Some facts about Mukesh Ambani family that some people has claimed to know through their working relation with them dgtl
Mukesh Ambani
অম্বানীদের অন্দরমহল! চার দেওয়ালের মধ্যে থাকা কাহিনি কি সত্যিই বাইরে এল?
অনেকে আছেন, যাঁরা এই ধনী পরিবারের সদস্য না হয়েও প্রাসাদের ভিতরে ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন। দেখেছেন, কী ভাবে সকাল গড়িয়ে রাত নামে সাতমহলের অন্দরে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
মুম্বইশেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৫৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
ধনকুবেরদের সকাল-বিকেল কি তাঁদের ব্যাঙ্ক ব্যালান্সের মতোই ঝলমলানো? না কি আর পাঁচজন ভারতীয়ের মতোই অম্বানী-আদানিদেরও সকাল শুরু হয় এক কাপ চায়ে। আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে হাতে চায়ের পেয়ালা ধরে তাঁরাও কি খবরের কাগজের দিকে হাত বাড়িয়ে দেন? ধনকুবেরদের প্রাসাদের চার দেওয়ালের ভিতরের নানান দৃশ্য ঠিক কী রকম ভাবে সাজানো হয়?
০২২২
আম নাগরিকদের সেই প্রাসাদের নাগাল পাওয়া সম্ভব নয় মোটেই। কিন্তু এমনও তো অনেকে আছেন, যাঁরা এই ধনী পরিবারের সদস্য না হয়েও প্রাসাদের ভিতরে ঢোকার সুযোগ পেয়েছেন। দেখেছেন, কী ভাবে সকাল গড়িয়ে রাত নামে সাতমহলের অন্দরে।
০৩২২
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমের একটি প্ল্যাটফর্মে একটি আলোচনার বিষয়বস্তু ভাইরাল হয়েছে। সেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন ভারতীয় ধনীশ্রেষ্ঠ মুকেশ অম্বানী। মুম্বইয়ে তাঁর বাসভবন অ্যান্টেলিয়ায় যাঁরা কোনও না কোনও সময় কাজ করেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা।
০৪২২
এই আলোচনা যাঁরা করেছেন তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি আনন্দবাজার অনলাইন। তবে সমাজমাধ্যমে তাঁরা যা জানিয়েছেন, তা হুবহু তুলে ধরা হল এখানে।
০৫২২
রেডিট নামে সমাজমাধ্যমের একটি প্ল্যাটফর্মে এক নেটাগরিক প্রশ্নটি প্রথম তুলেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘আমার জানতে ইচ্ছে করছে, এই প্ল্যাটফর্মে কি এমন কেউ আছেন, যিনি অম্বানীদের বাসভবন অ্যান্টেলিয়া ভবনে কাজ করেছেন?’’
০৬২২
জবাবের প্রত্যাশায় আরও কয়েকটি প্রশ্ন রেখেছিলেন ওই নেটাগরিক। জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘অম্বানী পরিবার কি আদৌ ওখানে বছরের বেশির ভাগ সময় থাকেন? যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের কি ভাল বেতন দেওয়া হত? তাঁরা কি অম্বানীদের ব্যাপারে কোনও অজানা তথ্য আমাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন?’’
০৭২২
দেখা গিয়েছে প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন অনেকেই। সমাজমাধ্যমের এই পরিসরটিতে নাম গোপন রেখেই কথাবার্তা বলা যায়। ‘মোহাত্তার’ নামে অ্যাকাউন্টের অধিকারী এক ব্যক্তি নিজের পরিচয় দিয়েছেন অ্যান্টেলিয়ায় অগ্নিনির্বাপণ নিরাপত্তার কাজ করতে যাওয়া এক অস্থায়ী কর্মী হিসাবে। তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের কাজ মূলত গ্রাউন্ড ফ্লোরে। আমরা সেখান থেকে বড়জোর আরও দু’টি তল উপরে উঠতে পারি, কিন্তু সেখানে ওই পরিবারের কাউকে কোনও দিন দেখতে পাইনি আমরা। যাঁদের সঙ্গে দেখা হয়, তাঁরা মূলত বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মী।’’
০৮২২
ওই অস্থায়ী কাজের কর্মী জানিয়েছেন, তাঁরা সাধারণত চুক্তিভিত্তিক কাজ করেন। গত কয়েক বছর ধরেই রিল্যায়্যান্সের সঙ্গে কাজ করছেন বলে এখন সরাসরি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় অ্যান্টেলিয়া থেকে। আর পারিশ্রমিকের ব্যাপারেও অম্বানীরা দরাজহস্ত। যদি কাজ সংক্রান্ত সমস্ত নথি ঠিক থাকে। আর যদি তাদের নিয়মনীতি অনুযায়ী কাজ হয়, তবে পারিশ্রমিক খুবই ভাল পাওয়া যায় বলে জানিয়েছেন ওই অস্থায়ী রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী।
০৯২২
লেজিটিমেট ওয়ার্ক ৫৩২৯ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে লেখা হয়েছে, ‘‘আমার এক বন্ধু অ্যান্টেলিয়ায় কাজ করত। তার কাছ থেকে শুনেছি, নীতা অম্বানী অনেক সময়েই দিনে ঘুমিয়ে রাতে কাজ করেন। সেই সমস্ত দিনে রাতেই শুরু হয় তাঁর যাবতীয় কাজ। এমনকি, কখনও-সখনও ওই সময়েই জরুরি মিটিংও সেরে নেন তিনি।’’
১০২২
এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীই জানিয়েছেন, তিনি এ-ও শুনেছেন যে অম্বানীরা কখনও-সখনও সপরিবার বসে সিনেমা দেখার পরিকল্পনাও করে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, এটা জানার পর ওই পরিবারটিকে খুবই মিষ্টি মনে হয়েছিল তাঁর।
১১২২
অর্চিশ শাহ নামের একটি অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘আমি আপ্যায়ন শিল্প বা হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রির এক জন পেশাদার। তবে যখন আমি এই বিষয় পড়াশোনা করতাম তখন এক বার অ্যান্টেলিয়ায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল আমার। একটি অনুষ্ঠানে খাবার সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছিলাম আমরা। প্রতি ছ’ঘণ্টা কাজের জন্য আড়াই হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল আমাদের। তিন দিনের কাজ করে সাড়ে সাত হাজার টাকা পেয়েছিলাম। যা বছর দু’য়েক আগে এক জন স্নাতক পড়ুয়ার কাছে অনেক।’’
১২২২
কী রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল তাঁর? অর্চিশ লিখেছেন, ‘‘অম্বানী পরিবারকে খুবই স্বাভাবিক মনে হয়েছে আমার। আমাদের কাজ ছিল টুকটাক মুখ চালানোর খাবার অতিথিদের কাছে এগিয়ে দেওয়া। যা কেউই খুব একটা খাচ্ছিল না। অধিকাংশ সময় চুপচাপ দাঁড়িয়েই থাকতে হয়েছিল আমাদের। তবে দেখেছিলাম গোটা অনুষ্ঠানটাই একা সামলাচ্ছেন নীতা অম্বানি। তাঁকে দেখাচ্ছিলও খুব সুন্দর। অতিথিদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বিদেশি। তবে আমাদের কী করতে হবে না হবে, সে ব্যাপারে প্রথম থেকেই খুব স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে রেখেছিল অম্বানীদের কর্মচারীরা। তার বাইরে একটুও বেশি কাজ করতে হয়নি।’’
১৩২২
অর্চিশ লিখেছেন, সেটা ছিল কোভিডের সময়। অম্বানীরা তাঁদের প্রত্যেকের কোভিড পরীক্ষা করিয়েছিলেন এবং অনুষ্ঠানের কাজে যোগ দেওয়ার এক সপ্তাহ আগে তাঁদের প্রত্যেককে কোভিডকালের রীতি মেনে নিভৃতবাসেও রাখা হয়েছিল।
১৪২২
রেয়ার ট্রান্সলেটর ১০৪৭ নামের এক অ্যাকাউন্টধারী আবার জানিয়েছেন, তাঁর আবাসনের এক নিরাপত্তারক্ষীর কাছ থেকে তিনি শুনেছিলেন অ্যান্টেলিয়ার কথা। ওই রক্ষীর দাদা অ্যান্টেলিয়ায় প্রশাসনিক বিভাগে কাজ করতেন। তিনিই তাঁর ভাইকে বলেছিলেন, অম্বানীরা ভাল বেতন দেন এবং যাঁরা তাঁদের জন্য কাজ করেন, তাঁদের সাহায্য করতেও পিছপা হন না।
১৫২২
পেশেন্ট বক্স ৯৫৭২ নামের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘বছরের বেশির ভাগ সময়েই অম্বানীরা অ্যান্টেলিয়ায় থাকেন না। তাঁরা বিদেশে থাকেন। অ্যান্টেলিয়ায় মূলত অম্বানির বড় ছেলে এবং তাঁদের পুত্রবধূ থাকেন। কোনও অনুষ্ঠান থাকলে তবেই তাঁরা অ্যান্টেলিয়ায় আসেন।’’ যদিও এই ব্যক্তি কী সূত্রে এই তথ্য জানেন, তা প্রকাশ করেননি সমাজমাধ্যমে।
১৬২২
ট্রিকি স্যান্ডউইচ ০ নামে এক রেডিট ব্যবহারকারী আবার জানিয়েছেন, তাঁর এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয় অ্যান্টেলিয়ায় কাজ করেন। তিনি ওঁদের গাড়ির দেখাশোনার কাজে নিযুক্ত। তাঁর কাছ থেকেই তিনি শুনেছেন, কিছু অজানা কথা। তিনি লিখেছেন, ‘‘সবাই জানেন অ্যান্টেলিয়ায় গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাটি ছ’তলা। কিন্তু যা অনেকেই জানেন না, তা হল এই বাড়ির গোটা একটি তল বরাদ্দ করা রয়েছে শুধু অম্বানীদের গাড়ির দেখভালের জন্য। এ ছাড়াও আকাশ অম্বানীর ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য রয়েছে আলাদা একটি তল। আকাশ গাড়ির ভক্ত। পুরনো দিনের পোর্শে গাড়ি এবং ফেরারির প্রতি দুর্বলতা রয়েছে তার।’’
১৭২২
এই ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, অ্যান্টেলিয়ায় কাজের বেতন অত্যন্ত ভাল। রয়েছে কর্মচারীদের জন্য ভাল সুযোগ-সুবিধাও, কিন্তু কাজের চাপও নেহাত কম নয়।
১৮২২
সায়েন্টিফিক হিউম্যান নামের অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘আমার জিম ট্রেনার ২০১৩-২০১৪ সাল নাগাদ অম্বানীদের জিম প্রশিক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন। উনি মুম্বইয়ের এক জন অতি পরিচিত এবং বিখ্যাত মানুষ। তবে ভাগ্যের ফেরে দুর্ঘটনার শিকার হওয়ায় এক সময় কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই তাঁর অধীনে জিম ট্রেনিংয়ের সুযোগ হয়েছিল আমার। তাঁর কাছেই শুনেছিলাম অম্বানীদের কথা।’’
১৯২২
ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, ওই জিম প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণ দলের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন অম্বানীরা। সেই সময় ভোরবেলা ওই প্রশিক্ষণ দলটিকে গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হত অম্বানীদের ব্যক্তিগত জিমে। সেখানে অম্বানী পরিবারের সদস্যদের আসার অপেক্ষা করতে হত তাঁদের। সাধারণত দেরিতেই আসতেন অম্বানীদের পরিবারের সদস্যরা। কখনও-সখনও ঘণ্টাখানেক ঠায় বসে থাকত প্রশিক্ষকদের।
২০২২
ইলেকট্রনিক বিল ২৬৪ নামের এক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী আবার জানিয়েছেন, তাঁর প্রাক্তন বস্ মুকেশ অম্বানীর হয়ে একটি বিশেষ টিমে কাজ করতেন। আর ওই দলের সদস্যরা মুকেশকে এমডিএ (মুকেশ ধীরুভাই অম্বানী) নামে সম্বোধন করতেন। তিনি এক বার বলেছিলেন ভারতের ধনীশ্রেষ্ঠের সঙ্গে কাজ করলে মনেই হবে না তিনি এত বড় সাম্রাজ্যের প্রধান। ওই বিশেষ টিমের মিটিংয়ে মাঝেমধ্যেই ভেলপুরী, ইডলি, বড়াপাওয়ের মতো খাবারদাবার অর্ডার দিতেন তিনি।
২১২২
এই অ্যাকাউন্টধারীকে তাঁর বস্ জানিয়েছেন, বহু বার নবি মুম্বইয়ের অফিসের রিলায়্যান্স ক্যান্টিনে মুকেশকে লাইনে দাঁড়িয়ে বাকিদের মতোই দুপুরের খাবার নিতেও দেখেছিলেন তিনি।
২২২২
নো গ্যারাজ ৫৫৯৪ নামে এক অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী আবার জানিয়েছেন, নীতা অম্বানি অত্যন্ত মিষ্টি মানুষ। তিনি শিশুদের ভালবাসেন। আর যে কোনও কাজ নিখুঁত ভাবে করতে পছন্দ করেন।