Indian singer Palash Sen, founder of the famous pop band Euphoria, what is he doing now dgtl
Palash Sen
বন্ধুদের সঙ্গে ব্যান্ড থেকে জনপ্রিয় পপগায়ক, বিনামূল্যে চিকিৎসাও করেন শাহরুখের ‘সিনিয়র’
কখনও হিট হয়েছে ব্যান্ডের গানের অ্যালবাম, কখনও বা মিউজ়িক ভিডিয়ো। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে গায়ক হিসাবেও প্রথম সারিতে নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন পলাশ সেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৩ ১০:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
পরিবারের সকলেই চিকিৎসক। পেশা হিসাবে তিনিও বেছে নিয়েছিলেন চিকিৎসাকে। তবে চিকিৎসক হিসাবে নয়, পলাশ সেন বেশি পরিচিত ভারতের প্রথম সারির পপ ঘরানার ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা এবং সঙ্গীতশিল্পী হিসাবে।
০২২৩
১৯৯৮ সালে কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে একটি মিউজ়িক ব্যান্ড তৈরি করেছিলেন পলাশ। ব্যান্ডের নাম রেখেছিলেন ‘ইউফোরিয়া’। চিকিৎসক হয়েও পলাশের কেরিয়ারের ঝুলিতে ক্রমশ যুক্ত হয়ে যাচ্ছিল একের পর এক হিট গান।
০৩২৩
কখনও হিট হয়েছে ব্যান্ডের গানের অ্যালবাম, কখনও বা মিউজ়িক ভিডিয়ো। নব্বইয়ের দশকের শেষের দিকে গায়ক হিসাবেও প্রথম সারিতে নাম লিখিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। বর্তমানে কী করছেন পলাশ?
০৪২৩
১৯৬৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর লখনউয়ে জন্ম পলাশের। তার পর পরিবার-সহ দিল্লিতে চলে যান তিনি। দিল্লির স্কুলে পড়াকালীন নাটকে অংশগ্রহণ করতেন পলাশ। তখন থেকেই গানবাজনার প্রতি আগ্রহ জন্মায় তাঁর।
০৫২৩
চিকিৎসাবিদ্যা নিয়ে পড়বেন বলে দিল্লির কলেজে ভর্তি হন পলাশ। পড়াশোনার পাশাপাশি কলেজের বন্ধুদের নিয়ে একটি ব্যান্ডও তৈরি করে ফেলেন তিনি।
০৬২৩
‘ইউফোরিয়া’ ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা হলেও মূলত গান লেখার দিকে মন দিয়েছিলেন পলাশ। ইংরেজিতে গানের কথা লিখতেন তিনি। একাংশের দাবি, ‘হেভেন অন দ্য সেভেন্থ ফ্লোর’ গানটি প্রথম লিখেছিলেন পলাশ। এই গানের সঙ্গে তাঁর কলেজ জীবনেরও যোগসূত্র রয়েছে বলে জানা যায়। কলেজের হোস্টেলের আট তলায় থাকতেন পলাশ। সেখানকার কথা ভেবেই নাকি তিনি গানটি লিখেছিলেন বলে পলাশের অনুরাগীদের একাংশের দাবি।
০৭২৩
কলেজ শেষ হওয়ার পর ব্যান্ডের প্রচার নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেন পলাশ। ‘ইউফোরিয়া’ ব্যান্ডের প্রথম গান ‘ধুম পিচাক ধুম’ মুক্তি পেলে তা শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়। রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যায় পলাশের ব্যান্ড।
০৮২৩
গানের পাশাপাশি অভিনয়ও শুরু করেন পলাশ। ২০০২ সালে মেঘনা গুলজার পরিচালিত ‘ফিলহাল’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তব্বু এবং সুস্মিতা সেনের মতো বলি অভিনেত্রীরা।
০৯২৩
‘অ্যান্ড ইট রেনড’, ‘মুম্বই কাটিং’-এর মতো স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে পলাশকে। ‘মুম্বই কাটিং’ ছবির জন্য সাড়ে আট মিনিট দৈর্ঘ্যের একটি গান লিখেছিলেন তিনি। ইউফোরিয়া ব্যান্ডের সকল সদস্য সেই গানের দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন। টেলিভিশনের পর্দাতেও মাঝেমধ্যে দেখা গিয়েছে পলাশকে।
১০২৩
দেশ-বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ড নিয়ে পারফর্ম করতে শুরু করেন পলাশ। এর মাধ্যমে শ্রোতাদের আরও কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ পেলেও পাশাপাশি বিতর্কেও জড়িয়েছেন তিনি।
১১২৩
২০১৩ সালে ব্যান্ড নিয়ে আইআইটি বম্বের একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন পলাশ। সেখানে পলাশের বিরুদ্ধে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগ তোলা হয়। যদিও এক সাক্ষাৎকারে সম্পূর্ণ ঘটনাটি খোলসা করেছিলেন পলাশ।
১২২৩
পলাশ জানান, মঞ্চে উঠে তিনি দর্শকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়েছিলেন, ‘‘মহিলা শ্রোতারা কোথায়, আওয়াজ দাও।’’ তা শুনে কলেজের ছাত্রেরা জানিয়েছিলেন এই কলেজে কোনও ছাত্রী নেই। মহিলাদের সকলকেই নাকি বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয়েছে।
১৩২৩
মঞ্চে দাঁড়িয়ে থেকে পলাশ বলেছিলেন, ‘‘মেয়েরা সুন্দরী হন আবার ছেলেরা বুদ্ধিমান। না হলে এখানে ছেলেদের সংখ্যা বেশি হয়? আমি চাই মহিলারা আরও বেশি করে আইআইটিতে ভর্তি হোক।’’ এমন মন্তব্য চালাচালির পর ব্যাকস্টেজে পলাশের সঙ্গে দেখা করতে কলেজের এক অধ্যাপক এবং এক ছাত্রীও যান।
১৪২৩
পলাশ মঞ্চ থেকে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন বলে অভিযোগ জানান ছাত্রীটি। পরে অবশ্য মঞ্চে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে ওই ছাত্রীর উদ্দেশে একটি গান করেন পলাশ। কিন্তু এ নিয়ে বিতর্ক ক্রমশ বেড়েই চলে। পলাশের পরিবারের উদ্দেশে কুমন্তব্য করা হয়।
১৫২৩
২০১২ সালে সঙ্গীতনির্মাতা রাম সম্পথের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন পলাশ। বলি অভিনেতা আমির খান সঞ্চালিত ‘সত্যমেব জয়তে’ শোয়ের আবহসঙ্গীতটি নাকি নকল করেছেন রাম, এমনটাই দাবি করেন পলাশ।
১৬২৩
২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পলাশের ‘ফির ধুম’ নামের মিউজ়িক অ্যালবামের একটি গান থেকে নাকি ‘সত্যমেব জয়তে’র আবহসঙ্গীত নকল করেছেন রাম।
১৭২৩
পলাশ যখন মঞ্চে পারফর্ম করতেন, তখন গলায় থাকত তাঁর মায়ের মঙ্গলসূত্র। মঙ্গলসূত্রটির সঙ্গে তাঁর সৌভাগ্য জড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি করেছেন পলাশ।
১৮২৩
এক সাক্ষাৎকারে পলাশ বলেছিলেন, ‘‘দেশভাগের সময় আমার মায়ের আট বছর বয়স ছিল। সেই সময় তিনি তাঁর চার বছরের ভাইকে নিয়ে একা একা লাহোর থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে হেঁটে পৌঁছেছিলেন। তিনি যে স্কুলে পড়তেন সেখানে কোনও ছাত্রী ছিল না। চিকিৎসক হতে চান বলে ১৭ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে লখনউ চলে যান তিনি। মা-ই আমার কাছে ‘হিরো’।’’
১৯২৩
পলাশ জানান, শাহরুখ খানের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছোটবেলা থেকেই। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘‘শাহরুখ এবং আমি সমবয়সি হলেও আমি ওর সিনিয়র ছিলাম। পড়াশোনায় দুর্দান্ত ছিল শাহরুখ। নাটক করত, গান করত। এমনকি ক্রিকেট এবং হকি খেলাতেও পারদর্শী ছিল ও। যে মানুষটা সব কিছুতেই ভাল, সে যে হিন্দি ছবিতে অভিনয় করবে তা আমি ভাবতে পারিনি। স্কুলে পড়াকালীনই ও হিন্দি ছবিতে অভিনয় করার কথা বলত। আমিও মজা করে বলতাম তুমি অভিনয় করলে আমি তোমার জন্য ওই ছবিতে গান গাইব।’’
২০২৩
নয়াদিল্লির একটি কলেজের অধ্যাপিকা শালিনীকে বিয়ে করেন পলাশ। কিংশুক এবং কায়না— দুই সন্তান রয়েছে তাঁদের। কায়না এখনও স্কুলে পড়লেও কিংশুক নয়াদিল্লি থেকে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে ক্যালিফর্নিয়ায় উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়েছেন।
২১২৩
জুলাই মাসে ইউফোরিয়া ব্যান্ডের ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। বর্তমানে গানবাজনা নিয়েই ব্যস্ত রয়েছেন পলাশ। তাঁর বাড়িতে একটি ‘হোম ক্লিনিক’ও রয়েছে। সেখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন পলাশ।
২২২৩
নব্বইয়ের দশক থেকেই পলাশের অনুরাগীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। সমাজমাধ্যমেও নিজস্ব অনুরাগী মহল তৈরি করে ফেলেছেন তিনি।
২৩২৩
ইতিমধ্যে ইনস্টাগ্রামে পলাশের অনুরাগী সংখ্যা ৬৭ হাজারের গণ্ডি পার করেছে। চলতি বছরে ‘জানে খুদা ২’ নামে একটি শর্ট ফিল্মেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে পলাশকে।