Indian Army using how many kinds of arms and ammunition know the details dgtl
Indian Army Arms Ammunition
নাগ, অর্জুন থেকে এমটিডব্লু-২০ বা টাভোর! ভারতের স্থলসেনার হাতে রয়েছে আর কী কী মারণাস্ত্র?
পরমাণু অস্ত্রবহণকারী ক্ষেপণাস্ত্র থেকে শুরু করে মাল্টি ব্যারেল রকেট লঞ্চার। ভারতীয় স্থল সেনার ভান্ডারে রয়েছে মারাত্মক সব মারণাস্ত্র।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৪ ১২:৫৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
লাদাখ-অরুণাচল সীমান্তে চোখ রাঙাচ্ছে চিন। জম্মু-কাশ্মীরে বিরামহীন সন্ত্রাসবাদে মদত দিয়ে চলেছে পাকিস্তান। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, ভবিষ্যতে একসঙ্গে দুই সীমান্তে লড়তে হতে পারে ভারতকে। সে ক্ষেত্রে ‘গ্রাউন্ড অপারেশনে’ যুদ্ধের মোড় ঘোরাবে স্থলবাহিনী।
০২২৩
বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলির ফৌজি ক্ষমতা নিয়ে সমীক্ষা চালায় ‘গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ার’ নামের সংস্থা। তাঁদের দেওয়া রেটিং অনুযায়ী, ভারতের হাতে রয়েছে দুনিয়ার চতুর্থ শক্তিশালী সেনা। ২০০৬ সাল থেকে এই স্থান ধরে রেখেছেন নয়াদিল্লি।
০৩২৩
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সর্বশেষ বার্ষিক রিপোর্টে ০.১০২৩ পয়েন্ট পেয়েছে ভারত। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে আমেরিকা, রাশিয়া ও চিন।
০৪২৩
ভারতের তিন বাহিনীর মধ্যে স্থলসেনাতেই সৈনিক সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আনুমানিক ১২ লাখ যোদ্ধা রয়েছে নয়াদিল্লির হাতে। ক্ষেপণাস্ত্র, রকেট থেকে শুরু করে ট্যাঙ্ক-কামান-সাঁজোয়া গাড়ি— মারাত্মক সব মারণাস্ত্র ব্যবহার করে এই ফৌজ।
০৫২৩
স্থলবাহিনীর ব্যবহার করা দূরপাল্লার হাতিয়ারের মধ্যে প্রথমেই আসবে ক্ষেপণাস্ত্রের কথা। ভারতীয় সেনার অস্ত্রাগারে রয়েছে ব্যালেস্টিক ও ক্রুজ়, দু’ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র। এগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম।
০৬২৩
সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মধ্যে রয়েছে পৃথ্বী, আকাশ ও অগ্নি। এর মধ্যে সবচেয়ে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হল অগ্নি-৫, যা পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁত নিশানায় পরমাণু হামলা চালাতে পারে।
০৭২৩
ভূমি থেকে ভূমি মাঝারি পাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হল পৃথ্বী। এর তিন ধরনের প্রকারভেদ রয়েছে। এর মধ্যে স্থলবাহিনীর ব্যবহার করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলির পাল্লা ১৫০ কিলোমিটার।
০৮২৩
ভূমি থেকে আকাশে হামলা চালানো যায় আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে। ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে শত্রুপক্ষের যে কোনও যুদ্ধবিমানকে উড়িয়ে দিতে সক্ষম এই হাতিয়ার। এটিকে ছোড়ার জন্য সেনার হাতে রয়েছে মোবাইল লঞ্চার।
০৯২৩
ব্যালেস্টিকের মতো ভারতের ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতাও ভয়ঙ্কর। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এ দেশের মাটিতেই তৈরি করা হয়েছে ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্র। যা শব্দের থেকে কয়েক গুণ বেশি গতিতে উড়ে গিয়ে অতর্কিতে আছড়ে পড়তে পারে শত্রু ঘাঁটির উপর।
১০২৩
ক্ষেপণাস্ত্রের পর অবশ্যই বলতে হবে পিনাকা মাল্টিব্যারেল রকেট লঞ্চারের কথা। মাস কয়েক আগেও যা নিয়ে লাদাখের দুর্গম পাহাড়ে মহড়া চালিয়েছিল ভারতীয় ফৌজ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই রকেট লঞ্চার থেকে মাত্র ৪৪ সেকেন্ডে একসঙ্গে ছোড়া যায় ৭২টি রকেট।
১১২৩
আধুনিক যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে ড্রোন। বর্তমানে যার ব্যবহার শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। চলতি বছরেই নাগপুরের সংস্থা ফৌজের হাতে তুলে দেয় ‘নাগাস্ত্র-১’ নামের আত্মঘাতী ড্রোন।
১২২৩
মাত্র নয় কেজি ওজনের এই ড্রোনগুলি গেরিলা হামলার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে। ৩০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে নাগাস্ত্র-১। এক থেকে দেড় কেজি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিস্ফোরক নিয়ে উড়তে পারে এটি।
১৩২৩
এ ছাড়াও বেঙ্গালুরুর স্টার্ট আপ জুলু ডিফেন্সের তৈরি ‘হোভারবি’ নামের ছোট ড্রোন ব্যবহার করে ভারতীয় সেনা। আত্মঘাতী এই ড্রোনে থাকে ৪০০ গ্রাম ওজনের বিস্ফোরক। মূলত জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালানোর উদ্দেশ্যে এগুলিকে তৈরি করা হয়েছে।
১৪২৩
পাশাপাশি, দীর্ঘ দিন ধরেই ইজরায়েলি সংস্থার তৈরি ‘হেরন’ ড্রোন ব্যবহার করে আসছে ভারতীয় সেনা। জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি দমনে দুর্দান্ত ভাবে কাজে লেগেছে এই মানববিহীন উড়ুক্কু যান। মূলত, নজরদারির কাজে এগুলিকে ব্যবহার করে সেনা।
১৫২৩
ভারতীয় সেনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল গোলন্দাজ বাহিনী। বিভিন্ন ধরনের কামান ব্যবহার করে এই ফৌজ। যার মধ্যে রয়েছে আমেরিকার ‘এম-৭৭৭ আল্ট্রা লাইট হাউৎজ়ার’ ও ‘বোফর্স’। এগুলিতে ১৫৫ ক্যালিবারের গোলা ব্যবহার হয়।
১৬২৩
এ ছাড়া পাহাড়ি যুদ্ধে শত্রুকে নাস্তানাবুদ করতে ভারতীয় সেনার হাতে রয়েছে ‘কে-৯ বজ্র’ নামের বিশেষ এক ধরনের একটি কামান। চাকা লাগানো গাড়ির উপর বসানো থাকায় সহজেই এই কামানগুলিকে লাদাখ, কাশ্মীর বা অরুণাচলের দুর্গম জায়গায় মোতায়েন করতে পারে ফৌজ।
১৭২৩
স্থলবাহিনীর হাতে রয়েছে বড়সড় ট্যাঙ্ক রেজিমেন্টও। যারা রাশিয়ার তৈরি ‘টি-৯০ ভীষ্ম’ ও দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ‘অর্জুন’ ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে।
১৮২৩
আবার শত্রুর ট্যাঙ্ক ধ্বংসকারী ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে ভারতীয় সেনার হাতে। যার মধ্যে ‘নাগ’ অন্যতম। সাঁজোয়া গাড়ির লঞ্চার বা হেলিকপ্টার থেকে এগুলি ছুড়তে পারেন সৈনিকদের।
১৯২৩
স্থলবাহিনীর ফৌজিদের সাধারণ ভাবে কিছু হাতিয়ার ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। সেই তালিকায় রাইফেলের মধ্যে রয়েছে আমেরিকার সিগ ৭১৬, রাশিয়ার একে ২০৩ ও দেশের মাটিতে তৈরি ইনসাস।
২০২৩
সেনার বিশেষ বাহিনী প্যারাসুট রেজিমেন্ট আবার ব্যবহার করে ইজ়রায়েলের তৈরি টাভোর আগ্নেয়াস্ত্র। যে কোনও অপারেশনে তাঁদের কাছে থাকে বিভিন্ন ধরনের সেমি অটোমেটিক পিস্তল।
২১২৩
বিশ্বের অন্যান্য বাহিনীর মতো বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করে ভারতীয় সেনা। যার মধ্যে রয়েছে গ্রেনেড ও মাইন। শত্রুর ট্যাঙ্ক উড়িয়ে দিতে অ্যান্টি ট্যাঙ্ক ল্যান্ডমাইনও রয়েছে তাদের।
২২২৩
ভারতীয় সেনার স্নাইপার টিমও খুবই শক্তিশালী। মোট ১০ ধরনের স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে ফৌজ। যার মধ্যে এসএসজি-৬৯, পিএসজি-১, গ্যালাকটাজ়, ড্রাগনভ এবং এমটিডব্লু-২০ উল্লেখযোগ্য। এর মধ্যে শেষেরটি দিয়ে চোখের নিমেষে ধ্বংস করা যায় শত্রুপক্ষের বাঙ্কার।
২৩২৩
এ ছাড়াও স্থলসেনার কাছে রয়েছে অসংখ্য সাঁজোয়া এবং বিভিন্ন ধরনের হেলিকপ্টার। নজরদারি থেকে শুরু করে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্স বা শত্রু ঘাঁটিতে আক্রমণের কাজে ব্যবহার করা হয় ওই কপ্টার।