India could be the best option for foreign investors against China dgtl
China Foreign Investment
জিনপিংয়ের দেশ থেকে সরছে বিদেশি বিনিয়োগ! চিনের সর্বনাশে কি পৌষ মাস ভারতের?
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলে সম্প্রতি চিনের বিকল্প হিসাবে শোনা যাচ্ছে ভারতের নাম। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নজর ঘুরতে শুরু করেছে ভারতের দিকে। আগামী দিনে ভারতে বড় কিছু বিনিয়োগ আসতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
চিন এবং ভারত। এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ দু’টি দেশ। যাদের দ্বন্দ্বে প্রায়ই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সীমান্ত এলাকা। এই দুই দেশের মাঝে আছে সুবিশাল হিমালয় পর্বতমালা।
০২১৭
চিন এবং ভারতের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক গঠন, সামাজিক ব্যবস্থায় আকাশ-পাতাল তফাত। চিন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। ভারত সে দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে।
০৩১৭
কিন্তু আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক মহলে কান পাতলে সম্প্রতি চিনের বিকল্প হিসাবে শোনা যাচ্ছে ভারতের নাম। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নজর নাকি ঘুরতে শুরু করেছে ভারতের দিকে।
০৪১৭
তাইওয়ানের জনপ্রিয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ফক্সকন ঘোষণা করেছে, বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতে মোট ১৬০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে তারা। কোথায় কতটা বিনিয়োগ, সে বিষয়ে অবশ্য বিস্তারিত এখনও জানা যায়নি। শোনা যাচ্ছে, কর্নাটকে আইফোনের দু’টি কারখানা গড়ে তোলা হবে।
০৫১৭
ফক্সকনের মতো আরও একাধিক সংস্থা চিন থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। তা যদি হয়, তবে এই সব সংস্থার অন্যতম গন্তব্য হতে পারে ভারত। তা ছাড়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলিতেও বিনিয়োগ করতে পারে ওই সংস্থাগুলি।
০৬১৭
আমেরিকার অনেক সংস্থাও নিজস্ব বিনিয়োগ পরিকল্পনা বদলে ফেলার কথা জানিয়েছে। চিন থেকে ব্যবসা সরিয়ে আমেরিকায় নিয়ে যাচ্ছে ইনটেল, মাইক্রোসফ্ট। ডেল, নাইকির মতো সংস্থা বিকল্প হিসাবে বেছে নিচ্ছে ভিয়েতনাম এবং মেক্সিকোকে।
০৭১৭
কিন্তু চিনের প্রতি কেন হঠাৎ ‘বিমুখ’ বিদেশি সংস্থাগুলি? নেপথ্যে একাধিক কারণ উঠে আসছে। চিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা যার মধ্যে অন্যতম।
০৮১৭
পর্যবেক্ষকদের মতে, শি জিনপিংয়ের আমলে চিনে রাজনৈতিক অস্থিরতা ক্রমেই বাড়ছে। নানা সমস্যায় জর্জরিত চিন সরকার। সরকারের উপর থেকে ভরসা প্রায় উঠে গিয়েছে জনগণের।
০৯১৭
করোনা অতিমারির পর থেকে চিনের রিয়েল এস্টেট শিল্পে মন্দা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সরকারগুলির উপর চাপছে ঋণের বোঝা। সরকারকে কেন্দ্র করে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তার প্রভাব পড়ছে অর্থনীতির উপর।
১০১৭
চিনের সাধারণ মানুষ হয়ে উঠেছেন সঞ্চয়ী। সরকারের উপর ভরসা নেই, চাকরির নিশ্চয়তা নেই। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকা চিনারা টাকা খরচ করতে চাইছেন না। ভবিষ্যতের চিন্তা করে টাকা জমিয়ে রাখছেন।
১১১৭
চিনারা নতুন করে বিয়ে, সংসারেও আগ্রহ হারিয়েছেন। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে কেউ ঘর বাঁধতে চাইছেন না। ফলে দিন দিন সেখানে বয়স্ক নাগরিকদের সংখ্যা বাড়ছে। নাগরিকদের গড় বয়স এখন প্রায় ৪০ বছর।
১২১৭
চিনে মানুষ টাকা চট করে খরচ করতে না চাওয়ায় ব্যবসায়িক সংস্থাগুলিও চিনের বাজারের উপর আর ভরসা রাখতে পারছে না। তারা বিকল্পের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেছে। সেখানেই উঠে এসেছে ভারতের নাম।
১৩১৭
পরিসংখ্যান বলছে, অগস্ট মাসে চিন থেকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ১২০০ কোটি টাকার ব্যবসা তুলে নিয়েছেন। ওই একই সময়ে ভারতে নতুন করে বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ১৫০ কোটি টাকার।
১৪১৭
ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতিও হচ্ছে। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার জানিয়েছে, ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি হতে পারে ৬.৩ শতাংশ। সেখানে চিনের বৃদ্ধির হার পাঁচ শতাংশ।
১৫১৭
বিশ্বের নানা প্রান্তের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে হিসাবে চিনকে বেছে নিয়েছেন। তার অন্যতম কারণ হল, সুলভ শ্রমিক, তরুণ, কর্মদক্ষ শ্রমিক, সরকারের সহযোগিতা, কম কর, উন্নত প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা।
১৬১৭
এই বিষয়গুলি ভারতেও খুব একটা দুর্লভ নয়। ভারতে শ্রমিক বরাবরই সুলভে মেলে। সেই সঙ্গে নাগরিকদের গড় বয়সও চিনের চেয়ে ভারতে কম। ভারতীয়দের গড় বয়স ৩২ বছর।
১৭১৭
নানা দিক থেকে বিচার করেই দেখা গিয়েছে, আগামী দিনে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অন্যতম বিকল্প হতে পারে ভারত। তেমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।