তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের একচেটিয়া ‘নেতা’ হিসাবে প্রথমেই আসবে আমেরিকার নাম। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুনিয়ায় রাজত্ব চালানো ওপেনএআই, গুগ্ল, মেটা বা অ্যাথ্রোপিকের মতো বহুজাতিক টেক জায়ান্ট সংস্থাগুলির জন্মও আমেরিকাতেই। তবে ‘ডিপসিক-আর১’ আসার পর মনে করা হচ্ছে, শীঘ্রই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বাজারে আমেরিকার একচেটিয়া আধিপত্যে থাবা বসাতে চলেছে চিন। আর তা মনে করার নেপথ্যে রয়েছে একাধিক কারণও।
উল্লেখ্য, বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি বাজারে হইচই ফেলেছে ‘ডিপসিক’। কেউ কেউ একে ‘লম্বা রেসের ঘোড়া’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন। কেন? প্রযুক্তিবিদেরা এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে বহুল ব্যবহৃত ওপেনএআইয়ের কৃত্রিম মেধা ‘চ্যাটজিপিটি’র কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিটি তৈরি করতে আমেরিকার টেক জায়ান্ট সংস্থাটির যত খরচ হয়েছে, তার চেয়ে অনেক কম টাকায় ‘ডিপসিক-আর১’ বানিয়েছে চিনা স্টার্ট আপ। আর তাই এআইয়ের প্রতিযোগিতার বাজারে এটি অচিরেই ওয়াশিংটনকে পিছনে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, এত দিন পর্যন্ত চিনা কৃত্রিম মেধা প্রযুক্তি সংস্থাগুলি অত্যাধুনিক হার্ডঅয়্যারের উপর নির্ভরশীল ছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে প্রথম বার সফ্টঅয়্যার নিয়ে কাজ করছে ডিপসিক। আর সেটাই ওয়াশিংটনের সিলিকন ভ্যালির কর্তাব্যক্তিদের যথেষ্ট অবাক করেছে। ‘ডিপসিক-আর১’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাড়তি সুবিধা মিলবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। ফলে চিনা স্টার্ট আপটির এআই ঘিরে যে আগ্রহ বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দাবি, আগামী দিনে বিশ্বের দুই মহাশক্তিধরের মধ্যে ‘কৃত্রিম মেধার যুদ্ধ’ বেধে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। সেখানে প্রথম ধাপে এগিয়ে গেল চিন। উন্নত এআই প্রযুক্তি তৈরির জন্য প্রতি বছর কয়েক কোটি ডলার খরচ করে আমেরিকা। সেখান থেকে সরে এসে কম খরচে কত দ্রুত নতুন প্রযুক্তি সেখানকার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি নিয়ে আসতে পারে, সেটাই এখন দেখার।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, বর্তমানে চিনকে অতি উন্নত এনভিডিয়া এআই চিপ রফতানি করা বন্ধ রেখেছে আমেরিকা। কৃত্রিম মেধা প্রযুক্তিকে বিকশিত করতে এই ধরনের চিপগুলির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিপসিকের সাফল্যে এটা প্রমাণিত যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ড্রাগনের উপর সে ভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং ওয়াশিংটনকেই খোলা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে সক্ষম হয়েছে বেজিং।
নতুন এআই প্রযুক্তি বাজারে এনে রীতিমতো হইচই ফেলে দেওয়া ডিপসিকের বাজেটেও রয়েছে চমক। এর আগে ‘ডিপসিক-ভি৩’ নামের কৃত্রিম মেধা প্রযুক্তি তৈরি করতে মাত্র ৫৬ লক্ষ ডলার খরচ করেছে ওই চিনা স্টার্ট আপ। অন্য দিকে স্যাম অল্টম্যানের নেতৃত্বাধীন ওপেনএআই তাদের ‘জিপিটি-৪’ মডেলের জন্য এখনও পর্যন্ত ব্যয় করেছে প্রায় ১০ কোটি ডলার।
ড্রাগনভূমির হ্যাংঝো প্রদেশে রয়েছে ডিপসিকের প্রধান কার্যালয়। সংস্থাটির সিইও লিয়ান ‘কোয়ান্টিটিভ হেজ ফান্ড হাই-ফ্লায়ার’ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতাও বটে। ২০২১ সালে কয়েক হাজার এনভিডিয়া জিপিইউ কেনেন তিনি। তখন অনেকেই বিষয়টি নিয়ে মজা করেছিলেন। পরে সেগুলিকে কাজে লাগিয়ে নতুন কৃত্রিম মেধা তৈরি করেন লিয়ান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy