Central government proposed for merging of Rural Banks know the benefits dgtl
Regional Rural Bank
৪৩ থেকে কমে ২৮! ১৫টি ব্যাঙ্ক নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের, প্রস্তাবে মিলবে কী কী সুবিধা?
রাজ্যপিছু একটি করে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের বিষয়ে প্রস্তাব দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্র। কেন একের পর এক আরআরবি মিশিয়ে দিচ্ছে সরকার?
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
লক্ষ্য ‘এক রাজ্য এক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক’। আর সেই কারণেই একের পর এক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক (রিজ়িয়োনাল রুরাল ব্যাঙ্ক বা আরআরবি) সংযুক্তিকরণের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র। এতে দেশের প্রত্যন্ত এলাকার অর্থনীতিতে বড় বদল আসবে বলে দাবি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
০২১৮
চলতি বছরের ৪ নভেম্বর চতুর্থ পর্যায়ের গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের প্রস্তাব সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে অর্থ মন্ত্রক। বর্তমানে দেশে আরআরবির সংখ্যা ৪৩। যা ২৮-এ নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের।
০৩১৮
গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের বিষয়ে আরআরবির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর রুরাল অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট’ বা নাবার্ডের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা করেছে অর্থ মন্ত্রক। সূত্রের খবর, নাবার্ডের পরামর্শ মতো ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে।
০৪১৮
বর্তমানে অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, কর্নাটক ও পশ্চিমবঙ্গ-সহ মোট ১২টি রাজ্যে একাধিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রয়েছে। এ রাজ্যে আরআরবির সংখ্যা তিন। অন্য দিকে অন্ধ্রপ্রদেশে মোট চারটি গ্রামীণ ব্যাঙ্ক রয়েছে।
০৫১৮
গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলির প্রতিটি এক একটি বড় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কের সঙ্গে ষুক্ত। যাকে স্পনসর ব্যাঙ্ক বলা হয়। এ রাজ্যের তিনটি আরআরবি হল, পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্ক, ইউকো ব্যাঙ্কের পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্ক এবং সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্ক।
০৬১৮
কেন্দ্রের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই তিনটি ব্যাঙ্ককে সংযুক্ত করে একটি বড় আরআরবি তৈরি করা হবে। রাজ্যে যার স্পনসর ব্যাঙ্কের দায়িত্ব পাবে পিএনবি। অন্ধ্রপ্রদেশে কানাড়া ব্যাঙ্ককে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে।
০৭১৮
গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ৫০ শতাংশ অংশীদারি কেন্দ্রের হাতে রয়েছে। বাকি শেয়ার আছে রাজ্য সরকার এবং স্পনসর ব্যাঙ্কের কাছে। আর তাই নাবার্ড, স্পনসর ব্যাঙ্ক ও সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার পরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্র।
০৮১৮
এ বছরের ২০ নভেম্বরের মধ্যে স্পনসর ব্যাঙ্ককে মতামত জানাতে হবে। এর পর বাকি জায়গা থেকেও সবুজ সঙ্কেত এলে শুরু হবে সংযুক্তিকরণের কাজ। উল্লেখ্য, ২০০৪-০৫ আর্থিক বছর থেকেই আরআরবির সংখ্যা কমাচ্ছে কেন্দ্র।
০৯১৮
২০২০-২১ আর্থিক বছরের মধ্যে তিন দফায় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সংখ্যা কমিয়েছে কেন্দ্র। ১৯৬ থেকে আরআরবির সংখ্যা কমিয়ে ৪৩-এ নিয়ে এসেছে সরকার। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে এ কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রক।
১০১৮
গ্রামীণ ব্যাঙ্ক একীভূত করার নেপথ্যে সরকারের একাধিক যুক্তি রয়েছে। যার অন্যতম হল এর অপারেশনাল এবং প্রশাসনিক খরচ কমানো। রাজ্যপিছু একটি করে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থাকলে সেই অর্থ অনেকটাই সাশ্রয় করা যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রকের পদস্থ কর্তারা।
১১১৮
দ্বিতীয়ত, আরআরবির সংযুক্তিকরণ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের রাস্তা খুলে দেবে। প্রতি রাজ্যে একটি করে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক থাকলে, সেগুলি পরিচালনার জন্য একটি কমন প্ল্যাটফর্মের বিষয়ে চিন্তা করতে পারবে সরকার।
১২১৮
তৃতীয়ত, গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি মিশে গিয়ে একটি হলে, পুঁজির পরিমাণ এক লাফে অনেকটা বৃদ্ধি পাবে। ফলে প্রত্যন্ত এলাকায় চাহিদা মতো বেশি পরিমাণ ঋণ দিতে পারবে আরআরবি। যা গ্রামীণ অর্থনীতিকে মজবুত করবে।
১৩১৮
চতুর্থত, সংযুক্তিকরণের পর আরআরবির গ্রাহকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এর শাখা নতুন নতুন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া সহজ হবে। গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলিও স্থানীয় চাহিদা বুঝে ঋণ দিতে সক্ষম হবে।
১৪১৮
গত ৪ নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আমজনতার স্বার্থেই সংযুক্তির এই উদ্যোগ। এতে একটি আরআরবির আওতায় আসবে অনেক বড় এলাকা। এতে পরিষেবার পরোক্ষ খরচ কমিয়ে আয় ও মুনাফা বাড়ানো সম্ভব হবে।
১৫১৮
গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে ‘নরসিমা কমিটি অন রুরাল ক্রেডিট’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী গ্রামীণ ব্যাঙ্ক তৈরি করে ভারত সরকার। ১৯৭৫ সালের ২ অক্টোবর যা আত্মপ্রকাশ করেছিল। এতে সেভিংস ও কারেন্ট দু’ধরনের অ্যাকাউন্টই খোলা যায়।
১৬১৮
আরআরবি তৈরির মূল উদ্দেশ্য ছিল গ্রামের বাসিন্দাদের ঋণের সুবিধা দেওয়া। সেখানকার পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে এগুলিকে তৈরি করা হয়েছে। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উন্নতির কথা ভেবে এই আর্থিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছিল।
১৭১৮
গ্রামীণ এলাকাগুলিতে প্রযুক্তির প্রবেশ ঘটাতে আরআরবিকে ব্যবহার করে সরকার। গ্রামের মহিলাদের একাংশের ব্যবসা করার ঝোঁক রয়েছে। পুঁজির অভাবে তা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন না তাঁরা। ওই মহিলাদের আর্থিক সাহায্য করে থাকে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক।
১৮১৮
কেন্দ্রের যুক্তি, গ্রামীণ ব্যাঙ্ক আরও দক্ষ ভাবে আমজনতাকে পরিষেবা দিতে সক্ষম। তার জন্য এর দ্রুত সংযুক্তিকরণ প্রয়োজন। যা সম্পূর্ণ হতে আরও কয়েক দিন অপেক্ষা করতে হবে।