this bank of ayodhya does not deposit money account holders get special interest dgtl
International Shree Sitaram Bank
বিনা টাকায় বিরল ‘সুদ’! অযোধ্যার ৫৪ বছরের ব্যাঙ্কের ১৩৬টি শাখা, দেশে এবং বিদেশেও
সুদের পাশাপাশি বোনাসও রয়েছে এই ব্যাঙ্কে। গ্রাহক যদি ‘সীতারাম’ নাম ৮৪ লক্ষ বার লিখে ব্যাঙ্কে জমা দেন তবে বিনিময়ে তিনি লাভ করবেন ‘মোক্ষ’!
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
এমন ব্যাঙ্ক, যেখানে টাকা থাকে না। তা সত্ত্বেও এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন ৩৫ হাজার গ্রাহক। ব্যাঙ্কের দাবি, এঁরা সুদও পান। যে সুদ বিশ্বের আর কোনও ব্যাঙ্ক দেয় বলে অন্তত তাঁদের জানা নেই।
০২১৯
ব্যাঙ্কের নাম ইন্টারন্যাশনাল শ্রী সীতারাম নাম ব্যাঙ্ক। অযোধ্যায় এই ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল ১৯৭০ সালে। এখন যিনি রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রধান, সেই মহন্ত নৃত্যগোপাল দাসই এই ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা।
০৩১৯
এই ব্যাঙ্কের শাখা শুধু ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে নয়, ছড়িয়ে রয়েছে বিদেশেও। আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, নেপাল, ফিজি এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ‘ওভারসিজ় ব্রাঞ্চ’ বা বৈদেশিক শাখা রয়েছে অযোধ্যার সীতারাম ব্যাঙ্কের। সব মিলিয়ে এই শাখার সংখ্যা ১৩৬।
০৪১৯
আর এই সমস্ত শাখা মিলিয়েই এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যা এখন পৌঁছেছে ৩৫ হাজারে। যাঁরা অনেক ‘কাঠখড়’ পুড়িয়ে এবং ‘পরিশ্রম’ করে অর্জন করেছেন এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার যোগ্যতা।
০৫১৯
আসলে এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম অন্যান্য ব্যাঙ্কের মত নয়। শুধু অর্থ থাকলে এবং পরিচয়পত্র সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা মেটালেই এই ব্যাঙ্কে অ্যকাউন্ট খোলা যায় না।
০৬১৯
অযোধ্যার সীতারাম ব্যাঙ্কের খাতা খোলার জন্য দরকার আরও একটি খাতা। ইচ্ছুক ব্যক্তিদের সেই খাতা (বিশেষ বুকলেট) এবং সঙ্গে একটি লাল পেন দেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষই।
০৭১৯
গ্রাহক হতে চাওয়া ব্যক্তিকে এই খাতায় ওই পেন দিয়ে ন্যূনতম পাঁচ লক্ষ বার ‘সীতারাম’ লিখতে হয়। খাতা ভর্তি করে তা ব্যাঙ্কে জমা দিলে, তবেই তাঁর নামে অ্যাকাউন্ট তৈরি হয় ব্যাঙ্কে। দেওয়া হয় পাসবই।
০৮১৯
বিভিন্ন দেশে অ্যাকাউন্ট। তাই নানা ভাষায় সীতারাম নাম লেখা খাতা জমা পড়ে সীতারাম ব্যাঙ্কে। এর মধ্যে আরবি, উর্দু ভাষায় লেখা খাতাও রয়েছে। এমনকি, কেউ যদি নিজে হাতে ওই নাম না লিখতে পারেন, তবে তাঁর জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
০৯১৯
অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছুক ব্যক্তি নিজের নামে সীতারাম লেখা খাতা ছাপাতে পারেন এই ব্যাঙ্কে। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অনূদিত নানারকম রেট চার্টও আছে তার।
১০১৯
ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের নাম পুনীতরাম দাস মহারাজ। তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কের সংগ্রহে এমন সীতারাম লেখা ২০ হাজার কোটি খাতা রয়েছে। পুনীত বলেছেন, দেশ-বিদেশের ১৩৬টি শাখা থেকে প্রায়শই খাতা পোস্টে এসে পৌঁছয় তাঁদের কাছে। তাঁরা সেই সংখ্যার হিসাব রাখেন।
১১১৯
তবে একই সঙ্গে পুনীত এ-ও জানিয়েছেন যে, রামমন্দিরের উদ্বোধনের পর এই খাতা জমা পড়ার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বেড়েছে ইচ্ছুক গ্রাহকদের আনাগোনাও।
১২১৯
কিন্তু কিসের আশায় বাড়ে ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যা। সীতারাম লেখা খাতা জমা দিয়ে বিনিময়ে সুদ হিসাবে তাঁরা কী পান? ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বিনিময়ে যা পান, তা আজ পর্যন্ত বিশ্বের কোনও ব্যাঙ্ক দিয়েছে বলে তাঁদের জানা নেই। কারণ এই ব্যাঙ্কের দাবি, গ্রাহকদের ‘সুদ’ হিসাবে মানসিক শান্তি দেয় তারা!
১৩১৯
পুনীত বলেছেন, ‘‘যাঁরা এই ব্যাঙ্কের গ্রাহক হতে আসেন, তাঁরা অনেকেই আমাদের জিজ্ঞাসা করেন, এই খাতা খুলে তাঁরা বিনিময়ে কী পাবেন? এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে লাভ কী?’’
১৪১৯
জবাবে পুনীত বলেন, ‘‘মন্দির দর্শনে যেমন আত্মার শান্তি হয়, তেমনই ‘সীতারাম’ নাম লিখে ব্যাঙ্কে খাতা জমা করাও আদতে এক ধরনের প্রার্থনা।’’
১৫১৯
পুনীতের ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা প্রায়শই বলি, ভাল-মন্দ কাজ সব জমা হবে ঈশ্বরের খাতায়। এ-ও তেমনই এক ধরনের খাতা। যে খাতায় ঈশ্বরের নাম লিখে, রামের নাম লিখে ভক্তদের আধ্যাত্মিক উত্থান হবে। তাঁরা মানসিক শান্তি লাভ করবেন।’’
১৬১৯
শুধু তা-ই নয়! সুদের পাশাপাশি বোনাসও রয়েছে এই ব্যাঙ্কে। গ্রাহক যদি ‘সীতারাম’ নাম ৮৪ লক্ষ বার লিখে ব্যাঙ্কে জমা দেন তবে বিনিময়ে তিনি লাভ করবেন ‘মোক্ষ’!
১৭১৯
বিহারের সারনাথে গাছের নীচে ধ্যান করে ‘মোক্ষলাভ’ করেছিলেন ভগবান বুদ্ধ। পাশের রাজ্য উত্তরপ্রদেশের ব্যাঙ্ক অবশ্য সেই কাজ অনেকটাই সহজ করে দিয়েছে বলে তাঁদের বক্তব্য।
১৮১৯
বিহারের গয়ারই এক বাসিন্দা জীতু নাগর। এই ব্যাঙ্কে ১৪ বছর ধরে আসছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর কাছে প্রার্থনা এই একটিই। সীতারাম নাম লেখা। জীতুর কথায়, ‘‘যখনই আমি এই নাম লিখি মানসিক শান্তি লাভ করি। কখনও এর অন্যথা হয়নি।
১৯১৯
জীতু অবশ্য ইতিমধ্যেই মোক্ষ লাভ করেছেন। অযোধ্যার ব্যাঙ্কে তাঁর জমা করা খাতায় ইতিমধ্যেই এক কোটি ৩৭ লক্ষ বার লেখা হয়ে গিয়েছে সীতারাম নাম।