What is the alleged scam in NEET and why people are calling for justice dgtl
NEET Scam 2024
একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম! হবু চিকিৎসকদের প্রবেশিকা পরীক্ষা ঘিরে শোরগোল, নিটে নম্বর পাওয়ার নিয়ম কী?
গত ৫ মে দেশ জুড়ে নিট পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। ফল প্রকাশিত হয়েছে ৪ জুন, নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন আগে। দেখা গিয়েছে, এ বারের নিটে ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১১ জুন ২০২৪ ০৭:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট, সংক্ষেপে নিট। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা থাকলে প্রথমে এই পরীক্ষায় পাশ করতে হয়। দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার পরই ছাত্রছাত্রীরা এই পরীক্ষায় বসার সুযোগ পান।
০২২২
জাতীয় টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ) প্রতি বছর দেশ জুড়ে নিট পরীক্ষার আয়োজন করে। এই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে দেশের প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলিতে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা।
০৩২২
চলতি বছরের নিটের ফল প্রকাশিত হয়েছে গত ৪ জুন। দেশের লোকসভা নির্বাচন ফল যে দিন প্রকাশিত হয়েছে, সে দিনই নিটের ফল প্রকাশ করে এনটিএ।
০৪২২
নিটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। অভিযোগ, বড়সড় দুর্নীতি হয়েছে এ বারের নিটে। আগে থেকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বলেও দাবি করেছেন অনেকে।
০৫২২
কিন্তু নিটের ফল নিয়ে এত শোরগোল হচ্ছে কেন? কিসের ভিত্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হচ্ছে? এই ধরনের সর্বভারতীয় পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস কি সম্ভব?
০৬২২
নিটের ফলে প্রথম অসঙ্গতি র্যাঙ্ক বিভাজন। এ বারের পরীক্ষায় মোট ৬৭ জন প্রথম হয়েছেন। অর্থাৎ, তাঁদের সকলের অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্ক ১। যা এই পরীক্ষার ইতিহাসে প্রথম।
০৭২২
গত দু’বছরের নিটে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন দুই থেকে তিন জন। সেখানে এ বারে একসঙ্গে ৬৭ জন প্রথম হওয়ায় শুরুতেই খটকা লাগে। এর আগে পর্যন্ত নিটে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন সর্বোচ্চ চার জন।
০৮২২
শুধু প্রথম স্থান অধিকার করাই নয়, এই ৬৭ জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৭২০-র মধ্যে ৭২০। অর্থাৎ, তাঁরা ১০০ শতাংশ নম্বরই পেয়েছেন। একটি প্রশ্নের উত্তরও ভুল করেননি।
০৯২২
যদি তর্কের খাতিরে মেনেও নেওয়া যায় যে, ৬৭ জনই নির্ভুল উত্তর লিখেছেন নিটের খাতায়, তার পরেও প্রশ্ন থেকে যায়। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানাধিকারীদের প্রাপ্ত নম্বর তুলে দিয়েছে আরও বড় প্রশ্ন।
১০২২
অভিযোগ, এ বারের নিটে কেউ কেউ ৭১৮ এবং ৭১৯ নম্বরও পেয়েছেন। নিটের নম্বর দেওয়ার নিয়ম অনুযায়ী যা সম্ভব নয়। তবে কি নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে ওই ছাত্রছাত্রীদের নম্বর দেওয়া হয়েছে? প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।
১১২২
নিটে মোট ১৮০টি প্রশ্ন থাকে। প্রতি প্রশ্নে সঠিক উত্তরপিছু ৪ নম্বর করে পেয়ে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা। একটি প্রশ্ন ভুল হলে ওই চার নম্বর কাটা যায়। সেই সঙ্গে বাড়তি এক নম্বরও হারান পরীক্ষার্থীরা।
১২২২
কেউ ১৮০টি প্রশ্নের উত্তর ঠিক লিখলে ৭২০ নম্বর পাবেন। আবার, ১৭৯টি ঠিক উত্তর লিখে এবং একটি প্রশ্নের উত্তর ছেড়ে দিলে পাবেন ৭১৬। কেউ যদি ১৭৯টি ঠিক লিখে একটি প্রশ্নের উত্তর ভুল লেখেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর ৭১৫ (৭২০-৫) পাওয়ার কথা।
১৩২২
এই হিসাব অনুযায়ী, নিটের খাতায় কারও ৭১৯ কিংবা ৭১৮ পাওয়ার কথাই নয়। ৭২০-র পরবর্তী সর্বোচ্চ নম্বর হতে পারে ৭১৬। এখানেই ৭১৮, ৭১৯ নম্বর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্রছাত্রীরা।
১৪২২
এ প্রসঙ্গে এনটিএ-র যুক্তি, কয়েক জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে দেরি করেছিলেন। তাঁরা অপেক্ষাকৃত কম সময় পেয়েছেন। তাই তাদের বাড়তি কিছু নম্বর দেওয়া হয়েছে। এনটিএ-র এই অদ্ভুত যুক্তি মানতে নারাজ বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা।
১৫২২
গত ৫ মে দেশের ৫৭১টি শহরে নিট হয়েছিল। দেশের বাইরেও ১৪টি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সারা দেশে ৭০০-র বেশি মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানে এক লক্ষের বেশি শূন্যপদ পূরণের লক্ষ্যে এই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়।
১৬২২
নিটের ফলপ্রকাশের পর দেখা গিয়েছে, যে ৬৭ জন ৭২০ নম্বর পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আট জন একই পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন। একে নিছক কাকতালীয় ঘটনা বলতে মানতে নারাজ বিক্ষুব্ধেরা।
১৭২২
প্রশ্ন উঠেছে নিটের ফলপ্রকাশের দিন নিয়েও। কারণ এই ফল প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল আগামী ১৪ জুন। কেন তড়িঘড়ি নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন আগে ফলপ্রকাশ করা হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
১৮২২
বিক্ষুব্ধদের দাবি, ‘কারচুপি’ এবং ‘দুর্নীতি’র ফল নিটের এই পরিসংখ্যান। তা ধামাচাপা দিতেই ১০ দিন আগে ভোটের ফলপ্রকাশের দিন এই ফলও প্রকাশ করা হয়েছে। যাতে ভোটের ফলের দিকেই সকলের নজর থাকে। নিটের ফল নজর এড়িয়ে যায়।
১৯২২
নিটের ফলে দুর্নীতির অভিযোগ করে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল। আদালতে মামলাও করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগেই ফাঁস হয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ করছেন মামলাকারীরা। এমনকি, বিহার থেকে গত ১২ মে নিটের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ১৩ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছিল।
২০২২
এনটিএ অবশ্য দুর্নীতির যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষাকেন্দ্রের দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বাইরের কেউ আর ভিতরে প্রবেশ করতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
২১২২
নিটের ফল নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তুলে সরব হচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। এই পরীক্ষা বাতিল করে আবার তাঁরা নতুন করে পরীক্ষার আয়োজনের দাবি জানাচ্ছেন।
সব ছবি: সংগৃহীত।
২২২২
নিটের ফলপ্রকাশের পরেই এ নিয়ে মোদীর সরকারকে একহাত নিয়েছেন রাহুল গান্ধী। একটি পোস্টে তিনি বলেন, “নতুন সরকার শপথ নেওয়ার আগেই ডাক্তারির প্রবেশিকা পরীক্ষায় দুর্নীতি প্রকাশ্যে এসেছে। ২৪ লক্ষ ছাত্রছাত্রী বিপদে পড়েছেন। কিছু পরীক্ষার্থী এমন নম্বর পেয়েছেন, যা সাধারণ হিসাবের বাইরে। এই সরকার ক্রমাগত দুর্নীতির দায় অস্বীকার করে চলেছে।” শেষ পর্যন্ত নিটের জল কত দূর গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।