Chemistry and charm of Naseeruddin Shah and Ratna Pathak is still evergreen dgtl
Bollywood
দীর্ঘ অপেক্ষার পর বিয়ে নাসিরুদ্দিন-রত্নার, অভিনেতার প্রথম পক্ষের মেয়েও ফিরে আসেন তাঁদের কাছে
এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি নাসিরুদ্দিন শাহর বাবা আলি মহম্মদ শাহ এবং মা ফারুখ সুলতান। কারণ মানারা ছিলেন বিবাহবিচ্ছিন্না। কিন্তু পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেমিকাকে বিয়ে করেন একরোখা নাসিরুদ্দিন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৪৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
পুঁথিগত বিদ্যা বা তথাকথিত লেখাপড়ায় কোনওদিনই সে রকম মনোযোগ ছিল না। শেষে কিনা ছেলে কলেজে গিয়ে নাটকের দলে যোগ দিল! কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি নাসিরুদ্দিন শাহ-র বাবা। কিন্তু ছেলেও নিজের স্বপ্নের পথ থেকে সরে আসেননি। না হলে দর্শক বঞ্চিত হত তাঁর অভিনয় থেকে।
০২১৯
নাসিরুদ্দিন শাহর জন্ম উত্তরপ্রদেশের বরাবাঁকীতে। নাসিরুদ্দিনের জন্ম ১৯৪৯-এর ২০ জুলাই। তাঁদের শাহ বংশ ঐতিহাসিক দিক দিয়েও বিখ্যাত। উনিশ শতকের যোদ্ধা জান ফিশান খান বা সৈয়দ মহম্মদ শাহ তাঁদের পূর্বপুরুষ। প্রথম ইঙ্গ-আফগান যুদ্ধে ব্রিটিশদের হয়ে লড়েছিলেন তিনি।
০৩১৯
বরাবাঁকীতে নাসিরের বড় হওয়া দুই ভাইয়ের সঙ্গে। অজমেঢ়ের সেন্ট অ্যানসেল্মস স্কুল এবং সেন্ট জোসেফস কলেজ থেকে পাশ করার পরে তিনি ১৯৭১ সালে স্নাতক হন আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। তারপরের গন্তব্য দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা।
০৪১৯
সমান্তরাল হিন্দি ছবির একটি প্রতিষ্ঠান নাসিরুদ্দিন শাহ। ‘নিশান্ত’, ‘আক্রোশ’, ‘স্পর্শ’, ‘মির্চ মশালা’, ‘অ্যালবার্ট পিন্টো কো গুস্সা কিঁউ আতা হ্যায়’, ‘ত্রিকাল’, ‘জুনুন’, ‘মান্ডি’, ‘অর্ধসত্য’, ‘জানে ভি দো ইয়ারো’ ছবিতে উজ্জ্বল নাসিরুদ্দিনের বলিষ্ঠ অভিনয়।
০৫১৯
আশির দশকে নাসিরের পা মূলস্রোতের ছবিতে। ‘হাম পাঁচ’, ‘মাসুম’, ‘ইজাজত’, ‘হিরো হীরালাল’, ‘মালামাল’-এর মতো বাণিজ্যিক ছবিতেও সমদক্ষতায় অভিনয় করেছেন তিনি।
০৬১৯
‘গুলামি’, ‘ত্রিদেব’, ‘বিশ্বাত্মা’, ‘মোহরা’-র মতো ছবিতেও নাসিরুদ্দিন শাহ ধরা দিয়েছেন স্বকীয়তার। পাশাপাশি, ‘সরফরোশ’, ‘মনসুন ওয়েডিং’, ‘মকবুল’, ‘এ ওয়েডনেসডে’-এর মতো ছবির কথা না বললে অসম্পূর্ণ থেকে যায় নাসিরুদ্দিনের ফিল্মোগ্রাফি।
০৭১৯
নাসিরুদ্দিন শাহ সে-ই মুষ্টিমেয় কুশীলবদের মধ্যে একজন, যাঁরা মঞ্চ-সহ বিনোদনের বিভিন্ন মাধ্যমে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। টম অল্টার, বেঞ্জামিন গিলানির সঙ্গে মিলে ১৯৭৭ সালে থিয়েটারের দল শুরু করেন নাসিরুদ্দিন। অভিনয়ের সঙ্গে দেশের প্রথম সারির নাট্যপরিচালকরে মধ্যে নাসির অন্যতম।
০৮১৯
ছোটপর্দাতেও ভিন্ন স্বাদের কাজ করেছেন নাসির। ‘মির্জা গালিব’, ‘ভারত এক খোঁজ’-এর মতো সিরিয়াল ছিল ভারতীয় দূরদর্শনের সম্পদ।
০৯১৯
রিচার্ড অ্যাটেনবরোর ‘গাঁধী’ ছবির জন্যেও তিনি অডিশন দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি এই ছবিতে নামভূমিকায় অভিনয় করেন বেন কিংসলে। শোনা যায়, হলিউড থেকে সাদ্দাম হুসেনের ভূমিকাতেও অভিনয়ের ডাক পেয়েছিলেন নাসিরুদ্দিন শাহ। কিন্তু শেষ অবধি সে ছবি বাস্তবায়িত হয়নি।
১০১৯
১৯৮৭-তে পদ্মশ্রী এবং ২০০৩-এ পদ্মভূষণ-এ সম্মানিত হন নাসিরুদ্দিন শাহ। তিনবার পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ১৯৭৯-তে ‘স্পর্শ’ ও ১৯৮৪-তে ‘পার’-এর জন্য সেরা অভিনতা এবং ২০০৬ সালে ‘ইকবাল’-এর জন্য সেরা সহঅভিনেতার বিভাগে পুরস্কৃত হন।
১১১৯
কাজের পাশাপাশি নাসিরুদ্দিনের ব্যক্তিগত জীবনও বেশ বর্ণময়। আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে থিয়েটারে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয় নাসিরুদ্দিনের। এই প্রতিষ্ঠানের তাঁর সঙ্গে আলাপ পরভিন মুরাদের। তিনি পাকিস্তান থেকে পড়তে এসেছিলেন।
১২১৯
১৯৬৯ সালের ১ নভেম্বর ৩৬ বছর বয়সি পরভিন মুরাদ ওরফে মানারা সিক্রিকে বিয়ে করেছিলেন সদ্য কুড়ির নাসিরুদ্দিন শাহ। পরভিন ছিলেন অভিনেত্রী সুরেখা সিক্রির বোন।
১৩১৯
এই বিয়ে মেনে নিতে পারেননি নাসিরুদ্দিন শাহর বাবা আলি মহম্মদ শাহ এবং মা ফারুখ সুলতান। কারণ মানারা ছিলেন বিবাহবিচ্ছিন্না। কিন্তু পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রেমিকাকে বিয়ে করেন একরোখা নাসিরুদ্দিন।
১৪১৯
বিয়ের এক বছরের মধ্যেই জন্ম নাসির-পরভিনের মেয়ে হীবার। কিন্তু এরপরেই শুরু টানাপড়েন। বনিবনার অভাব দেখা দেয় দু’জনের সম্পর্কে। শিশুকন্যাকে নিয়ে লন্ডনে চলে যান পরভিন। জন্মের পর থেকে ১২ বছর অবধি মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না নাসিরুদ্দিন শাহের।
১৫১৯
তবে তাঁরা শুধু আলাদা থাকছিলেন। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে নাসিরুদ্দিনের খাতায় কলমে বিচ্ছেদ হয়নি। কারণ, নিকাহনামায় বিশাল অঙ্কের খোরপোশের কথা কবুল করেছিলেন নাসিরুদ্দিন। সেই খোরপোশের টাকা বা ‘মেহর’ যোগাড় করতে তাঁর অনেক সময় লেগেছিল।
১৬১৯
১৯৭৫ সালে নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে আলাপ রত্না পাঠকের। দু’জনে সত্যদেব দুবের নাটক ‘সম্ভোগ সে সন্ন্যাস তক’-এর মহড়া দিচ্ছিলেন। রত্নার স্পষ্ট উচ্চারণ এবং বিশুদ্ধ হিন্দি শুনে নাসিরুদ্দিন মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। দু’জনের প্রেমে পড়তে সময় লাগল না।
১৭১৯
দীর্ঘদিন লিভ-ইন করেছিলেন নাসিরুদ্দিন-রত্না। অবশেষে পরভিনের সঙ্গে নাসিরুদ্দিনের বিবাহবিচ্ছেদ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরে ১৯৮২ সালে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে রেজিস্ট্রি-বিয়ে করেন তাঁরা।
১৮১৯
নাসির-রত্নার দুই ছেলে ইমাদ ও ভিভান দু’জনেই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের পরিবারের একজন সদস্য হীবাও। তিনি পরে শাহ পরিবারে চলে আসেন। রত্নাও সাদরে গ্রহণ করেছেন স্বামীর প্রথম পক্ষের মেয়েকে।
১৯১৯
নাসিরের সঙ্গে বিয়ে ভাঙার পরে ইরানে আবার বিয়ে করেছিলেন পরভিন। কিন্তু সেই বিয়েও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। নব্বইয়ের দশকে ইরানেই প্রয়াত হন পরভিন। তারপর হীবা চলে আসেন নাসির-রত্নার কাছে। হীবা নিজেও ছোট ও বড়পর্দার একজন সফল অভিনেত্রী।