Bharat Bhushan was a Tragic Hero in Real Life Too dgtl
Hindi Movie
অনটনে পড়ে বাংলো, গাড়ি, সংগ্রহের বই পর্যন্ত বেচতে বাধ্য হন বলিউডের এই মহাতারকা
ঘন আঁখিপল্লব আর স্বপ্নালু চোখের এই নায়ক কবিতা ভালবাসতেন। গানে সুর দিতেন। নিজে গানও গাইতেন। তাঁকে চমৎকার মানিয়ে যেত পৌরাণিক চরিত্রে। ‘শ্রী মহাপ্রভু চৈতন্য’ ছবিতে অভিনয় তাঁকে এনে দিয়েছিল ‘ফিল্মফেয়ার’-এ সেরা অভিনেতার সম্মান।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ১৪:১৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
নিজের সময়ের মহাতারকা। অথচ চলে যেতে হয়েছিল চরম অনটন আর অবহেলায়। এতটাই ট্র্যাজিক ছিল অভিনেতা ভারত ভূষণের পরিণতি। পাঁচের দশকের সুদর্শন, মহিলামহলে চরম জনপ্রিয় এই নায়ক তাঁর কাজের যথাযথ স্বীকৃতি পাননি।
০২১৬
পাঁচের দশকের বলিউড শাসন করছিলেন রাজ কপূর, দেব আনন্দ, দিলীপ কুমার। কড়া প্রতিযোগিতাতেও তাঁদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিয়েছিলেন ভারত ভূষণ। আজকের উত্তরপ্রদেশের মেরঠ শহরে তাঁর জন্ম ১৯২০ সালের ১৪ জুন। মাত্র দু’বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। এর পর দাদার সঙ্গে ভারত ভূষণ পালিত হন মামাবাড়িতে, আলিগড়ে।
০৩১৬
স্নাতক হওয়ার পরে বাবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নেন ভারত ভূষণ। প্রথমে কলকাতায় এসেছিলেন। কিন্তু সে ভাবে সুযোগ পাননি। ফিরে যান সাবেক বম্বে, আজকের মুম্বইতে।
০৪১৬
১৯৪১ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রথম ছবি ‘চিত্রলেখা’। এরপর একে একে ‘ভক্ত কবীর’, ‘সুহাগ রাত’, ‘আঁখে’, ‘জন্মাষ্টমী’-র মতো ছবির সাহায্যে নিজের জায়গা মজবুত করেন ভারত ভূষণ।
০৫১৬
‘বৈজু বাওরা’ মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫২ সালে। এরপর থেকে ভারত ভূষণ নিজেই একটা ব্র্যান্ড, ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম ম্যাটিনি আউডল হয়ে ওঠেন।
০৬১৬
মেরঠের এক সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারের মেয়ে সরলাকে বিয়ে করেন ভারত ভূষণ। তাঁদের দুই মেয়ে। অনুরাধা আর অপরাজিতা। বড় মেয়ে অনুরাধা ছিলেন পোলিয়ো আক্রান্ত।
০৭১৬
১৯৬০ সালে মুক্তি পায় ভারত ভূষণের ছবি ‘বরসাত কি রাত’। তার কয়েক দিন পরেই জীবনে চরম আঘাত। মারা যান তাঁর স্ত্রী সরলা। দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরে কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছিল। তার থেকে আর সুস্থ হতে পারেননি তিনি।
০৮১৬
স্ত্রীকে হারানোর সাত বছর পরে দ্বিতীয় বিয়ে করেন ভারত ভূষণ। ‘বরসাত কি রাত’-এর নায়িকা রত্না এ বার তাঁর জীবনসঙ্গিনী।
০৯১৬
বক্স অফিসে চরম সাফল্য পেয়েছিল ‘বরসাত কি রাত’। কিন্তু এর পর থেকেই উল্কাবেগে পড়তে থাকে ভারত ভূষণের কেরিয়ার। একের পর এক ছবি ফ্লপ। ৫০ বছর বয়স হওয়ার আগেই নায়কদের বাবা-র ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে।
১০১৬
এরপর আরও প্রান্তিক অবস্থান। শেষে এমন অবস্থা এল, অতীতের নায়ক ভারত ভূষণ প্রায় ‘এক্সট্রা’-র ভূমিকায় চলে গেলেন। নয়ের দশকে ‘প্যার কা দেবতা’ ও ‘হমশকল’ ছবিতে তিনি প্রায় জুনিয়র শিল্পীর অবস্থায়।
১১১৬
অমিতাভ বচ্চন এক বার তাঁর ব্লগে লিখেছিলেন, ভারত ভূষণকে তিনি রাস্তায় বাসের জন্য লাইনে অপেক্ষায় দেখেছিলেন। আমজনতার ভিড়ে একা দাঁড়িয়েছিলেন। অপেক্ষায় থাকা বাকিরা কেউ জানেনই না তাঁদের মাঝে দাঁড়িয়ে আছেন পাঁচের দশকের সুপারহিট রোম্যান্টিক নায়ক।
১২১৬
খ্যাতির মধ্য গগনে থাকার সময়ে কিছু ভুল সিদ্ধান্ত বিপাকে ফেলেছিল তারকা ভারত ভূষণকে। তার মধ্যে অন্যতম একটি ছবি প্রযোজনা করা। প্রযোজক হিসেবে একেবারেই ব্যর্থ হয়েছিলেন তিনি।
১৩১৬
ঘন আঁখিপল্লব আর স্বপ্নালু চোখের এই নায়ক কবিতা ভালবাসতেন। গানে সুর দিতেন। নিজে গানও গাইতেন। তাঁকে চমৎকার মানিয়ে যেত পৌরাণিক চরিত্রে। ‘শ্রী মহাপ্রভু চৈতন্য’ ছবিতে অভিনয় তাঁকে এনে দিয়েছিল ‘ফিল্মফেয়ার’-এ সেরা অভিনেতার সম্মান।
১৪১৬
আর ভালবাসতেন বইয়ের জগতে ডুবে থাকতে। তাঁর নিজের বাড়ির লাইব্রেরিতে ছিল দুষ্প্রাপ্য বই। শেষ জীবনে এমনও হয়েছে, টাকার জন্য নিজের সংগ্রহের দু্র্মূল্য বই বিক্রি করতে হয়েছিল অভিনেতা ভারত ভূষণকে।
১৫১৬
বিক্রি করে দিতে হয়েছিল নিজের একাধিক গাড়ি ও বাংলো। তৎকালীন বম্বের বান্দ্রা ও অন্য জায়গায় বাংলো ছিল তাঁর। অর্থকষ্টে হারাতে হয়েছিল সে সবই।
১৬১৬
অভিনয় মঞ্চ থেকে বিদায় নিয়েছিলেন আগেই। অনাদর আর দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করতে করতে ৭২ বছর বয়সে, ১৯৯২-এর ২৭ জানুয়ারি জীবনের মঞ্চ থেকে বিদায় নিলেন আরব সাগরের তীরের এক সময়ের মহাতারকা।