World millionaires and wealth distribution know the details dgtl
US dollar Millionaires
দেড় শতাংশের হাতে বিশ্বের অর্ধেক সম্পদ! কী ভাবে ভাগ হচ্ছে দুনিয়ার কোষাগার? ভারতের স্থান কোথায়?
বিশ্বের বিপুল সম্পদ রয়েছে নামমাত্র কয়েক জন কোটিপতির হাতে। ডলারের নিরিখে ‘মিলিয়নেয়ার’, অর্থাৎ টাকার হিসাবে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকার পরিমাণের নিরিখে কোন দেশের সম্পদশালীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি? ভারতেই বা ক’জনের হাতে আছে এই পরিমাণ সম্পত্তি?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
বিশ্বের সম্পদ বিভাজন নিয়ে প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট। বর্তমান দুনিয়ায় প্রায় ৫ কোটি ৮০ লক্ষের কাছে রয়েছে সাড়ে ৮ কোটির টাকার বেশি সম্পত্তি। যা বিশ্বের প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মাত্র দেড় শতাংশ। চলতি বছরের ইউবিএস গ্লোবাল ওয়েল্থ রিপোর্টে উঠে এসেছে এই তথ্য।
০২২৪
সমীক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, এই রিপোর্ট তৈরি করতে ৫৬টি জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এই জায়গাগুলিতেই রয়েছে বিশ্বের ৯২ শতাংশ সম্পদ।
০৩২৪
সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, সাড়ে ৮ কোটি টাকার সম্পত্তির নিরিখে সবচেয়ে বেশি মানুষের বাস আমেরিকায়। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চিন। আমেরিকার ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৫০ হাজার শিল্পপতির হাতে আছে সাড়ে ৮ কোটি টাকা বা তার বেশি পরিমাণ সম্পত্তি।
০৪২৪
চিনে এই ধরনের কোটিপতির সংখ্যা ৬০ লক্ষ ১০ হাজার। তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে থাকা ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জাপানে বাস করেন যথাক্রমে ৩০ লক্ষ ৬০ হাজার, ২৮ লক্ষ ৭০ হাজার এবং ২৮ লক্ষ ৩০ হাজার ‘মিলিয়নেয়ার’।
০৫২৪
ইউবিএসের এই ধরনের ধনী নির্বাচনের একটি সহজ হিসাব রয়েছে। আর্থিক সম্পদ ও প্রকৃত সম্পদের থেকে গৃহস্থালি ঋণকে বাদ দেয় এই সংস্থা। এই যোগ-বিয়োগের পর যে অঙ্কটি আসে তার উপর ভিত্তি করে এই ধরনের কোটিপতিদের তালিকা তৈরি করেছে ইউবিএস।
০৬২৪
সমীক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, ডলারের নিরিখে বিশ্বের সম্পদ গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে ৪.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ২০২২ সালে ৩ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
০৭২৪
এই কোটিপতির সংখ্যার সঙ্গে কী ভাবে দেশের অর্থনীতি জড়িয়ে রয়েছে, তা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে সমীক্ষক সংস্থা। ইউবিএসের অর্থনীতিবিদ স্যামুয়েল অ্যাডামসের কথায়, ‘‘সাড়ে ৮ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিকেরা প্রায় প্রত্যেকেই দেশের উৎপাদন ক্ষেত্রের সঙ্গে দৃঢ় ভাবে সংযুক্ত।’’
০৮২৪
সমীক্ষকদের দাবি, ২০২৮ সালের মধ্যে ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসে অস্বাভাবিক হারে কমবে এই ধরনের কোটিপতির সংখ্যা। ব্রিটেনের ক্ষেত্রে প্রতি ছ’জনের মধ্যে একজন হারাবেন সাড়ে ৮ কোটি টাকার সম্পদশালী হওয়ার তকমা।
০৯২৪
অন্য দিকে, ৪ শতাংশ এই ধরনের কোটিপতি কমবে বাঁধের দেশ নেদারল্যান্ডসে। ইউরোপের এই দুই দেশের কোটিপতি কমে যাওয়ার ব্যাখ্যাও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে ইউবিএস।
১০২৪
সমীক্ষক সংস্থার অর্থনীতিবিদ অ্যাডামসের দাবি, ‘‘বর্তমানে নেদারল্যান্ডস ও ব্রিটেনে কোটিপতির সংখ্যা বাড়ছে। এই দুটো দেশে একটা চলমান শ্রমিক শ্রেণি রয়েছে। আগামী দিনে তাঁদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ আরও সম্পদশালী হয়ে উঠতে পারেন।’’
১১২৪
নতুন সম্পদশালী শ্রেণি তৈরি হলেই দেখা দেবে অন্য সমস্যা। রিপোর্টে অ্যাডামস দাবি করেছেন, ‘‘নতুন কোটিপতিদের অনেকেই ব্রিটেন বা নেদারল্যান্ডস ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমাবেন। রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা বা অর্থনীতিতে বাড়তি সুবিধা পাওয়ার জন্য এটা করবেন তাঁরা।’’
১২২৪
গ্লোবাল ওয়েল্থ রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় অর্ধেক সম্পদ রয়েছে দেড় শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনতার হাতে। যা প্রায় ৪৭.৫ শতাংশ বা ২১৩ লক্ষ কোটি ডলার। এই পরিবারগুলির হাতে সব সময় সাড়ে ৮ কোটি টাকার বেশি অর্থ রয়েছে।
১৩২৪
বিশেষজ্ঞদের দাবি, সাধারণ ভাবে অর্থনীতির শ্রীবৃদ্ধি হলে তার সমানুপাতিক হারে বাড়তে থাকে ব্যক্তিগত সম্পদ। ফলে কোটিপতিদের হাতে থাকা সম্পদের দামও চড়চড়িয়ে বাড়বে।
১৪২৪
সমীক্ষকেরা জানিয়েছেন, ২০০০-এর দশকে চিনের উদীয়মান বাজার অর্থনীতি একটা ভিন্ন পর্যায়ে ছিল। এই সময়সীমার মধ্যে রাশিয়াতেও সম্পদবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা গিয়েছে।
১৫২৪
তবে একুশ শতকের প্রথম দিকে পশ্চিম এশিয়ার বেশ কয়েকটা দেশ দ্রুত সম্পদ জমা করতে সক্ষম হয়েছে। কোটিপতিদের সম্পদ বৃদ্ধির নেপথ্যে এই দেশগুলির অর্থনীতির বড় ভূমিকা রয়েছে।
১৬২৪
উল্লেখ্য, ১৫ বছর পর ফের বিশ্বের সম্পদের বণ্টন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করল ইউবিএস। সমীক্ষক সংস্থার দাবি, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকায় সম্পদ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এই বৃদ্ধির পরিমাণ ১৭৭ শতাংশ বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৭২৪
গত ১৫ বছরে আমেরিকার সম্পদের পরিমাণ ১৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্য দিকে ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকায় সম্পদ বেড়েছে মাত্র ৪৪ শতাংশ।
১৮২৪
বিশ্বে এই ধরনের কোটিপতিদের মধ্যে ৩৮ শতাংশই আমেরিকার বাসিন্দা। পশ্চিম ইউরোপ ও চিনে যা যথাক্রমে ২৮ ও ১০ শতাংশ।
১৯২৪
ইউবিএসের রিপোর্টে দেশভিত্তিক পরিসংখ্যানও দেওয়া হয়েছে। শতাংশের নিরিখে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি থাকেন সুইৎজ়ারল্যান্ডে। সেখানে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১২ জনই ‘মিলিয়নেয়ার’।
২০২৪
তালিকায় দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে হংকং, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস ও আমেরিকা। হংকংয়ে প্রতি ১০০ জনে ৮, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডসে প্রতি ১০০ জনে ৭ এবং আমেরিকায় প্রতি ১০০ জনে ৬ জন ‘মিলিয়নেয়ার’।
২১২৪
সাড়ে ৮ কোটি টাকার নিরিখে সম্পদশালীদের তালিকায় ১৪ নম্বরে রয়েছে ভারত। ২০০০ সালে এ দেশে এই ধরনের ধনীর সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার। ২০২৩ সালে যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ লক্ষ ৬৮ হাজার ৬৭১।
২২২৪
২০০০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ভারতে এই ধরনের কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ২৪৮ শতাংশ। যা বর্তমান জনসংখ্যার ০.০৬ শতাংশ।
২৩২৪
বর্তমানে বিশ্বের পঞ্চম অর্থনীতির দেশ ভারত। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, আগামী দিনে জিডিপি বৃদ্ধির হারে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে নয়াদিল্লি। ফলে আগামী দিনে এ দেশে যে এই ধরনের কোটিপতির সংখ্যা আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
২৪২৪
ইউবিএসের সমীক্ষকদের অনুমান, ২০২৮ সালের মধ্যে ভারতে ‘মিলিয়নেয়ার’-এর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১০ লক্ষ ৬১ হাজার ৪৬৩। বৃদ্ধির লেখচিত্রে যা ২২ শতাংশ বলে জানিয়েছেন তাঁরা।