Ex labourer tejinder singh sekhon now earns 31 crore as rent dgtl
Tejinder Singh Sekhon
বাসন মাজা থেকে মাটি কাটা, পেট চালাতে করেছেন অনেক কিছু! সেই ভারতীয় এখন ইংল্যান্ডের ধনকুবের
পশুপালন করে পেট চালাতেন। রোজ আধপেটা খেয়ে স্কুলে যেতেন। রেস্তরাঁয় বাসন মেজেছেন। রোজগার করতে মাটি কুপিয়েছেন। সেই তেজিন্দর এখন কোটিপতি।
সংবাদ সংস্থা
লন্ডনশেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ০৮:১৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
মাত্র ২২ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে এসেছিলেন তেজিন্দর সিংহ শেখন। পকেটে সামান্য রেস্ত। শ্রমিকের কাজ করেছেন। বাসন ধুয়েছেন রেস্তরাঁয়। সেই তেজিন্দর এখন ৬০০ কোটি টাকার মালিক। মাসে ৩১ কোটি টাকা রোজগার তাঁর।
০২১৪
লুধিয়ানার এক কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক তেজিন্দর। ২০০১ সালে প্রথম বার লন্ডনে এসেছিলেন তিনি। লন্ডনে এসে প্রথমে মাটি কাটার কাজ করেছিলেন। তার পর এক স্প্যানিশ রেস্তরাঁয় বাসন মাজার কাজ করেছিলেন। ভ্যানও চালিয়েছিলেন। সেখান থেকে তেজিন্দর আজ কোটিপতি।
০৩১৪
নিজের একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থা খুলেছেন পঞ্জাবের ছেলে তেজিন্দর। নাম রেডস্কি হোমস গ্রুপ। লন্ডনে ৩০ থেকে ৫০টি ফ্ল্যাট তৈরি করে সেগুলি ভাড়া দিয়ে মাসে মাসে রোজগার করে সংস্থা।
০৪১৪
রিয়েল এস্টেট ব্যবসার আগে পানীয়ের ব্যবসা করতেন তেজিন্দর। পানীয়ের ব্যবসা করলেও এক ফোঁটা মদ খেতেন না তিনি। সেই ব্যবসা বিক্রি করে রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা শুরু করেন তেজিন্দর। উদ্দেশ্য, ছেলের সঙ্গে একটু বেশি সময় কাটানো।
০৫১৪
পঞ্জাবে জন্ম তেজিন্দরের। শৈশবে মারা গিয়েছিলেন তাঁর বাবা। পঞ্জাবেই দু’একর জমিতে চাষ করতেন তাঁর মা। পাশাপাশি পশুপালন করতেন। মাকে সাহায্য করতেন তেজিন্দরও। সকালে নিজেদের জমিতে চাষের কাজ করতেন। তার পর স্কুলে যেতেন। পড়াশোনা করতেন। ফিরে এসে আবার মাঠে কাজ করতেন। তাঁর বোনেরা সেলাইয়ের কাজ করতেন।
০৬১৪
ছোটবেলায় পঞ্জাবের গ্রামে তিনটি বাছুর বিক্রি করে ১,২০০ টাকা পেয়েছিলেন তেজিন্দর। ওটাই তাঁর প্রথম রোজগার। বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ব্যর্থ হয়েছিলেন। শেষে হংকং চলে যান তিনি। সেখানেও কোনও কাজ পাননি। দেশে ফিরে আসেন।
০৭১৪
২০০০ এবং ২০০১ সালে তেজিন্দরের দুই বোনের বিয়ে হয়। সে সময় হাতে কোনও টাকাকড়ি ছিল না তেজিন্দরদের। চাষের জমি কম দামে বিক্রি করে বোনদের বিয়ে দিয়েছিলেন। বিয়ের পর প্রায় নিঃস্ব হয়ে যান তাঁরা। ভাগ্য ফেরাতে ২০০২ সালে ইংল্যান্ড পাড়ি দেন নিঃস্ব তেজিন্দর।
০৮১৪
ইংল্যান্ডে প্রথম দিকে তাঁর জীবন খুব সহজ ছিল না। প্রথমে মাটি কাটার কাজ পেয়েছিলেন তেজিন্দর। বেতন ছিল ৪০ পাউন্ড। ভারতীয় মুদ্রায় ৪,০০০ টাকার মতো।
০৯১৪
অথচ বাড়ি ভাড়া দিতে হত ভারতীয় মুদ্রায় মাসে ৬,০০০ টাকা। বাড়তি টাকা রোজগারের জন্য রেস্তরাঁয় বাসন মাজার কাজ নেন তেজিন্দর। পাশাপাশি ইংরেজিতে কথা বলার প্রশিক্ষণও নিতে থাকেন।
১০১৪
ভারতীয় মুদ্রায় তিন লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেন তেজিন্দর। নিজের একটি ভ্যান কেনেন। সেই ভ্যানে করে পানীয় ডেলিভারি শুরু করেন। এ ভাবেই শুরু হয় তাঁর পানীয়ের ব্যবসা। ২০০৫ সালে নিজের একটি বাড়ি কেনেন তেজিন্দর।
১১১৪
ভাড়া বাড়িতে তাঁর সঙ্গে যে বন্ধু থাকতেন, তাঁকেও সঙ্গে নিয়ে আসেন তেজিন্দর। ওই বন্ধু ভাড়া দিয়েই থাকতেন তেজিন্দরের সঙ্গে। সেই টাকাতেই ঋণ শোধ করতেন তিনি।
১২১৪
২০১৫ সালে মদের ব্যবসা বিক্রি করে দেন তেজিন্দর। সেই টাকা রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। সম্প্রতি ভারতীয় মুদ্রায় ২০২ কোটি টাকা বিনিয়োগ একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছেন তেজিন্দর। পঞ্জাবের এক গ্রামের নামে নাম দিয়েছেন ‘বারুন্ডি কোর্ট’।
১৩১৪
২০০৭ সালে সুখবীর কউরকে বিয়ে করেন তেজিন্দর। দুই ছেলে রয়েছে তাঁদের। সুখবীর তাঁর ব্যবসায়ে ৫০ শতাংশ অংশীদার।
১৪১৪
এক সময় চাষাবাদ করতেন। পশুপালন করে পেট চালাতেন। আধপেটা খেয়ে স্কুলে যেতেন। রেস্তরাঁয় বাসন মেজেছেন। মাটি কেটেছেন। সেই তেজিন্দর এখন ইংল্যান্ডে ৫,০০০ বর্গফুটের বাংলোয় থাকেন। মা, স্ত্রী, ছেলেদের নিয়ে ঘুরেছেন ৪৭টি দেশ।