Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Education

Rekha Prabhakar Kulal: প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হলে হাজার টাকার বন্ড উপহার! পড়ুয়াদের সঙ্গে অন্য ‘বন্ড’ শিক্ষকের

কর্নাটকের একটি সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের টানতে অভিনব উপায় বার করেছেন ৩৩ বছরের শিক্ষিকা রেখা প্রভাকর কুলাল।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ০৯:২৮
Share: Save:
০১ ১৩
কচিকাঁচাদের স্কুলমুখো করতে তাদেরকে মাথাপিছু হাজার টাকা মূল্যের বন্ড উপহার দিচ্ছেন কর্নাটকের এক প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষিকা। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পড়ুয়াদের সঙ্গে অন্য ‘বন্ড’ গড়ে উঠেছে রেখা প্রভাকর কুলালের।

কচিকাঁচাদের স্কুলমুখো করতে তাদেরকে মাথাপিছু হাজার টাকা মূল্যের বন্ড উপহার দিচ্ছেন কর্নাটকের এক প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষিকা। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, পড়ুয়াদের সঙ্গে অন্য ‘বন্ড’ গড়ে উঠেছে রেখা প্রভাকর কুলালের।

০২ ১৩
স্থানীয়দের কাছে তিনি ‘রেখা বন্ড’ নামেও পরিচিত। কর্নাটকের শিবমোগ্গা মহকুমার নাল্লিগ্গেরে এলাকার একটি সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের টানতে অভিনব উপায় বার করেছেন এই শিক্ষিকা।

স্থানীয়দের কাছে তিনি ‘রেখা বন্ড’ নামেও পরিচিত। কর্নাটকের শিবমোগ্গা মহকুমার নাল্লিগ্গেরে এলাকার একটি সরকারি স্কুলে পড়ুয়াদের টানতে অভিনব উপায় বার করেছেন এই শিক্ষিকা।

০৩ ১৩
প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হলেই প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে হাজার টাকা অর্থমূল্যের বন্ড উপহার দিচ্ছেন রেখা। শর্ত একটাই, দশম শ্রেণির আগে সেই বন্ড ভাঙানো যাবে না। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর সুদে-আসলে সে টাকা প্রতি পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। ২০১৪ সালে রেখার এই উদ্যোগের সূত্রপাত।

প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হলেই প্রতিটি ছাত্র-ছাত্রীকে হাজার টাকা অর্থমূল্যের বন্ড উপহার দিচ্ছেন রেখা। শর্ত একটাই, দশম শ্রেণির আগে সেই বন্ড ভাঙানো যাবে না। দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার পর সুদে-আসলে সে টাকা প্রতি পড়ুয়ার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। ২০১৪ সালে রেখার এই উদ্যোগের সূত্রপাত।

০৪ ১৩
রেখার এই প্রচেষ্টায় ফল মিলতে শুরু করেছে। ২০১০ সালে শিক্ষিকা হিসাবে স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। স্কুল চালুর সময় ১০০ জন পড়ুয়া এখানে পড়াশোনা করত। তবে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে।

রেখার এই প্রচেষ্টায় ফল মিলতে শুরু করেছে। ২০১০ সালে শিক্ষিকা হিসাবে স্কুলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। স্কুল চালুর সময় ১০০ জন পড়ুয়া এখানে পড়াশোনা করত। তবে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে।

০৫ ১৩
এক সময় নিম্নবিত্ত-প্রধান প্রান্তিক এলাকার ওই স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা দাঁড়ায় হাতেগোনা। রেখার কথায়, ‘‘আমি এই স্কুলে চাকরি শুরু করার সময় গোড়ার দিকে প্রথম শ্রেণিতে তিন-চার জন পড়ুয়া ছিল। সব মিলিয়ে স্কুলে মোট ২০ জন। তবে ২০১৪ সাল থেকে বন্ড চালু করায় পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।’’

এক সময় নিম্নবিত্ত-প্রধান প্রান্তিক এলাকার ওই স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা দাঁড়ায় হাতেগোনা। রেখার কথায়, ‘‘আমি এই স্কুলে চাকরি শুরু করার সময় গোড়ার দিকে প্রথম শ্রেণিতে তিন-চার জন পড়ুয়া ছিল। সব মিলিয়ে স্কুলে মোট ২০ জন। তবে ২০১৪ সাল থেকে বন্ড চালু করায় পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।’’

০৬ ১৩
রেখা জানিয়েছেন, প্রতি বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সময় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে হাজার টাকা মূল্যের বন্ড কিনে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়াই গরিব ঘরের ছেলেমেয়ে। মা-বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। ফলে দশমের পর বন্ডের টাকা পড়ুয়াদের কলেজের পড়াশোনায় কাজে লাগবে।’’

রেখা জানিয়েছেন, প্রতি বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার সময় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে হাজার টাকা মূল্যের বন্ড কিনে দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়াই গরিব ঘরের ছেলেমেয়ে। মা-বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। ফলে দশমের পর বন্ডের টাকা পড়ুয়াদের কলেজের পড়াশোনায় কাজে লাগবে।’’

০৭ ১৩
কুন্দাপুর মহকুমার বাসিন্দা রেখার এই প্রচেষ্টার সুফল মিলতে শুরু করেছে। এককালে ওই স্কুলে পড়ুয়া কমতে কমতে দু’অঙ্কের নীচে নেমে গিয়েছিল। তবে ২০২১ সালে পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩-তে।

কুন্দাপুর মহকুমার বাসিন্দা রেখার এই প্রচেষ্টার সুফল মিলতে শুরু করেছে। এককালে ওই স্কুলে পড়ুয়া কমতে কমতে দু’অঙ্কের নীচে নেমে গিয়েছিল। তবে ২০২১ সালে পড়ুয়াদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৩-তে।

০৮ ১৩
উদুপি জেলার কুন্দাপুর মহকুমার বাসিন্দা রেখা নিজেও সচ্ছল পরিবার থেকে আসেননি। বরং বেশ কষ্টেসৃষ্টেই পড়াশোনা শেষ করেছেন। শিক্ষার খরচ মেটাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। তাই সরকারি স্কুলে চাকরি জোটার পর নিম্নবিত্ত পরিবারের পড়ুয়াদের দিকে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

উদুপি জেলার কুন্দাপুর মহকুমার বাসিন্দা রেখা নিজেও সচ্ছল পরিবার থেকে আসেননি। বরং বেশ কষ্টেসৃষ্টেই পড়াশোনা শেষ করেছেন। শিক্ষার খরচ মেটাতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা। তাই সরকারি স্কুলে চাকরি জোটার পর নিম্নবিত্ত পরিবারের পড়ুয়াদের দিকে তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

০৯ ১৩
সংবাদমাধ্যমে রেখা বলেন, ‘‘আমি এবং আমার স্বামী, দু’জনেই সংসারের বহু টানাটানির মধ্যে পড়াশোনা করেছি। পড়াশোনার খরচ তুলতে অনেকের কাছ থেকে অর্থসাহায্য পেয়েছি। ফলে সরকারি চাকরি পাওয়ার পর গরিব পরিবারের পড়ুয়াদের সাহায্য করতে চেয়েছিলাম।’’

সংবাদমাধ্যমে রেখা বলেন, ‘‘আমি এবং আমার স্বামী, দু’জনেই সংসারের বহু টানাটানির মধ্যে পড়াশোনা করেছি। পড়াশোনার খরচ তুলতে অনেকের কাছ থেকে অর্থসাহায্য পেয়েছি। ফলে সরকারি চাকরি পাওয়ার পর গরিব পরিবারের পড়ুয়াদের সাহায্য করতে চেয়েছিলাম।’’

১০ ১৩
গত বছর মোট ১৩ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। প্রত্যেকের জন্য হাজার টাকা মূল্যের বন্ড কিনে দিয়েছেন রেখা। মহকুমার কানাড়া ব্যাঙ্কে তাদের জন্য অ্যাকাউন্টও খুলে দিয়েছেন। ১০ বছর পর প্রত্যেক পড়ুয়া ২,৪০০ টাকা করে হাতে পাবে।

গত বছর মোট ১৩ জন ছাত্র-ছাত্রী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। প্রত্যেকের জন্য হাজার টাকা মূল্যের বন্ড কিনে দিয়েছেন রেখা। মহকুমার কানাড়া ব্যাঙ্কে তাদের জন্য অ্যাকাউন্টও খুলে দিয়েছেন। ১০ বছর পর প্রত্যেক পড়ুয়া ২,৪০০ টাকা করে হাতে পাবে।

১১ ১৩
রেখা জানিয়েছেন, নিজের সঞ্চয় থেকে পড়ুয়াদের জন্য ওই বন্ড কিনছেন তিনি। গত বছর পর্যন্ত এই খাতে ৬৩,০০০ টাকা খরচ করেছেন তিনি।

রেখা জানিয়েছেন, নিজের সঞ্চয় থেকে পড়ুয়াদের জন্য ওই বন্ড কিনছেন তিনি। গত বছর পর্যন্ত এই খাতে ৬৩,০০০ টাকা খরচ করেছেন তিনি।

১২ ১৩
৩৩ বছরের এই শিক্ষিকার প্রচেষ্টা কথা শুনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সমাজের প্রভাবশালীরা। আগে পড়ুয়ারা স্কুলের মেঝেয় বসে পড়াশোনা করত। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ২৫,০০০ টাকা অনুদান দেওয়ায় তাদের জন্য টেবিল-বেঞ্চ কেনা হয়েছে।

৩৩ বছরের এই শিক্ষিকার প্রচেষ্টা কথা শুনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সমাজের প্রভাবশালীরা। আগে পড়ুয়ারা স্কুলের মেঝেয় বসে পড়াশোনা করত। পরে স্থানীয় এক ব্যক্তি ২৫,০০০ টাকা অনুদান দেওয়ায় তাদের জন্য টেবিল-বেঞ্চ কেনা হয়েছে।

১৩ ১৩
স্ত্রীর এই উদ্যোগকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন রেখার স্বামী তথা বন দফতরের কর্মী প্রভাকর কুলাল। রেখা বলেন, ‘‘আমরা দু’জনেই দারিদ্রের মধ্যে মানুষ হয়েছি। ফলে সকলের থেকে যে সাহায্য পেয়েছি, তা-ই সমাজকে ফিরিয়ে দিতে চাই।’’

স্ত্রীর এই উদ্যোগকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছেন রেখার স্বামী তথা বন দফতরের কর্মী প্রভাকর কুলাল। রেখা বলেন, ‘‘আমরা দু’জনেই দারিদ্রের মধ্যে মানুষ হয়েছি। ফলে সকলের থেকে যে সাহায্য পেয়েছি, তা-ই সমাজকে ফিরিয়ে দিতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy