২০১৪ সালের বিশ্বকাপে নাইজেরিয়া দল ভাল খেলতে না পারায় সে দেশের ফুটবল ফেডারেশনের (এনএফএফ) কার্যনির্বাহী কমিটিকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নাইজেরিয়ার একটি আদালত একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারীকে ফেডারেশন পরিচালনা করার নির্দেশ দেয়। ন’দিনের মাথায় আদালত এই আদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। পুনরায় বহাল হয় এনএফএফ। নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়।
২০১৬ সালের অক্টোবরে গুয়াতেমালার ফুটবল ফেডারেশনের উপর দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করে ফেডারেশন পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এই কমিটি সে দেশের ফুটবল ফেডারেশন পরিচালনা করতে ব্যর্থ হয়। ফেডারেশন নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার পরেই গুয়াতেমালার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ফিফা কর্তৃপক্ষ। এই আইনি জটিলতা কাটার পর ২০১৮-এর জুন মাসে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ফিফা।
২০১৫ সালের অক্টোবরে কুয়েতকে আঞ্চলিক, মহাদেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা। অভিযোগ, দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের উপর সে দেশের সরকার হস্তক্ষেপ করছে। কুয়েত সরকারের তরফে আইন এনে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়। সে দেশের বিভিন্ন ক্লাবের স্বাধীন ভাবে কাজ করার অনুমতি বাতিল করা হয়। কুয়েত সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ’ বিবেচনা করে ফিফা সে দেশের ফুটবলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
কুয়েতের মতো ইন্দোনেশিয়া সরকারও দেশের ফুটবল বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় ফিফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ইন্দোনেশিয়ার যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রক ২০১৫ সালে সে দেশের ফুটবল ফেডারেশনকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করে। এর পরিবর্তে একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘হস্তক্ষেপ’ বলে বর্ণনা করে সে দেশের ফুটবলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ফিফা। ফলস্বরূপ ২০১৮ সালের বিশ্বকাপ এবং ২০১৯ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব থেকে বাদ পড়ে ইন্দোনেশিয়া। ২০১৬ সালের মে মাসে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
২০১৭ সালের অক্টোবরে, ‘তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের’ কারণ দেখিয়ে পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা। আদালতের সিদ্ধান্তে পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশন (পিএফএফ)-এর অফিস এবং অ্যাকাউন্টগুলির নিয়ন্ত্রণ যায় আদালত নিযুক্ত প্রশাসকের কাছে। আদালতের এই রায় ফিফা আইনের বিরোধী জানিয়ে নির্বাসিত করা হয় পিএফএফ-কে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।
২০২২ সালেও পাকিস্তানের ফুটবল দলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ফিফা কর্তৃপক্ষ। আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের ফুটবল দলের মান বাড়ানোর জন্য পরিচালনা পর্ষদের তরফে ফেডারেশনের সদর দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হয় কিছু সরকারি কর্মকর্তাকে। এই সিদ্ধান্তকে ফিফার নিয়মবিরুদ্ধ বলে উল্লেখ করে পিএফএফ-এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ফিফা। ২০২২ সালের জুলাই মাসে এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
২০২১ সালের মার্চ মাসে চাদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকের তরফে সে দেশের ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে ভেঙে দেওয়া হয়। এর পরই চাদের ফুটবল দলকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত নেন ফিফা কর্তৃপক্ষ। ছয় মাস পরে সে দেশের ফুটবলের লাগাম আবার চাদ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফটিএফএ) উপর তুলে দেওয়ার পর এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিম্বাবোয়ে সরকারের ‘স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন কমিশন’ (এসআরসি)-এর তরফে জিম্বাবোয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (জিফা)-কে নির্বাসিত করা হয়। জিফার কর্মীদের বিরুদ্ধে মহিলা রেফারিদের যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়। একই সঙ্গে জিফার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগও আনা হয়। এর পরই জিফাকে নির্বাসিত করে এসআরসি। এর পর ফিফাও জিম্বাবোয়ে ফুটবল দলকে আন্তর্জাতিক স্তরের সমস্ত প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই নিষেধাজ্ঞা এখন পর্যন্ত জারি রয়েছে।
এর পরই মঙ্গলবার ১৬ অগস্ট ভারতীয় ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে (এআইএফএফ) নির্বাসিত করল ফিফা। এর ফলে প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ। ফিফা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশে এখন এআইএফএফ-এর তত্ত্বাবধানে রয়েছে ‘কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স’। এর বদলে যে দিন থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে তৈরি হওয়া কমিটি এআইএফএফ-এর দৈনন্দিন কাজকর্ম দেখতে শুরু করবে, সে দিন থেকে এই নির্বাসনের শাস্তি উঠে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy