আদতে ড্রাকুলার অস্তিত্ব ছিল কি না, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। তবে, এই একুশ শতকে যে সত্যিই ড্রাকুলার আবির্ভাব ঘটতে পারে, তা বোধ হয় ভাবতে পারেননি কেউ-ই।
০৪১৭
এই ড্রাকুলার ঠিকানা ট্রান্সিলভ্যানিয়া নয়, তুরস্কে বাবার সঙ্গে থাকেন তিনি।
০৫১৭
‘দ্য জার্নাল অব সাইকোথেরাপি অ্যান্ড সাইকোসোম্যাটিক্স’ এই ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করলেও তাঁর মানসিক ও শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য প্রদান করেছে।
০৬১৭
সারা দিন রক্ত পান করেও এক জন কী করে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে পারেন, এ নিয়ে সন্দেহ জাগে চিকিৎসকদের। তাই ওই ব্যক্তির স্বাস্থ্যগত পর্যবেক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
০৭১৭
ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় জানতে পারেন, দু’বছর ধরে টানা রক্তপান করে চলেছেন তিনি।
০৮১৭
প্রথম দিকে রক্ততৃষ্ণা মেটাতে তিনি ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কেটে নিজের রক্তই পান করতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি তাঁর নেশায় পরিণত হয়।
০৯১৭
কিছু দিন পর রক্তের নেশা এমন তীব্র আকার ধারণ করে যে, অচেনা ব্যক্তিকেও আক্রমণ করতে শুরু করেন তিনি।
১০১৭
কখনও তাঁদের গায়ে কামড় বসিয়ে, কখনও বা তাঁদের ছুরি দিয়েও আহত করে রক্তপান করতেন তিনি। এই কারণে তাঁকে বহু বার গ্রেফতারও করেছে তুর্কি পুলিশ।
১১১৭
এমনকি, ছেলেকে রক্তের জোগান দিতে ব্লাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত কিনেও আনতেন তাঁর বাবা। চিকিৎসকদের দাবি, ওই ব্যক্তি বহু বছর ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
১২১৭
তাঁর চার মাসের মেয়ে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগে মারা যায়। কন্যাবিয়োগের শোক সামলে উঠতে পারেননি তিনি।
১৩১৭
এই পরিস্থিতিতেই নিজের কাকাকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, জার্নালের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, তাঁর এক বন্ধু ওই ব্যক্তির সামনেই তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করে। খুন করার পর মৃতদেহের মাথা, এমনকি যৌনাঙ্গও কেটে ফেলে।
১৪১৭
একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে থাকায় তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে শুরু করেন। ২৩ বছর বয়সি এই ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, তিনি নিজের মনেই কথা বলে যান। তাঁকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করায় তিনি জানান, তাঁর এক ‘অদৃশ্য’ বন্ধু রয়েছে। সেই বন্ধুর সঙ্গেই কথা বলেন তিনি।
১৫১৭
অন্য ব্যক্তিদের আক্রমণ করার সময় নাকি তিনি কিছু বুঝতেই পারেন না। এমনকি তিনি এ-ও বুঝতে পারেন না, কী করে তিনি অন্য জায়গায় পৌঁছে যান। সেই ‘অদৃশ্য’ বন্ধুই নাকি তাঁকে রক্ত খাওয়ার নির্দেশ দেন।
১৬১৭
অনেক সময় সেই 'অদৃশ্য বন্ধু' আত্মহত্যা করতেও বলেছেন তাঁকে। তুর্কির ডেনিজলি মিলিটারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডিরেন সাকারয়া এবং তাঁর সহকর্মীরা দু’বছর ধরে এই ব্যক্তির চিকিৎসা চালান।
১৭১৭
ডিরেনের মতে, এই ব্যক্তি মানসিক অবসাদ, মদ্যাসক্তি, মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার-সহ বহু রোগে ভুগছেন। চিকিৎসকেরা এ-ও জানিয়েছেন, তাঁর মধ্যে ‘ভ্যাম্পায়ারিজম’-এর লক্ষণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।