এভারেস্টের চূড়ায় লেখক।
আগের গল্প বলতে, দুটো। এক, কলকাতা এয়ারপোর্টে যখন যাচ্ছি, বার বার মনে পড়ছিল, গত বার এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে গিয়ে ভূমিকম্পের মুখে পড়েছিলাম। দুই, আমাদের ক্যাম্পের পুজোটা। এলাহি ব্যাপার! জিনিসপত্র এবং অতিথিরা আসছে এজেন্সির নিজের হেলিকপ্টার চড়ে! প্রসাদ বলতে বিয়ারের ক্যান, কোল্ড ড্রিংকস, চকলেট। এক জন বিশাল পাঁচ লিটারের বোতল থেকে সবাইকে হুইস্কি ঢেলে দিচ্ছে চরণামৃতের মতো করে। আমরা তো হাসতে হাসতে মরি!
যাকগে, ওখানে গিয়ে প্রচুর ট্রেনিং-এর পর (তার মধ্যে এক দিন আমি একটা ক্রিভাস-এ পড়ে মরতে বসেছিলাম আর একটু হলে!), বেসক্যাম্পে এসে দিন গুনছি, আবহাওয়ার রিপোর্টে চোখ রাখছি, আর্মি-টিমের সঙ্গে ক্রস চেক করছি। ঠিক হল, ১৯ মে আমরা এভারেস্টের চুড়োয় উঠব। হঠাৎ এজেন্সি বলল, একটা চিনা দল যে দিন সামিট প্ল্যান করেছিল, খারাপ আবহাওয়ার জন্য পারেনি, ওরা না শেষ করলে আমরা গিয়ে থাকার জায়গা পাব না। তাই আমাদের ২১ তারিখ সামিট করতে হবে। টেনশন বেড়ে গেল। পূর্বাভাসে বলা ছিল, আবহাওয়া ২০ তারিখ পর্যন্ত ভাল থাকবে।
১৭ তারিখ ক্যাম্প-টু’র উদ্দেশ্যে বেরলাম রাত দুটোয়। ১১ ঘণ্টা লাগল পৌঁছতে। রেস্ট নিয়ে, ১৯ তারিখ সকাল সাতটা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম, ক্যাম্প-থ্রি’র উদ্দেশ্যে। লোৎসে ফেস দিয়ে উঠতে উঠতে হঠাৎ দেখি, এক জন শেরপা পা পিছলে প়ড়ে যাচ্ছে! আমাদের পাশ দিয়ে বুলেটের মতো তার দেহটা গড়াতে গড়াতে নেমে গেল! আছড়ে পড়ল নীচে। আমি তো থরথর করে কাঁপছি! পরে শুনলাম, ওই শেরপা লোৎসে-র রুটটা ওপেন করছিল। সোজা ৮০০০ মিটার থেকে পড়ে গেছে।
ক্যাম্প-থ্রি’তে গিয়ে, চূড়ান্ত প্রস্তুতি। সলিড খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল। স্যুপ, নিমকি আর বাদামভাজা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম সন্ধে নামতেই। ২০ তারিখ রাত আড়াইটেয় বেরলাম অক্সিজেন মাস্ক পরে। অনেকটা রাস্তা। শুনলাম, ক্যাম্প ফোর-এ আমাদের ২৬ বোতল অক্সিজেন রাখা ছিল, কিন্তু ন’টা মাত্র পড়ে রয়েছে। বাকিটা কারা যেন ব্যবহার করে ফেলেছে। বুঝলাম, কয়েক দিন আগে খারাপ আবহাওয়ার জন্য যে চিনা দলকে থেকে যেতে হয়েছিল, বাঁচার তাগিদে তারা আশেপাশের অক্সিজেন ব্যবহার করেছে। দোষ দেওয়া যায় না। আমাদের শেরপা সর্দার পেম্বাজি অবশ্য তাঁর সমস্ত কনট্যাক্ট ব্যবহার করে, এজেন্সিকে বলে, অক্সিজেন আনার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন।
ক্যাম্প-ফোর’এ পৌঁছে, শরীরটা এলিয়ে দিলাম তাঁবুর মধ্যে। কিন্তু পেম্বাজির নির্দেশ, শুলে চলবে না। উঠে বসে থাকলাম। অনেক জল খেলাম। সামিটের ব্যাগ প্যাক করে রাখলাম। খাবার বলতে, পেম্বা ছিরিং একটা মুগডাল ভাজার প্যাকেট দিয়ে গেল। মুখে এক মুঠো দিয়ে আবারও অক্সিজেন মাস্ক লাগাতে হল।
পেম্বাজি এসে বলে গেলেন, সন্ধে সাড়ে ছ’টায় বেরনো। বিকেল চারটে নাগাদ হঠাৎ শুনি, কে আমার নাম ধরে ডেকে চলেছে তাঁবুর বাইরে। আরে! অসমের নবকুমার। ওর শেরপা নাকি ওকে ফেলে চলে এসেছে। সামিট থেকে ও একা একা নেমে এসেছে। বলল, কী করে বেঁচে ফিরেছে, ও-ই জানে। অনুরোধ করল, যদি ও আমাদের স্লিপিং ব্যাগে আমাদের তাঁবুতে আজ রাতটা শুতে পারে। ওর দল ওকে ছেড়ে নেমে গেছে, ওর কাছে খাবার, স্লিপিং ব্যাগ, জল, কিচ্ছু নেই। বললাম, আমরা বিশ্রাম নিচ্ছি সামিট যাওয়ার আগে। সাড়ে ছ’টার পর যেন ও আমাদের টেন্টে ঢুকে পড়ে।
ঘুম এল না। হাজার চিন্তা মাথায় কিলবিল। এলিয়ে দিলাম গা। ওটাই ‘মাস্ল রেস্ট’। ছ’টার মধ্যে ব্যাগপত্তর নিয়ে তাঁবুর বাইরে। নেওয়া হল ক্র্যাম্পন, টাইট করে নেওয়া হল হারনেস, নেওয়া হল সানগ্লাস, গগল্স, ওষুধ, ইঞ্জেকশনগুলো, এবং পতাকাগুলো। আমার কাছে ছিল ভারতের পতাকা, স্কুলের, ক্লাবের। শেষ অবধি অবশ্য শুধু ভারতের আর মণিপালেরটা নিয়ে ছবি তুলতে পেরেছিলাম।
এভারেস্টকে প্রণাম করে, যাত্রা শুরু। চার জনে (আমি, হাওড়ার মলয় মুখোপাধ্যায়, সোনারপুরের রুদ্রপ্রসাদ হালদার, বারাসতের রমেশচন্দ্র রায়) একটা হাড্ল করলাম, টিম ইন্ডিয়ার মতন। নিজেদের বললাম, ‘আমরা পারবই!’ কিছুটা যেতে যেতে অন্ধকার নেমে এল আর একটা বিরাট বড় চাঁদ উঠল। মনে পড়ল, আজ বুদ্ধপূর্ণিমা।
এগোতে এগোতে দেখি, ওপরে কিছু হেডল্যাম্পের আলো দেখা যাচ্ছে। ৪-৫ জনের একটা দল নীচে নামছে। ওরা আস্তে আস্তে নীচে নামতে থাকল আর আমি আস্তে আস্তে ওপরে উঠতে থাকলাম। একটু ঘুম-ঘুম লাগছে। অনবরত বরফ ভেঙে এগিয়ে চলা। একটা সময় দেখি ওরা এসে আমার ঠিক ওপরের অ্যাংকর পয়েন্টে বসল। প্রায় ২০ মিটার ওপরে একটা পাথর মতো আছে, সেখানে।
ভাবলাম ওপরে গিয়ে ওদের কাছ থেকে আইডিয়া নেব, রুট কেমন। হঠাৎ দেখি, ওদের মধ্যে এক জন নীচে পড়ে যাচ্ছে! অক্সিজেন মাস্ক-এর মধ্যে দিয়ে আমি চিৎকার করতে লাগলাম! পড়তে পড়তে তার অক্সিজেন সিলিন্ডার পিঠের ব্যাগ থেকে বেরিয়ে পড়ে গেল। প্রচণ্ড স্পিডে আমার পাশ দিয়ে গিয়ে, বেশ কিছুটা নীচে গড়িয়ে পড়ার পর শরীরটা আর নড়ল না।
প্রথমে একটা প্রচণ্ড ভয় হল, আর কেউ যেন না পড়ে ওপর থেকে। আমার ওপরে পড়লে, মারা যাবই। আর যদি অক্সিজেন সিলিন্ডারও মাথায় পড়ে, দেখতে হবে না। তাড়াতাড়ি দড়িটাকে প্রাণপণে ডান দিকে টেনে নিয়ে গেলাম ফল-লাইন থেকে সরে যাওয়ার জন্য। তার পর ওখানেই স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। পেম্বাজি অনেকটা নীচে ছিলেন, কী হল বোঝেননি, আমার চিৎকার শুনেছেন, পড়িমরি উঠে এলেন ওপরে। হাঁপাতে হাঁপাতে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কেয়া হুয়া?’ আমি বললাম, ‘পেম্বাজি উয়ো গির গয়া, উয়ো জিন্দা রহেগা?’ পেম্বাজি বললেন, ‘কৌন গির গয়া?’ আমি হাত দিয়ে দেখালাম। পেম্বাজির চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। আমার দিকে ঠান্ডা চোখে চেয়ে বললেন, ‘সেফটি ঠিকসে লগাকে যানা।’
আরও অনেকটা চলার পর, সাউথ সামিট-টার কাছে গেছি, হাওয়াটা জোর হচ্ছে, সুর্যের তখনও দেখা নেই, পৌনে পাঁচটা মতো বাজে আন্দাজ। আকাশ পরিষ্কার ছিল, নীচে হাওয়া বা স্নো-ফল ছিল না, চোখে গগল্স দিইনি। হঠাৎ বুঝলাম, বাঁ চোখটা ঝাপসা হয়ে গেছে। প্রায় কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না। সর্বনাশ! তবে কি স্নো ব্লাইন্ডনেস? কিন্তু রাতের বেলায় তা কী করে হবে! তাড়াতাড়ি সানগ্লাসটা পরে নিলাম। মুশকিল আরও বাড়ল। আগে যা-ও বা ডান চোখে ভাল দেখছিলাম, অন্ধকারে সানগ্লাস পরে তিন ফুটও দেখতে পাচ্ছি না। কী হবে? মলয়দা আর ওর শেরপা পেম্বা ছিরিং আসতে, ওদের পিছন পিছন এসে, রিজ-এর শুরুটায় বসলাম। ওখান থেকে দেখা যাচ্ছে সামিটটা। চোখটা ঠিক হয়ে এল। দেখি, রাস্তাটা বেশ রোমাঞ্চকর। দু’দিকে ঢাল। এক দিকে পড়লে নেপালে, আর এক দিকে পড়লে তিব্বতে! হঠাৎ মনে হল, নিশ্বাসটা আটকে আটকে যাচ্ছে।
ব্যাগটাকে নামিয়ে রেগুলেটর চেক করলাম। না, অক্সিজেন তো শেষ হয়নি। এ দিকে দম বন্ধ হয়ে আসছে। মাস্কটা সরিয়ে দিলাম একটু। আঃ, কী আরাম! ঠান্ডা হাওয়া ঢুকতে শুরু করল, দমবন্ধ ভাবটা কমল। তার পরই মাথায় এল, অক্সিজেনের লেভেল তো এই উচ্চতায় ১/৩ ভাগ। শরীর নেবে না। সাফোকেশন হবে না, কিন্তু মস্তিষ্কে অক্সিজেন যাবে না, ঘুম পাবে, হ্যালুসিনেশন হবে, ক্র্যাম্প ধরবে, অর্গ্যান ফেলিয়োর-এর চান্স থাকবে, ফুসফুসে বা ব্রেনে জলও জমে যেতে পারে!
এ দিকে ইন্ডিকেটর দেখাচ্ছে, অক্সিজেন আসছে। পেম্বা ছিরিং, পূর্বা (আমার শেরপা), যাকেই বলি, অক্সিজেন পাচ্ছি না, সে-ই সব নেড়েচেড়ে বলে, ধুর, কোথাও তো কোনও গোলমাল নেই, তোমার মাথায় গোলমাল হয়েছে এই অল্টিটিউডে! ওই ঠান্ডায় আমার ঘাম শুরু হল। তত ক্ষণে রিজ-এর রাস্তা খালি হয়েছে, সবাই আমাকে বলল, চলো সামিটে গিয়ে দেখছি। পেছনে লোকেরা দাঁড়িয়ে আছে, অগত্যা হাঁটা দিতে হল। শরীরে আস্তে আস্তে ক্র্যাম্প ধরছে। মিনিট কুড়ি কেটে গেছে, আমি অক্সিজেন-ছাড়া। এক সময় আর পারলাম না। ওখানেই একটু কোণ খুঁজে, ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
ভোরের আলোটা ফুটছে। এভারেস্টের চুড়োটা সোনালি হচ্ছে। অসহায় হয়ে বসে রয়েছি। অনেক ক্লাইম্বার আমাকে একে একে পেরিয়ে যাচ্ছে। শেষে আর থাকতে না পেরে অন্য টিমের এক শেরপাকে ডেকে বললাম, জোরে জোরে পেম্বা ছিরিং-এর নাম ধরে ডাকতে। সে ভাবল, আমার নির্ঘাত মাথা খারাপ। একটা অদ্ভুত চাউনি দিয়ে, চলে গেল।
আরও মিনিট পাঁচেক পরে, পূর্বা এল। বললাম, মনে হয়, মাস্ক-এ যে পাইপটা ঢুকেছে, সেটা ঠান্ডায় জমে গিয়েছে। পূর্বা পাত্তাই দিল না, বলল, ‘তাড়াতাড়ি এসো।’ যাব কী করে, উঠতেই পারছি না। এ বার এল পেম্বা ছিরিং। ওকে বললাম, ‘তোমার মাস্কটা আমায় কিছু ক্ষণের জন্যে দেবে?’ ও আমার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে বলল, ‘তা হলে তো আমি মরে যাব!’ ঠিকই। ও এগিয়ে গেল। এ বার মলয়দাকে বললাম, ‘তোমার মাস্কটা একটু দাও। আর পারা যাচ্ছে না।’ মলয়দা এক কথায় রাজি। ব্যাগ নামানোর তোড়জোড় করছে, তখন পূর্বা ফেরত এল। বলল, ‘এগোচ্ছ না কেন?’ আমি মরিয়া হয়ে বললাম, ‘তোমার যদি বিশ্বাস না হয় আমার মাস্কটা পরে দেখো।’ পূর্বা অনেক চেষ্টা করল পাইপটা বেঁকিয়ে, বাড়ি মেরে। কিছুতেই কিছু হল না। শেষমেশ বললাম, ‘দেখো পূর্বা, প্রায় আধ ঘণ্টা হয়ে গেছে আমার অক্সিজেন আসছে না। তবু আমি বেঁচে আছি তো? তা হলে বাপু তোমার মাস্কটা দশ মিনিটের জন্য ধার দাও, আমি সামিট-টা করে আসি!’ খুব বিরক্ত হয়ে, প্রবল অনিচ্ছা সত্ত্বেও, মাস্কটা খুলে দিল। উফ, মাস্কটা মুখে লাগাতেই, ঠান্ডা অক্সিজেন মুখে ঢুকল এত ক্ষণ পর, শরীর মন জুড়িয়ে গেল।
আর একটুও দেরি না করে, জোরে এগোতে লাগলাম। একের পর এক ক্লাইম্বারকে পেরিয়ে যাচ্ছি! দশ মিনিটের মধ্যে সামিটের জায়গাতে পৌঁছলাম। দেখলাম একটু দূরে প্রেয়ার ফ্ল্যাগগুলো টাঙানো রয়েছে। ওই জায়গাটাই সামিট। এত দিনের স্বপ্নটা আর কয়েক পা হাঁটলেই পূর্ণ! এই সেই জায়গা, যা লাখো পর্বতারোহীর ফ্যান্টাসি। যেখানে পৌঁছতে কত লোক জীবন দিয়েছে। যেখানে পৌঁছে কত লোক কিংবদন্তি হয়েছে!
চুড়োয় গিয়ে, একটা উঁচু মতো ঢিপিতে বসলাম। যে সব বড় বড় পাহাড় নীচে দেখেছিলাম, সেগুলোকে কত ছোট ছোট লাগছে। হাওয়া দিচ্ছে খুব। ঠান্ডা লাগছে। সবে সূর্যটা উঠেছে। হাওয়ার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ভাবলাম, ছবিটা তাড়াতাড়ি তুলে ফেলি। ক্যামেরা বের করতে না করতেই, ক্যামেরার ব্যাটারি ঠান্ডায় বন্ধ হয়ে গেল। কুছ পরোয়া নেই, ব্যাগের ভেতর থেকে হ্যান্ডিক্যামটা বের করলাম। এটাও সিগনাল দেখাল, ব্যাটারি শেষ। যাঃ। যদি একটাও ছবি না ওঠে, কেউ তো বিশ্বাস করবে না, আমি এভারেস্টে উঠেছিলাম! ব্যাগের ভেতর চশমার খাপে, ক্যামেরার এক্সট্রা ব্যাটারি ছিল। ওই ঠান্ডার মধ্যে গ্লাভ্স খুলে আমি তাড়াতাড়ি ক্যামেরার ব্যাটারি পালটালাম। আবার যেই অন করলাম, দেখি, ব্যাটারি এগজস্টেড। মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম। উপায়?
একটু পরে মলয়দা এল। পেছন পেছন পূর্বা আর পেম্বা ছিরিং। মাস্কটা এ বার ফেরত দিতে হয়। কিন্তু দেখি, পূর্বা আমার মাস্কটা পরে আছে। বলল, সূর্য উঠেছে, আর জমে যাওয়া পাইপটা ঠিক হয়ে গিয়েছে নিজে থেকে। যাক বাবা।
মলয়দাকে বললাম, ছবি তোলো! মলয়দা বলল, ‘এই খেয়েছে! আমার ক্যামেরা তো কাজ করছে না! ভাবলাম, তোর ক্যামেরায় তুলব!’ বোঝো ঠেলা! নর্থ সাইড দিয়ে কিছু চিনা লোক সামিট করেছে। তারা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছে। ওদের বলব? কিন্তু ওরা তুলে দেবে কি? তা ছাড়া, পাঠাবে কী করে ছবিটা? ওদের ইমেল অ্যাড্রেস এখানে লিখবই বা কী করে? হঠাৎ দেখি পেম্বা দিব্যি সেল্ফি তুলছে ওর ক্যামেরাতে!
মলয়দা আর আমি দুজনেই একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠলাম, এই, এই, আমাদের ছবি তোলো। পেম্বা যেন কানেই তুলল না। শুধু নিজের ছবি তুলছে, আর পূর্বার ছবি। কী ব্যাপার? বুঝলাম, মাস্ক-এপিসোড নিয়ে আমার ওপর তিতিবিরক্ত হয়ে আছে। অনেক কাকুতি-মিনতির পর, ছবি তুলে দিল। তার পর গোমড়া মুখে ক্যামেরা ফেরত নিয়ে, তাড়া লাগাল, নীচে চলো! বললাম, ‘তোমার কাছে একটা ভিডিয়ো ক্যামেরা আছে না? সেটায় একটা ভিডিয়ো তোলো, ক্যামেরাটা ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরাও!’ সে তো মহা খাপ্পা! বললাম, ‘শোনো, আজকাল ভিডিয়ো না দেখালে তিন বছরের বাচ্চাও কোনও কথা বিশ্বাস করে না!’ পেম্বা তাড়াতাড়ি ক্যামেরা বের করে, একটা ভিডিয়ো নিয়ে নিল। সেটাই ফেসবুকে দিয়েছি!
satyarup.siddhanta@gmail.com
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy