India to buy MQ-9 Reaper drone from US, which killed Al-Qaeda chief Ayman al-Zawahiri dgtl
Hellfire Missile
‘নরকের আগুন’ ভারতের হাতে! জাওয়াহিরি নিধনের সেই ঘাতক ড্রোন ভারতকে দিচ্ছে আমেরিকা
তালিবান প্রতিষ্ঠান মোল্লা মহম্মদ ওমর থেকে আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি। গত দু’দশকে আমেরিকার প্রিডেটর এমকিউ সিরিজ়ের ড্রোনের শিকার হয়েছেন অনেক জঙ্গি নেতা। এ বার কিনছে ভারত।
শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা মহম্মদ ওমর, তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানের নেতা বায়তুল্লা মেহসুদ, সিরিয়ার আল কায়দা প্রধান সেলিম আবু আহমেদ গত দু’দশকে আমেরিকার প্রিডেটর ড্রোনের শিকার হয়েছেন অনেকেই।
০২১৯
এমকিউ সিরিজ়ের সেই প্রিডেটর ড্রোনের আধুনিকতম সংস্করণ হাতে পাচ্ছে ভারত। ইরানের জেনারেল কাশেম সোলেমানি এবং আল কায়দা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি হত্যায় ব্যবহার করা হয়েছিল এই ড্রোন।
০৩১৯
আমেরিকার তৈরি এমকিউ-৯ রিপার নামের এই ঘাতক ড্রোন ‘গার্ডিয়ান’ নামে পরিচিত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, ভারত কিনবে ‘এমকিউ-৯’ ড্রোনের দু’টি মডেল।
০৪১৯
ভারতীয় স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনার জন্য এমকিউ-৯ রিপার-এর ‘সি গার্ডিয়ান’ এবং ‘স্কাই গার্ডিয়ান’ সংস্করণ কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
০৫১৯
আমেরিকার ‘জেনারেল অটোমিক্স অ্যারোনটিক্যাল সিস্টেমস’-এর ‘এমকিউ-৯ রিপার’ নামে এই হানাদার ড্রোন ৫০ হাজার ফুট উচ্চতায় থেকে শত্রুর উপর আঘাত হানতে পারে।
০৬১৯
২৭ ঘণ্টা ধরে এক টানা ওড়ার ক্ষমতা রয়েছে এই ঘাতক ড্রোনের। সর্বোচ্চ বহন ক্ষমতা ১,৭৪৬ কিলোগ্রাম। অর্থাৎ, শত্রুর এলাকার গভীরে ঢুকে হামলা চালানোর ক্ষমতা রয়েছে ‘এমকিউ-৯ রিপার’-এর।
০৭১৯
শক্রপক্ষের রেডারের নজরদারি এড়াতে সক্ষম এই হানাদার ড্রোন ৯৫০ অশ্বশক্তির ইঞ্জিনের সাহায্যে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৩০ কিলোমিটার গতিতে উড়তে সক্ষম।
০৮১৯
এই ঘাতক ড্রোন হাতে এলে ভবিষ্যতে বালাকোটের ধাঁচে পাক অধিকৃত কাশ্মীর বা খাইবার-পাখতুনখোয়ায় জঙ্গি শিবিরে কোনও ঝুঁকি ছাড়াই হামলা চালাতে পারবে ভারতীয় সেনা।
০৯১৯
আমেরিকা ছাড়া ইতালি, ফ্রান্স, গ্রিস, জার্মানি, বেলজিয়াম ও স্পেনের ফৌজ ব্যবহার করে এমকিউ-৯ রিপার। ন্যাটো জোটের বাইরে থাকা প্রথম দেশ হিসাবে ভারত এই ড্রোন কেনার সুযোগ পাচ্ছে।
১০১৯
অবশ্য এমকিউ সিরিজ়ের ড্রোন ব্যবহারের পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে ভারতীয় নৌসেনার। ২০১৭ সালে আমেরিকা থেকে দু’বছরের লিজ়ে দু’টি এমকিউ-৯বি ড্রোন নিয়েছিল নৌসেনা।
১১১৯
তামিলনাড়ুর রাজালি নৌঘাঁটিতে মোতায়েন ‘সি গার্ডিয়ান’ সংস্করণের ওই দু’টি ড্রোন ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা ফৌজের ‘গতিবিধি’ পর্যবেক্ষণে ব্যবহার করা হয়েছে বলে পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি।
১২১৯
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আমেরিকা সফরের ঠিক আগে হোয়াইট হাউসের তৎকালীন বাসিন্দা ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতকে ২২টি এমকিউ সিরিজ়ের ড্রোন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
১৩১৯
প্রাথমিক ভাবে ২২টি ড্রোনের দাম ধার্য হয় ৩০০ কোটি ডলার (প্রায় ২৪,৮৩১ কোটি টাকা)। পরবর্তী সময় স্থল, নৌ এবং বিমানবাহিনীর জন্য ১০টি করে মোট ৩০টি এমকিউ-৯ রিপার কেনার সমঝোতাপত্রে সই হয়।
১৪১৯
এমকিউ-৯ রিপারের অস্ত্রভাণ্ডারের মধ্যে রয়েছে হেলফায়ার আর৯এক্স বা ‘নরকের আগুন’। ‘নিনজা বোমা’ নামে পরিচিত এই ক্ষেপণাস্ত্রের সাহায্যেই জাওয়াহিরি বধ করেছিল আমেরিকা।
১৫১৯
৫ ফুট লম্বা, ৪৫ কিলোগ্রাম ওজনের মিলিমেট্রিক ওয়েভ রেডার-যুক্ত এই ক্ষেপণাস্ত্রের ধারালো ব্লেডগুলি উচ্চগতিতে বেরিয়ে এসে ছিন্নভিন্ন করে দেয় ‘শিকার’কে। কিন্তু বাড়ি-ঘরের কোনও ক্ষতি হয় না।
১৬১৯
এ ছাড়া এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার স্বল্প পাল্লার ‘আকাশ থেকে আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন গাইডেড বোমা জিবিইউ-৩৮ রয়েছে এই ঘাতক ড্রোনের অস্ত্রভান্ডারে।
১৭১৯
ড্রোন বিক্রি করলেও উৎপাদক সংস্থা ‘জেনারেল অটোমিক্স অ্যারোনটিক্যাল সিস্টেমস’ প্রযুক্তি হস্তান্তর করবে না ভারতকে। এমনকি, ভারতে এর উৎপাদনও হবে না।
১৮১৯
মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ স্লোগান সফল করার জন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি (ডিএসি) কয়েক মাস আগে শতাধিক বিদেশি অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
১৯১৯
নিষেধাজ্ঞার সেই তালিকায় ড্রোনও রয়েছে। কিন্তু প্রতিরক্ষায় ‘স্বদেশি উৎপাদনে’ জোর দেওয়ার সেই নীতি ভাঙার ঘটনাতেই স্পষ্ট হয়েছে এমকিউ-৯ রিপার-এর অপরিহার্যতা।