This Kerala boy's painting on mother wins global award dgtl
National news
মায়েদের ছবি এঁকে সোনা জয় ছেলের, জানতেই পারলেন না মৃত মা
যে মাকে মনে করে তার এই ক্যানভাস, তার নিজের মা-ই তার পুরস্কৃত হওয়াটা দেখতে পেলেন না। তার আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২০ ১৪:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
সাদা জামা আর লাল স্কার্ট পরে বারান্দায় ঝাড়ু দিচ্ছেন এক মহিলা। ঠিক সে সময়ই অন্য এক জন কয়েক মাইল দূরে পোষা গরুদের সামলানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার এই গ্রামের অন্য প্রান্তে দুপুর বেলা চাষের জমি নিয়ে ব্যস্ত দুই মহিলা।
০২১৪
এঁরা সবই মা। একটা গ্রামে সারাদিন ধরে বিভিন্ন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকা মায়েরা। নিজের গ্রামের মায়েদের বিভিন্ন রূপ রং-তুলির ক্যানভাসে তুলে ধরে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম হল ১৪ বছরের এক কিশোর।
০৩১৪
তবে যে মাকে মনে করে তার এই ক্যানভাস, তার নিজের মা-ই তার পুরস্কৃত হওয়াটা দেখতে পেলেন না। তার আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
০৪১৪
যে ছবিটা সে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তুলেছে, সেটা নয় বছর বয়সে এঁকেছিল অনুজাত সিন্ধু বিনয়লাল নামের ওই কিশোর।
০৫১৪
কেরলের ত্রিশূর জেলায় জন্ম অনুজাতের। কখনও কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে সে এই ছবি আঁকেনি। বরং নিজের মায়ের প্রতি ভালবাসাতেই সে মায়ের জন্য এই ছবি এঁকেছিল।
০৬১৪
ছেলের বরাবরই আঁকার প্রতি খুব আগ্রহ। ছোট থেকেই সে তার চারপাশে যা দেখত, ক্যানভাসে সেটাই ফুটিয়ে তুলত।
০৭১৪
কখনও আঁকার প্রশিক্ষণ না নিয়েই সে এত ভাল আঁকত যে, আলাদা করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি তার বাবা-মা।
০৮১৪
যেমন তার বইয়ের দিকে হেঁটে আসছে পিঁপড়ের দল, বাগানে ঢুকে ফল খেয়ে ফেলছে ছাগল... এ রকম নিত্যদিন ঘটে চলা নানা বাস্তব চিত্র সুন্দর করে রঙে ভরিয়ে তুলত সে।
০৯১৪
তেমনই ছিল তার ওই গ্রাম্য মায়েদের ক্যানভাসটাও। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মানের আঁকার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল দিল্লিতে। একটি বই প্রকাশনী সংস্থা এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল।
১০১৪
ছেলে অনুজাতের আঁকা ওই ছবিটা তার বাবা প্রতিযোগিতায় দিয়ে দেন। আন্তর্জাতিক এই অঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিল অনুজাত।
১১১৪
প্রতিযোগিতার ফলাফল জেনেছিলেন তার মা। তবে যতদিনে মেডেল এবং সার্টিফিকেট তার বাড়ি পৌঁছেছিল, মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
১২১৪
বর্তমানে ১৪ বছর বয়স অনুজাতের। এর মধ্যে অনেকগুলো পুরস্কার দিতে নিয়েছে সে। ২০১৩ সালে এশিয়ার সবচেয়ে বড় অঙ্কন প্রতিযোগিতায় সে বেস্ট আউটস্ট্যান্ডিং আর্টিস্ট হয়েছে। ২০১৪ সালে কেরল টুরিজমের ক্লায়েন্ট মেমরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল পেন্টিং প্রতিযোগিতা জেতে।
১৩১৪
রাষ্ট্রপুঞ্জও তাকে সম্মানিত করেছে। তবে তার পরিবারের কাছে সবচেয়ে গর্বের মুহূর্ত ২০১৬ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত থেকে ন্যাশনাল চাইল্ড অ্যাওয়ার্ড নেওয়া।
১৪১৪
মায়ের মৃত্যুর পর আর কোনও প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় না অনুজাত। সে এখন শুধু নিজের জন্য আঁকে। আর আঁকে তার মায়ের জন্য। অনুজাতের কথায়, “মা আমাকে সব সময় উত্সাহ দিত যাতে আমার প্রতিটা ছবি আগের থেকেও ভাল হয়।”