The Greek Monk who lived 82 years and has never seen a woman in his life dgtl
Monk Mihailo Tolotos
৮২ বছরের জীবদ্দশায় কখনও কোনও মহিলার মুখদর্শন করেননি, দেখেননি সিনেমা, বিমান, ট্রেনও!
মিহাইলো যে মঠে থাকতেন, সেখানে কঠোর নিয়মকানুন মেনে চলা হত। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, কোনও মহিলাকে মঠে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
আথেন্স (গ্রিস)শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৩ ১৬:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
এ-ও কি সম্ভব! এক জন জন্মালেন, বড় হলেন, ৮২ বছর পর্যন্ত বাঁচলেন। কিন্তু সারা জীবনে এক মুহূর্তের জন্যও কোনও মহিলাকে দেখলেন না! পৃথিবীতে নাকি এমনই এক পুরুষ ছিলেন যিনি জীবদ্দশায় কোনও মহিলাকে দেখেননি। এমনকি নিজের মাকে-ও না।
০২১৮
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘ইউনিল্যাড’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই ব্যক্তির নাম মিহাইলো টোলোটোস। তিনি ছিলেন গ্রিসের হালকিডিকির বাসিন্দা।
০৩১৮
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিহাইলো শুধুমাত্র বন্ধুবান্ধবদের কাছে শুনে এবং বই পড়ে নারীদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। কিন্তু কোনও মহিলাকে চাক্ষুষ করেননি।
০৪১৮
মনে করা হয় মিহাইলোর জন্ম ১৮৫৬ সালে। তাঁকে জন্ম দেওয়ার কিছু ক্ষণ পরই নাকি তাঁর মা মারা যান। অনাথ হয়ে যান মিহাইলো।
০৫১৮
মিহাইলোর মা মারা যাওয়ার পর গ্রিসের মাউন্ট অ্যাথোসের একটি মঠের সন্ন্যাসীরা তাঁকে দত্তক নেন। সন্ন্যাসীদের মধ্যেই বেড়ে ওঠেন তিনি।
০৬১৮
মিহাইলো যে শুধু সন্ন্যাসীদের মধ্যে বড় হয়েছিলেন, তা নয়। ছোটবেলা থেকেই তিনি সন্ন্যাসীদের আদবকায়দা রপ্ত করেছিলেন। মঠের সন্ন্যাসীদের মতো কঠোর জীবনযাপন করতেও শুরু করেছিলেন ছোটবেলা থেকেই।
০৭১৮
মিহাইলো যে মঠে থাকতেন, সেখানে কঠোর নিয়মকানুন মেনে চলা হত। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, কোনও মহিলাকে মঠে প্রবেশের অনুমতি না দেওয়া।
০৮১৮
শুধু মহিলা নয়, গরু, ভেড়া-সহ যে কোনও গবাদি পশুকেও ওই মঠে প্রবেশ করতে দেওয়া হত না। গ্রিসের ওই মঠের শতাব্দীপ্রাচীন সেই প্রথা আজও বলবৎ রয়েছে।
০৯১৮
মহিলাদের মঠে প্রবেশ করতে না দেওয়ার অন্যতম কারণ ছিল, সন্ন্যাসীরা সারা জীবন যাতে সঠিক ভাবে ব্রহ্মচর্য পালন করতে পারেন তা সুনিশ্চিত করা।
১০১৮
তবে মঠের সন্ন্যাসীদের বহির্বিশ্বে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হত। ফলে তাঁরা বাইরে গিয়ে প্রয়োজনে কোনও মহিলার সঙ্গেও দেখা করতে পারতেন।
১১১৮
কিন্তু মিহাইলো যত দিন বেঁচে ছিলেন, তত দিন তিনি নাকি কখনওই মাউন্ট অ্যাথোসের ওই মঠ ছেড়ে বাইরে যাননি।
১২১৮
১৯৩৮ সাল নাগাদ ৮২ বছর বয়সে মারা যান মিহাইলো।
১৩১৮
মিহাইলোর মৃত্যুর পর মাউন্ট অ্যাথোসের সন্ন্যাসীরা নাকি তাঁকে বিশেষ মর্যাদার সঙ্গে সমাধিস্থ করেছিলেন। মঠের সন্ন্যাসীরা মনে করতেন, মিহাইলোই বিশ্বের একমাত্র পুরুষ যিনি কখনও কোনও মহিলার মুখদর্শন করেননি। তাই সন্ন্যাসীদের মধ্যে তাঁর সম্মান ছিল বেশি।
১৪১৮
একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে নাকি এ-ও প্রকাশিত হয়েছিল যে, শুধু মহিলাদেরই না, মিহাইলো কখনও ট্রেন, বিমান এমনকি কোনও সিনেমাও দেখেননি৷
১৫১৮
১৯৩৮ সালের ২৯ অক্টোবর ‘এডিনবার্গ ডেইলি কুরিয়ার’ সংবাদপত্রে মিহাইলোকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ‘জীবনে কোনও মহিলাকে না দেখেই মারা গিয়েছেন গ্রিসের সন্ন্যাসী’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল।
১৬১৮
বর্তমানে মাউন্ট অ্যাথোস ইউনেস্কো দ্বারা বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে স্বীকৃত। লক্ষ লক্ষ দর্শকের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতেও পরিণত হয়েছে এই পর্বতমালা।
১৭১৮
তবে এখনও মাউন্ট অ্যাথোসের মঠগুলিতে মহিলাদের প্রবেশ না করতে দেওয়ার কারণে অনেক বিতর্ক হয়েছে। এই নিয়মকে ‘বৈষম্যমূলক’ এবং ‘প্রাচীন’ বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।
১৮১৮
মাউন্ট অ্যাথোসের কোলে ২০টি মঠ রয়েছে। যেগুলিতে বাস করেন প্রায় ২০ হাজার সন্ন্যাসী। ২০টি মঠের মধ্যে ১৭টিতে গ্রিসের সন্ন্যাসীরা বাস করেন। বাকি তিনটিতে বাস করেন সার্বিয়া, বুলগেরিয়া এবং রাশিয়ার সন্ন্যাসীরা।