Why riot is happening in France and why government is blaming social medias for that dgtl
France Clash
আগুন জ্বলছে ‘প্রেমের শহরে’! কেন এই পরিস্থিতি? কেনই বা টিকটক-ভিডিয়ো গেমস্কে দায়ী করছে সরকার
হিংসা যেন থামতেই চাইছে না ফ্রান্সে। জ্বলছে সে দেশের একাধিক শহর। সেই হিংসার আগুন ছড়িয়েছে রাজধানী প্যারিসেও। কিন্তু হঠাৎ করে কেন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল ‘ভালবাসার শহরে’?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
প্যারিসশেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩ ০৯:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
হিংসা যেন থামতেই চাইছে না ফ্রান্সে। জ্বলছে সে দেশের একাধিক শহর। সেই হিংসার আগুন ছড়িয়েছে রাজধানী প্যারিসেও। কিন্তু হঠাৎ কেন এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল ‘ভালবাসার শহরে’? কোথা থেকে সূত্রপাত এই সরকার বিরোধী বিক্ষোভের?
০২১৯
মঙ্গলবার প্যারিসে নাইল নামে ১৭ বছরের এক আফ্রিকান-মরোক্কান তরুণকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় পুলিশ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশের অভিযোগ ছিল, ট্রাফিক আইন অমান্য করেছিলেন ওই তরুণ। আর সেই জন্যই গুলি চালানো হয়েছিল।
০৩১৯
সেই ঘটনার জেরে সারা দেশে এক লহমায় হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেই আগুন মাত্রা ছাড়িয়েছে। কুণ্ডলী পাকিয়ে গ্রাস করছে সে দেশের একাধিক সরকারি ভবন, ইমারত, গ্রন্থাগারকে।
০৪১৯
নাইলের মৃত্যুর পর সে দেশের সরকারের বিরুদ্ধে বর্ণবৈষম্য-সহ একাধিক অভিযোগ এনে রাস্তায় নেমেছেন সে দেশের হাজার হাজার মানুষ। জ্বালানো হচ্ছে বহু দোকান, ঘর। লুট করা হচ্ছে বন্দুকের দোকান। হামলার মুখে পড়ছে পুলিশ প্রশাসন।
০৫১৯
ফ্রান্সে হিংসার ঘটনা শনিবার পঞ্চম দিনে পা দিয়েছে। সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হলেও পরিস্থিতিতে কোনও বদল হয়নি।
০৬১৯
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, শুধুমাত্র বৃহস্পতিবার রাতেই সে দেশে প্রায় ৫০০ ভবনে আগুন লাগিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় দু’হাজার গাড়ি। এ ছাড়াও বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের প্রায় ৪ হাজার আলাদা আলাদা জায়গায় আগুন জ্বালানো হয়। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে।
০৭১৯
ফ্রান্সে হিংসার আগুনের বলি সে দেশের মার্সেই শহরের বৃহত্তম গ্রন্থাগারও। ওই গ্রন্থাগারে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বেশির ভাগ বই।
০৮১৯
এই ঘটনায় কী বলছে ফ্রান্সের ইম্যানুয়েল মাকরঁ সরকার? প্রেসিডেন্ট মাকরঁ তরুণ হত্যার নিন্দা করেছেন। তবে ফ্রান্সের এই অবস্থার জন্য ভিডিয়ো গেমস্ এবং সমাজমাধ্যমকেই দায়ী করছেন।
০৯১৯
সরকারের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, সে দেশের বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই তরুণ প্রজন্মের। আর তাই সন্তানদের হিংসা থেকে দূরে রাখার জন্য অভিভাবকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন প্রেসি়ডেন্ট মাকরঁ।
১০১৯
সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার ফ্রান্সের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে একটি বৈঠক করেন মাকরঁ। সেখানে তিনি নাকি দাবি করেন, ‘ভিডিয়ো গেমের’ জন্যই ফ্রান্সে হিংসা ছড়িয়েছে।
১১১৯
মাকরঁর দাবি, বিক্ষোভকারীরা মনে করছেন তাঁরা কোনও ভিডিয়ো গেমের রাস্তায় আছেন। আর সেই জন্যই নাকি তাঁরা যা খুশি তাই করছেন। ভিডিয়ো গেমের নেশায় বুঁদ যুবসমাজ দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে এই কাণ্ড ঘটাচ্ছেন বলেও দাবি করেছেন মাকরঁ।
১২১৯
মাকরঁর কথায়, ‘‘বাবা-মায়ের দায়িত্ব সন্তানদের বাড়িতে রাখা। শান্তি বজায় রাখতে প্রত্যেকের উচিত এই পরিস্থিতিতে সন্তানদের বাড়ির বাইরে না বেরোতে দেওয়া।’’
১৩১৯
ভিডিয়ো গেমের পাশাপাশি টিকটিক, স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক অ্যাপকেও হিংসা ছড়ানোর জন্য দায়ী করেছেন মাকরঁ।
১৪১৯
মাকরঁর দাবি, স্ন্যাপচ্যাট এবং টিকটকের মতো সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে ফ্রান্সে হিংসা ছড়ানোর ‘বীজ’ বোনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে ওই সমাজমাধ্যমগুলি থেকে হিংসার সঙ্গে সম্পর্কিত সংবেদনশীল বিষয়বস্তু সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৫১৯
মাকরঁ বলেন, ‘‘আমরা দেখছি হিংসা কী ভাবে ছড়ানো হবে, তা নিয়ে একাধিক আলাপ-আলোচনা হয়েছে স্ন্যাপচ্যাট, টিকটক-সহ আরও বেশ কয়েকটি সমাজমাধ্যমে। সমাজমাধ্যম আলোচনার জায়গা হওয়ার কারণেই তরুণ সমাজের একাংশ বাস্তবের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে হিংসার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
১৬১৯
ফরাসি প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমে যাঁরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এই হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় উস্কানি দিয়েছে, তাঁদের পরিচয় সমাজমাধ্যম সংস্থাগুলিকে প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দেবে সরকার।
১৭১৯
প্রসঙ্গত, পুলিশের গুলিতে তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে ফ্রান্সে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফ্রান্সের রাস্তায় নতুন করে ৪৫ হাজার পুলিশ এবং আধাসেনা মোতায়েন করেছে মাকরঁ সরকার। যার মধ্যে শুধু প্যারিসেই পাঁচ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
১৮১৯
সেনার পাশাপাশি সরকারের তরফে রাস্তায় সাঁজোয়া গাড়িও নামানো হয়েছে। সরকারি সূত্রে খবর, সে দেশের চারিদিকে হিংসার আগুন জ্বলে ওঠা নিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সরকার। আর তার জন্যই নাকি নতুন করে বাহিনী এবং সাঁজোয়া গাড়ি মোতায়েন করা হয়েছে সারা দেশ জুড়ে।
১৯১৯
সরকারি সূত্রের খবর, প্যারিসে ছড়িয়ে পড়া হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯০০ জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৩০০ পুলিশ আধিকারিক।