TMC MP Abhishek Banerjee filed a lawsuit against Justice Abhijit Gangopadhyay in the Supreme Court dgtl
Abhishek Banerjee-Abhijit Gangopadhyay
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ তৃণমূল সেনাপতি! জানালেন পাঁচ আর্জি
সুপ্রিম কোর্টের কাছে তৃণমূল সাংসদের আর্জি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হোক। শীর্ষ আদালতে তৃণমূল সাংসদ মূলত পাঁচটি আর্জি জানিয়েছেন। দেখে নেওয়া যাক সেগুলি কী কী?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে পাঁচ দফা আর্জি জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আবেদনে অভিষেক জানিয়েছেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আদালতের বাইরে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের কাছে তৃণমূল সাংসদের আর্জি, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হোক। শীর্ষ আদালতে তৃণমূল সাংসদ মূলত পাঁচটি আর্জি জানিয়েছেন।
০৪২০
১। অভিষেকের অভিযোগ, বিচারপতি আদালতের ভিতরে বা বাইরে বাদী-বিবাদী পক্ষকে নিয়ে নানা মন্তব্য করে থাকেন। সেই সব মন্তব্য যাতে কোনও ভাবেই তদন্তকে প্রভাবিত না করে, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হোক।
০৫২০
২। অভিষেকের অভিযোগ, রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হয়ে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন বিচারপতি। যা বিচারব্যবস্থার নীতি-আদর্শের বিরুদ্ধাচরণের শামিল। সাংসদের আর্জি, ওই বিচারপতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক।
০৬২০
৩। অভিষেকের আর্জি, কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে একটি বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করতে নির্দেশ দেওয়া হোক। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে যে সব মামলা রয়েছে, তাঁর বেঞ্চ থেকে যে মামলাগুলি সরে অন্য বেঞ্চে (বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চ) গিয়েছে, সেই সব মামলার শুনানি ওই বিশেষ বেঞ্চেই হোক।
০৭২০
৪। অভিষেক চাইছেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যাতে কোনও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করেন, তা নিশ্চিত করতে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ দেওয়া হোক।
০৮২০
৫। সমস্ত তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালত যা উচিত মনে করবে, তেমনই নির্দেশ দেওয়া হোক বলেও আর্জিতে জানিয়েছেন অভিষেক।
০৯২০
বস্তুত, কিছু দিন আগেই অভিষেকের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের সামনেই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, এক জন নেতা হিসাবে অভিষেকের সম্পত্তির উৎস কী? সাংসদ কি তাঁর সম্পত্তির হিসাব দেবেন, তিনি কি তাঁর সম্পত্তির হিসাব সমাজমাধ্যমে পোস্ট করবেন? এমনই কিছু মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি।
১০২০
তিনি বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ হিসেবে আমরা দেখতে চাই, কার কত সম্পত্তি আছে। কে কত সম্পত্তি করেছেন? কার কতটা সম্পত্তির উৎস কী।’’
১১২০
এর পর বামনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের উদাহরণ টানেন বিচারপতি। তাঁর কথায়, ‘‘অভিষেক যদি সমাজমাধ্যমে ওই পোস্ট করেন, তবে তাঁর সমসাময়িক নেতা ধরুন মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বা অন্য নেতাদের কাছেও একই আবেদন রাখব। তাঁরাও সম্পত্তির হলফনামা তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়াতে দিন। আমরা দেখতে চাই।’’
১২২০
পাশাপাশি সন্দেশখালিকাণ্ডে গত শুক্রবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য সরকার এবং রাজ্যের শাসকদলের সমালোচনা করেন প্রকাশ্যেই। সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে আক্রান্ত ইডি আধিকারিকদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
১৩২০
সেখান থেকে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ইডি অফিসারদের হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। তখনও বলেছি, দুর্নীতির তদন্ত আটকাতে রাজ্য সরকার কত টাকা সুপ্রিম কোর্টে খরচ করল? তার পরিমাণটা কি তারা জানাবে? কারণ আমি এর জবাব জানতে চাই। না জানালে অন্য ভাবে জানতে চাইব।“
১৪২০
তিনি আরও জানান, “আজও সংবাদমাধ্যমের মারফত জানতে চাইছি। এর পর অফিসিয়ালি প্রশ্ন করব দুর্নীতির তদন্ত আটকাতে কত টাকা খরচ করা হয়েছে? তাতে যদি আমার বিরুদ্ধে চিঠি লেখে, লিখুক না।’’
১৫২০
পরে অন্যত্র বিচারপতি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘এটা কী ধরনের রাজ্য চলছে, কী ধরনের প্রশাসন চলছে, তা আমরা বুঝতে পারছি সকলেই। দেখা যাক কত দিন চলে তারা। আইনের মুখোমুখি হয়ে তারা কত দিন চালাতে পারে!’’
১৬২০
ঘটনাক্রমে সোমবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অপসারণ চেয়ে একটি চিঠি জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ওই দিন সন্ধ্যায় হাই কোর্ট থেকে বেরিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিচারপতি বলেন, ‘‘ওদের অসুবিধা হচ্ছে আমার বিভিন্ন পদক্ষেপে ওদের বিভিন্ন চোরেরা জেলে রয়েছেন। আরও কিছু জেলে যাবেন। সেই জন্যই আমার উপর এত রাগ।’’
১৭২০
এখন সুপ্রিম কোর্টের কাছে অভিষেকের আর্জি, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ মন্তব্য করার জন্য হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে দিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হোক।
১৮২০
পাশাপাশি কোনও বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যাতে বাইরে কোনও মন্তব্য না করেন, এ নিয়েও সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছেন তিনি।
১৯২০
উল্লেখ্য, এর আগেও অভিষেকের তরফে হাই কোর্টে জানানো হয়েছিল, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর বিরুদ্ধে একপেশে বা পক্ষপাতদুষ্ট মনোভাব নিয়েছেন। নিয়োগ দুর্নীতি মামলা প্রসঙ্গে এ কথা বলা হয় তাতে। বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে এই সাবমিশন করেন অভিষেক।
২০২০
অন্য দিকে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় গত বছর নির্দেশ দেন সিবিআই এবং ইডি চাইলে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।