The Possibility of revival of ISRO’s Chandrayaan-3 Lander Vikram and Rover Pragyan is fading dgtl
Chandrayaan-3
ফের সন্ধ্যা নামছে চাঁদে, ‘শিবশক্তি’তে ফিরছে ভয়ঙ্কর রাত! চিরঘুমের দেশে চলে যাচ্ছে ইসরোর যোদ্ধারা?
গত ২ সেপ্টেম্বর চাঁদের মাটিতে ঘুম পাড়ানো হয় প্রজ্ঞানকে। বিক্রমকে ইসরো স্তব্ধ করেছিল ৪ তারিখ। অর্থাৎ পৃথিবীর হিসাবে চাঁদের মাটিতে ২৭ দিনের ঘুম হল প্রজ্ঞানের। আর বিক্রম ঘুমিয়ে রয়েছে গত ২৫ দিন ধরে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৫২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
সকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে চলল চাঁদে। অথচ চন্দ্রযান অভিযানের দুই সদস্যের ঘুম ভাঙার লক্ষণই নেই! ইসরোর হাজার ডাকাডাকিতেও সাড়া দিচ্ছে না ‘বিক্রম’ আর ‘প্রজ্ঞান’।
০২২৪
গত ২১ সেপ্টেম্বর চাঁদে সূর্য উঠেছে। তার পর থেকে কেটে গিয়েছে আট দিন। কিন্তু এই আট দিনে ইসরো বার বার সঙ্কেত পাঠালেও ফিরতি সঙ্কেত আসেনি বিক্রম আর প্রজ্ঞানের কাছ থেকে।
০৩২৪
গত ২৩ অগস্ট চাঁদের দক্ষিণ মেরু ‘শিবশক্তি’তে নেমেছিল ভারতের চন্দ্রযান-৩। পালকের মতো ভেসে চাঁদের মাটি ছুঁয়েছিল অবতরণ যান বা ‘ল্যান্ডার’ বিক্রম। পরে তার ভিতর থেকে চাঁদের মাটিতে গড়িয়ে নামে অভিযাত্রী ‘রোভার’ প্রজ্ঞান।
০৪২৪
বিক্রম আর প্রজ্ঞানকে অবশ্য পৃথিবীতে ফেরানোর জন্য তৈরিই করেনি ইসরো।
০৫২৪
পৃথিবীর মাটিতে তিলে তিলে গড়া এই দুই যন্ত্র-যান আর ফিরবে না জেনেই চাঁদে পাঠানো হয়েছিল।
০৬২৪
তাঁরা এ-ও জানতেন, চাঁদে যখন রাত নামবে, তখন বিক্রম আর প্রজ্ঞানের ব্যাটারির শক্তি ফুরিয়ে আসবে। লোপ পাবে কাজ করার ক্ষমতাও।
০৭২৪
কারণ সূর্যের আলো ছাড়া ব্যাটারি রিচার্জ হওয়াই সম্ভব নেই বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের। স্বাভাবিক ভাবেই শক্তি হারিয়ে নিস্তব্ধ হয়ে যাওয়ার কথা তাদের। সব জেনেও বিজ্ঞানীরা শেষ পর্যন্ত আশা ছাড়তে পারেননি।
০৮২৪
চাঁদে যখন রাত নামে তখন তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। সেই প্রবল ঠান্ডায় ব্যাটারি-সহ অন্যান্য যন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়াও অস্বাভাবিক নয়।
০৯২৪
কিন্তু ইসরো ভেবেছিল চাঁদের মাটিতে একটি রাত যদি কাটিয়ে ফেলতে পারে বিক্রম আর প্রজ্ঞান, তবে আর তাদের আটকে রাখা যাবে না। অনায়াসে চাঁদে আরও এমন কঠিন রাত কাটিয়ে ফেলতে পারবে তারা।
১০২৪
স্বাভাবিক নিয়মে রাত নামলে ঘুমোবে তারা। আবার সূর্য উঠলে ঘুম ভেঙে কাজও শুরু করবে।
১১২৪
গত ২ সেপ্টেম্বর চাঁদের মাটিতে ঘুম পাড়ানো হয় প্রজ্ঞানকে। বিক্রমকে ইসরো স্তব্ধ করেছিল ৪ তারিখে।
১২২৪
তার পর থেকে পৃথিবীর হিসাবে চাঁদের মাটিতে ২৭ দিনের ঘুম হল প্রজ্ঞানের। আর বিক্রম ঘুমিয়ে রয়েছে গত ২৫ দিন ধরে।
১৩২৪
চাঁদের এক দিন মানে পৃথিবীর ২৮ দিন। এর মধ্যে ১৪ দিন চাঁদের আকাশে সূর্য থাকে। সূর্য থাকে না আরও ১৪ দিন। সেই হিসাবেই ঠিক ছ’দিন পরে আবার সূর্যাস্ত হবে চাঁদে।
১৪২৪
বলা যায় চাঁদে এখন বিকেল নামার আগের মুহূর্ত। তার পরেই ধীরে ধীরে হিম শীতল হয়ে যাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু এলাকা। নামবে রাত।
১৫২৪
ফলে বিক্রম আর প্রজ্ঞানের কাছ থেকে সঙ্কেত পাওয়ার জন্য আর ঠিক ছ’দিন আছে ইসরোর হাতে।
১৬২৪
চাঁদের মাটিতে ইতিমধ্যেই যা যা কাজ করার, সে সব দায়িত্বই পালন করে ফেলেছে চন্দ্রযান-৩ অভিযানের দুই সদস্য। এর পরে যদি ঘুম ভেঙে তারা কাজ করে তবে তা হবে ইসরোর বাড়তি পাওনা।
১৭২৪
কিন্তু যে হেতু চাঁদে রাত ক্রমেই এগিয়ে আসছে এবং চাঁদের মাটিতে সূর্যের সবচেয়ে বেশি আলো পাওয়ার সময় গড়িয়ে গিয়েছে, তাই বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের ঘুম ভাঙার সম্ভাবনাও ধীরে ধীরে কমছে।
১৮২৪
ইসরোর তত্ত্ব মেনেই বলা যায়, একটি রাত কাটিয়ে ঘুম ভাঙার সময় আর প্রায় নেই।
১৯২৪
এ কথা ঠিকই, চাঁদের মাটিতে ঘুম ভাঙার জন্য আরও ছ’দিন সময় আছে বিক্রম আর প্রজ্ঞানের। কিন্তু ঘুম যদি রাত নামের আগের দিন ভাঙে তা হলে সেই ঘুম ভেঙেও লাভ নেই।
২০২৪
কারণ তার পরেই সূর্যাস্ত হলে আবার ঝিমিয়ে পড়বে বিক্রম আর প্রজ্ঞানের সৌরচালিত ব্যাটারি।
২১২৪
ফলে ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই আবার ঘুমিয়ে পড়বে বিক্রম আর প্রজ্ঞান। কোনও লাভ হবে না ইসরোর।
২২২৪
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সূর্য পাটে বসবে চাঁদে। নামবে সন্ধে। ফলে বিক্রম আর প্রজ্ঞানের থেকে সাড়া পাওয়ার আশা আর প্রায় নেই বললেই চলে।
২৩২৪
ইসরো শেষ বার গত ২২ সেপ্টেম্বর জানিয়েছিল, তারা বিক্রম আর প্রজ্ঞানকে নিয়ে আশা ছাড়ছে না। সঙ্কেত পাঠানোর চেষ্টা জারি রাখবে তারা। কিন্তু তার পর থেকে গত এক সপ্তাহে ইসরো এ ব্যাপারে আর কিছুই জানায়নি।
২৪২৪
বিজ্ঞান মহলের একাংশের বক্তব্য, বিক্রম এবং প্রজ্ঞানের কাছ থেকে সাড়া পাওয়ার আশা ক্ষীণ হচ্ছে ক্রমশ। চাঁদের মাটিতে তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আর প্রায় নেই বললেই চলে। চাঁদের বুকে ঘুমিয়ে থাকা বিক্রম আর প্রজ্ঞান ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে চিরঘুমের পথে।