বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আমেরিকার প্রতিরক্ষা দফতরের এক শীর্ষকর্তা। ‘ওয়াল স্ট্রিল জার্নাল’-কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘‘রাশিয়ার এস-৩০০ বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বোকা বানিয়েছে ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। এই হাতিয়ারের অক্ষমতা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।’’
পারস্য উপসাগরের তীরে ইজ়রায়েলি বায়ুসেনার প্রত্যাঘাত নিয়ে বিস্তারিত একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আমেরিকার গবেষণা সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অফ ওয়ার’। সেখানেও দাবি করা হয়েছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে এস-৩০০ মোতায়েন রয়েছে এমন তিন থেকে চারটি জায়গায় হামলা চালায় আইডিএফ। যার মধ্যে রয়েছে রাজধানী তেহরানের আলি খামেনাই বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা।
বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ইজ়রায়েলি হামলায় কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রথমত, লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ ৩৫-এর মতো ‘স্টেলথ’ ক্যাটেগরির যুদ্ধবিমানকে চিহ্নিত করার ক্ষমতা নেই এস ৩০০-র। দ্বিতীয়ত, জ্যামারের সাহায্যে একবার এর রাডারকে অকেজো করতে পারলেই, আর ঠিকমতো কাজ করবে না এই বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। তৃতীয়ত, হানাদার ড্রোনকে চিহ্নিত করে এটি কতটা নিষ্ক্রিয় করতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
একটা সময়ে সোভিয়েত রাশিয়া, ইউক্রেন, বুলগেরিয়া এবং গ্রিসের সেনাবাহিনীর অস্ত্রাগারে শোভা পেত এস-৩০০। কিন্তু, পরবর্তীকালে অধিকাংশ দেশই এর ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। সূত্রের খবর, ইজ়রায়লি হামলার পর আরও উন্নত বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার খোঁজ শুরু করে দিয়েছে তেহরান। এর উন্নত সংস্করণ ‘এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ’ পেতে ফের একবার মস্কোর মুখাপেক্ষী হতে পারে আইআরজিসি।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে রাশিয়া। তার পর থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে মস্কোর তৈরি একাধিক হাতিয়ার। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে আমেরিকা ও পশ্চিমি দেশের তৈরি করা বহু অস্ত্র বেশি কার্যকর ভূমিকা নিয়েছে। উদাহরণ হিসাবে আমেরিকার ‘জ্যাভলিন’ ক্ষেপণাস্ত্রের কথা বলা যেতে পারে। যা দিয়ে সহজেই একের পর এক রুশ ট্যাঙ্ক উড়িয়েছে ইউক্রেনীয় ফৌজ।
দ্বিতীয় উদাহরণ ‘আর-৩৬০ নেপচুন’ অ্যান্টিশিপ ক্ষেপণাস্ত্র। যার আঘাতে কৃষ্ণ সাগরে রুশ যুদ্ধজাহাজ ‘মস্কোভা’-কে ডোবাতে সক্ষম হয় ইউক্রেনের সৈনিকরা। তা ছাড়া মস্কোর বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ফাঁক গলে বেশ কয়েক বার ড্রোন হামলা চালিয়েছে ‘ইউরোপের রুটির ঝুড়ি’। ফলে হাতিয়ারের দুনিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘দাদাগিরি’র দিন শেষ বলে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
তথ্য বলছে, ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন বেশ কিছু রাশিয়ান হাতিয়ারের চাহিদা আকাশছোঁয়া হয়েছে। যার মধ্যে জ়িরকম ছাড়াও রয়েছে ‘কেএইচ ২২’ ক্ষেপণাস্ত্র, ‘ইউপিএবি ১৫০০’ গ্লাইডিং বোমা এবং ‘এসজে ১০০’ বিমান। আফ্রিকার বহু দেশ এগুলি কেনার জন্য ইতিমধ্যেই মস্কোর দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। এ ছাড়া আমেরিকার ‘এফ-১৬’ যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামাতে সক্ষম হয়েছে পুতিন ফৌজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy