবে। তার পর চার বার ঘাড় নেড়ে সোজা বেরিয়ে যাবে ইউনাইটেড গোল্ডে। ইউনাইটেড গোল্ড ওদের ব্লকের একটা ক্লাব। খেলা, সংস্কৃতিচর্চা সব হয়। সেখানে আকিঞ্চনের মতো মাতব্বর কিছু আছে। রাত এগারোটা অবধি চলবে গুলতানি। এই বছরে ইউনাইটেড গোল্ড প্রথম বার থিমের দুর্গাপূজা করছে। এর মধ্যেই তার আয়োজন শুরু হয়ে গেছে ক্লাবের পাশের মাঠে। ঘূর্ণি না কোথা থেকে শিল্পী আনা হয়েছে। এই সব খবর আকিঞ্চন দেয় না, দেয় আলপনা। সে চলমান আকাশবাণী বিশেষ।

ভাঙা প্লেটের টুকরোগুলোর দিকে তাকিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ থম মেরে চেয়ারে বসেছিল কস্তুরী। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ক্লাব থেকে দেশাত্মবোধক গান ভেসে আসছে। এই একটা ন্যাকামি সহ্য হয় না কস্তুরীর। বিশেষ করে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ-সহ প্রায় সব স্যোশাল মিডিয়া জুড়ে বছরের বিশেষ বিশেষ দিনে ভালবাসা যেন উথলে ওঠে। মাদার্স ডে হোক বা বাইশে শ্রাবণ, লোকে যেন অপেক্ষা করে থাকে। এসে গেলে আর রক্ষা নেই। দেশভক্তি, মাতৃভক্তি, কবিভক্তি সব মিলেমিশে একেবারে গ্যাদগেদে অবস্থা। দেখলে হাসি পায়। তাই সে কোনও দিন এই সব নিয়ে কোনও পোস্ট দেয় না।

কত ক্ষণ বসেছিল মনে নেই। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল প্রায় দশটা বাজে। এত ক্ষণে নিজের পেট জানান দিচ্ছে, তার নিজের ব্রেকফাস্ট হয়নি এখনও। সে উবু হয়ে বসে ধীরে ধীরে সব কাচের টুকরো তুলে ফেলল, সঙ্গে সব খাবার-দাবারের টুকরো-টাকরাও। সব শেষে ভেজা মপ দিয়ে জায়গাটা একেবারে চকচকে করে ফেলল।

আজ আলপনা আসবে না। বলে গিয়েছিল কালই। আলপনা এমনিতে ভাল মেয়ে। কস্তুরী পছন্দ করে না বলে আলপনার মুখে কুলুপ আঁটা থাকে, এমনটা ভাবা ভুল। কস্তুরীকে একা পেলেই তার গপ্পো চালু হয়। তবে বেশির ভাগই নিজের কথা। নিজের ছেলে, নিজের বর, ভবিষ্যতের ভাবনাচিন্তা, তার বর একটা দোকান ঘর ভাড়া নিতে চলেছে, এমনকি পরিবার পরিকল্পনা অবধি। আলপনা চুপিচুপি এটাও ঘোষণা করেছে, আর মাস সাতেকের মধ্যে সে ফের মা হতে চলেছে। আলপনা, তার বর আর তাদের বাচ্চা হয়তো কস্তুরীদের মতো উচ্চবিত্ত নয়, তবে সুখী। কস্তুরী দীর্ঘনিঃশ্বাস আটকাতে পারে না। আকিঞ্চন শেষ কবে তার সঙ্গে মিলিত হয়েছে মনে নেই। আকিঞ্চনের ইচ্ছে-টিচ্ছে কি সব মরে গেল? কে জানে। প্রায় প্রতিদিনই আকিঞ্চনের একই রুটিন, সে ছুটি হোক বা না হোক। রাতেও তাই। বাড়ি ফিরে এক বার নীচে বাবা-মার সঙ্গে দেখা করা, তাদের সুবিধে-অসুবিধে শোনা, ওষুধপত্রের স্টক চেক করা, মাসান্তে একটা থোক টাকা ধরে দেওয়া। তার পর সামান্য হুঁ-হাঁ করে সোজা উপরে। টয়লেট, কফির কাপ হাতে আধ ঘণ্টা টিভির নানা চ্যানেল সার্ফ করা। তার পর সোজা ক্লাবে। ফিরে এসে ডিনার। ডিনার সেরে লাইব্রেরি রুম। রিডিং লাইট জ্বলে রাত একটা-দুটো অবধি। কখন ঘরে আসে কস্তুরী জানতেও পারে না।

আসলে শারীরিক মিলনটা বড় কথা নয়, আকিঞ্চন কোনও সাংসারিক ব্যাপারেই মাথা ঘামায় না। সে আলু-চাল-পটল হোক বা মেহুলির ব্যাপারেই হোক। মাঝে মধ্যে বিরক্তি লাগলেও কস্তুরী পরে ভেবে দেখেছে, এক দিক থেকে এটাও ভাল। একমাত্র মেয়ে বাদে কারও কথাই আকিঞ্চন শোনে না, শুনলেও আর এক কান দিয়ে বার করে দেয়। এই গুণটা না থাকলে এই উনিশ বছরে কেতকীবালা যা মন্ত্রণা ঢেলেছেন নিজের সবেধন পুত্রের কানে, তার অর্ধেক মাথায় ঢোকালেও আকিঞ্চন তাকে বাড়িছাড়া করত। মন্দের ভাল। কিন্তু তবুও তো মাঝে মধ্যে শরীর বিদ্রোহ করে।

কস্তুরী দেওয়াল-জোড়া বেলজিয়াম গ্লাসে নিজেকে দেখে। কত বয়স হল তার? সামনের ডিসেম্বরে উনচল্লিশ পেরিয়ে যাবে। এই বয়সেই কি সব শারীরিক ব্যাপার-স্যাপার ভুলে বানপ্রস্থে যাওয়া যায়? কস্তুরী নিজের শরীরী বাঁকগুলো খুব ভাল করে খেয়াল করে। এই বয়সে যতটা ঢলে যাওয়ার কথা, ততটাও ঢলেনি তো। এখনও নিজের মেয়েকে টক্কর দিতে পারে। পরমুহূর্তেই ছি-ছি করে নিজেকেই। কী সব ভাবছে সে! নিজেকে কি কখনও নিজেরই অজান্তে নিজের মেয়ের সঙ্গে তুলনা করে বসেছে সে? এ মা! যা-তা ব্যাপার হবে তা হলে একটা। মেহুলি একটা সদ্য-ফোটা ফুলের মতো। তবে কি না.. নিজেকে বেশ কিছু ক্ষণ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে কস্তুরী... হুম। সব মিলিয়ে মন্দ নয়। কস্তুরী শাড়িটাকে গাছকোমরে বেঁধে রান্না চাপায়।

বছর সাতেক আগে আকিঞ্চনরা চলে আসে যোধপুর পার্কের এই বাড়িটায়। এই প্লটে আগের বাড়িটা কোনও এক জয়সোয়ালদের ছিল। সেই বাড়ি কিনে পুরনো বাড়ি ভেঙে ফের নতুন বাড়ি করে আকিঞ্চন। জয়সোয়ালরা বধূহত্যার মামলায় ফেঁসেছিল, কেস গিয়েছিল আকিঞ্চনের হাতে। তখন জয়সোয়ালদের ব্যবসায়ও প্রচুর লোকসান হয়। ইনকাম ট্যাক্স রেডও হয়েছিল বারদুয়েক। সব মিলিয়ে জয়সোয়ালদের হাতে হ্যারিকেন। বাজারে প্রচুর দেনা, ব্যাঙ্কেও। জয়সোয়ালরা যখন শেষমেশ মামলাটা হারে তখন তিন জন মেম্বারের এক জনের যাবজ্জীবন, অন্য দু’জনের জেল হয় দশ বছর করে। বাকি মেম্বাররা বাড়িটা জলের দরে বিক্রি করে আকিঞ্চন-সহ অনেকের মামলার টাকা মেটায়। তার পর জয়সোয়ালরা কোথায় গিয়েছে কেউ জানে না। আকিঞ্চন মোটা দাঁও মারে। যোধপুর পার্কের মতো এলাকায় আট কাঠার উপরে জমি! সোজা রাস্তায় কিনলে আকিঞ্চনের বয়স ষাট পেরিয়ে যেত।

যখন বাড়িটার দোতলা উঠছে, এক বার কস্তুরীকে নিয়ে এসেছিল দেখাতে। কস্তুরী চমকে গিয়েছিল দুটো গ্যারাজের ব্যবস্থা হচ্ছিল দেখে। প্রশ্নের জবাবে আকিঞ্চন হেসেছিল সে দিন। বাড়ি বদলের চার মাসের মধ্যে প্রথম গাড়ি কেনে আকিঞ্চন। তার বছর তিনেক পরে আর একটা। মেহুলির চারচাকা না-পসন্দ। অতএব তার চোদ্দো বছরের জন্মদিনে এল একটি ঘন নীল রঙের স্কুটি। তার থাকায় জায়গা অবশ্য গ্যারাজে নয়, নীচের সদর দরজার ভিতরে বরাদ্দ হল। কস্তুরী খুব আপত্তি তুলেছিল। কলকাতার রাস্তায় স্কুটি কী বিপজ্জনক, তা কি আকিঞ্চন জানে না? তা ছাড়া মেহুলি মোটে চোদ্দো। আঠারো বছরের আগে লাইসেন্স পাবে না। পুলিশ ধরলে? সেই প্রথম কস্তুরীর যুক্তিতে কপালে ভাঁজ পড়েছিল দুঁদে উকিল আকিঞ্চন রায়ের চওড়া কপালে। শেষে অবশ্য মেয়েই জয়ী হল। কড়ার হল, বাড়ির মাত্র আধ কিলোমিটারের মধ্যে স্কুটি চালাতে পারবে মেহুলি। তাও শুধু অলিতে-গলিতে, মেন রোডে একদম নয়।

অন্য বিষয়গুলি:

Bengali Story Bengali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy