Thai temple has concealing 73 human remains to train monks in meditation dgtl
bizarre discovery at thai temple
চলত মৃতের সঙ্গে ধ্যান, লুকোনো ছিল ৭৩টি শবদেহ, ৬০০ কুমির! বৌদ্ধ গুম্ফার হাড়হিম করা রহস্যের হদিস
মন্দিরের ভিতরে এতগুলি মৃতদেহ কী ভাবে এল এবং কুমির কেন পোষা হয়েছিল তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৫৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
তাইল্যান্ডের একটি বৌদ্ধ মঠ থেকে মিলল ৭৩টি মৃতদেহ। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের উপাসনাগৃহে লুকিয়ে রাখা বিপুল পরিমাণ মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় সংবাদমাধ্যম ও সমাজমাধ্যম। এক-আধটা নয়, একসঙ্গে এতগুলি মৃতদেহ উদ্ধারের নেপথ্যে কারণ কী? শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।
০২১৫
‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই মৃতদহেগুলি ভিক্ষুদের আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হত। এ ছাড়াও মঠের ভিতর একাধিক পুকুর থেকে ৬০০টিরও বেশি কুমির পাওয়া গিয়েছে। যা দেখে চমকে উঠছেন অনেকেই।
০৩১৫
মন্দিরের ভিতরে এত কুমিরের কেন পোষা হয়েছিল, তা ঘিরে ধোঁয়াশা রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।
০৪১৫
মঠের ভিতরের বড় পুকুরে ছাড়া থাকত কুমিরগুলি। দর্শনার্থীরা মঠে এলে এই কুমিরগুলিকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে দেখার অনুমতি পেতেন তাঁরা।
০৫১৫
গত ২২ নভেম্বর তাইল্যান্ডের পুলিশ থিফাকসং পা সাংনায়াথাম মন্দিরে একটি অভিযান চালায়। এটি মধ্য তাইল্যান্ডের ফিচিট প্রদেশে অবস্থিত। এখান থেকে ৪১টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
০৬১৫
১৬০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই মঠটি ঘন জঙ্গলের মাঝখানে অবস্থিত। এখানে মূলত আধ্যাত্মিকতার চর্চা চলত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। স্থাপিত হওয়ার পর থেকে মঠের আকার ক্রমেই বেড়ে ওঠে। মঠের অনুসারী ভক্তেরা প্রচুর জমি দান করার ফলে মঠের সম্পত্তির পরিমাণ ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে।
০৭১৫
এই খোলামেলা মঠটির ভিতরে উন্মুক্ত একটি ধ্যানঘরের সন্ধান মিলেছে। মঠের ভিতরে রয়েছে চারটি খাবার ঘর। সেখানে বাঁশের তৈরি বেশ কয়েকটি ধ্যান মণ্ডপের খোঁজ মিলেছে। এই মণ্ডপগুলির প্রতিটিতে চার-পাঁচটি কফিন খুঁজে পেয়েছে পুলিশ।
০৮১৫
এখানেই বিষয়টি থেমে থাকেনি। এর কয়েক দিন পর, ২৬ নভেম্বর আরও একটি মঠ থেকে পাওয়া যায় ৩২টি মৃতদেহ। ফিচিটেরই বাং মুন নাকে মঠে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় সেই মরদেহগুলি।
০৯১৫
এত মৃতদেহ মঠে এল কী ভাবে? মঠের ভিক্ষুদের দাবি, এই মৃতদেহগুলি ভিক্ষুদের পরিবারের আত্মীয়দের। এর মধ্যে মঠের কয়েক জন পুরনো ভিক্ষুর দেহও রয়েছে। ভিক্ষুদের দাবি, অনেক সময় মৃত্যুর পরেও পরিবারের লোকেরা তাঁদের কাছে থাকতে চান। সেই জন্য শেষ বয়সে তাঁরা মঠে আশ্রয় নেন। মৃত্যুর পর সেই দেহগুলি মঠের কাছেই জমা থাকে।
১০১৫
এই দাবির স্বপক্ষে মৃত্যুর শংসাপত্রও দেখান তাঁরা। এগুলি সত্যিই ভিক্ষুদের পরিবারের সদস্যদের মৃতদেহ কিনা নথিগুলি যাচাই করে দেখা হচ্ছে ।
১১১৫
দু’টি মঠেরই দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ভিক্ষু ফ্রা আজান সাই ফন পান্ডিতোর দাবি, মৃতদহগুলি ভিক্ষুদের মৃত্যুভয় কাটিয়ে তোলার জন্য ব্যবহার করা হত। পান্ডিতোর নিজেও অলৌকিক শক্তির অধিকারী বলে দাবি করেন তাঁর ভক্তরা।
১২১৫
বিভিন্ন সময়ে নানা বৌদ্ধ মঠ পরিদর্শন করে তিনি জন্মান্তর ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করতেন ও সে বিষয়ে শিক্ষা দিতেন। মঠের বিরুদ্ধে অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগকে এক কথায় উড়িয়ে দিয়ে প্রধান ভিক্ষু জানান, মৃতদেহ সামনে রেখে বৌদ্ধ সাধুরা ধ্যান করতেন।
১৩১৫
তাঁর দাবি, মৃতদেহগুলিকে মৃত্যুচেতনার প্রশিক্ষণের একটি অংশ হিসাবে ব্যবহার করা হত। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সন্ন্যাসীরা মৃত্যুভয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং সেই ভয় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হতেন। এমনটাই দাবি পান্ডিতোর।
১৪১৫
তিনি এই পদ্ধতিটিকে তাঁর ব্যক্তিগত উদ্ভাবন হিসাবে দাবি করেছেন। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে সন্ন্যাসীদের মানসিক স্থিতিশীলতা এবং শৃঙ্খলা বাড়ানোই মূল উদ্দেশ্যে ছিল তাঁর।
১৫১৫
প্রধান ভিক্ষুর এই দাবি ধোপে টেকেনি পুলিশের কাছে। পুলিশ মৃতদেহগুলিকে বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে যায়। মঠের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এবং মৃতদেহগুলির পরিচয় এবং সেগুলির উত্স সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসন৷