ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি কী এবং কী ভাবে এর হিসাব হয় জানেন?
ডি/এল মেথড বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রবর্তক দুই ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ– ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং টনি লুইস। এই পদ্ধতিতে সাধারণত বৃষ্টি-প্রাকৃতিক দুর্যোগে আটকে যাওয়া ম্যাচে ব্যবহার করা হয় একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা টি২০ খেলায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয় পরে ব্যাট করা দলের জন্য।
সংবাদ সংস্থা
লন্ডনশেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ১৩:০১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
কখনও প্রতিপক্ষের থেকে ১১ রান বেশি করে ৪ রান হার, আবার কখনও প্রতিপক্ষের ৪০ ওভারে করা রান ৩৫ ওভারে টপকে যাওয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। কিন্তু এই ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি ঠিক কী? কোথা থেকে এর উত্পত্তি? দেখে নেওয়া যাক।
০২১৪
ডি/এল মেথড বা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির প্রবর্তক দুই ইংরেজ পরিসংখ্যানবিদ– ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ এবং টনি লুইস। এই পদ্ধতিতে সাধারণত বৃষ্টি-প্রাকৃতিক দুর্যোগে আটকে যাওয়া ম্যাচে ব্যবহার করা হয় একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা টি২০ খেলায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন করে লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয় পরে ব্যাট করা দলের জন্য।
০৩১৪
ডি/এল মেথড প্রথম ব্যবহার হয় ১৯৯৬-৯৭ সালে জিম্বাবোয়ে বনাম ইংল্যান্ডের একদিনের ম্যাচে। এই খেলায় জিম্বাবোয়ে ডি/এল মেথডে ৭ রানে জয়ী হয়। ২০০১ সালে আইসিসি এই পদ্ধতি আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রহণ করে।
০৪১৪
ডিএল মেথড অনুযায়ী কোনও ওয়ানডে ম্যাচের ফল তখনই ঘোষিত হবে যখন উভয় ইনিংসে কমপক্ষে ২০ ওভার করে খেলা হয়ে গিয়েছে।
০৫১৪
হয়ত বৃষ্টি হয়েছে ম্যাচের আগে, একটা সময় বৃষ্টি থেমে মাঠ খেলার উপযোগী হল, কিন্তু এতে কিছু সময় নষ্ট হওয়ায় ৫০ ওভারের বদলে উভয় পক্ষকে ৪০ ওভার দেওয়া হল খেলার জন্য এবং দুই দলই পুরো ৪০ ওভার করে খেলার সুযোগ পেল। এক্ষেত্রে ডিএল মেথড প্রযোজ্য হবে না।
০৬১৪
যদি প্রথম ইনিংসের মাঝপথে বিঘ্ন ঘটে এবং প্রথম ইনিংস কম ওভারে শেষ করতে হয়, তখন দ্বিতীয় ইনিংসের টার্গেট আবার নতুন করে সেট করা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রথম ইনিংসে কত ওভার বাকি ছিল, কত রান হয়েছে আর কত উইকেট ছিল, এই সব কিছুর উপর ভিত্তি করে হিসাব হয়।
০৭১৪
সাধারণত এসব ক্ষেত্রে লক্ষ্য দ্বিতীয় ইনিংসে বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে যুক্তি, প্রথম ইনিংসের কিছুটা অংশ জুড়ে প্রথমে ব্যাট করা দল ভেবেছিল তাদের হাতে আরও সময় আছে। ওভার কমে যাওয়ার কথা আগে জানলে তারা আরও দ্রুত রান নেওয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাটিং করত। সেই রানটা ব্যালান্স করা হয় লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে।
০৮১৪
যদি দ্বিতীয় ইনিংসেও বিঘ্ন ঘটে, ওই ইনিংসের ওভার সংখ্যাও কমাতে হয়, তা হলে ডিএল মেথড অনুযায়ী হাতে থাকা রান, ওভার ও উইকেট অনুযায়ী তাদের টার্গেট আবারও ঠিক করা হয়। এই নির্ধারণ ‘রিসোর্স’-এর ভিত্তিতে করা হয়। এই রিসোর্স হল হাতে থাকা ওভার এবং উইকেট মিলিয়ে একটা শতাংশের হিসাব।
০৯১৪
ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি যে ভাবে প্রয়োগ করা হয়, তা হল-ইনিংসের শুরুতে রিসোর্স পার্সেন্টেজ যত ছিল, বিরতির ফলে যেটুকু রিসোর্স নষ্ট হবে, বাকি যা রিসোর্স থাকবে।
১০১৪
এখন, পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স যদি প্রথমে ব্যাট করা দলের থেকে কম হয়, তা হলে দুই দলের বাকি থাকা রিসোর্সের অনুপাত করতে হবে। এরপর পরে ব্যাট করা দলের টার্গেট হবে প্রথমে ব্যাট করা দলের স্কোর কে সেই রেশিও দিয়ে ভাগ করে।
১১১৪
যদি পরে ব্যাট করা দলের রিসোর্স প্রথমে ব্যাট করা দলের রিসোর্সের থেকে বেশি হয়, তা হলে প্রথম দলের রিসোর্সকে দ্বিতীয় দলের রিসোর্স থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। এরপর এটাকে ২২৫ (আইসিসি নির্ধারিত ওডিআইয়ের গড় স্কোর) এর পার্সেন্টেজ তৈরি করতে হবে। এরপর সেটাকে প্রথমে ব্যাট করা দলের রানের সঙ্গে যোগ করে পরে ব্যাট করা দলকে টার্গেট দিতে হবে।
১২১৪
ধরা যাক, প্রথমে ব্যাট করে টিম এ ৫০ ওভারে ২৬০ রান করল। পরে নেমে টিম বি ৪০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৯ রান করল, এমন অবস্থায় বৃষ্টিতে খেলা স্থগিত হয়ে গেল। এ ক্ষেত্রে টিম এ পুরো ৫০ ওভারে খেলেছে, তাই তাদের রিসোর্স ১০০%। টিম বি-র শুরুতে রিসোর্স ছিল ১০০%, ৪০ ওভার শেষে টিম বি ৫ উইকেট হারিয়েছে, টেবিল অনুযায়ী তাদের রিসোর্স বাকি ২৭.৫%।
১৩১৪
অর্থাত্ টিম বি- এর মোট ব্যবহৃত রিসোর্স = ১০০-২৭.৫=৭২.৫%। এখানে টিম বি-র রিসোর্স টিম এ-র থেকে কম, সুতরাং বি-এর লক্ষ্যমাত্রা হবে মূল লক্ষ্যমাত্রার ৭২.৫/১০০ গুণ। টিম এ-এর স্কোর ছিল ২৬০, তাই টিম ‘বি’-র লক্ষ্য হবে ২৬০x৭২.৫/১০০=১৮৮.৫=১৮৯
১৪১৪
যেহেতু ম্যাচ আর হয়নি, সেহেতু এ ক্ষেত্রে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে টিম ‘বি’-কে। যেহেতু টিম বি ১৯৯ রান করেছে, তারা ১৮৯ থেকে ১০ রান বেশি করেছে, ফলে তারা ১০ রানে বিজয়ী হয়েছে পরে ব্যাট করলেও।