Worries about Joe Biden’s ability to serve the second term sparks mocking from other countries on Presidential Debate dgtl
Joe Biden
অসংলগ্ন কথা, অদ্ভুত আচরণ, বাইডেনের হলটা কী! ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের পর হাসাহাসি তিন ‘শত্রু’ দেশে
গত বৃহস্পতিবার আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জো বাইডেনের মুখোমুখি (প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট) বিতর্ক হয়। সেখানে একাধিক বার বাইডেনকে অসংলগ্ন মনে হয়েছে বলে দাবি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ০৭:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তায় ডেমোক্র্যাটেরা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর মুখোমুখি বিতর্কের (প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেট) পর ফের চর্চায় উঠে এসেছেন বাইডেন। বিতর্কের সময়ে তাঁর একাধিক আচরণে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
০২২২
ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের সময়ে বাইডেন একাধিক বার খেই হারিয়েছেন বলে দাবি। তাঁর কথা জড়িয়ে গিয়েছে। এমনকি, তাঁর হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে।
০৩২২
বাইডেনের বয়স এখন ৮১ বছর। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, বয়সজনিত কারণেই এখন পুরোপুরি ‘ফিট’ নন বাইডেন। আগামী ৫ নভেম্বর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে। বাইডেন যদি জেতেন, তবে তাঁকে আরও চার বছর ক্ষমতায় থাকতে হবে। তিনি পৌঁছে যাবেন ৮৫ বছরে। সে ক্ষেত্রে তাঁর শরীরে আরও সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বাইডেন এই নির্বাচনে লড়ার জন্য আদৌ যোগ্য কি না।
০৪২২
একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, বিকেল ৪টের পর নাকি বাইডেন আর সে ভাবে সক্রিয় থাকতে পারেন না। সারা দিনে মাত্র ছ’ঘণ্টা তিনি সচল। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত তাঁকে পাওয়া যায়। তার পর থেকে নানা সমস্যা দেখা দেয়।
০৫২২
হোয়াইট হাউসের অনেক কর্তাই নাম প্রকাশ না করে জানাচ্ছেন, বাইডেনের আচরণে অসঙ্গতি তাঁরা আগেই লক্ষ্য করেছেন। সন্ধ্যার পর বৃদ্ধ প্রেসিডেন্টকে গ্রাস করে ক্লান্তি। তাঁর কথা জড়িয়ে যায়।
০৬২২
বিতর্কে আশানুরূপ প্রদর্শন না হওয়ার পর বাইডেনকে নিয়ে যখন নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে আমেরিকায়, তখন ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ নেমেছেন তিনি নিজেই। পরের দিনই উত্তর ক্যারোলিনায় একটি জনসভায় গিয়ে ভাষণ দিয়েছেন বাইডেন। যেখানে আগের দিনের বিতর্ক অনুষ্ঠানের চেয়ে তাঁকে অনেক দৃপ্ত মনে হয়েছে।
০৭২২
ক্যারোলিনার জনসভায় নিজের বয়সজনিত সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বাইডেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি আগের মতো সহজ ভাবে আর হাঁটতে পারি না, আগের মতো স্পষ্ট ভাবে আর বলতে পারি না, আগের মতো আর তর্ক করতে পারি না, কিন্তু আমি জানি, আমি এখনও সত্যিটা বলতে পারি। আর আমি যদি অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে আরও একটি নির্বাচনে লড়ার বিষয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত না হতাম, তবে তাতে অংশগ্রহণ করতাম না।’’
০৮২২
অনেকে বলছেন, বাইডেনের এই ভাষণে চিঁড়ে ভিজবে না। তাঁকে নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। মুখোমুখি বিতর্ক হয়ে যাওয়ার পর আর প্রার্থী বদল করাও সম্ভব নয়।
০৯২২
এই পরিস্থিতিতে বাইডেনকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে অন্য দেশগুলিতেও। বিশেষত, আমেরিকার তিন ‘শত্রু’ দেশ বাইডেন-ট্রাম্প বিতর্ক শুনে কার্যত হাসাহাসি শুরু করেছে। তাদের প্রতিক্রিয়ায় রয়েছে কটাক্ষের ইঙ্গিত।
১০২২
আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘‘এই বিতর্ক নিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এতটাই বিরক্ত যে, তিনি পুরো অনুষ্ঠানটি দেখেনওনি। ঘুম থেকেই ওঠেননি। আমরা শুধু সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টগুলি দেখেছি।’’
১১২২
মুখপাত্রের বক্তব্যের বাইরেও প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক নিয়ে কটাক্ষ ভেসে এসেছে রাশিয়া থেকে। তাদের বক্তব্য, এই বিতর্ক আসলে রাশিয়ারই জিত। রাশিয়ার বিভিন্ন প্রতিবেদনে বাইডেনের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে ‘মুখ হা করে থাকা, চোখের পাতা না পড়া এবং অভিব্যক্তিহীন প্রেসিডেন্ট’ হিসাবে।
১২২২
প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ককে কটাক্ষ করেছে চিনও। সার্বিক ভাবে সেখানকার সংবাদমাধ্যম এই অনুষ্ঠানটিকে এড়িয়ে গিয়েছে। তবে সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস একে ‘সবচেয়ে বিশৃঙ্খল প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক’ বলে উল্লেখ করেছে।
১৩২২
বাইডেনকে ‘স্বভাবগত ভাবে বিভ্রান্ত’ বলে বর্ণনা করেছে চিন। তাঁর ভাষণকে বলা হয়েছে ‘অস্পষ্ট’। বার বার বাইডেন অসংলগ্ন মন্তব্য করেছেন বলে দাবি করেছে বেজিংয়ের সংবাদমাধ্যম। অনেকে আবার বাইডেনকে নিয়ে মজাও করেছেন চিনা সমাজমাধ্যমে।
১৪২২
আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক এবং বাইডেনের প্রদর্শন নিয়ে হাসাহাসি করছে ইরানও। সেখানে অবশ্য এই অনুষ্ঠানকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কারণ সামনেই ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন রয়েছে।
১৫২২
ইরানের একটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, ‘‘প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাইডেনকে দেখে যে কেউ বলবে, তিনি অযোগ্য। আমেরিকা সারা বিশ্বকে চালনা করে, স্থিতিশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু বাইডেনের প্রশাসনে স্থিতিশীলতা নেই। তাঁর প্রদর্শন আমেরিকার দুর্বলতাকেই প্রকট করছে।’’
১৬২২
বাইডেনের দুর্বলতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ ট্রাম্পও। বরং বিতর্ক চলাকালীনই তিনি বাইডেনের আচরণকে অন্যতম হাতিয়ার করেছিলেন এবং কটাক্ষ করেছিলেন।
১৭২২
বিতর্কের মাঝে ট্রাম্পকে একাধিক বার বাইডেনের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে এবং ব্যঙ্গ করতে দেখা গিয়েছে। এক সময়ে তিনি বলেন, ‘‘এখনই বাইডেন যে লাইনটি বললেন, তা সম্পূর্ণ করলেন কি? আমি জানি না উনি কী বলতে চাইছেন। কিছু বুঝতেই পারছি না। আদৌ কিছু কি বলছেন?’’
১৮২২
বাইডেনের এই দশার জন্য এবং প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে তাঁর দুর্বলতা প্রকাশ্যে আসার জন্য তাঁর পরিবারের তরফে দায়ী করা হচ্ছে প্রশাসনিক আধিকারিকদের। একাধিক আধিকারিককে বরখাস্ত করার সুপারিশও করা হয়েছে। বাইডেনের পরিবারের অভিযোগ, এই বিতর্কের জন্য আদৌ প্রেসিডেন্টকে তাঁরা ‘তৈরি’ করে দেননি। অর্থাৎ, তাঁর পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল না।
১৯২২
অনেকে আবার বাইডেনের প্রদর্শনের জন্য তাঁর স্ত্রী তথা আমেরিকার ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনকে দোষী করছেন। তাঁদের মতে, বৃদ্ধ বাইডেনের উপর এখন কার্যত ‘ছড়ি ঘোরান’ জিল। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহারও করেন বলে অভিযোগ।
২০২২
প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্ক নিয়ে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বাইডেন সেখানে নিজের কাজ নিয়ে প্রচার করেছেন। নিজের সম্পর্কে কথা বলেছেন। ট্রাম্পকে আক্রমণ করতে গিয়েই খেই হারিয়ে ফেলেছেন। অর্থাৎ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্বেগ বাদ দিলে তাঁর প্রদর্শন ছিল রক্ষণাত্মক। আক্রমণাত্মক তর্ক করতে পারেননি বাইডেন।
২১২২
২০২০ সালে আমেরিকায় শেষ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছিল। ট্রাম্পকে হারিয়ে ২০২১ থেকে ক্ষমতায় আসেন বাইডেন। এই চার বছরে অজস্র বিতর্ক ট্রাম্পের সঙ্গী হয়েছে। তবে আবার তিনি স্বমহিমায় ফিরেছেন। আবার লড়ছেন সেই বাইডেনের বিরুদ্ধে।
২২২২
নভেম্বরের আগে বাইডেনের স্বাস্থ্য-উদ্বেগ এবং ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক নীতিকে কেন্দ্র করে আমেরিকার রাজনীতি কোন পথে এগোয়, দুই প্রার্থী নিজেদের খামতি দূর করতে কী কী পদক্ষেপ করেন, সেটাই এখন দেখার।