Why White Room Torture is the worst punishment in the world dgtl
White Room Torture
দেওয়াল থেকে খাবার সবই সাদা, ঘরে ছায়া পড়ে না, ‘হোয়াইট রুম টর্চার’ ভুলিয়ে দেয় আত্মপরিচয়ও
সাদা ঘরের মধ্যে বন্দিদের আটকে রেখে মানসিক অত্যাচার করা হয়। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার নাম ‘হোয়াইট রুম টর্চার’।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৫৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
পবিত্রতার প্রতীক হিসাবে সাধারণত সাদা রং ব্যবহার করা হয়। কিন্তু একটি ঘরে বিছানার চাদর থেকে চার দেওয়ালের রং— সবকিছুই যদি সাদা হয়, তা হলে? শুনতে ভাল লাগলেও এ বড় কঠিন ঠাঁই। এমন ঘরেই রাখা হয় ইরানের বন্দিদের।
০২১৮
শুধু তা-ই নয়, ঘরে যে আসবাবপত্র রাখা হয়, তার রংও হয় সাদা। ঘরের মধ্যে একটিও জানলা থাকে না।
০৩১৮
কোনও সাধারণ আলো নয়, ঘরের মধ্যে ব্যবহার করা হয় নিয়ন আলো। আলোগুলি ঘরে এমন ভাবে লাগানো থাকে যে ঘরের কোথাও বন্দিদের ছায়া পর্যন্ত পড়ে না।
০৪১৮
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মানসিক ও শারীরিক ভাবে সুস্থ কোনও মানুষকে এই ধরনের কোনও ঘরে টানা ২৪ ঘণ্টা রাখা হলে তাঁর মানসিক অবস্থার পরিবর্তন দেখা দেয়।
০৫১৮
যদি কাউকে এই ঘরের ভিতর টানা তিন দিন রাখা হয়, তা হলে নানা শারীরিক সমস্যার সঙ্গে দেখা দেয় মানসিক সমস্যাও।
০৬১৮
শোনা যায়, ইরানের গোয়েন্দা বিভাগ বন্দিদের এ ভাবেই রাখে। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তি অথবা সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত কারও কাছ থেকে গোপন তথ্য জানতে হলে গোয়েন্দা বিভাগ এই পদ্ধতির শরণাপন্ন হয়।
০৭১৮
ইরানের গোয়েন্দারা মনে করেন, শারীরিক অত্যাচারের বদলে যদি মানসিক অত্যাচার করা হয় তা হলে তা অনেক বেশি কার্যকর হয়।
০৮১৮
বন্দিরা যেন সাদা ছাড়া অন্য কোনও রং চোখের সামনে দেখতে না পান, তার জন্য সাদা খাবার দেওয়া হয় সাদা পাত্রে।
০৯১৮
খাবারের ক্ষেত্রেও কোনও রকম বৈচিত্র্য নেই। বেশির ভাগ সময় সাদা ভাত দেওয়া হয়। অন্যান্য সময়ও এমন খাবার বাছা হয় যার রং সাদা।
১০১৮
শৌচালয়েও সাদা কাপড় পেতে রাখার নিয়ম রয়েছে। বন্দিদের সবসময় সাদা রঙের জামাকাপড় পরতে হয়।
১১১৮
কানে যেন কোনও আওয়াজ না আসে তার জন্য শব্দনিরোধক দেওয়াল দিয়ে ঘরগুলি বানানো।
১২১৮
হাঁটাচলার সময় পায়ের শব্দ এড়ানোর জন্য বন্দি-সহ জেলের সকলেই মোটা শোলের জুতো পরেন।
১৩১৮
বন্দিরা যেন স্পর্শের অনুভূতিটুকুও না পান, তার জন্য ঘরে থাকা প্রতিটি জিনিসের তলগুলি মসৃণ বানানো হয়। এই সম্পূর্ণ প্রক্রিয়ার নাম ‘হোয়াইট রুম টর্চার’।
১৪১৮
ইরানের এক সাংবাদিক ইব্রাহিম নাবাভি এই জেলে বন্দি ছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে ‘হোয়াইট রুম টর্চার’-এর অভিজ্ঞতা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সেই ঘরে থাকা তাঁর জীবনের এক ভয়ঙ্করতম অধ্যায়। জানান, ওই ঘরে টানা কিছু দিন থেকে মানসিক ও শারীরিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন।
১৫১৮
ছাড়া পাওয়ার বহু দিন পরেও তাঁর ঘুমের অসুবিধা হয়। নিয়মিত ঘুমের ওষুধ না খেলে ঘুম হয় না। একাকিত্ব গিলতে আসে বলে জানান ইব্রাহিম।
১৬১৮
আরও এক বন্দি জানান, কয়েক মাস ‘হোয়াইট রুম’-এ থাকার পর তিনি মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন। চোখের সামনে ভুল জিনিস দেখা, ঘুমের সমস্যায় ভোগেন বন্দিদের সকলেই।
১৭১৮
এমন পরিস্থিতিও দাঁড়ায়, যখন বন্দিরা নিজের পরিচয়ই ভুলে যান। আপনজনকেও চিনতে পারেন না। সেই সময় বন্দিদের মিথ্যা কথা বললেও তাঁরা তা বিশ্বাস করে ফেলেন।
১৮১৮
মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যাওয়ার পর বন্দিদের কাছ থেকে সব গোপন তথ্য বার করেন আধিকারিকেরা। শোনা যায়, ভেনেজুয়েলা এবং আমেরিকার কিছু অংশেও বন্দিদের এই ভাবে অত্যাচার করার পদ্ধতি চলে আসছে।