Man and his aides looted SBI bank by taking training from Money Heist series after their loan request refused dgtl
Karnataka
ঋণ দেয়নি ব্যাঙ্ক, বদলা নিতে ১৭ কেজি সোনা লুট! বিখ্যাত ওয়েব সিরিজ় দেখে ‘পারফেক্ট’ ডাকাতি করেও ধরা পড়লেন ৬ যুবক
অভিযুক্ত যুবক এবং তাঁর সঙ্গীরা কর্নাটকের দাবণগেরের ন্যামতির স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)-র শাখায় ডাকাতি করেন গত বছর। তার পর থেকেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। সম্প্রতি তাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৪৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
ঋণ চেয়েও মেলেনি ব্যাঙ্ক থেকে। প্রত্যাখ্যাত হয়ে কর্নাটকের ওই ব্যাঙ্কের উপরেই প্রতিশোধের ভাবনা মাথায় আসে। টিভি শো, ওয়েব সিরিজ় এবং ইউটিউব দেখে ছকে ফেলেন ডাকাতির পরিকল্পনা। ডাকাতিও করেন। তবে লাভ হল না। পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন ৩০ বছর বয়সি যুবক। গ্রেফতার তাঁর পাঁচ সঙ্গীও।
০২২০
অভিযুক্ত যুবক এবং তাঁর সঙ্গীরা কর্নাটকের দাবণগেরের ন্যামতির স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)-র শাখায় ডাকাতি করেন গত বছর। তার পর থেকেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। সম্প্রতি তাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন।
০৩২০
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের থেকে ১৩ কোটি টাকা মূল্যের সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু নগদও।
০৪২০
পুলিশ এ-ও জানিয়েছে, ৩০ বছর বয়সি প্রধান অভিযুক্তের নাম বিজয়কুমার। এসবিআই থেকে ঋণ চেয়ে তিনিই প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। এর পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ন্যামতি শাখায় সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে ডাকাতি করেন তিনি।
০৫২০
ব্যাঙ্ক লুটতে বিজয়কুমারকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর ভাই অজয়কুমার এবং ভগিনীপতি পরমানন্দ। এ ছাড়াও ছিলেন অভিষেক, চন্দ্রু এবং মঞ্জুনাথ নামে তিন যুবক।
০৬২০
একটি বিবৃতি জারি করে পুলিশ বলেছে, ‘‘বিজয়কুমার এবং অজয়কুমার দুই ভাই এবং পরমানন্দ তাঁদের বোনের স্বামী। তিন জনই মূলত তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। কিন্তু বহু বছর ধরে কর্নাটকের ন্যামতিতে মিষ্টির ব্যবসা করছেন। অন্য তিন অভিযুক্ত যুবকও বিজয়কুমারের বন্ধু।’’
০৭২০
ডাকাতির তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত বছরের অগস্টে আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হন বিজয়কুমার। পরিস্থিতি ফেরাতে ১৫ লক্ষ টাকা ঋণ চেয়ে এসবিআইয়ের ন্যামতি শাখার দ্বারস্থ হন।
০৮২০
তবে বিজয়কুমারের ঋণ আবেদন মঞ্জুর করেনি ব্যাঙ্ক। এর পরেই রেগে যান তিনি। ব্যাঙ্কের উপর কী ভাবে প্রতিশোধ নেওয়া যায়, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন। এর পরেই ভাই, ভগিনীপতি এবং বন্ধুদের নিয়ে ব্যাঙ্ক লুটের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু কেমন ছিল বিজয়কুমারের পরিকল্পনা?
০৯২০
অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ডাকাতির পরিকল্পনা করার পর ব্যাঙ্ক ডাকাতির গল্প নিয়ে তৈরি স্পেনীয় ওয়েব সিরিজ় ‘মানি হেইস্ট’ গুলে খেয়েছিলেন বিজয়কুমার।
১০২০
ওয়েব সিরিজ় থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার পর ডাকাতির পরিকল্পনা করতে কয়েক মাস ধরে ইউটিউব ভিডিয়ো দেখেন তিনি। ধরা যাতে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে একাধিক বার পরিকল্পনা পাল্টান।
১১২০
পুলিশ জানিয়েছে, সাধারণ মানুষ কখন কী ভাবে ব্যাঙ্কে যাতায়াত করছেন, সে দিকে বেশ কয়েক দিন ধরে নজর রেখেছিলেন বিজয়কুমার এবং চন্দ্রু। নজর রেখেছিলেন পুলিশের গতিবিধির উপরেও। রাতেও ব্যাঙ্কের আশপাশ ভাল করে ঘুরে দেখতেন তাঁরা।
১২২০
এর পর ২৮ অক্টোবর রাতে আওয়াজ হয় না এমন হাইড্রোলিক কাটার এবং গ্যাস কাটার ব্যবহার করে ব্যাঙ্কে প্রবেশ করেন বিজয়কুমারেরা। সোজা লকার রুমে ঢুকে পড়েন। কোটি কোটি টাকার সোনা লুট করে একটি জানলা দিয়ে পালিয়ে যান।
১৩২০
ব্যাঙ্ক ডাকাতির খবরে পরের দিন ন্যামতি জুড়ে হইচই পড়ে যায়। পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু ডাকাতেরা মোবাইল ফোন না ব্যবহার করার কারণে সমাধানসূত্র খুঁজে পেতে সমস্যা হচ্ছিল তদন্তকারীদের।
১৪২০
ধরা যাতে না পড়েন, তা নিশ্চিত করতে লোহা কাটার জন্য ব্যবহৃত একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে সিরিয়াল নম্বর মুছে দিয়েছিলেন বিজয়কুমার। ফলে ব্যবহৃত সিলিন্ডারটি খুঁজে পাওয়া গেলেও সেটা কোথা থেকে কেনা হয়েছিল, তা খুঁজে বার করা দুষ্কর হয়ে ওঠে।
১৫২০
পাশাপাশি অভিযুক্তেরা ব্যাঙ্কের স্ট্রং রুম এবং ম্যানেজারের কেবিন-সহ পুরো ব্যাঙ্ক চত্বরে লঙ্কার গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তদন্তের সময় পুলিশ কুকুর যাতে সমস্যায় পড়ে, তার জন্যই ওই ফিকির করা হয়েছিল। অনেক দিন পর্যন্ত পুলিশ ডাকাতির কিনারা না করতে পারায় সাহস বাড়ে বিজয়কুমারদের।
১৬২০
লুট করা সোনার একাংশ ব্যবসায় বিনিয়োগ করা শুরু করেন অভিযুক্তেরা। এমনকি, বাড়ি কেনার জন্য সোনা বিক্রি করেন এক অভিযুক্ত।
১৭২০
তবে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল। অভিযুক্তদের ধরতে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুজরাত, রাজস্থান, দিল্লি এবং উত্তরপ্রদেশ পর্যন্ত অভিযান চালান তদন্তকারীরা।
১৮২০
পুলিশের হাতে এমন কিছু প্রমাণ আসে, যা ইঙ্গিত দিয়েছিল যে অভিযুক্তেরা তামিলনাড়ুতে রয়েছেন। অবশেষে বিজয়কুমারদের হদিস পায় পুলিশ।
১৯২০
খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, ডাকাতির সময় ন্যামতিতে কাজ করতেন বিজয়কুমার। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই এবং ভগিনীপতি। এর পর টানা তদন্ত চালিয়ে বিজয়কুমার-সহ একে একে ছ’জন অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০২০
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর মাদুরাই জেলার উসিলামপট্টি শহরে ৩০ ফুট গভীর একটি কুয়োর ভিতর থেকে চুরি যাওয়া প্রায় ১৫ কেজি সোনা উদ্ধার করে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সন্দেহ এড়াতে কুয়োর ভিতরে সোনা লুকিয়ে রাখার এবং দু’বছর পরে তা উদ্ধার করার পরিকল্পনা করেছিলেন বিজয়কুমার। তবে শেষরক্ষা হল না।