Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Short Story

সাদা

খুব ভোরে কমপ্লেক্সের নীচে আট-দশ বার ঘুরে নেন। এতেই তাঁর দু’কিলোমিটার হাঁটা হয়ে যায়।

সুতপন চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২০ ০০:১৭
Share: Save:

নিরিবিলিতে অবসর কাটাবেন বলে কমলা অ্যাপার্টমেন্টের আট তলার কোণের ফ্ল্যাটটা পছন্দ করেছিলেন বাসব সেন। ফ্ল্যাটটি সুন্দর। পশ্চিম, দক্ষিণ ও পূর্ব খোলা। রোদ আসে অনেক ক্ষণ। বিকেলে ফুরফুরে হাওয়ায় বারান্দায় বসে দক্ষিণ কলকাতার অনেকটাই দেখা যায়। বিকেলে এখানে বসেই চা পান করেন। অতীতের স্মৃতিরা এসে ভিড় করে। সরকারি চাকরির সূত্রে বিভিন্ন জায়গায় পোস্টিং ছিল বাসবের। দীর্ঘ তিরিশ বছরের দায়িত্বশীল ব্যস্ত জীবন। পরতে পরতে মণিমুক্তোর মতো ঘটনা। তবে এখন আর বাড়তি টেনশন নিতে পারেন না। বলেই দিয়েছেন, “আই অ্যাম এজিং, অনেক টেনশন গিয়েছে, আর নয়। শান্তিতে বাকি দিনগুলো কাটাতে চাই।”

খুব ভোরে কমপ্লেক্সের নীচে আট-দশ বার ঘুরে নেন। এতেই তাঁর দু’কিলোমিটার হাঁটা হয়ে যায়। তার পর সুইমিং পুলের পাশে দাঁড়িয়ে সেরে নেন ফ্রি-হ্যান্ড এক্সারসাইজ়।

রোজকার স্বাস্থ্যচর্চা সেরে উপরে এসে টিভিটা চালিয়ে দেন বাসব। সকালের টাটকা খবর। পৃথিবী জুড়ে মারা যাচ্ছে মানুষ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু ও সংক্রমণ। আমাদের দেশেও পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হতে চলেছে। খবরে ভাল কিছুই নেই। মনটা দমে গেল তাঁর।

*****

সংক্রমণ বেড়ে চলায় কাজের লোকের আসা বন্ধ। বিভা চিরকালই স্থূলকায়া। প্রথম কিছু দিন একাই সব কাজ করে নিচ্ছিলেন। রান্না, বাসন মাজা, ঘর মোছা কিছুই বাদ পড়ছিল না। অভ্যেস নেই, বাতিক আছে। কিন্তু মাসখানেক করার পর আজ চা খেতে খেতে বললেন, “দেখো, একার দ্বারা সব হবে না আর। কাজ ভাগ করে নিতে হবে। আমি রান্না, কাপড় কাচা, তোমার বাসন মাজা, ঘর মোছা, বাজার করা। মাছ আনলে নুন-হলুদ মাখিয়ে ফ্রিজে তুলে দেওয়া।”

বাসব বললেন, “কাপড় তো মেশিনে কাচো। আমার বেলা এত্ত কাজ?”

বিভাও তৈরি ছিলেন। বললেন, “এত দিন যে আমি সব করলাম? তা ছাড়া মেশিন তুমি চালাওনি কোনও দিন। পারবে না।”

“সেটাও ঠিক,” আমতা আমতা করে উত্তর দিলেন বাসব।

বিভা একটু হেসে বললেন, “ঘাবড়ে গেলে তো? আচ্ছা, আমরা কাজের ভাগটা এ ভাবে করি। তোমার আনাজ কাটা, আমার রান্না। তোমার বাড়ি পরিষ্কার, আমার ঘর মোছা। তোমার বাসন মাজা, আমার জামা-কাপড় কেচে শুকোনো। এ

বার রাজি?”

বাসবের তখনও অসহায়তা কাটেনি।

এত বড় বিপদ এই দীর্ঘ জীবনে কখনও আসেনি। বাসন মাজতে হয়নি, বাড়ি পরিষ্কার করতে হয়নি। কিন্তু এখন উপায় নেই। চিরকাল কাজের লোক সংসারের এই কাজগুলো করেছে। বিভা তদারকি করেছেন। তাই বাড়ি সব সময় ঝকঝকে। মেয়ে ইলা বরাবরের গেঁতো, ছোটবেলা থেকে আহ্লাদে মানুষ হয়েছে। এখন আমেরিকায়। ছেলে বিমান বোর্ডিং স্কুল ছেড়ে কলেজ, তার পর ভিয়েনায় চাকরি। এরা বাড়িতে আর থেকেছে ক’দিন? যে ক’দিন থেকেছে, অতিথির মতো কাটিয়েছে। বাসব তো অফিস নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন জীবনের সত্তর ভাগ।

“আমি পারব এই সব করতে এই বয়সে?”

“পারতেই হবে। বাঁচতে হলে করতে হবে। কে করে দেবে আমাদের? আমার দিকে তাকিয়ে এক বার দেখো, কাজ করতে করতে কত রোগা হয়ে গিয়েছি।”

আড়চোখে এক বার বিভার দিকে তাকালেন বাসব। একটু থেমে বললেন, “হ্যাঁ, তবে দেখতে সুন্দর লাগছে। বয়সটা এক ধাক্কায় দশ বছর কমে গিয়েছে।”

বাসব ভেবেছিলেন কথাটা শুনে বিভা খুশি হয়ে একটা কাজ অন্তত কমিয়ে দেবেন। বিভা তার ধারেকাছেই গেলেন না।

বললেন, “থাক, থাক, আর তোষামোদ করতে হবে না। কাজ তোমাকেই করতে হবে। ক’দিন করো, দেখবে প্র্যাকটিস হয়ে যাবে।”

অগত্যা মেনে নিলেন বাসব। না মানার যুক্তিসম্মত কারণও তো নেই। চার দিকে যা ভয়াল পরিস্থিতি।

*****

আজ রবিবার। ভিড় এড়াতে সাতসকালে বাজারে গেলেন বাসব। মাছের বাজার এক বার সরেজমিনে জরিপ করে নিলেন, কোন কোন মাছ বাজারেই আঁশ ছাড়িয়ে, কেটে-কুটে পরিষ্কার করে নিয়ে যাওয়া যায়। ধুয়ে নুন-হলুদ মাখিয়ে সোজা ফ্রিজে। তার পর গেলেন আনাজের বাজারে।

হেমুর চায়ের দোকানে বাজার-ফেরত চিনি-ছাড়া চায়ের আড্ডা। বাজার সেরে এখানেই তিনি, কমল, হেমন্ত ও সমরেশ একটু আড্ডা মেরে বাড়ি ফেরেন। আজ দেখলেন হেমন্ত আসেননি। বাসবকে দেখেই কমল বললেন, “দাদা, বাড়ির কাজ করতে করতে কাজের মেসো হয়ে গেলাম। আর পারা যাচ্ছে না।”

সমরেশ বললেন, “আচ্ছা কয়েন তো, দিনে কয়বার হাত ধোওন লাগে? আমার কয়লা কালা রং ধলা হইয়া গ্যালে আমার ইউএসপি আর কিসু বাকি থাকব?”

বাসব হালকা হেসে বললেন, “যা বলেছ। আচ্ছা, আমরা চার জনে একটা স্যানিটাইজ়ারের ফ্যাকট্রি খুললে কেমন হয়?”

সমরেশ বললেন, “দারুণ হইব। হালার একরত্তি ভাইরাস কী নাচই না নাচাইতাসে! হগ্গলে ঘরে খিল দিয়া বইয়া আসি। সাবানের খরচাডা কত বাড়সে দ্যাখসেন?”

আজ আর আড্ডা জমল না। উঠে পড়লেন সবাই। কমলের কাজ অছে। বাসব আর কমল থাকেন এক আবাসনে। সমরেশ বাড়ি করেছেন বাজার থেকে একটু দূরে। হাঁটা পথ। বাসব ও কমল আবাসনের গেটে ঢুকে দুজনে বেঁকে গেলেন দু’দিকে। বাসব প্রথম টাওয়ারে, কমল আটে।

মাছ ফ্রিজে রেখে কিছু ক্ষণ সোফায় হেলান দিয়ে বসলেন বাসব। বাজার টেনে আনলে আজকাল কাঁধের দু’পাশে টান পড়ে। টনটন করে অনেক ক্ষণ।

বিভা বা কাজের মেয়েটাকে ফুলঝাড়ু দিয়ে ঘর পরিষ্কার করতে দেখেছেন বাসব। কিন্তু তাঁর তো ব্যাকপেন। নিচু হয়ে কাজ করা বারণ ডাক্তারের। ভ্যাকুয়াম ক্লিনারটা বার করলেন তিনি। শোবার ঘরে ঢুকতেই বিভা বললেন, “খাটের নীচটা ভাল করে পরিষ্কার কোরো। মেয়েটা ভাল করতে পারে না।” বাসব খাটের নীচে মেশিনের রডটা ঢুকিয়ে দিয়ে নিচু হতেই, প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন মাটিতে। কোনও ক্রমে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে নিজেকে সামলে নিলেন। হাঁটু ও গোড়ালিতে বাতের ব্যথা বেশ ক’বছর জাঁকিয়ে বসেছে। ব্যথায় ককিয়ে উঠলেন। বিদ্যুৎ খেলে গেল যেন কোমর অবধি।

বিভা বললেন, “কী হল? টাল খেয়ে গেলে না কি?”

“প্রায়।”

“সাবধান,” বলে বিভা রান্নাঘরে চলে গেলেন।

শোবার ঘরের পর বাইরের ঘর। মেশিনের সঙ্গে লাগানো রড ধরে সোফার তিন দিক, খাবার টেবিলের নীচের গলিঘুঁজি ঘুরে তিন ফুট উঁচু বাঁকুড়ার জোড়া ঘোড়ার সামনে এসে দাঁড়ালেন। কাঁধের এক পাশটা আবার টনটন করছে। একটানা এ কাজ অসম্ভব। হঠাৎ বিভার দরজা খোলার আওয়াজ কানে যেতেই সেই দিকে চোখ চলে গেল। শরীরটা ডান দিকে বেঁকে যেতে হাতের রড সজোরে ধাক্কা মারল মাটির ঘোড়ার পায়ে। পলকে ঘোড়ার ঘাড়-মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছড়ে পড়ল মেঝেতে। ভাঙা টুকরো ছড়িয়ে পড়ল চার দিকে। বিভা চিৎকার করে উঠলেন, “এ কী? ঘোড়াটা ভেঙে ফেললে! এ তো একেবারে স্কন্ধকাটা! জোড়াটাই নষ্ট হয়ে গেল।”

অপরাধীর মতো বাসব মাথা নিচু করে বসে রইলেন কিছু ক্ষণ। সত্যি, ভাঙা ঘোড়াটা হঠাৎ যেন বদলে দিয়েছে ঘরের সৌন্দর্য। শ্রীহীন দেখাচ্ছে সব কিছু। কেমন যেন একটা কষ্ট অনুভব করলেন বাসব। বললেন, “দুঃখ কোরো না। নতুন এক জোড়া কিনে দেব। লকডাউন উঠুক।” বিভা বললেন, “হ্যাঁ, তোমার জন্য রাস্তায় সার দিয়ে বাঁকুড়ার ঘোড়া সাজিয়ে বসে আছে লোকে!”

*****

বৃহস্পতিবার বিবাহবার্ষিকী। ছেলে-মেয়ে বাইরে। কাছে থাকলে খুব আনন্দ করে কাটানো যেত। বিভা নানা রান্না করতেন দুপুরে। রাতে ভাল রেস্তরাঁ। এ বার চান্স নেই। তবে রাতে বিভা কম কিছু করেননি। দু’রকমের মাছ, পনির পোস্ত, আমের চাটনি। খাবার সাজিয়েছেন দামি ডিনার সেটে। খাওয়ার পর বাসনগুলো বেসিনে নামাতে নামাতে বিভা বললেন, “খুব সাবধানে মেজো। বাবা দুবাইয়ে কিনেছিল এই ডিনার সেট।”

বাসন মাজাটা ক’দিনে রপ্ত হয়ে এসেছে বেশ। বাসব বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে এক-একটি প্লেট শক্ত করে ধরে তবেই সাবান লাগাচ্ছিলেন। অনেক কাল আগের কেনা, কিন্তু আজও যেন নতুন! কলের নীচে একটা হাতে প্লেট। অন্য হাতে কল খুলতেই হাত থেকে প্লেটটা পিছলে গেল বেসিনে। চুরমার! হাত-পা থরথর কাঁপতে লাগল বাসবের। এ কী করে ফেললেন তিনি! বিভা বাসন ভাঙার আওয়াজে দৌড়ে এসেছেন।

“এত বার সাবধান করেছিলাম, শুনলে না তো?”

“হাতটা হঠাৎ কেঁপে উঠে স্লিপ করে গেল প্লেটটা।”

“দয়া করে আর অজুহাত দিয়ো না!” বিভার ঘাড়ের শিরা ফুলে উঠেছে। গলার স্বর তীক্ষ্ণ।

“তোমাকে দিয়ে কি একটাও কাজ হবে না!”

ঠিক সেই মুহূর্তে ফোনটা বেজে উঠল বাসবের। কমলের ফোন।

“বলো কমল...”

“শুনেছেন, হেমন্ত কোভিড পজ়িটিভ।”

“সে কী? কী করে হল?”

“কী জানি! একটু আগে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। বৌদি হোম কোয়রান্টিনে। এখন তো কাজের লোকও নেই। ওঁর আবার শুগার, হার্টের রোগী। বাড়িতে ঢোকার গলিটা পুলিশ সিল করে দিয়েছে।”

“কী সাংঘাতিক বিপদ!”

“খুব প্রবলেম। ওঁর ছেলে-মেয়ে তো বাইরে। খবর দিয়েছে, কিন্তু আসতে তো পারবে না।”

“হুম। কিছু তো করার নেই। খুব অসহায় লাগছে।”

বলতে বলতেই লাইনটা কেটে গেল। সিগনাল সমস্যা। বিভা জিজ্ঞেস করলেন, “কার কী হয়েছে?”

“হেমন্ত কোভিড পজ়িটিভ।”

শুনেই বিভার মুখ ভয়ে কুঁকড়ে গেল। হেমন্তর বৌয়ের খবরে আরও মুষড়ে পড়লেন। বললেন, “আমরাও তো দুজনে থাকি। ছেলেমেয়েরা খবর পেলেও আসতে পারবে না। আচ্ছা, হেমন্তর বৌয়ের যদি দু’দিন পর কিছু হয়?” বলে দিশাহীন চোখে তাকালেন।

বাসব বললেন, “হতে তো পারেই। ষাটের উপরে যারা, তারাই অ্যাট রিস্ক। আমি বরং এক বার

দেখে আসি।”

বিভা বললেন, “খবরদার! তুমি আজ থেকে আর অ্যাপার্টমেন্টের বাইরে বেরবে না। ওঁর স্ত্রীর সঙ্গে আমি ফোনে কথা বলে নেব।”

ঘাড় নাড়লেন বাসব। মনে মনে ধন্যবাদ দিলেন কমলকে। ঠিক সময়ে ফোনটা করেছিলেন ভাগ্যিস, না হলে ব্যাপারটা এত সহজে মিটত না।

*****

শোনার পর থেকে হেমন্তের মুখটা কিছুতেই মন থেকে সরাতে পারছেন না বাসব। হেমুর ঠেকে হেমন্তর সঙ্গে অনেক দিন পাশাপাশি বসে চা খেয়েছেন। সামাজিক দূরত্বের বালাই ছিল না। এই রোগের লক্ষণ তো কয়েকদিন পর জানা যায়। তাঁর শরীরে চুপি চুপি বাসা বাঁধেনি তো? একটা অজানা ভয় হিলহিলে সাপের মতো তাঁর সারা শরীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। এক দিন আগেও কি হেমন্ত আন্দাজ করতে পেরেছিলেন এমন কিছু! মানুষের জীবন, তার সাজানো সংসার সত্যিই এত ভঙ্গুর! ওই বাঁকুড়ার ঘোড়া বা দামি ডিনার সেটের থালার মতো! চুরমার হওয়ার আগের মুহূর্তেও পূর্বাভাস পাওয়া যায় না! ঘর থেকে বারান্দা, বারান্দা থেকে বসার ঘর বার বার পায়চারি করলেন বাসব। মন শান্ত হল না।

রাতে খাওয়ার পর আলমারি থেকে তিনটে ফাইল নামালেন। এর মধ্যে আছে ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজ়িট, মিউচুয়াল ফান্ড, সোনা কেনার বন্ড, পেনশন ফাইল, মেডিক্লেম পলিসির সমস্ত কাগজপত্র। বিছানার উপর রাখলেন। সব কিছুর বিশদ বিবরণ লিখলেন একটা সাদা কাগজে। জীবনের সব সঞ্চয়ের খতিয়ান। তার পর একটা ফাইলে ভরে ফেললেন বিভার জন্য নির্দিষ্ট সঞ্চয়ের নথিপত্র। বিমান ও ইলার নামেও দুটি আলাদা ফাইল। মেডিক্লেমটা শুধু বাইরে রাখলেন।

তার পর একদৃষ্টিতে বাসব তাকিয়ে রইলেন তিনটি ফাইলের দিকে। এক বার ফাইল তিনটি নিজের বুকে চেপে ধরে জোরে শ্বাস নিলেন। তার পর রাখলেন পড়ার টেবিলে। সব হিসেবের সংক্ষিপ্ত খতিয়ানটাই তো আসল। এ বার সেটা একটা বড় সাদা খামে ভরে শুইয়ে রাখলেন বিছানার মাঝবরাবর। যদি তিনি সংক্রমিত হন, আর ফিরে না আসেন, তবে সে যাওয়া হবে নিশ্চিন্তে চলে যাওয়া। নির্ভার। সারা জীবনের উদ্দীপনা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভবিষ্যৎ মানচিত্র জমা আছে খামের ভিতরে। শেষমেশ ওই খামটির মতোই সাদা কাপড়ে মোড়া অবস্থায় চলে যেতে হবে। সামারির সাদা খামটা সিল করার আগে ছেলে-মেয়ে দু’জনকে মেল করে দেবেন কাল। সব কিছু ছবির মতো লেখা আছে। যদি কিছু হয়, সব সাজানো রইল। আর বিভার কিছু হলেও... শুধু বাড়ির একটা চাবি কাউকে রাখতে দিতে হবে। কার কাছে রাখা যায়? কার কাছে? ভাবতে-ভাবতে বাসব বারান্দায় এসে দাঁড়ালেন। নিশ্চুপ চরাচর, অন্ধকারে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ কোটি মানুষের বসত। দূরে আকাশচুম্বী আবাসনের শরীরে ছোট ছোট আলোকবিন্দু। শান্ত এই মোহময় পৃথিবীকে দু’চোখ ভরে দেখা— দূরে, বহু দূরে চোখ চলে গেল তাঁর। আর সেই দৃষ্টিতে ধরা পড়ল রাশি রাশি সাদা খাম, পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে ভেসে আসছে, জড়ো হচ্ছে, ছেয়ে ফেলছে রাতের আকাশ।

ছবি: শুভম দে সরকার

অন্য বিষয়গুলি:

Short Story Books
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy