Brian Robson, the Man who kept himself in a box which was flown from Australia to Los Angeles dgtl
Weird
নিজেকে নিজেই ক্যুরিয়ার করেন! বাক্সে কাটান ৫ দিন, ভিন্দেশ থেকে বাড়ি ফিরতে আজব কাণ্ড যুবকের
বিদেশ থেকে দেশে ফিরতে নিজেকে বাক্সবন্দি করেন এক যুবক। সেই বাক্সে বন্দি হয়েই বিমানে করে ঘরে ফিরেছিলেন তিনি। এই কাহিনি জানলে হতবাক হবেন।
সংবাদ সংস্থা
নিউইয়র্কশেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:২৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৮
এই পৃথিবীতে কত কাণ্ডই না ঘটে! চাকরি করতে ভিন্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন ১৯ বছরের এক যুবক। আর তার পরই ওই যুবকের জীবনে ঘটে এক রোমাঞ্চকর ঘটনা। বিদেশ যাওয়ার সময় যাত্রী হিসাবে বিমানে চড়েছিলেন। আর ফিরলেন বাক্সবন্দি হয়ে। না, যেটা ভাবছেন সেটা নয়। জীবিত অবস্থায় বাক্সের মধ্যে বন্দি হয়ে নিজের দেশে ফিরেছিলেন ওই যুবক। ষাটের দশকে এমনই এক ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
ছবি সংগৃহীত।
০২২৮
১৯৬৫ সালের কথা। সেই বছরই অস্ট্রেলিয়া থেকে নিজের দেশ ওয়েলসে ফিরতে বাক্সের মধ্যে নিজেকে বন্দি করেছিলেন সেই যুবক। সকলের চোখ এড়িয়ে বাক্সে বন্দি হয়ে বিমানে করে নিজের দেশে ফিরেছিলেন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
০৩২৮
ওই যুবকের নাম ব্রায়ান রবসন। তখন রবসনের ১৯ বছর বয়স। ওয়েলসে বাস কন্ডাক্টরের কাজ করতেন তিনি।
ছবি সংগৃহীত।
০৪২৮
ভিক্টোরিয়ান রেলওয়েজ়ে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন রবসন। অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ায় রেল পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ছিল ভিক্টোরিয়ান রেলওয়েজ়।
ছবি সংগৃহীত।
০৫২৮
চাকরিটা পেয়েও গিয়েছিলেন রবসন। নতুন চাকরি। মনে একরাশ স্বপ্নে বুঁদ হয়ে ওয়েলস থেকে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। মেলবোর্নে শুরু হয় তাঁর নতুন জীবন।
ছবি সংগৃহীত।
০৬২৮
অস্ট্রেলিয়ায় পা রাখার পর রবসনের নতুন চাকরির উত্তেজনা কর্পূরের মতো উবে গেল। দেখলেন, থাকার জন্য রবসনকে যে হস্টেল দেওয়া হয়েছে, তার অবস্থা শোচনীয়। চারদিকে ইঁদুরের রাজত্ব।
ছবি সংগৃহীত।
০৭২৮
এই হাল দেখে অস্ট্রেলিয়ায় থাকার সিদ্ধান্ত বদলান রবসন। ঠিক করেন চাকরিটা করবেন না। নিজের দেশে ফিরে যাবেন।
ছবি সংগৃহীত।
০৮২৮
কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরতে পারেননি। কারণ, দেশে ফেরার জন্য তাঁর কাছে পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। এর মধ্যে রেলে ৬-৭ মাস কাজও করেন। কিন্তু নতুন চাকরিতে মোটেই সুখী ছিলেন না রবসন। সব সময় ভাবতেন কী ভাবে দেশে ফিরবেন?
ছবি সংগৃহীত।
০৯২৮
শেষমেশ চাকরি ছাড়েন। ছেড়ে দেন তাঁর জন্য বরাদ্দ থাকা হস্টেলটিও। এর পর মেলবোর্নে যান তিনি। সেখানে একটি কাগজের কারখানায় যোগ দেন।
ছবি সংগৃহীত।
১০২৮
তবে অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর মন টেকেনি। মেলবোর্নে কাগজের কারখানায় কাজের পরও দেশে ফেরার জন্য মুখিয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু, দেশে ফেরার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তাঁর আর্থিক সামর্থ্য।
প্রতীকী ছবি।
১১২৮
এই ভাবে দিন গুজরান করতে গিয়ে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন রবসন। তাঁর আগের হস্টেলের পরিকাঠামোর উন্নতি হয়েছে কিনা দেখার জন্য সেখানে আবার যান তিনি। সেই সময়ই তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় জন এবং পল নামে দুই যুবকের।
প্রতীকী ছবি।
১২২৮
জন এবং পলের সঙ্গে অল্প দিনের মধ্যেই বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল রবসনের। দেশে ফেরার বাসনার কথা দুই বন্ধুকে জানান রবসন।
প্রতীকী ছবি।
১৩২৮
দুই বন্ধুর সঙ্গে একটি প্রদর্শনীতে গিয়েছিলেন রবসন। সেখানে ব্রিটেনের একটি ক্যুরিয়ার সার্ভিস সংস্থার স্টল ছিল। যা দেখে রবসন মজা করে তাঁর বন্ধুদের বলেছিলেন যে, তাঁকেও ক্যুরিয়র করে দেশে পাঠানো হোক। গোটাটাই ছিল মজার ছলে। এর পরই নিজেকে ক্যুরিয়রে পাঠানোর পরিকল্পনা খেলে যায় রবসনের মাথায়।
ছবি সংগৃহীত।
১৪২৮
পরের দিনই মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার একটি বিমানসংস্থার দফতরে গিয়ে রবসন খোঁজ নেন যে, বিদেশে বাক্স পাঠাতে গেলে কী করতে হবে। বাক্সটি কত বড় হবে, কী কী নিয়ম রয়েছে, এই সব নিয়ে খোঁজ নেন।
ছবি সংগৃহীত।
১৫২৮
সব তথ্য সংগ্রহের পর হস্টেলে ফিরে জন এবং পলকে রবসন জানান যে, তাঁর দেশে ফেরার একটা রাস্তা রয়েছে। কী সেই রাস্তা?
প্রতীকী ছবি।
১৬২৮
৩০ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, ২৬ ইঞ্চি প্রস্থ এবং ৩৮ ইঞ্চি চওড়া একটি বাক্স কিনলেন রবসন। ওই বাক্সের মধ্যে রবসনকে বন্দি করলেন তাঁর দুই বন্ধু। তার পরই ওই বাক্স বিমানে করে পাঠানো হল লন্ডনের উদ্দেশে। এমনটাই পরিকল্পনা করেছিলেন ওয়েলসের ওই যুবক। এবং সেই পরিকল্পনা সফলও হল।
প্রতীকী ছবি।
১৭২৮
রবসনকে বাক্সে ভরে বিমানে তোলার আগে প্রায় ১ মাস ধরে মহড়া চলেছিল। বাক্সের মধ্যে রবসনকে দীর্ঘ ক্ষণ ভরে রাখা হত। বাক্সের মধ্যে থেকে কোনও অসুবিধা হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য এই মহড়া চালিয়েছিলেন এবং তাঁর ২ বন্ধু।
ছবি সংগৃহীত।
১৮২৮
বাক্স পাঠানোর জন্য লন্ডনের বিমানের টিকিট কেটেছিলেন রবসন। সেই মতো সেই বাক্স বিমানে তোলা হয়েছিল। রবসনের সঙ্গে বাক্সে ছিল একটি হাতুড়ি, স্যুটকেস, বালিশ, জল, টর্চ, খালি বোতল।
ছবি সংগৃহীত।
১৯২৮
এই ভাবেই বাক্সে বন্দি হয়ে দেশে ফেরার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন রবসন। তবে এই যাত্রা মোটেই সুখের ছিল না তাঁর জন্য।
ছবি সংগৃহীত।
২০২৮
বাক্সবন্দি হয়ে রবসনের বিমানযাত্রার প্রথম ধাপে বিমান উড়েছিল মেলবোর্ন থেকে সিডনির উদ্দেশে। প্রায় ৯০ মিনিট বাক্সবন্দি হয়ে সিডনিতে যান রবসন।
ছবি সংগৃহীত।
২১২৮
এর পর সেই বাক্সটি তোলার কথা ছিল লন্ডনগামী বিমানে। কিন্তু সেই বিমানে জায়গা না থাকায় বাক্সটি লস অ্যাঞ্জেলসের উড়ানে তোলা হয়। লন্ডনের বদলে বাক্সসমেত রবসন তখন উড়ে যান লস অ্যাঞ্জেলসের দিকে।
ছবি সংগৃহীত।
২২২৮
টানা প্রায় ৫ দিন বাক্সে বন্দি ছিলেন রবসন। শুধু তাই নয়, বাক্সটিকে কখনও ছুড়ে ফেলেছেন বিমানকর্মীরা, আবার কখনও বাক্সটিকে টেনাহেঁচড়া করে বিমানে তোলা হয়েছে। আর এর জেরে বাক্সের মধ্যে রবসনের করুণ দশা হয়েছিল।
ছবি সংগৃহীত।
২৩২৮
এক সংবাদমাধ্যমে রবসন সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে বলেছিলেন যে, নিঃশ্বাস পর্যন্ত নিতে পারছিলেন না ঠিক করে। অনেক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। ভেবেছিলেন, হয়তো মৃত্যু অনিবার্য।
ছবি সংগৃহীত।
২৪২৮
লস অ্যাঞ্জেলসে বিমান নামতেই বাক্সটি নজরে আসে বিমানবন্দের ২ কর্মীর। সেই সময় বাক্সের তলা থেকে একটি টর্চ পড়ে গিয়েছিল। আর তা দেখেই বাক্সটি লক্ষ্য করেন ওই ২ কর্মী।
ছবি সংগৃহীত।
২৫২৮
বাক্সটি পরীক্ষার সময় যন্ত্রে আওয়াজ হয়। কর্মীরা বুঝতে পারেন যে, সন্দেহজনক কিছু রয়েছে। এর পর বাক্সটি খুলতেই চমকে যান তাঁরা। দেখতে পান রবসনকে। বিমাবন্দরের কর্মীরা ভেবেছিলেন হয়তো রবসনের মৃত্যু হয়েছে। দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে চিৎকারও জুড়ে দেন তাঁরা।
ছবি সংগৃহীত।
২৬২৮
পরে সেই ভ্রম কাটে। বিমানবন্দরের কর্মীরা দেখেন যে, রবসন জীবিত। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৬ দিন ধরে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়।
ছবি সংগৃহীত।
২৭২৮
এর পর লস অ্যাঞ্জেলস থেকে রবসনকে ফেরানো হয় লন্ডনে। ১৯৬৫ সালের ১৮ মে লন্ডন বিমানবন্দরে নামেন রবসন।
ছবি সংগৃহীত।
২৮২৮
আর এ ভাবেই ঘরে ফিরেছিলেন রবসন। তাঁর কথায়, ‘‘আমায় পেয়ে পরিবার স্বস্তি পেয়েছিল। কিন্তু যে ভাবে ঝুঁকি নিয়ে ফিরেছি, তাতে তারা সকলে স্তম্ভিত।’’