Salil Ankola’s personal life had been as disturbed as his career dgtl
salil ankola
ক্রিকেট-অভিনয়ে ব্যর্থতায় সুরাসক্ত হন সলিল আঙ্কোলা, ‘আত্মঘাতী’ হন তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী
কাজের জায়গার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও তখন আঙ্কোলা বিধ্বস্ত। ২০০৮ সালে অতিরিক্ত সুরাসক্ত হয়ে পড়ায় তাঁকে যেতে হয় রিহ্যাবে। ক্রিকেটার বা অভিনেতা, কোনও ভূমিকাতেই সাফল্য না পাওয়ার পাশাপাশি নেশার প্রকোপ। এই দু’য়ের আক্রমণে টালমাটাল হয়ে পড়ে আঙ্কোলার দাম্পত্যও। দুই সন্তানকে নিয়ে আঙ্কোলার প্রথম স্ত্রী পরিণীতা বাড়ি ছেড়ে চলে যান বাবা-মায়ের কাছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ১৩:০৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে একই টেস্ট ম্যাচে অভিষেক হয়েছিল সলিল আঙ্কোলার। ওই ম্যাচেই পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন ওয়াকার ইউনুস। কিন্তু ক্রিকেটার-জীবনে সচিন-ওয়াকারের ছায়ার কাছেও পৌঁছতে পারেননি আঙ্কোলা। ক্রিকেটের পরে অভিনয়েও ব্যর্থতা তাঁকে করে তোলে সুরাসক্ত।
০২১৫
১৯৬৮ সালে এক কর্নাটকী-কোঙ্কনি পরিবারে জন্ম আঙ্কোলার। কুড়ি বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ। ১৯৮৮-৮৯ মরসুমে গুজরাতের বিরুদ্ধে ৪৩ রান এবং হ্যাটট্রিক-সহ এক ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে তিনি নির্বাচকদের নজর কাড়েন। ওই মরসুমে লাগাতার ভাল পারফরম্যান্সের সুবাদে জাতীয় দলের দরজা তাঁর সামনে খুলে যায়। ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে তিনি যোগ দেন ভারতীয় দলে।
০৩১৫
করাচিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জীবনের প্রথম টেস্টে আঙ্কোলা ১২৮ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট পান। কিন্তু ওই ম্যাচে তিনি চোট পান। ফলে সিরিজের বাকি টেস্টে আর খেলা হয়নি তাঁর। শুধু ওই সিরিজই নয়। আঙ্কোলার কেরিয়ারে সর্বসাকুল্যে টেস্টের সংখ্যা ওই একটিই। কোনও কারণ না দেখিয়েই তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রচলিত হয়েছিল ‘আঙ্কোলাড’ শব্দটি।
০৪১৫
টেস্টে বাদ পড়লেও ওয়ান ডে ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যান তিনি। কিন্তু তাঁর সেই দৌড়ও ছিল সংক্ষিপ্ত। সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ২০টি ওয়ানডে তে। ৪৭.৩০ বোলিং গড় নিয়ে তাঁর সংগ্রহ ১৩টি উইকেট। মোট রান ৩৪। সেরা বোলিং ১৯৯৩ সালের হিরো কাপের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে, ৩৩ রানে ৩ উইকেট।
০৫১৫
১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়েছিলেন আঙ্কোলা। খেলেছিলেন একটিমাত্র ম্যাচে। বিনা উইকেটে পাঁচ ওভারে আটাশ রান দিয়েছিলেন। বিশ্বকাপের পরেই দল থেকে বাদ পড়েন আঙ্কোলা, বিনোদ কাম্বলি ও মনোজ প্রভাকর। আঙ্কোলার পরিবর্তে দলে জায়গা পান প্রশান্ত বৈদ্য।
০৬১৫
এরপরেও বিক্ষিপ্ত ভাবে টেস্ট ও ওয়ান ডে সিরিজে ডাক পেয়েছেন সলিল আঙ্কোলা। কিন্তু ওয়ান ডে খেললেও নামানো হয়নি টেস্টের ময়দানে। ১৯৯৬-৯৭ মরসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় ত্রিদেশীয় সিরিজে শেষ বার সুযোগ পেয়েছিলেন আঙ্কোলা। সিরিজে তৃতীয় প্রতিযোগী দেশ ছিল জিম্বাবোয়ে। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারত হেরে গিয়েছিল। ওই ম্যাচে আঙ্কোলা ৫০ রান করেছিলেন। ওটাই ছিল তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ।
০৭১৫
সুযোগ না পেয়ে হতাশ আঙ্কোলা ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে নেন। নতুন ইনিংস শুরু করেন অভিনয়ে। ২০০০ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি ‘কুরুক্ষেত্র’। সে বছরই তিনি অভিনয় করেন ‘পিতা’ ছবিতেও। তাঁর অভিনেতা-জীবনের এখনও অবধি উল্লেখযোগ্য ছবি হল ‘চুরা লিয়া হ্যায় তুম নে’। ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবিতে আঙ্কোলা অভিনয় করেছিলেন এষা দেওল এবং জায়েদ খানের সঙ্গে।
০৮১৫
সিনেমার আগে আঙ্কোলা অভিনয় শুরু করেছিলেন ছোট পর্দায়। অভিনয় করেছেন ‘রিশতে’, ‘নুরজাহান’, ‘শশশ…কোই হ্যায়’, ‘কহেতা হ্যায় দিল’, ‘প্যায়ার কা বন্ধন’-এর মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালেও। পাশাপাশি তিনি অংশ নিয়েছেন ‘বিগ বস’-সহ অন্যান্য রিয়্যালিটি শো-তেও।
০৯১৫
তিনি বালাজি টেলিফিল্মস-এর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি ভেঙে অংশ নিয়েছিলেন বিগ বস-এ। ফলে তাঁর বিরুদ্ধে জারি হয় আদালতের নিষেধাজ্ঞা। নির্দেশ দেওয়া হয়, তিনি সোনি-র প্রতিপক্ষ কোনও টিভি চ্যানেলের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন না।
১০১৫
কাজের জায়গার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও তখন আঙ্কোলা বিধ্বস্ত। ২০০৮ সালে অতিরিক্ত সুরাসক্ত হয়ে পড়ায় তাঁকে যেতে হয় রিহ্যাবে। ক্রিকেটার বা অভিনেতা, কোনও ভূমিকাতেই সাফল্য না পাওয়ার পাশাপাশি নেশার প্রকোপ। এই দু’য়ের আক্রমণে টালমাটাল হয়ে পড়ে আঙ্কোলার দাম্পত্যও। দুই সন্তানকে নিয়ে আঙ্কোলার প্রথম স্ত্রী পরিণীতা বাড়ি ছেড়ে চলে যান বাবা-মায়ের কাছে।
১১১৫
রিহ্যাব থেকে আঙ্কোলা সুস্থ হয়ে ফেরার পরেও পরিণীতা ফিরে আসেননি তাঁর কাছে। ২০১১ সালে তাঁদের বিয়ে ভেঙে যায়। ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে পরিণীতা থেকে যান তাঁর বাবা মায়ের কাছেই। দু’বছর পরে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে উদ্ধার হয় সিলিং থেকে পরিণীতার ঝুলন্ত দেহ।
১২১৫
পুলিশের ধারণা, বাবা-মা ও দুই সন্তানের অনুপস্থিতিতে ফাঁকা বাড়িতে আত্মঘাতী হন আঙ্কোলার প্রাক্তন স্ত্রী। সুইসাইড নোটে কাউকে দায়ী করেননি তাঁর মৃত্যুর জন্য। শুধু লিখেছিলেন, তিনি জীবন নিয়ে হতাশ ও বীতশ্রদ্ধ।
১৩১৫
ঘটনাচক্রে ২০১৩ সালের নভেম্বরেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন সলিল আঙ্কোলা। দ্বিতীয় স্ত্রী রিয়া চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছিল ফেসবুকে। সেখান থেকেই প্রেম এবং বিয়ে। পেশায় চিকিৎসক রিয়ারও এটি দ্বিতীয় বিয়ে ছিল। তাঁর প্রথম পক্ষের মেয়ে ঋষিকা এবং সলিল-পরিণীতার ছেলে কর্ণ ও মেয়ে সানাও সলিল আঙ্কোলা ও রিয়ার পরিবারেরই অংশ।
১৪১৫
সলিল আঙ্কোলার প্রথম পক্ষের মেয়ে সানা বিয়ে করেছেন আর এক প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা ভারতীয় দলের প্রাক্তন ম্যানেজার সন্দীপ পাতিলের ছেলে চিরাগকে। চিরাগ মরাঠি ছবির অভিনেতা। সানা কর্মরত পত্রিকায়। চিরাগ-সানার একমাত্র শিশুকন্যার নাম রিয়ানা।
১৫১৫
ধীরে ধীরে কাজের জগতেও ফিরে এসেছেন আঙ্কোলা। ২০১৩ সালে অংশ নেন রিয়্যালিটি শো ‘পাওয়ার কাপল ১’-এ। সে বছরই অভিনয় করেন ‘সাবিত্রী’ সিরিয়ালে। তিন বছর তাঁকে দেখা যায় ‘কর্মফলদাতা শনি’ সিরিয়ালে সূর্যদেবের ভূমিকায়। (ছবি: আর্কাইভ ও ফেসবুক)