পুরস্কৃত: সাংবাদিক গোবিন্দবিহারী লাল। (ছবি সৌজন্য: উইকিমিডিয়া কমন্স)
কয়েক দিন আগে একটি বহুলপ্রচারিত সংবাদপত্রে একটি সম্পাদকীয় এবং অনেকগুলি চিঠিপত্রের বিষয় ছিল এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার এবং তার প্রাপক ফিলিপিন্স এবং রাশিয়ার দুই সাংবাদিক। এক জন পত্রলেখক প্রশ্ন তুলেছিলেন, সাংবাদিকদের জন্য নিয়মিত কোনও পুরস্কার চালু করা যায় কি না।
আবার হইচই শুরু হল, যখন রয়টার্স-এর চিত্রসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকিকে মরণোত্তর পুলিৎজ়ার দেওয়া হল আরও কয়েক জন ভারতীয় চিত্রগ্রাহকের সঙ্গে। কেউ জানতে চাইলেন না যে, ওঁরাই কি প্রথম ভারতীয় যাঁরা এই পুরস্কার পেয়েছেন? বোঝা গেল, সাংবাদিকরা যে পুরস্কারকে নোবেল প্রাইজ়ের সমতুল্য বলে মনে করেন, সেই পুলিৎজ়ার পুরস্কার সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণাই নেই।
আর সেখানেই প্রশ্নটা নতুন করে উঠে আসছে। তা হলে প্রথম ভারতীয় কে, যিনি এই পুরস্কারের প্রাপক? স্বীকার করতে বাধা নেই আমিও তাঁর নাম ভাল করে জানতাম না, যদি না সাংবাদিকতার বাইবেল হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতার বিশ্ববিশ্রুত অধ্যাপক জন হোহেনবার্গের ‘দ্য প্রফেশনাল জার্নালিস্ট’ বইটি আমার হাতে আসত।
অন্যান্য অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের সঙ্গে তিনি একই নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক ডা. গোবিন্দবিহারী লালের নাম, যিনি শুধু পুলিৎজ়ার পুরস্কার প্রাপক প্রথম ভারতীয় সাংবাদিকই নন, বিজ্ঞান সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎও বটে। স্বাধীনতার এই যুদ্ধ তিনি চালিয়েছেন আমেরিকার মাটিতে বসেই, অধুনা লুপ্তপ্রায় গদর পার্টির সাহায্যে। অবশ্যই সাংবাদিকতার মাধ্যমে।
রাজা তো তিনি হতেই পারতেন। বিকানিরের রাজ পরিবারের সন্তান। জন্ম দিল্লিতে। বাবা বিষাণ লালের পরিচিতি তদানীন্তন ওই রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে। মা জাগ্গি দেবীর তত্ত্বাবধানে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় আগ্রহ। বড় হতে হবে। রাজপরিবারের উপযুক্ত হতে হবে। কিন্তু ইতিহাস হল অন্য রকম। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন’স থেকে বি এসসি এবং লাহোরের পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে এম এ পাশ করলেন। এরই মধ্যে লাহোরে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনাও শুরু করে দিলেন। আবার একই সঙ্গে সাংবাদিকতাও আরম্ভ করলেন। চর্চার বিষয়বস্তু ভারতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ। আবার মনে মনে ইচ্ছে বিদেশে উচ্চশিক্ষার। আরও উন্নতি করতে হবে যে!
ঘটনাচক্রে একটি দারুণ যোগাযোগ হয়ে গেল। লাল ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী লালা হরদয়ালের স্ত্রীর সম্পর্কে তুতো ভাই। হরদয়ালই গুরু গোবিন্দ সিংহ সাহেব এডুকেশনাল স্কলারশিপের প্রবর্তন করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় ছাত্রদের বিদেশে বৈজ্ঞানিক বিষয় শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলল। গোবিন্দবিহারীর থেকে সেই মুহূর্তে এই স্কলারশিপের ভাল প্রাপক আর কে হতে পারতেন?
১৯১২ সালে আমরা গোবিন্দবিহারীকে পাই বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলে ক্যাম্পাসে। নতুন করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পেলেন, পিএইচ ডি-র বিষয়ের শিরোনাম স্থির করলেন, ‘সায়েন্স অ্যান্ড পলিটি ইন ইন্ডিয়া’। মৃত্যুর ঠিক কয়েক দিন আগে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমার প্রাথমিক বাসনা ছিল বার্কলে থেকেই দেশে ফিরে যাই। কিন্তু তখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। ঠিক করলাম এখানেই থেকে যাই এবং ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের শরিক হই।” কথাগুলি ৩ এপ্রিল, ১৯৮২-র ‘দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকায় প্রকাশিত, ওঁর মৃত্যুসংবাদের সঙ্গেই। মৃত্যুকালে ওঁর বয়স হয়েছিল ৯২।
আজ থেকে ঠিক একশো বছর আগে গোবিন্দবিহারী যোগ দিয়েছিলেন ‘সান ফ্রান্সিসকো ডেলি নিউজ়’-এ। সেখান থেকেই শুরু হয় এক সাংবাদিক এবং দেশপ্রেমিকের প্রায় পাঁচ দশকের ঘটনাবহুল জীবন। ইতিহাসবিদ পদ্মিনী পট্টবর্ধন ওঁর সম্পর্কে লিখেছিলেন যে, তিনিই বোধহয় প্রথম সাংবাদিক যিনি ওঁর নামের সঙ্গে ‘সায়েন্স রাইটার’ বিশেষণটি যোগ করে দিতেন। এ কারণেই সম্ভবত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডা. লালকে ‘বিজ্ঞান সাংবাদিকতার জনক’ মনে করা হয়। উচ্চতা ছিল মোটে পাঁচ ফুট তিন ইঞ্চি, সাধারণ আমেরিকানের তুলনায় বেশ খর্বকায়ই বলা যায়। কিন্তু ওঁর জ্ঞানের গভীরতা এবং বিজ্ঞানে পাণ্ডিত্য ছিল অগাধ। বিজ্ঞানের জগতের বহু বিশিষ্ট লোকের সাক্ষাৎকার তিনি নিয়েছেন, এঁদের মধ্যে কম করে ষোলো জন নোবেলজয়ী। এ তালিকায় যেমন আলবার্ট আইনস্টাইনও আছেন, তেমনি রয়েছেন ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক থেকে এনরিকো ফার্মি-ও। অবশ্য ডা. লাল নিজে এগুলিকে সাক্ষাৎকার বলতেন না, বলতেন ‘ভাবের আদানপ্রদান’। খুব কম সাংবাদিকই এতটা সাহসের সঙ্গে এ রকম কথা বলতে পারেন। বিস্ময়কর ঘটনা হল, এ ধরনের কথাবার্তার সময়ে তিনি কোনও নোট নিতেন না। কসমিক রে থেকে শুরু করে রবারের শক্তিশালী ক্ষমতা, আবার সাধারণ দাঁতের সমস্যা থেকে মারণ রোগ ক্যান্সারও ওঁর দৃষ্টি এড়ায়নি। ওঁর মৃত্যুও হয়েছিল ক্যান্সারেই। ঠিক এক শতক আগে স্প্যানিশ ফ্লু করোনার মতো যখন সারা পৃথিবী উজাড় করে দিচ্ছিল, তা নিয়েও তিনি লিখেছেন।
হোহেনবার্গ এই মহান সাংবাদিক সম্পর্কে বলেছেন যে, বিংশ শতকের প্রখ্যাত এই বিজ্ঞান সাংবাদিকদের কাজের ধরনই ছিল অন্য রকম। প্রধানত এঁরা সাংবাদিকই, কিন্তু বিজ্ঞান সম্পর্কে এঁদের আগ্রহ ছিল একদম আলাদা। এঁরা চাইতেন বিজ্ঞানকে সহজবোধ্য করে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে। এ প্রসঙ্গে উনি বলেছেন ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স’-এর কথা, যার সঙ্গে হয়তো আমাদের ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেস-এর বার্ষিক অধিবেশনের তুলনা টানা যেতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওই অধিবেশনগুলিতে মুষ্টিমেয় কয়েক জন রিপোর্টার উপস্থিত হতেন সাধারণ ভাবে খবর করার জন্য। কিন্তু ডা. লালের মতো বিজ্ঞান সাংবাদিকদের উপস্থিতি ওই অধিবেশনগুলিতে অন্য মাত্রা যোগ করত। ওঁরা বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে পেপারের সারাংশ নিয়ে আগেই প্রতিবেদন বানিয়ে ফেলতেন। তার পর ওই খসড়া প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই পাঠিয়ে দিতেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের কাছে, যাতে ভুলত্রুটি বা তথ্যের অসঙ্গতি থাকলে তা সংশোধন করে নেওয়া যায়। এর ফলে সাংবাদিক ও বিজ্ঞানীদের মধ্যে এক পারস্পরিক আস্থা গড়ে উঠত।
এ প্রসঙ্গে আবার হয়তো লালের জীবনদর্শনের কথা উঠবে। উনি নিজেই বলেছেন, “আমি চাইতাম পাঠকদের মধ্যে বিজ্ঞানচেতনা গড়ে উঠুক যাতে সমাজ থেকে কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস দূর হয়, মস্তিস্কের উপযুক্ত প্রয়োগ ক্ষমতা গড়ে ওঠে।” এই বিশ্বাস নিয়েই তিনি সারা জীবন কাজ করে গিয়েছেন। সে সম্পর্কে আরও স্পষ্ট করে লিখেছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অনলাইন কাগজ ‘ইন্ডিয়া ওয়েস্ট’-এর সাংবাদিক ব্রিনা অ্যাহয়— “অকৃতদার লালের জীবনের দু’টিই লক্ষ্য ছিল, ভারতের স্বাধীনতা আর বিজ্ঞানের উন্নতি!” লাল নিজেই বলেছেন, “প্রকৃতির নিয়মাবলিকে অগ্রাহ্য করে মানুষের উন্নতি সম্ভব নয়। এই লক্ষ্য দু’টির মধ্যে মিল থাকা একান্ত জরুরি।”
লাল-এর সম্বন্ধে ব্রিনা আরও লিখছেন, “সবচেয়ে বেশি ছাপ বোধহয় ওঁর জীবনে ফেলেছিলেন মহাত্মা গান্ধী এবং আলবার্ট আইনস্টাইন। গান্ধীর সঙ্গে ওঁর দেখা হয়েছিল ১৯৩৯ সালের মার্চ মাসে। প্রথম সাক্ষাতেই তিনি গান্ধীকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “ভারতের স্বাধীনতা কত দূর?” মহাত্মা একটু থমকে গিয়েছিলেন। তার পরই উত্তর দিয়েছিলেন, “যদি তুমি রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা জানতে চাও, তা হলে আমি বলতে পারি আমরা খুব কাছাকাছি এসে গিয়েছি। কিন্তু যদি আত্মিক শৃঙ্খলার কথা জানতে চাও, তা হলেআমাদের এখনও বহু দূর যেতে হবে।”’
বছর তিনেক পরে, ১৯২৫ সালে লাল যোগ দিলেন বিখ্যাত ‘হার্স্ট’ সংবাদপত্র সংস্থায়। প্রথম ভারতীয় সাংবাদিক হিসেবে তো বটেই, ডা. লালের পুলিৎজ়ার পুরস্কার এই সংস্থার পক্ষেও প্রথম পুরস্কার হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিজ্ঞান নিয়ে প্রচুর গবেষণা হলেও বিজ্ঞান সাংবাদিকতা নিয়ে সে রকম চর্চা তখনও শুরু হয়নি। সেই সূচনার কৃতিত্ব ডা. লালের, এক জন এশীয় অভিবাসী হিসেবে। আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে ১৯৩০ সালে উনি যোগ দিলেন ‘নিউ ইয়র্ক আমেরিকান’-এ। একই সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল নিউজ় সার্ভিসে সায়েন্স এডিটর হিসেবেও কাজ আরম্ভ করলেন। তাঁর পাঁচ দশক ব্যাপী সাংবাদিকতায় কোনও ছেদ পড়েনি। একেবারে শেষ পর্বে যোগ দিলেন ‘সান ফ্রান্সিসকো এগজ়ামিনার’-এ। সালটা ১৯৫৪। এ কাগজও ‘হার্স্ট’ গ্রুপেরই। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এই সংস্থার এমেরিটাস সায়েন্স এডিটর হিসেবে কাজ করে গিয়েছেন। এও আর এক প্রথম কৃতিত্ব!
পুরস্কারও পেয়েছেন অনেক। ‘আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অব সায়েন্স’ ১৯৪৬ সালে ওঁর হাতে তুলে দিয়েছিল বিরাট সম্মান, ‘জর্জ ওয়েস্টিং হাউস’ অ্যাওয়ার্ড। গুগেনহাইম ফেলোশিপ পেলেন ১৯৫৬ সালে। এর ঠিক দু’বছর বাদে পেলেন আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর ‘ডিস্টিংগুইশড লেম্যান অ্যাওয়ার্ড’। নিউ ইয়র্ক টাইমস ওঁর মৃত্যুসংবাদে ১৯৬৯ সালে ওঁর পদ্মভূষণ এবং ১৯৭৩ সালে তাম্রপত্র প্রাপ্তির কথাও উল্লেখ করেছিল।
ওই ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’ই সে দিনের সংবাদে তাঁর সম্পর্কে বলেছিল, আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার্থে আসার আগে উনি যে সংবাদপত্রে ওঁর সংবাদজগতে দীর্ঘ যাত্রার সূচনা করেন, সেই কাগজটিও ভারতের স্বাধীনতা সম্পর্কে সওয়াল করত। তার পর তাঁর আমেরিকায় আগমন এবং বিদেশের মাটিতে সাংবাদিকতা ও ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ।
স্বাধীনতা সংগ্রামে ওঁর অর্ন্তভুক্তিতে আবারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেন লালা হরদয়াল। হরদয়াল ছিলেন তদানীন্তন পঞ্জাব (লাহোর)-এ গদর পার্টির সক্রিয় সদস্য। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন’স-এ হরদয়ালের সহায়তায়ই সান ফ্রান্সিসকোতে প্রতিষ্ঠিত হল গদর পার্টির আমেরিকান শাখা। পরবর্তী কালে ঐতিহাসিক হিন্দু-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলায় আমেরিকায় ঝড় ওঠে। অভিযোগ উঠেছিল, জার্মান অর্থের জোগানে এই বিপ্লবীরা অস্ত্রশস্ত্র কিনে ভারতে চালান দিচ্ছেন যাতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে উৎখাত করা যায়। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্যতম গোবিন্দবিহারী লাল।
এই প্রতিবেদন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে যদি আমরা আবার একটু পুলিৎজ়ার পুরস্কার সম্পর্কে আলোচনা না করি। যাঁর নামে এই পুরস্কার, সেই জোসেফ পুলিৎজ়ার এক জন হাঙ্গেরিয়ান, কিন্তু জন্ম-কর্ম সবই আমেরিকায়। প্রচুর টাকার মালিক। প্রায় সবটাই দান করেছিলেন নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার একটি ট্রাস্টি বোর্ডই এই পুরস্কার প্রদান করে, যার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক হোহেনবার্গ। পুরস্কারের অর্থমূল্য ১৯১৭ সালে সূচনাপর্বে ছিল ১০,০০০ ডলার। একশো বছর পরে এই টাকাটা বেড়ে হয়েছে ১৫,০০০ ডলার। সাংবাদিকতা, সাহিত্য, সঙ্গীত সব মিলিয়ে প্রায় ২১টি ক্ষেত্রে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুলিৎজ়ারের যাঁরা প্রাপক, তাঁদের মধ্যে দুই বঙ্গসন্তানও আছেন, ঝুম্পা লাহিড়ী এবং ডা. সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য ডা. লালকে এই পুরস্কার ভাগ করে নিতে হয়েছিল আরও তিন জনের সঙ্গে। ওঁদের দলে অন্যতম ছিলেন উইলিয়াম লরেন্স, যিনি বিল লরেন্স নামে সমধিক খ্যাত। ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর এই বিখ্যাত সাংবাদিক মার্কিন অ্যাটম বম্ব প্রকল্প সম্পর্কে এত কথা ফাঁস করে দিয়েছিলেন যে, শেষ অবধি আমেরিকায় বিদেশ দফতর ওঁকে টেনে নিয়ে নিজেদের দফতরে যোগ দেওয়ায়। ডাঃ লালরা সবাই এই পুরস্কার পেয়েছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনশো বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে।
আজ ডা. গোবিন্দবিহারী লালকে আমরা, ভারতের সাংবাদিকরা অনেকে চিনিই না। ওঁর উচ্চ শিক্ষার পীঠস্থান বার্কলে কিন্তু ওঁকে ভোলেনি। ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়া স্টাডিজ়, ‘গোবিন্দবিহারী লাল স্কলারশিপ ইন সায়েন্স জার্নালিজ়ম’ চালু করেছে। আমেরিকায় শিক্ষাব্যবস্থার অন্যতম অঙ্গ ওরাল হিস্ট্রি বা মৌখিক ইতিহাস। বিখ্যাত লোকেরা মুখে মুখে তাঁদের জীবনযাত্রার বা কাজকর্মের কথা বলে যান, সেটিকে রেকর্ড করে রাখা হয় পরবর্তী গবেষকদেরজন্য। বার্কলের ব্যানক্রফ্ট লাইব্রেরিতে এই সঙ্কলনে গোবিন্দবিহারী লাল এক বিশেষ জায়গা দখল করে রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy