Tanvi Geetha Ravishankar, a plus size influencer, here is her journey dgtl
Tanvi Ravishankar
আমাকে মোটা বোলো না! এমন চেহারাতেও বাজিমাত করা যায়, প্রমাণ করেছেন তানভি
‘পাঠান’ সিনেমায় দীপিকা পাড়ুকোনের মতো ‘বেশরম রং’ গানের তালে কোমর দুলিয়ে তাক লাগিয়েছেন তানভি গীতা রবিশঙ্কর। তাঁর লড়াই অনেককেই প্রেরণা জোগাবে।
সংবাদ সংস্থা
মুম্বইশেষ আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:৩৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
সুন্দরী নারীর সংজ্ঞা কী? সুন্দরী তকমা পেতে চেহারার গড়ন কি ছিপছিপে হতেই হবে? এই ধারণা ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। স্থূলকায় নারীরাও র্যাম্পে হেঁটে তাক লাগাতে পারেন। তাঁরা কেতাদুরস্ত হতেও ওস্তাদ। মোটা হয়েও যে ফ্যাশন দুনিয়া মাতানো যায় কিংবা ‘পাঠান’ সিনেমায় দীপিকা পাড়ুকোনের মতো ‘বেশরম রং’ গানের তালে কোমর দুলিয়ে তাক লাগানো যায়, তা দেখিয়ে দিয়েছেন মুম্বইয়ের তানভি গীতা রবিশঙ্কর।
০২১৬
নিজের স্থূল চেহারাকে কখনই প্রতিবন্ধকতা হিসাবে দেখেননি তানভি। বরং সেই চেহারা নিয়েই চারদিকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ৩০ বছরের এই তরুণী। দীপিকার মতো ছিপছিপে নন! তাতে কী! তানভির চোখে-মুখে যে আত্মবিশ্বাস রয়েছে, তা-ই তাঁকে সুন্দরী করে তুলেছে।
০৩১৬
‘পাঠান’ ছবির যে গান নিয়ে এত হইচই, সেই ‘বেশরম রং’ গানে দীপিকার মতোই পোশাক পরে নাচ করেছেন তানভি। সেই ভিডিয়ো তৈরি করে নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছিলেন। তানভির ওই রিল্স মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। স্থূলকায় চেহারাতেও দীপিকার কায়দায় যে ভাবে কোমর দুলিয়েছেন তানভি, তা দেখে বিস্মিত হয়েছেন অনেকেই।
০৪১৬
মোটা হয়েও বিকিনি পরে নিজেকে যে মেলে ধরা যায়, এই আত্মবিশ্বাসের এক জ্বলন্ত উদাহরণ তানভি। তবে এই আত্মবিশ্বাস এক দিনে অর্জিত হয়নি। এ জন্য অনেক টিটকিরি হজম করতে হয়েছে তাঁকে। কিন্তু দমে যাননি। বরং জেদ এবং আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে ফ্যাশন দুনিয়ায় নিজেকে মেলে ধরেছেন তানভি।
০৫১৬
ফ্যাশন দুনিয়ার প্রতি তানভির ঝোঁক ছিল। নানা রকম পোশাক পরে পরীক্ষানিরীক্ষা করাও পছন্দ তাঁর। কিন্তু বাদ সাধে তাঁর ওজন। মোটা হয়ে কি আর ‘ক্যাটওয়াক’ করতে পারবেন তিনি? এই প্রশ্নই মনে থাকত তাঁর।
০৬১৬
এমন সময়ই তানভির জন্য একটা দারুণ সুযোগ এল। সে বার প্রথম ‘প্লাস-সাইজ ফ্যাশন শো’র আয়োজন করেছিল একটি সংস্থা। এই সুযোগই তানভির জীবন বদলে দেয়।
০৭১৬
যে চেহারার জন্য তাঁকে এত কটূক্তি শুনতে হয়েছে, সেই চেহারা সঙ্গী করেই র্যাম্প মাতালেন তানভি। দেখলেন, তিনি শুধু একা নন। তাঁর মতো আরও অনেক নারীই রয়েছেন, যাঁরা স্থূলকায়। ওই ফ্যাশন শো তাঁকে আরও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।
০৮১৬
স্থূল চেহারা নিয়ে এখন খুশি তানভি। তবে প্রথমে এই চেহারার কারণেই তাঁর রাতের ঘুম উড়েছিল। ওজন কমাতে অনেক কসরতও শুরু করেছিলেন তিনি। তাতে তাঁর ওজন কমেওছিল। কিন্তু শরীর ভেঙে গিয়েছিল। সেই কাহিনি শুনিয়েছেন তানভি।
০৯১৬
তানভির পরিবার দক্ষিণ ভারতীয়। তাঁরা থাকেন মুম্বইয়ে। পুণে থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ শেষ করার পর মুম্বই ফেরেন তানভি। ইচ্ছা ছিল, পেশাদার নৃত্যশিল্পী হবেন।
১০১৬
ছোট থেকেই নাচ করতে ভালবাসতেন তানভি। তাঁর বয়স যখন মাত্র ৩, সেই সময়ই নাচ শিখতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, স্থূলতার কারণে নাচ নিয়ে বিশেষ কিছু করতে পারবেন না, এমন কথা শুনতে হয়েছিল তাঁকে। তবে নাচের প্রতি তানভির ভালবাসা এ সব কথায় উবে যায়নি।
১১১৬
নাচ শেখার জন্য ‘ডান্স অ্যাকাডেমি’তে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তানভি। এ জন্য কসরত করে ২৫-৩০ কেজি ওজন কমান। ওজন কমানো মোটেই সহজ ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘যা খেতাম, বমি করে ফেলতাম। সারা দিন নাচের পর জিমে শরীরচর্চা করতাম। তার পর বাড়ি ফিরে দুটো সিদ্ধ ডিম খেতাম। দিনে ১২-১৪ ঘণ্টা শরীরচর্চা করতাম। ২৫ কেজি ওজন কমাই। তবে এতে আমার শরীরের হাল খারাপ হয়ে গিয়েছিল।’’
১২১৬
কিন্তু যার জন্য এত কসরত করে ওজন কমালেন তানভি, তাতে লাভ হল না। ২৫ কেজি ওজন কমানোর পরও ‘ডান্স অ্যাকাডেমি’তে যোগ দিতে পারলেন না। কারণ তাঁকে আরও ওজন কমাতে বলা হয়েছিল।
১৩১৬
তানভি বলেছেন, ‘‘আমি প্রায় না খেয়ে থাকতাম সেই সময়। কোনও ধারণাই ছিল না যে, আমি ‘ইটিং ডিজ়অর্ডারে’ ভুগছিলাম।’’ তবে ভেঙে পড়েননি তানভি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে নিজের ইচ্ছাপূরণ করে চলেছেন এই তরুণী। ইনস্টাগ্রামের রিল্সে তাঁর নাচের নানা ভিডিয়ো মন কেড়েছে অনেকের।
১৪১৬
মোটা হয়েও কিনা স্যুইমসুট পরবেন! এ নিয়ে কম সমালোচনা শুনতে হয়নি তানভিকে। তবে নিন্দকদের কথায় কান দেননি। ২০১৭ সালে প্রথম বার বিকিনি পরেন এই ‘ডিজিটাল কনটেন্ট ক্রিয়েটার’। তার পর থেকে তাঁর চেহারা নিয়ে যে ভীতি, তা কেটে গিয়েছিল।
১৫১৬
তানভির কথায়, ‘‘নিজের শরীরের গড়ন নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগা কখনই ঠিক নয়। যা কিছু করবেন, তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করুন। ওই আত্মবিশ্বাসই ধরা পড়বে আপনার চেহারায়।’’ ঠিক যে আত্মবিশ্বাসে ভর করে স্থূল চেহারাকে তোয়াক্কা না করেই বিকিনি পরে জলকেলিতে মেতেছিলেন তানভি।
১৬১৬
স্থূলকায় তরুণী মোহময়ী হতে পারেন না, এই ধারণা বদলের বার্তাই দিয়েছেন তানভি। তাঁর কথায়, মোটা মানুষরা ‘হট’ নন, এটা একেবারেই ভুল ভাবনা। কাকে লাস্যময়ী লাগছে, সেটা মনের ব্যাপার, চেহারার নয়।’’ এখন আর নিজের চেহারা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবেন না তানভি। বরং নিজের খেয়ালে জীবনটা নিজের মতো করে উপভোগ করছেন। নিন্দকরা যা-ই বলুন না কেন, তানভি আছেন তানভিতেই।