What is a Bomb Cyclone that creating havoc in America and Canada dgtl
Bomb Cyclone
হিমাঙ্কের অনেক নীচে তাপমাত্রা, সঙ্গে প্রবল তুষারঝড়! কেন হয় ‘বম্ব সাইক্লোন’?
‘বম্ব সাইক্লোনের’ কবলে পড়েছেন আমেরিকায় অন্তত ২০ কোটি বাসিন্দা। প্রায় ১৫ লক্ষ ঘরবাড়ি বিদ্যুৎহীন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় হাজার হাজার উড়ান বাতিল করা হয়েছে।
শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২২ ১৪:৪৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বড়দিনের আগে থেকেই ‘বম্ব সাইক্লোনের’ দাপটে জবুথবু আমেরিকা। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে কানাডাতেও। জো বাইডেনের দেশে অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি বিবিসি-র। চলছে প্রবল তুষারপাতও। সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। বহু জায়গায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে হিমাঙ্ক থেকে ৪৫ ডিগ্রি নীচে।
০২১৯
‘বম্ব সাইক্লোন’ আসলে কী? ঘূর্ণিঝড় থেকে কতটা আলাদা বলা যায় একে? সে সব জানানোর আগে এর জেরে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির দিকে নজর দেওয়া যাক।
ছবি: নাসা।
০৩১৯
বিবিসি-র একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বম্ব সাইক্লোনের’ কবলে পড়েছেন আমেরিকায় অন্তত ২০ কোটি বাসিন্দা। শুক্রবার পর্যন্ত ১৫ লক্ষের ঘরবাড়ি বিদ্যুৎহীন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় হাজার হাজার উড়ান বাতিল করা হয়েছে।
ছবি: রয়টার্স।
০৪১৯
আমেরিকা জুড়ে ১৯ জনের প্রাণ কেড়েছে ‘বম্ব সাইক্লোন’। দুর্যোগের আবহাওয়ার জেরে ওহায়োর স্টেট হাইওয়েতে ৫০টি গাড়ির দীর্ঘ লাইনে পর পর ধাক্কা লেগে মারা গিয়েছেন অন্তত ৪ জন। এই সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু দেখেছে ওকলাহোমা, মিসৌরি এবং টেক্সাসও।
ছবি: রয়টার্স।
০৫১৯
আমেরিকার টেক্সাস থেকে কানাডার কিউবেক পর্যন্ত প্রায় ৩,২০০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তুষারঝড়ের দাপট চলছে। এই শীতের মরসুমে বিদ্যুৎ ছাড়াই কাটাচ্ছে কানাডার অন্তারিও, ব্রিটিশ কলম্বিয়া থেকে নিউফাউন্ডল্যান্ড। বম্ব সাইক্লোনের কবলে পড়তে পারে সে দেশও।
ছবি: রয়টার্স।
০৬১৯
শুক্রবার আমেরিকার ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস (এনডব্লিউএস) জানিয়েছে, আমেরিকার মন্টানায় তাপমাত্রা মাইনাস ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে মেনে গিয়েছে। সাউথ ডাকোটায় এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নিজেদের জামাকাপড় পুড়িয়ে উষ্ণতার পরশ নিচ্ছেন বহু স্থানীয় বাসিন্দা।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭১৯
আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া এবং মিশিগানে ভারী তুষারপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। অন্য দিকে, বাফেলো এবং নিউ ইয়র্কে কমপক্ষে ৩৫ ইঞ্চি তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। যার জেরে দৃশ্যমানতা শূন্যে নেমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা।
০৮১৯
এনডব্লিউএস-র হুঁশিয়ারি, নতুন করে তুষারঝড়ের কবলে পড়তে পারেন কম করে ৮০ লক্ষ আমেরিকাবাসী। আমেরিকার নিউ ইংল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির উপকূলবর্তী এলাকায় বন্যার কবলে পড়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিম এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা আবার সিয়াটল এবং পোর্টল্যান্ডের বরফমোড়া রাস্তায় স্কেটিংয়ে নেমেছেন।
ছবি: সংগৃহীত।
০৯১৯
এমনকি, আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলের লুইজ়িয়ানাস আলাবামা, ফ্লরিডা এবং জর্জিয়ার মতো উষ্ণ রাজ্যেও প্রবল শীতের দাপট চলবে বলে সতর্কতা জারি করেছে এনডব্লিউএস।
ছবি: পিটিআই।
১০১৯
আবহবিদরা ‘বম্ব সাইক্লোন’ গতিপ্রকৃতি নিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি এর সংজ্ঞাও জানিয়েছেন। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ জানিয়েছেন, মধ্য-অক্ষাংশের ঝড়ের কেন্দ্রভাগে বায়ুর চাপ কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রতি ঘণ্টায় ১ মিলিবার হারে হ্রাস পেলে তাকে ‘বম্ব সাইক্লোন’ বলা যায়।
ছবি: পিটিআই।
১১১৯
বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আবহবিদরা জানিয়েছেন, সাধারণত স্বাভাবিক অবস্থায় বায়ুর চাপ প্রায় ১,০১০ মিলিবার থাকে। তবে আমেরিকার জুড়ে এই ঝড়ের যে দাপট চলছে, তাতে বায়ুর চাপ ১,০০৩ থেকে ৯৬৮ মিলিবার পর্যন্ত হ্রাস পাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে। বায়ুচাপ ৩৫ মিলিবার কমে গেলেও তা ‘বম্ব সাইক্লোন’ ঘটানোর জন্য যথেষ্ট।
ছবি: পিটিআই।
১২১৯
‘বম্ব সাইক্লোন’ দেখা দেয় কেন? অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের মতোই দু’ধরনের বাতাসে (এ ক্ষেত্রে ঠান্ডা এবং গরম) তীব্র সংঘর্ষের ফলে এর উৎপত্তি হয়। সাধারণত, ঠান্ডা এবং শুষ্ক বায়ু উত্তর দিক থেকে নীচে নামে উষ্ণ ও আর্দ্র বায়ু গ্রীষ্মমণ্ডল থেকে উপরে উঠে আসে। এই দুই বিপরীতমুখী বাতাসের সংঘর্ষে ‘বম্ব সাইক্লোন’ তৈরি হয়।
ছবি: পিটিআই।
১৩১৯
‘বম্ব সাইক্লোনে’ উষ্ণ বায়ু দ্রুত গতিতে উপরে উঠতে উঠতে মেঘের মতো অবস্থা তৈরি করে। সে সময় বায়ুর চাপ কমতে কমতে ঝড় তৈরি করে। যা নিম্নচাপের কেন্দ্রের চারপাশে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে সঞ্চালিত হয়।
ছবি: পিটিআই।
১৪১৯
ঘূর্ণিঝড়ের থেকে ‘বম্ব সাইক্লোনের’ তফাত কতটা? আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ ড্যানিয়েল সোয়াইন ‘স্কাই নিউজ়’-কে জানিয়েছেন, সমস্ত ‘বম্ব সাইক্লোন’-ই ঘূর্ণিঝড় নয়।
ছবি: রয়টার্স।
১৫১৯
ড্যানিয়েল আরও জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের বহু বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ‘বম্ব সাইক্লোনের’ মিল রয়েছে। এতে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া, ভারী বর্ষণ এবং ঝড়ের কেন্দ্রে একটি ‘চোখ’ও তৈরি হয়।
ছবি: সংগৃহীত।
১৬১৯
ড্যানিয়েলের ব্যাখ্যা, ঘূর্ণিঝড় সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে তৈরি হয়। এই কারণেই গ্রীষ্মে বা শরতের শুরুতে আমেরিকায় ঘূর্ণিঝড় দেখা যায়, যখন সাধারণত সমুদ্রের জল সবচেয়ে উষ্ণ থাকে।
ছবি: রয়টার্স।
১৭১৯
ঘূর্ণিঝড়ের তুলনায় ‘বম্ব সাইক্লোন’ হওয়ার জন্য সমুদ্রের জলের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন ড্যানিয়েল। তবে এগুলি স্থলভাগের পাশাপাশি সমুদ্রের উপরেও দেখা দিতে পারে। মূলত শরতের শেষে এবং বসন্তের শুরুতে সবচেয়ে বেশি ‘বম্ব সাইক্লোনের’ দেখা মেলে। ওই সময় হিমশীতল অতলান্তিকের বাতাসের উপর উষ্ণ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বায়ু ঝাঁপিয়ে পড়ে এই ঝড়ের সৃষ্টি করে।
ছবি: রয়টার্স।
১৮১৯
এই ঝড়ের নাম ‘বম্ব সাইক্লোন’ কেন? ‘ওয়াশিটংটন পোস্ট’-এর একটি প্রতিবেদন জানিয়েছে, ১৯৮০ সালের একটি গবেষণাপত্রে এই শব্দ দু’টি প্রথম বার ব্যবহার করেছিলেন আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)-র আবহাওয়াবিদ ফ্রেডরিক স্যান্ডার্স এবং জন আর গ্যায়াকুম।
ছবি: রয়টার্স।
১৯১৯
‘ওয়াশিটংটন পোস্ট’-কে গ্যায়াকুম জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের মরসুমে ঝড়ের তীব্রতা বোঝাতে তাঁরা এ হেন নামকরণ করেছিলেন।