Hundreds have been missing in the aftermath of the Beirut blast and death toll is rising dgtl
Blast
ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর পরিস্থিতি কী ভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করছে বেইরুট
লেবাননের বেইরুটের বন্দরে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। জখমের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৪ হাজারেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। সেই সঙ্গে কী করাণে এত বড় বিস্ফোরণ হল তা নিয়ে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সংস্থা
বেইরুটশেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২০ ১৮:৪৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
লেবাননের বেইরুটের বন্দরে বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। জখমের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৪ হাজারেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সে দেশের প্রশাসন। সেই সঙ্গে কী করাণে এত বড় বিস্ফোরণ হল তা নিয়ে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী।
০২১৯
মঙ্গলবার অন্য দিনের মতোই ব্যস্ততা ছিল বেইরুট বন্দরে। বিকেলের দিকে বন্দরের একটি অংশে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। অনেক দূর থেকে সেই ধোঁয়া দেখা যাচ্ছিল। অনেকেই আগুনের সেই ছবি ক্যামেরা বন্দি করছিলন তার মাঝেই বিস্ফোরণ ঘটে।
০৩১৯
ধোঁয়ার ছবি ক্যামেরাবন্দি করতে করতেই হঠাৎ পর পর দু’টি বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। সেই সঙ্গে দেখা যায় গম্বুজের মতো সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উঠে যাচ্ছে। কয়েকটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের তীব্রতায় ক্যামেরা হাত থেকে পড়ে যাচ্ছে।
০৪১৯
বিস্ফোরণে তীব্রতা এতটাই ছিল যে ১০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কম্পন অনুভূত হয় বেইরুটের ২৪০ কিলোমিটার পশ্চিমে সাইপ্রাস দ্বীপেও।
০৫১৯
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় তখন বিকেল সাড়ে ৫টা। পর পর দুটো জোরাল বিস্ফোরণ হয় বন্দর এলাকায়। তীব্রতা এতটাই ছিল যে, আশপাশের বহু বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে যায়। আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন মানুষ। প্রচুর মানুষ মানুষ আহত হন।
০৬১৯
মৃতের সংখ্যা ইতিধ্যেই ১০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আহতের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা লেবানন প্রশাসনের। বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বুধবার জাতীয় শোক দিবসের ঘোষণা করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব।
০৭১৯
ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ হয়, প্রাথমিক ভাবে তা স্পষ্ট না হলেও প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, গত ছয় বছর ধরে বন্দর এলাকার একটি গুদামে ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত ছিল। তাতেই হয়তো বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
০৮১৯
এত বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক কী ভাবে মজুত করা হল, কেনই বা তা মজুতের ক্ষেত্রে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার জন্যা যারা দায়ী তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী। একটা তদন্তকারী কমিটি গঠন করে পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
০৯১৯
বিস্ফোরণে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবানন প্রশাসন। ক্ষতির পরিমাণ ভারতীয় মুদ্রায় ২২ হাজার ৪৫৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা থেকে ৩৭ হাজার ৪২৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা হতে পারে। বুধবার এই ক্ষতির পরিমাণের প্রাথমিক অনুমানের কথা জানিয়েছেন বেইরুটের গভর্নর।
১০১৯
তদন্তকারীদের অনুমান, গুদামে বা তার আশপাশে আগুন লেগে গিয়েছিল। সেই আগুনের জেরেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণ নিয়ে এমন নানা মত উঠে এলেও এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
১১১৯
বেইরুট বন্দর এলাকাটি বেশ জনবহুল। বিস্ফোরণ স্থলের একেবারে কাছাকাছি সব ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে বেশ কয়েকটি বহুতল। সেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান অনেক মানুষ। এমনটাই জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলে ধারণা।
১২১৯
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান জানিয়েছেন, হতাহত ছাড়াও অন্তত ১০০ জনের নিখোঁজের কথা জানিয়েছে তাঁদের পরিবার। যাঁরা ধ্বংসস্তুপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
১৩১৯
বিস্ফোরণে শুধু লেবাননের বাসিন্দা নয়, বিদেশি কয়েক জনও হতাহত হয়েছেন। তুরস্ক ইতিমধ্যেই জানিয়েছে তাদের ছয় নাগরিক আহত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে পাঁচ জনের অবস্থা গুরুতর, এক জন অস্ত্রপচারের পর এখন বিপদ মুক্ত। তুরস্কের বিদেশ মন্ত্রী টুইট করে জানিয়েছেন বুধবার। ফিলিপিন্সের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, তাদের দুই নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, অন্তত আট জন আহত হয়েছেন
১৪১৯
এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “বেইরুটের বিস্ফোরণে এত লোকের প্রাণহানি হল, তার জন্য আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।’’ শোক প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুটেরাস-ও । ফ্রারাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বেউরুট যাবেন বলে জানিয়েছেন।
১৫১৯
বিভিন্ন দেশ লেবাননের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ফ্রান্স ইতিমধ্যেই দু’টি সামরিক বিমান পাঠিয়ে দিয়েছে লেবাননে। যাতে চিকিৎক, উদ্ধারকারী দল মিলিয়ে ৫৫ জনের একটি দল রয়েছে। একটি ভ্রাম্যমান চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে তাঁদের সঙ্গে। এই চিকিৎসাকেন্দ্রে ৫০০ জনের চিকিৎসা করা সম্ভব। সেই সঙ্গে ১৫ টন যন্ত্রপাতি, নানান সামগ্রীও রয়েছে ওই দলের সঙ্গে।
১৬১৯
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের কাছে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। কাতার, ইরান, কুয়েত, ওমান এবং জর্ডন থেকে আসা সামগ্রীর সাহায্যে এই হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে। ছয় থেকে আটটি এমন হাসপাতাল দ্রুত তৈরি করা হচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও লেবাননের পাশে থাকার এবং সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে।
১৭১৯
বেইরুট শহরের চারটি হাসপাতাল এই বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদিও সেগুলি যতটা সম্ভব সচল রাখার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। শহরের ৯০ শতাংশ হোটেলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে লেবাননের সংবাদমাধ্যম।
১৮১৯
লেবানন রেডক্রস অন্তত ১০০০ পরিবারের জন্য অস্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করছে। রেড ক্রস জানিয়েছে আগামী ৭২ ঘণ্টা এই অস্থায়ী বাসস্থানগুলিতে খাবার, জল-সহ সব রকম সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। তবে গৃহহীনের সংখ্যাটা এর থেকে অনেক বেশি। লেবানন সরকার ইতিমধ্যেই আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য।
১৯১৯
বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। একটি জনপ্রিয় অ্যাপ ক্যাব সংস্থা জানিয়েছে, যে কেউ রক্তদান করতে চান, তাঁদের জন্য বিনামূল্যে যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে তারা।