বিখ্যাত ম্যাগাজ়িন ‘প্লেবয়’-এর প্রচ্ছদ জুড়ে মন্ত্রীর লাস্যময়ী ছবি। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সে দেশে। মন্ত্রীর সমালোচনা করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
সংবাদ সংস্থা
প্যারিসশেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৩৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
তিনি মন্ত্রী। তিনি ‘ছবি ও কবিতার দেশে’র মন্ত্রী। ফলে তিনি যে কিঞ্চিৎ ‘ভিন্ন রুচির অধিকার’-এ বিশ্বাসী হবেন, তা আর নতুন কী। তবে, তা বলে একেবারে ‘প্লে-বয়’ ম্যাগাজিনের কভার ফোটোর জন্য পোজ় দেবেন, তা অনেকেই ভাবতে পারেননি।
ছবি সংগৃহীত।
০২২৩
খোলা চুল। পরনে সাদা রঙের পোশাক। স্পষ্ট বক্ষবিভাজিকা। দু’হাত সামনে রেখে চেয়ারের উপর বসে তিনি। তাঁর এই স্বল্পবসনা দেহহিল্লোলে মাথা ঘুরে গিয়েছে ফ্রান্সের মানুষের। তিনি সে দেশের মন্ত্রী। বিখ্যাত ম্যাগাজ়িন ‘প্লেবয়’-এর প্রচ্ছদে দেশের মন্ত্রীর কিনা এ হেন লাস্যময়ী অবতার! আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ছবি সংগৃহীত।
০৩২৩
শুধু সাধারণ মানুষই নন। নিজের দল, বিরোধী রাজনৈতিক দল, এমনকি, খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছেও সমালোচিত হয়েছেন ফ্রান্সের ওই মন্ত্রী। যা ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে প্রেমের দেশে।
বর্তমানে সে দেশের অর্থ এবং সমাজ বিষয়ক মন্ত্রী মার্লিন। ‘প্লেবয়’ ম্যাগাজ়িনে তাঁর ১২ পাতার ইন্টারভিউ ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। মহিলা এবং এলজিবিটিকিউদের অধিকার নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
০৬২৩
‘প্লেবয়’ ম্যাগাজ়িনে মার্লিনের এ হেন অবতারের সমালোচনা করেছেন খোদ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এলিজ়াবেথ বোর্ন। বলেছেন, ‘‘এটা একেবারেই ঠিক হয়নি। বিশেষত এই সময়ে।’’ কোন সময়ের কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী?
ছবি সংগৃহীত।
০৭২৩
সম্প্রতি অবসর ভাতা সংস্কারের বিরোধিতায় উত্তাল ফ্রান্স। সরকারি চাকুরিজীবীদের অবসরের বয়স ৬২ বছর। পার্লামেন্টের ভোট এড়িয়ে অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ করার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ। পেনশন খাতে খরচ বাঁচাতে অবসরের বয়স ৬২ থেকে ৬৪ করা হয়েছে। ফ্রান্স সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় গর্জে উঠেছেন সে দেশের বাসিন্দারা। আর এই আবহে মন্ত্রীর এমন কাণ্ড নতুন মাত্রা যোগ করেছে ফরাসি বিপ্লবের দেশে।
ছবি সংগৃহীত।
০৮২৩
তবে তাঁকে নিয়ে যতই বিতর্ক হোক না কেন, নিজের সিদ্ধান্তে অনড় মন্ত্রী মার্লিন। টুইটারে সাফ জানিয়েছেন, মহিলারা তাঁদের শরীর নিয়ে যা ইচ্ছা করতে পারেন। এই অধিকারের পক্ষেই সরব হয়েছেন তিনি। যা আরও বিতর্ক বাড়িয়েছে।
ছবি সংগৃহীত।
০৯২৩
যাঁকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই মার্লিনকে নিয়ে ইতিমধ্যেই চর্চা শুরু হয়েছে। কে এই নারী? যিনি মন্ত্রী হয়ে প্লেবয় ম্যাগাজ়িনে মুখ দেখালেন!
ছবি সংগৃহীত।
১০২৩
১৯৮২ সালের ১৮ নভেম্বর জন্ম মার্লিনের। ম্যাগাজ়িনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক পুরনো। রাজনীতিতে আসার আগে বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করতেন তিনি। সেটা ২০০৭ সাল।
ছবি সংগৃহীত।
১১২৩
ওই বছরই তাঁর হাত ধরে পথ চলা শুরু হয় ‘লেস পেসনরিয়াস’ অনলাইন ম্যাগাজ়িনের। পরের বছর, অর্থাৎ ২০০৮ সালে তৈরি করেন একটি ব্লগ।
ছবি সংগৃহীত।
১২২৩
কর্মরতা মায়েদের নিয়ে ওই ব্লগের সূচনা করেছিলেন মার্লিন। যার নাম দিয়েছিলেন, ‘মামন ট্র্যাভায়ে’ (মামি ওয়ার্কস)। এতে সফলও হন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
১৩২৩
এর পর মার্লিন নিজে মা হন। জন্ম দেন এক কন্যাসন্তানের। তার পরই বিজ্ঞাপন সংস্থা ছাড়েন। শুরু হয় তাঁর এক নতুন অধ্যায়।
ছবি সংগৃহীত।
১৪২৩
সেই সময় লেখালিখিতে মন দেন মার্লিন। মাতৃত্ব এবং নারীদের নিয়ে নানা উপন্যাস লিখতে শুরু করেন। এতেও সফল হন তিনি। তাঁর অন্যতম সফল বইগুলি হল, ‘লেটার্স টু মাই ইউটেরাস’ এবং ‘হু আর দ্য রেপিস্টস’।
ছবি সংগৃহীত।
১৫২৩
বই লিখতে লিখতেই রাজনীতির দিকে ঝোঁকেন। সেটা ২০১৪। সেই বছর ফ্রান্সের লে মান্স শহরের ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
১৬২৩
২০১৫ সালে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় মাকরেঁর। সেই সময় অর্থমন্ত্রী ছিলেন মাকরঁ। সেই সাক্ষাতের কয়েক সপ্তাহ পর লিঙ্গসমতা এবং রাজনীতি বিষয়ক একটি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার জন্য মার্লিনকে বলেছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট।
ছবি সংগৃহীত।
১৭২৩
২০১৭ সালে ‘স্টেট ফর জেন্ডার ইক্যুয়েলিটি’র সেক্রেটারি হন মার্লিন। ২০২০ সালে দেশের নাগরিকদের বিশেষ অধিকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত দফতরের মন্ত্রী হন তিনি। এই বছর সে দেশের প্রথম জেন্ডার ইক্যুয়েলিটি মন্ত্রী হয়েছিলেন মার্লিন।
ছবি সংগৃহীত।
১৮২৩
আর এই দফতরের দায়িত্ব নিয়েই যৌন হেনস্থা রুখতে নয়া আইন এনেছিলেন তিনি। রাস্তায় মহিলাদের হেনস্থা, পিছু নেওয়ার মতো অপরাধ করলে সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্তদের কাছ থেকে জরিমানা নেওয়া হবে— এমন আইনের কথাই বলেছিলেন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
১৯২৩
নারীবাদী হিসাবেই বরাবর পরিচিত মার্লিন। সম্প্রতি প্লেবয় ম্যাগাজ়িনে তাঁর প্রচ্ছদ ঘিরে বিতর্কের আবহে নারীদের হয়েই আওয়াজ তুলেছেন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
২০২৩
তবে এই প্রথম বার নয়। অতীতেও মার্লিনের নানা পদক্ষেপ ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ২০১৯ সালে মার্লিন প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে, যে সব বিদেশি যৌন অপরাধ এবং নারীদের উপর অত্যাচারের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হবেন, তাঁদের নির্বাসিত করা হবে। মার্লিনের এই প্রস্তাব সেই সময় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল।
ছবি সংগৃহীত।
২১২৩
কয়েক বছরের মধ্যে আবার সমালোচিত হলেন মার্লিন। আর তাঁর এ বারের পদক্ষেপ ঘিরে সাড়া পড়ে গিয়েছে। মন্ত্রীর এ হেন আচরণ নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ফ্রান্সের নাগরিকদের সম্মান কোথায়?’’
ছবি সংগৃহীত।
২২২৩
বিতর্কে মুখ খুলেছে প্লেবয় ম্যাগাজ়িনও। ম্যাগাজিনের সম্পাদক জন-ক্রিস্টোফ ফ্লোরেনটিন জানিয়েছেন, নারীদের অধিকার নিয়ে সরব মার্লিন। আরও বলেছেন, ‘‘মার্লিন বুঝেছেন যে, এই ম্যাগাজ়িন আগের মতো আর শুধু পুরুষদের জন্য নয়। এটা নারীদের জন্যও একটা মাধ্যম।’’
ছবি সংগৃহীত।
২৩২৩
প্লেবয়ের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, এটি আর ‘সফ্ট পর্ন’ ম্যাগাজ়িন নয়। ৩০০ পাতার বই এবং পত্রিকার মিশ্রণ এটি। তবে এর পরও বিতর্ক থামছে না। আসলে দেশের মন্ত্রীর এমন খোলামেলা ছবি দেখেই চমকে গিয়েছেন অনেকে।