একটা সময়ে ইউরোপ থেকে এশিয়া মাইনর হয়ে আফ্রিকা পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিল অটোমান সাম্রাজ্য। নানা ফন্দি ফিকিরে পুরনো সেই গৌরব ফিরে পেতে চাইছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোগান।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১০:২৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৭
গা ঝাড়া দিয়ে উঠে বসেছে ‘ইউরোপের রুগ্ন মানুষ’! ঘুম ভাঙতেই হাতে নিয়েছে হাতিয়ার। উদ্দেশ্য, ইউরোপ থেকে এশিয়া পর্যন্ত দেশের সীমান্ত বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে পুরনো গৌরবের পুনঃপ্রতিষ্ঠা। এর জন্য ইসলামকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন তিনি। তার এ হেন আগ্রাসী মনোভাবে ‘ধর্মযুদ্ধের’ আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।
০২২৭
দক্ষিণে এশিয়া মাইনর। পূর্বে ইউরোপের বিখ্যাত বলকান এলাকা। এই দু’য়ের সংযোগস্থলে আয়তাকার মুসলিম দেশ তুরস্ক। একটা সময়ে একে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সুবিশাল অটোমান সাম্রাজ্য। শুধু তা-ই নয়, ইউরোপের এই দেশটি থেকেই গোটা আরব দুনিয়াকে শাসন করতেন ইসলামীয় ধর্মগুরু ‘খলিফা’। ইতিহাসের পাতায় ধূসর হয়ে যাওয়া তুরস্কের সেই প্রতাপ ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন সেখানকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোগান।
০৩২৭
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের বড় অংশের দাবি, পুরনো অটোমান সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আগুন নিয়ে খেলছেন এর্ডোগান। তাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে সিরিয়া ও লিবিয়ার গৃহযুদ্ধে লাগাতার উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ। আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজ়ানের মধ্যে সংঘর্ষে বাঁধানোর নেপথ্যেও এর্ডোগানের ভূমিকা সন্দেহের ঊর্ধ্বে নয়। এ ছাড়া মিশর-সহ আফ্রিকার বহু দেশে আঙ্কারার প্রভাব বৃদ্ধি চেষ্টা করছেন ৭১ বছরের এই ধুরন্ধর রাজনীতিবিদ।
০৪২৭
অনেকে মনে করেন, মুসলিম দুনিয়ার ‘খলিফা’র আসনপ্রাপ্তিই এর্ডোগানের মূল লক্ষ্য। আর তাই ইসলামের জন্মস্থান মক্কা-মদিনার দেশ সৌদি আরবকে পিছনে ফেলতে চাইছেন তিনি। পাশাপাশি, ‘ইসলামীয় সহযোগিতা সংস্থা’য় (অর্গানাইজ়েশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন বা ওআইসি) নিজেকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে মোটা টাকা ছড়িয়ে চলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
০৫২৭
১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ওআইসিতে রয়েছে ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্র। এত দিন এই সংগঠনের অবিসংবাদী নেতা ছিল সৌদি আরব। মক্কা-মদিনার দেশটির সেই আসন টলাতে ওআইসি-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলিতে ইসলামের প্রচার, ধর্মীয় শিক্ষা এবং মসজিদ নির্মাণে বিপুল অর্থ খরচ করেছে তুরস্ক। ফলে গত কয়েক বছরে সেখানে হু-হু করে বেড়েছে এর্ডোগানের জনপ্রিয়তা।
০৬২৭
বিশ্লেষকদের অনুমান, নিজের পরিকল্পনার বাস্তব রূপায়ণে সিরিয়াকেই প্রথমে ‘গিলতে’ চাইছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। গত বছরের ডিসেম্বরে পশ্চিম এশিয়ার আরব দেশটির রাজধানী দামাস্কাস দখল করে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ (এইচটিএস)। ফলে বাধ্য হয়ে ২৪ বছরের রাজপাট ফেলে সেখান থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ।
০৭২৭
দামাস্কাসে আসাদ সরকারের পতনে ‘ফাঁকা মাঠে গোল’ করার সুযোগ পেয়েছেন এর্ডোগান। কারণ, বিদ্রোহী এইচটিএসের প্রধান আবু মহম্মদ আল-জুলানি আদতে ‘তাঁরই লোক’। আর তাই লম্বা সময় ধরে চলা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার বাহিনীকে হারাতে প্রথম দিন থেকেই জুলানিকে হাতিয়ার ও অর্থ ‘জুগিয়ে’ গিয়েছেন তিনি। ফলে আরব মুলুকটির নতুন সরকার যে এর্ডোগানের আঙ্গুলিহেলনেই চলবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
০৮২৭
গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সিরিয়া দখলের নীল নকশা নিজেই ফাঁস করেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। ওই দিন এর্ডোগান বলেন, ‘‘আমরা প্রথমে ইদলিব দখল করব। এর পর পতন হবে হামা আর হোমসের। সব শেষে রাজধানী দামাস্কাসে ঢুকবে বাহিনী।’’ বাস্তবে জুলানির নেতৃত্বে হুবহু ঠিক সে ভাবেই আসাদ সরকারের পতন ঘটায় বিদ্রোহী ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ গোষ্ঠী।
০৯২৭
দামাস্কাসের পতনের পরই জুলানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তুরস্কের গুপ্তচর সংস্থা ‘ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স অর্গানাইজ়েশন’-এর ডিরেক্টর ইব্রাহিম কালিন। দু’জনকে একসঙ্গে স্থানীয় একটি মসজিদে নমাজ় পড়তেও দেখা যায়। পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলির দাবি, বাশারকে তাড়াতে সিরিয়ার শীর্ষ সেনা অফিসার, পদস্থ সরকারি আধিকারিক এবং রাজনৈতিক নেতাদের দলে টানার গুরুদায়িত্ব কালিনের উপরেই ছেড়েছিলেন এর্ডোগান।
১০২৭
ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দামাস্কাসের পতনের অন্তত তিন মাস আগে থেকে সিরিয়ায় প্রবল ভাবে সক্রিয় ছিলেন কালিন এবং তাঁর গুপ্তচর বাহিনী। বাশারের সরকারি ফৌজের হাঁড়ির খবর আঙ্কারার প্রতিরক্ষা সদর দফতরে পাঠাতেন তিনি। প্রতিটা রণাঙ্গনে আসাদের বাহিনীর পরাজয়ের নেপথ্যে একেই অন্যতম বড় কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
১১২৭
এখানেই শেষ নয়। আসাদ ক্ষমতায় থাকাকালীনই গৃহযুদ্ধের সুযোগ নিয়ে উত্তর সিরিয়ার কিছু এলাকা কব্জা করে তুর্কি সেনা। এর্ডোগানের নির্দেশে সেখানে ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’ নামের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে গড়ে তোলেন তুরস্কের গুপ্তচরেরা। বাশারকে ক্ষমতাচ্যূত করতে তাঁদেরও রণাঙ্গনে নামিয়েছিল আঙ্কারা।
১২২৭
আসাদের শাসনকালেই উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা চলে যায় কুর্দ জনজাতির নিয়ন্ত্রণে। তাঁদের সেখান থেকে তাড়িয়ে ওই আরবভূমিও দখলের ছক রয়েছে এর্ডোগানের। পশ্চিম এশিয়ার দেশটিতে কুর্দদের যে বাহিনী রয়েছে তার নাম ‘সিরিয়ান কুর্দিশ ফোর্স’। এদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি’কে লেলিয়ে দেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
১৩২৭
তবে শুধু পর্দার আড়ালে থেকে মদত যুগিয়ে যাওয়াই নয়, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে তুরস্কের ফৌজকে সরাসরি নামানোর অভিযোগও রয়েছে এর্ডোগানের বিরুদ্ধে। পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, তুর্কি সেনার দু’টি বাহিনীকে সক্রিয় ভাবে আসাদের ফৌজের বিরুদ্ধে রণাঙ্গনে লড়তে দেখা গিয়েছে। এদের নাম, সুলেমান শাহ ব্রিগেড এবং সুলতান মুরাদ ডিভিশন। মজার বিষয় হল, ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যাবে অটোমান সেনাতেও ছিল ঠিক এই নামেরই দু’টি বাহিনী।
১৪২৭
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের কথায়, এ ভাবেই নতুন অটোমান সাম্রাজ্যের ভিত্তি গড়ে তুলছেন এর্ডোগান। স্বাধীন কুর্দিস্তান মেনে নিতে নারাজ তিনি। উল্টে সিরিয়া এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে কুর্দদের পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে সেই জমি তুরস্কে মিশিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন বছর ৭১-এর এই তুর্কি রাজনৈতিক নেতা।
১৫২৭
২০১৯ সালে ইরাকে ঢুকে একগুচ্ছ কুর্দ নেতাকে নিকেশ করে তুরস্কের বাহিনী। স্বাধীন কুর্দিস্তান গড়ে তুলতে সেখান থেকে তুর্কিভূমিতে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন তাঁরা। আঙ্কারার এই সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নাম ছিল ‘অপারেশন ক্ল’। এতে উত্তর ইরাকের কিছু জমি কব্জা করতে সক্ষম হন এর্ডোগান। সেখানে দ্রুত সেনাঘাঁটি তৈরি করে নিজের অবস্থান মজবুত করেন তিনি।
১৬২৭
সিরিয়া এবং ইরাকের পাশাপাশি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের শ্যেন দৃষ্টি পড়েছে লিবিয়ার উপরেও। বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, এর মূল কারণ হল অর্থনীতি। আফ্রিকার দেশটির মাটির গভীরে রয়েছে বিপুল খনিজ তেলের ভান্ডার। এর বাজারমূল্য ৭০ হাজার কোটি ডলার। সেই ‘তরল সোনা’ আঙ্কারায় তুলে আনতে চাইছেন এর্ডোগান।
১৭২৭
সিরিয়ার মতো দীর্ঘ দিন ধরে গৃহযুদ্ধের আগুনে পুড়ছে লিবিয়াও। রাজধানী ত্রিপোলির সরকারকে উৎখাত করতে সশস্ত্র বিদ্রোহের রাস্তা ধরেছেন সেনা অফিসার তথা ফিল্ড মার্শাল খলিফা হাফতার। এ ব্যাপারে রাশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং মিশরের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। অন্য দিকে ত্রিপোলির সরকারের পতন ঠেকাতে সেখানে সরাসরি ফৌজ পাঠিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
১৮২৭
বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, লিবিয়ার ব্যাপারে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে দলে টানতে সক্ষম হয়েছেন সুচতুর এর্ডোগান। ফলে আফ্রিকায় সেনা পাঠানো বা সেখানকার গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক চাপ এড়াতে সক্ষম হয়েছেন তিনি। মূলত এর্ডোগানের জন্যই বর্তমানে দু’ভাগে ভেঙে গিয়েছে লিবিয়া। ফিল্ড মার্শালের হাতে দেশটির সর্বাধিক জমি থাকলেও ত্রিপোলি সরকার নিয়ন্ত্রণ করছে তেলের খনি।
১৯২৭
আর তাই ত্রিপোলি সরকারের যাতে কোনও ভাবেই পতন না হয়, সে দিকে সদা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি, ফিল্ড মার্শাল খলিফা হাফতারকে গণহত্যাকরী বলতেও ছাড়েননি তিনি। ২০১৯ সালে ত্রিপোলি সরকারের সঙ্গে সামুদ্রিক এবং ফৌজি সমঝোতা সংক্রান্ত একটি চুক্তি করেন এর্ডোগান। এর মাধ্যমে ভূমধ্যসাগরে ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জ়োনের’ সীমা আফ্রিকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে আঙ্কারা।
২০২৭
বর্তমানে আরব মুলুক থেকে ভূমধ্যসাগরের মধ্য দিয়ে গ্যাসের পাইপলাইন ইউরোপের দেশগুলিতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কিন্তু তুরস্ককে বাদ দিয়ে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কারণ, ওই সমুদ্রের বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে আঙ্কারার ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জ়োন’। এর জন্য ভবিষ্যতে এশিয়া মাইনর এবং বলকান এলাকার দেশটির মোটা টাকা মুনাফার সম্ভাবনা বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।
২১২৭
২০২৩ সালে জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের সম্মেলনের আয়োজন করে নয়াদিল্লি। সেখানে ‘ভারত-পশ্চিম এশিয়া-ইউরোপ আর্থিক বারান্দা’ (ইন্ডিয়া মিডল ইস্ট ইউরোপ ইকোনমিক করিডোর) নামের বিকল্প একটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক রাস্তা তৈরির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই প্রকল্পটিতে ভূমধ্যসাগর হয়েই ভারত তথা এশিয়ার পণ্য ঢুকবে ইউরোপে। সেখানকার নিয়ন্ত্রণ এর্ডোগানের হাতে থাকায় আন্তর্জাতিক স্তরে বাড়ছে আঙ্কারার গুরুত্ব।
২২২৭
এ ছাড়া সাইপ্রাস দ্বীপের ৩৭ শতাংশের বেশি এলাকা কব্জা করেছে তুরস্ক। গ্রিকদের তাড়িয়ে সেখানে অটোমান সাম্রাজ্যের গৌরবের কথা প্রচার করছেন প্রেসিডেন্ট এর্ডোগান। পাশাপাশি, তুর্কিদের পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে সেখানে। এ ভাবে সাইপ্রাসের জনজাতিকে পুরোপুরি বদলাতে চাইছেন তিনি।
২৩২৭
১২৯৯ সালে অটোমান সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন তুর্কি সম্রাট প্রথম ওসমান। ১৫ শতকে অটোমানদের আক্রমণেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় রোমান বাইজ়ানটাইন সাম্রাজ্য। ১৪৫৩ সালে এর রাজধানী কনস্ট্যান্টিনোপল চলে যায় দ্বিতীয় মহম্মদের দখলে। পরবর্তীকালে নাম বদলে সেটি পরিচিতি পায় ইস্তানবুল হিসাবে।
২৪২৭
ইউরোপ থেকে শুরু করে আরব মুলুক এমনকি মিশর পর্যন্ত একটা সময়ে ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের আওতাভুক্ত। সম্পূর্ণ গ্রিস ছিল তুরস্কের কব্জায়। ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জার্মানি ও অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের জোটে যোগ দেয় অটোমানরা। আর সেটাই ছিল তুরস্কের জমি হারানোর অন্যতম প্রধান কারণ।
২৫২৭
পাঁচ বছর ধরে চলা বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটেন, ফ্রান্স-সহ মিত্র বাহিনীর হাতে সম্পূর্ণ ভাবে পর্যুদস্ত হয় জার্মানি। একই হাল হয় অস্ট্রো হাঙ্গেরি এবং অটোমান সাম্রাজ্যের। এর পর অবাধ্য তুরস্ককে শিক্ষা দিতে ১৯২০ এবং ১৯২৩ সালে দু’টি চুক্তিতে সই করায় ব্রিটেন। সেগুলি হল যথাক্রমে সেভ্রেস এবং লুসান সমঝোতা।
২৬২৭
লুসান চুক্তিতে অটোমান সাম্রাজ্যকে বেশ কয়েকটি খণ্ডে বিভক্ত করে ইংরেজরা। ফলে পশ্চিম এশিয়ায় জন্ম হয় নতুন নতুন দেশের। এই চুক্তিকে বাতিল করে পুরনো অটোমান সাম্রাজ্যকে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন এর্ডোগান। ইতিমধ্যেই তুরস্ককে ইসলামীয় শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত করেছেন তিনি।
২৭২৭
তবে এর্ডোগানের কাজটা মোটেই সহজ নয়। প্রথমত, গত কয়েক বছর ধরেই আঙ্কারার আর্থিক পরিস্থিতি বেশ টলমল। দ্বিতীয়ত, অটোমান সাম্রাজ্য থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া বহু দেশই বর্তমানে বেশ শক্তিশালী। তাদের সবাইকে হারিয়ে পুরনো গৌরব ফিরে পাওয়াকে শুধু কঠিন নয়, একরকম অসম্ভবই বলছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞেরা।