ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম আসার আগে থেকেই বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হয়েছিল তামিলনাড়ুর উপকূলীয় অঞ্চল এবং চেন্নাইয়ে। ঝড় যত উপকূলের দিকে এগিয়েছে, বৃষ্টির তাণ্ডব ততই বেড়েছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৮:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
কোথাও হাঁটুসমান জল, কোথাও কোমরসমান। কোথাও রাস্তা যেন খরস্রোতা নদী! ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম আসার আগে থেকেই বৃষ্টির তাণ্ডব শুরু হয়েছিল তামিলনাড়ুর উপকূলীয় অঞ্চল এবং চেন্নাইয়ে। ঝড় যত উপকূলের দিকে এগিয়েছে, বৃষ্টির তাণ্ডব ততই বেড়েছে।
০২১২
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম নিয়ে আগেভাগেই সতর্কতা জারি করেছিল প্রশাসন। তামিলনাড়ুর উপকূলীয় জেলাগুলির পাশাপাশি চেন্নাইয়েও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়। রবিবার থেকেই চেন্নাইয়ে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। কয়েক ঘণ্টায় বৃষ্টিতে চেন্নাইয়ের চেহারা একেবারে বদলে যায়।
০৩১২
মৌসম ভবন জানিয়েছে, ৩ এবং ৪ ডিসেম্বরে চেন্নাইয়ের বেশির ভাগ জায়গায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। যা ২০১৫ সালের বন্যার পর এই প্রথম।
০৪১২
প্রবল বৃষ্টি এবং তার জেরে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় মঙ্গল এবং বুধবার চার জেলা— চেন্নাই, কাঞ্চিপুরম, তিরুভাল্লুর এবং চেঙ্গলপেটে সমস্ত স্কুল এবং কলেজে আগেই ছুটি ঘোষণা করেছিল তামিলনাড়ু সরকার।
০৫১২
দু’দিন বৃষ্টি এবং তার জেরে তৈরি হওয়া বন্যা পরিস্থিতির জেরে চেন্নাইয়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। কোট্টুরপুরম, মুথিয়ালপেট, তাম্বারম, অশোকনগর, কাট্টুপক্কম, পেরুনগুড়ির মতো শহরের বেশির ভাগ এলাকা কয়েক ফুট জলের তলায় চলে গিয়েছে।
০৬১২
শহরের বেশির ভাগ এলাকা জলের তলায় চলে যাওয়ায় রবিবার থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। পানীয় জলের সমস্যাও শুরু হয়েছে কোথাও কোথাও। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী জলমগ্ন এলাকাগুলি ঘুরে উদ্ধারকাজের পাশাপাশি ত্রাণ বিলির কাজও শুরু করেছে।
০৭১২
ভারী বৃষ্টির জেরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে চেন্নাই বিমানবন্দরের একাংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রানওয়েতে হাঁটুসমান জল হয়ে গিয়েছিল। ফলে বিমান পরিষেবাও ব্যাহত হয়। তবে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টি কমায় আবার বিমান চলাচল শুরু হয়েছে।
০৮১২
মৌসম ভবন জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি চেন্নাইয়ের পেরুনগুড়ি (৪৫০ মিমি), তিরুভাল্লুর জেলার পুনামাল্লি (৩৪০ মিমি), আভারিতে (২৮০ মিমি)।
০৯১২
জলমগ্ন শহরে উদ্ধারকাজের জন্য পাশের জেলাগুলি থেকে পাঁচ হাজার কর্মী এনেছে চেন্নাই পুরনিগম। ট্র্যাক্টর, নৌকা নিয়ে নিচু এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। পেরিয়ামেট এবং উত্তর চেন্নাইয়ের প্লাবিত এলাকাগুলিতে গিয়ে ত্রাণ বিলি করার কাজও করছেন তাঁরা।
১০১২
মঙ্গলবার দুপুরেই অন্ধ্রপ্রদেশের বাপাতলায় আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম। তিন ঘণ্টা ধরে এর তাণ্ডব চলবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ে এই ঘূর্ণিঝড়। সর্বোচ্চ গতিবেগ হয়েছিল ১১০ কিলোমিটার।
১১১২
এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অন্ধ্রপ্রদেশের আটটি জেলায় চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন। সেই আটটি জেলা হল— তিরুপতি, নেল্লোর, প্রকাশম, বাপাতলা, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী, কোনাসীমা এবং কাকিনাঁড়া। পুদুচেরিতে উপকূলীয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
১২১২
মৌসম ভবন জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় শহরগুলিতে ৩০০-৪০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ঝোড়ো হাওয়ায় উপকূলীয় এলাকাগুলিতে বহু ঘরবাড়ি ভেহে পড়েছে। গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে।