Ted Bundy: Notorious rapist and murderer who was involved in Necrophilia dgtl
Criminal
Ted Bundy: শতাধিক মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন, খুনের পর আবার ধর্ষণ! বৈদ্যুতিক চেয়ারে মারা হয় টেডকে
১৯৭৪ এবং ১৯৭৮ সালের মধ্যে টেড প্রায় ৩০ জন মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করে। খুনের পরও মৃত মহিলাদের টেড আবার ধর্ষণ করত বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২২ ১০:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
টেড বান্ডি। বিশ্বের অপরাধ জগতের ইতিহাসে অন্যতম ব্যক্তিত্ব। এক সময় তার নাম শুনলেই ভয় পেত আট থেকে আশি। টেডের নৃশংসতার গল্প শুনলে আজও গা শিউরে ওঠে। টেডের বিরুদ্ধে ৩০ জনেরও বেশি মহিলাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও অনেকের মতে এই সংখ্যা শতাধিক। বহু ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগও উঠেছিল টেডের বিরুদ্ধে।
০২২১
১৯৭৪ এবং ১৯৭৮ সালের মধ্যে টেড প্রায় ৩০ জন মহিলাকে ধর্ষণ করে খুন করে। খুনের পরও মৃত মহিলাদের সে আবার ধর্ষণ করত বলেও অভিযোগ উঠেছিল। তার কর্মকাণ্ডে আমেরিকার বাসিন্দারা এতটাই ক্ষুব্ধ ছিলেন যে তার মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ শুনে উল্লসিত জনতা রাস্তায় বেরিয়ে উদ্যাপন শুরু করে।
০৩২১
টেডের শিকারের তালিকায় ছিল কিশোরী থেকে যুবতীরা। নৃশংস ভাবে মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করার পর তাদের আবার ধর্ষণ করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এর পর তাদের মৃতদেহ লোপাট করত সে।
০৪২১
প্রাথমিক জীবন কেমন কেটেছিল টেডের?
০৫২১
টেডের জন্ম ১৯৪৬ সালের ২৪ নভেম্বর আমেরিকার বার্লিংটনের ভারমন্টে। তার আসল নাম থিওডর রবার্ট কোওয়েল। ছোট থেকে অবশ্য শান্তশিষ্ট এবং ভদ্র স্বভাবের জন্যই বেশি পরিচিত ছিল টেড।
০৬২১
জন্মের আগেই টেডের বাবা তার মাকে ছেড়ে চলে যায়। টেডের মায়ের নাম ছিল এলেনর লুইস কোওয়েল। ছোট থেকেই বহু ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে বড় হতে হয়েছে টেডকে। ছোটবেলায় টেডের দাদু তাকে এবং তার মাকে নিয়মিত মারধর করতেন। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে টেডের মা ছেলেকে নিয়ে ওয়াশিংটনে চলে আসেন। ওয়াশিংটনে তিনি জনি বান্ডি নামক এক যুবককে বিয়ে করেন।
০৭২১
টেড তার জীবদ্দশায় অনেক বার ঠিকানা বদল করেছে। এর মধ্যে সব থেকে চর্চায় আসে সল্ট লেক সিটির উটার ৫৬৫ ফার্স্ট অ্যাভিনিউের বাড়িটি। এই বাড়িতে থাকাকালীনই সে জীবনের প্রথম খুন করে। ১৯৭৪ সালে টেড মোট চার জন মহিলাকে খুন করে।
০৮২১
টেড বান্ডি ক্যালিফোর্নিয়া, ওরেগন, ওয়াশিংটন, আইডাহো, উটা, কলোরাডো এবং ফ্লরিডায় ১৯৭৮ পর্যন্ত বহু মহিলাকে খুন করে। গ্রেফতারের পর টেড নিজেই এই খুনগুলির কথা স্বীকার করে। তবে তাকে শুধুমাত্র তিনটি খুনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। মনে করা হয়, ৩০টি খুনের কথা স্বীকার করলেও আসলে তার খুনের সংখ্যা ছিল শতাধিক।
০৯২১
টেড অনেক মহিলাকে নৃশংসতার সঙ্গে ধর্ষণ করে খুন করলেও কিছু মহিলা এমনও ছিলেন যাঁরা টেডের হাত থেকে প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন। টেডের গ্রেফতারের পর বেশ কয়েক জন মহিলা এগিয়ে এসে আদালতে জানান কী ভাবে তাঁরা টেডের হাত থেকে রক্ষা পান।
১০২১
টেডের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া মহিলাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কারেন স্যান্ডলার এবং ক্যাথি ক্লেইনার। ব্রিগহাম ইয়ং ইউনিভার্সিটির ছাত্রী পাম প্রিনও জানিয়েছিলেন ক্যাম্পাসে হাঁটার সময় টেড তাঁকে অপহরণের চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি টেডকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান।
১১২১
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, টেডের বুদ্ধিমত্তার মান ছিল ১৩৬। তাবড় প্রতিভাবানদের বুদ্ধিমত্তাও হার মানবে এর কাছে। টেড ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভাল ছিল। ইউনিভার্সিটি অব পুগেট সাউন্ড স্কুল অফ ল-তে নথিভুক্ত হওয়ার আগে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতেও পড়ার সুযোগ পায় সে।
১২২১
বন্ধুত্ব পাতিয়ে বা প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করত টেড। মহিলারা সুদর্শন এবং ‘ক্যারিশম্যাটিক’ টেডের প্রেমে পড়তেন। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কার্যসিদ্ধি করত টেড। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে স্বল্পভাষী টেডের সঙ্গে কথা বলে যে কেউ মুগ্ধ হয়ে যেত।
১৩২১
এত মহিলার খুনি টেড ১৯৮০ সালে বিয়েও করেছিল। একাধিক মহিলাকে খুন এবং ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে বিচার চলাকালীনই ক্যারল অ্যান বুন নামে এক মহিলাকে বিয়ে করে সে। ক্যারল ‘ওয়াশিংটন স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব ইমার্জেন্সি সার্ভিস’-এর কর্মী ছিলেন। ১৯৮৬ সালে ক্যারল এবং টেডের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। রোজ নামে টেড এবং ক্যারলের একটি মেয়েও হয়।
১৪২১
১৯৬৯ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত এলিজাবেথ কেন্ডেল নামে এক মহিলার সঙ্গে প্রেম ছিল টেডের। তবে কেন্ডেল টেডকে কখনও বিয়ে করেননি। কেন্ডেলের সঙ্গে প্রেম করার সময় থেকে অন্য মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন করতে শুরু করে টেড। টেডের কাজকর্ম নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় তিনি সম্পর্কে ইতি টানেন। পরে তিনি টেডের বিরুদ্ধে সাক্ষীও দিয়েছিলেন।
১৫২১
১৯৭৫ সালে একাধিক মহিলার খুনের তদন্তে নেমে টেডের উপর নজরদারি শুরু করে পুলিশ। তার গাড়ির ট্রাঙ্কে একটি মুখোশ, হাতকড়া এবং ভোঁতা জিনিস দেখতে করেন উটা পুলিশের এক আধিকারিক। এর পর থেকেই কড়া নজরদারি শুরু হয় টেডের উপর। তবে কোনও প্রমাণ হাতে না আসায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারছিল না।
১৬২১
টেডও বুঝতে পারে যে পুলিশ তার উপর নজর রাখছে। এর পরই নিজের গাড়ি বিক্রি করে দেয় টেড। সেই গাড়ির পরীক্ষা করে তিন জন নিখোঁজ মহিলার ডিএনএ পুলিশের হাতে আসে। টেডের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া এক মহিলা থানায় তাকে চিহ্নিত করার পরই টেডকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
১৭২১
গ্রেফতারির পর এক বার ফ্লোরিডা এবং দু’বার কলোরাডোর কারাগার থেকে পালিয়ে যায়। ১৯৭৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি একটি চুরি করা গাড়ি চালানোর অপরাধে তাকে আবারও গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে এর পর আর জেল ভেঙে সে পালাতে পারেনি। শেষ বার ধরা পড়ার আগে আরও কয়েক জন মহিলাকে টেড খুন করে।
১৮২১
আদালতে শুনানি চলাকালীন টেড বহু বার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করে। তবে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার কিছু দিন আগেই নিজের দোষ স্বীকার করে টেড। সে আদালতে জানায় যে সে ৩০ জন মহিলাকে খুন করেছে। কী ভাবে সে এই মহিলাদের খুন করেছে সেই বিবরণ শুনে বিচারকও শিউরে উঠেছিলেন। সে এ-ও ইঙ্গিত করেছিল যে তার খুনের সংখ্যা আরও বেশি ছিল।
১৯২১
আদালত টেডের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। ১৯৮৯ সালের ২৪ জানুয়ারি ফ্লোরিডার একটি সংশোধনাগারে বৈদ্যুতিক চেয়ারে বসিয়ে টেডকে হত্যা করা হয়।
২০২১
মৃত্যুর পর টেডের মৃতদেহ দাহ করা হয়। ইচ্ছে অনুসারে তার চিতাভস্ম ওয়াশিংটনের ক্যাসকেড পর্বতমালায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। খুন করার পর এই জায়গাতেই সে মহিলাদের মৃতদেহগুলি ফেলে আসত।
২১২১
টেডের মৃত্যুর পর তাঁকে নিয়ে এখনও পর্যন্ত একাধিক বই লেখা হয়েছে। সিনেমাও তৈরি হয়েছে বহু।