গৌরব, তাঁদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট, ‘দ্য রিভা প্রজেক্ট’-এ দৈনন্দিন জীবনের কিছু অংশের ভিডিয়ো পোস্ট করে সমুদ্রে বসবাসের আনন্দ এবং সীমাবদ্ধতা উভয়ই তুলে ধরেছেন। একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ‘‘একটি নৌকায় সংসার ও জীবনযাপন করার জন্য আমরা চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমরা প্রায় সব কিছু বিক্রি করে দিয়েছি।’’
১৯৮৮ সালে নির্মিত রিভা কেনার পর, জলে সংসার পাতার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রাথমিক ভাবে তাঁরা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন না বলে গৌরব জানিয়েছেন। তিনি সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, ‘‘সম্পূর্ণ ভিন্ন জীবনধারা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমরা অজানার দিকে পা বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।’’ ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে গৌরব ও তাঁর পরিবার মনে করেন নৌকাতেও হতে পারে সুখের সংসার।
‘দ্য বেটার ইন্ডিয়া’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বৈদেহী বলেন, ‘‘আমরা শিখেছি, কী ভাবে সবচেয়ে কম জিনিসে সবচেয়ে ভাল ভাবে বাঁচা যায়। বাতাস আমাদের যে দিকে নিয়ে যায়, আমরা সে দিকেই যাই। ঘুম থেকে উঠে চোখ খুলে দেখি, কোথায় এলাম। মাঝেমাঝেই বিভিন্ন দ্বীপে থামি। ঘুরে বেড়াই। মেয়ে গাছের সঙ্গে দড়ি বেঁধে দোলনা বানিয়ে দোল খায়। ফলমূল সংগ্রহ করি। আবার নৌকায় উঠে পড়ি।’’
সমুদ্রের মেজাজের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া ছাড়াও জীবনযাত্রা ও রোজের অভ্যাসের প্রচুর পরিবর্তন ঘটাতে হয়েছে এই দম্পতি ও তাঁদের মেয়েকে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি ছিল কেয়ার পড়াশোনা। প্রচলিত স্কুলে পড়ার পরিবর্তে তাকে নৌকায় পড়ানো হয়। তার পড়ার বইয়ের বাইরেও প্রকৃতির নানা পাঠও নিতে শুরু করেছে কেয়া।
বৈদেহী জানান, সৌরবিদ্যুতের সাহায্যে নৌকাটিতে আলো জ্বলে। মিঠে জলের জন্য সংগ্রহ করতে হয় বৃষ্টির জল। মাছ ধরেন। নৌকার প্রতিটি ইঞ্চিকে কাজে লাগান। কয়েক মাস পর পর বন্দরে থেমে চা, নুন, মশলা ও তেলের মতো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে নেন। নৌকায় রান্নার বিশেষ সুযোগ নেই বলে জানান গৌরব। রসনাতৃপ্তি বা বিশেষ কোনও খাবার চেখে দেখার ইচ্ছা হলে বন্দরে নোঙর করে সেই ইচ্ছাপূরণ করতে হয়।
নৌকায় ভাজাভুজি জাতীয় খাবার তৈরি করা যায় না। নৌকার নড়াচড়ার ফলে তেল ছড়িয়ে বিপদের আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে এক পাত্রের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন তাঁরা। ভাত, সবজি এবং মুরগি রান্নার জন্য একটি প্রেশার কুকার রেখেছেন রান্নাঘরে। তাতে এক ধরনের বিরিয়ানিও মাঝেমাঝে রান্না হয়ে যায়। এই খাবারের জন্য ন’কেজি গ্যাস সিলিন্ডার যথেষ্ট।
নৌকার জীবনটা হয়তো কিছুটা স্বস্তির রোদ আর সূর্যাস্তে ভরা। কিন্তু এর সঙ্গে আরও অনেক কিছু জড়িত। বৈদেহী এবং গৌরবকে পরস্পরকে পাহারা দেওয়ার দায়িত্ব পালন করতে হয়। নৌ-চলাচল সংক্রান্ত নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। এমনকি যখন এটি আরামদায়ক বলে মনে হয়, তখনও গৌরব মনে করিয়ে দেন যে সমুদ্রে সর্বদা সতর্ক থাকতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy