নীরজ চোপড়ার সংগ্রহের প্রথম ‘সুপারকার’ হল আইকনিক ফোর্ড মাস্টাং জিটি। মাস্টাং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় গাড়ি। এই গাড়ির মালিক হওয়া অনেকেরই স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন নীরজ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১১:৪৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম ভারতীয় হিসাবে সোনা জিতে নজির গড়েছেন নীরজ চোপড়া। ফাইনালে ৮৮.১৭ মিটার দূরে জ্যাভলিন ছুড়েছেন তিনি।
০২২০
২০১৪-য় দক্ষিণ এশীয় গেমসে ৮২.২৩ মিটার ছুড়ে জাতীয় রেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন নীরজ। কিন্তু তখন সেই রেকর্ডকে কেউ পাত্তা দেননি। নীরজ নজর কাড়েন সে বছরই পোল্যান্ডের বিডগজে অনুষ্ঠিত হওয়া আইএএএফ বিশ্ব অনূর্ধ্ব-২০ প্রতিযোগিতায়। ৮৬.৪৮ মিটার ছুড়ে জিতে নিয়েছিলেন সোনা। তৈরি করেছিলেন বিশ্ব জুনিয়র রেকর্ড। এর আগে সেই প্রতিযোগিতায় কোনও ভারতীয় পদক জেতেননি।
০৩২০
পরের বছর এশীয় অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৮৫.২৩ মিটার জ্যাভলিন ছুড়ে সোনা জেতেন নীরজ। ২০১৮ কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জেতেন ৮৬.৪৭ মিটার ছুড়ে। কমনওয়েলথ গেমসের অভিষেকেই পদক পেয়েছিলেন তিনি। সে বছরই দোহা ডায়মন্ড লিগে ৮৭.৪৩ মিটার ছুড়ে নিজেরই জাতীয় রেকর্ড ভেঙে দেন নীরজ। ৮৮.০৬ মিটার ছুড়ে এশিয়ান গেমসেও সোনা জিতেছিলেন তিনি।
০৪২০
২০১৯ সালটা নীরজের খুব একটা ভাল যায়নি। কনুইয়ে চোট পেয়েছিলেন। সেই চোট সারাতে গিয়ে সারা বছর প্রায় কোনও প্রতিযোগিতাতেই তিনি অংশগ্রহণ করতে পারেননি। ২০২০-তে অতিমারি পর্বে গোটা বিশ্বেই খেলাধুলো বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
০৫২০
এর পর অলিম্পিক্সে নেমেই সোনার পদক জেতেন নীরজ। তার পর থেকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক প্রতিযোগিতায় নেমেছেন এবং আগের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী দেখিয়েছে তাঁকে।
০৬২০
বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে প্রথম সোনাও এল নীরজের হাত ধরে। গত বছর এই প্রতিযোগিতায় রুপো জিতেছিলেন তিনি।
০৭২০
নীরজের জন্ম হরিয়ানার পানিপথ জেলার খান্দরা গ্রামে। ছোট থেকে তাঁর একমাত্র দুর্বলতা ছিল খাবার। তাজা ক্রিম এবং চুরমা (রুটি, ঘি এবং চিনি দিয়ে বানানো এক ধরনের পঞ্জাবি পদ)-র প্রতি তাঁর অমোঘ টান ছিল। ১২ বছর বয়সেই তাঁর ওজন দাঁড়ায় ৯০ কেজি।
০৮২০
নীরজের স্থূল চেহারার জন্য তাঁর বাবা-মা তাঁকে জোর করে মাঠে পাঠাতেন। বাড়ির পাশেই শিবাজি স্টেডিয়ামে রোজ সকালে জগিং করতে যেতেন তিনি।
০৯২০
সেখানেই নীরজের পরিচয় হয় প্রাক্তন জ্যাভলিন থ্রোয়ার জয় চৌধুরির সঙ্গে। জয়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার আগে পর্যন্ত নীরজ জানতেনই না জ্যাভলিন কী জিনিস। এক দিন খেলাচ্ছলেই তাঁকে জ্যাভলিন ছুড়তে বলেছিলেন জয়।
১০২০
প্রথম প্রচেষ্টাতেই প্রায় ৪০ মিটার দূরে ছুড়েছিলেন নীরজ। প্রথম বার দেখেই জয় বুঝেছিলেন নীরজের ওজন বেশি থাকলেও শরীরে নমনীয়তা রয়েছে।
১১২০
এর পর থেকেই ধীরে ধীরে জ্যাভলিন নীরজের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে ওঠে। তাঁর ওজনও ক্রমশ কমতে থাকে। চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজে পড়াকালীন নিজের খেলাধুলোকে শীর্ষস্তরে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন নীরজ। অংশগ্রহণ করতে শুরু করেন বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়।
১২২০
তবে ছোটবেলায় খাওয়ার শখ থাকলেও বড় হয়ে নীরজের শখ বদলেছে। এখন তাঁর মন মজে বিভিন্ন নামীদামি সংস্থার গাড়িতে।
১৩২০
সম্প্রতি ৯০ লাখি রেঞ্জ রোভার গাড়ি কিনে তাক লাগিয়েছেন এই গাড়িপ্রেমী খেলোয়াড়। এ ছাড়াও আরও গাড়ির খোঁজ পাওয়া যাবে নীরজের গ্যারাজে।
১৪২০
নীরজ চোপড়ার সংগ্রহের প্রথম ‘সুপারকার’ হল বৈগ্রহিক ফোর্ড মাস্টাং জিটি। মাস্টাং বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় গাড়ি। এই গাড়ির মালিক হওয়া অনেকেরই স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন নীরজ।
১৫২০
ফোর্ড মাস্টাং জিটির একটি শক্তিশালী টি-ভিসিটি ইঞ্জিন রয়েছে। যার ক্ষমতা ৩৯৬ এইচপি। মাত্র ৩.৩ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ৯৬ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিতে ছুটতে পারে এই ‘সুপারকার’। সর্বোচ্চ গতি ২৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। ভারতীয় বাজারে নীরজের এই গাড়ির মূল্য প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা।
১৬২০
রেঞ্জ রোভার ছাড়া কখনওই কোনও গাড়িপ্রেমীর সংগ্রহ সম্পূর্ণ হতে পারে না। নীরজের সংগ্রহে একাধিক রেঞ্জ রোভার রয়েছে। ভি-৮ ইঞ্জিনযুক্ত ‘রেঞ্জ রোভার স্পোর্ট’ গাড়ির ক্ষমতা ৫৬৭ এইচপি।
১৭২০
প্রচুর ওজন থাকা সত্ত্বেও ভারী এই গাড়ি মাত্র ৪.৭ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ছুটতে পারে এই গাড়ি। এই গাড়ির সর্বোচ্চ গতি ২৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা।
১৮২০
নীরজের গ্যারেজে একটি টয়োটা ফরচুনার গাড়ি রয়েছে। ভারতের বাজারে সাত আসনের এই গাড়ির চাহিদা প্রবল। ২.৭ লিটার পেট্রল এবং একটি ২.৮ লিটার টার্বো ডিজ়েল ইঞ্জিনের এই গাড়ির দাম ৫০ লক্ষেরও বেশি।
১৯২০
নীরজের গাড়ির সংগ্রহশালায় মাহিন্দ্রার দু’টি গাড়ি রয়েছে। এক্সইউভি৭০০ এবং থার। দু’টি গাড়ির মূল্যই প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
২০২০
মাহিন্দ্রার তরফে এই গাড়ি দু’টি নীরজের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে। গাড়ি দু’টির ইঞ্জিনের ক্ষমতা যথাক্রমে ১৩০ এইচপি এবং ১৫০ এইচপি।