Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৫
Batagaika Crater

বরফে ঢাকা সাইবেরিয়ায় হঠাৎ জেগে ওঠে ‘নরকের দরজা’! প্রতি বছরই বাড়ছে হাঁ মুখ

১৯৬০-এর দশকে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার বাটাগে অঞ্চলে বরফ গলে যাওয়ার পর আশেপাশের জঙ্গল পরিষ্কারের কারণে প্রথম দেখা দেয় একাধিক গর্ত। রহস্যজনক এই গর্তগুলো নিয়ে গবেষণা করার জন্য বার বার ছুটে গিয়েছেন গবেষকেরা। কিন্তু রহস্যের নিশ্চিত সমাধান এখনও কেউ দিতে পারেননি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫ ১৫:০৯
Share: Save:
০১ ১৫
Batagaika Crater

পৃথিবীতে এমন কিছু কিছু ঘটনা ঘটে যার ব্যাখ্যা পাওয়া মুশকিল। রহস্যে মোড়া এই বিষয়গুলি নিয়ে বহু গবেষণা চললেও তার নিশ্চিত সমাধানে পৌঁছতে পারা যায়নি আজও। তেমনই এক রহস্যে মোড়া অঞ্চল হল সাইবেরিয়া। বেশ কয়েক বছর আগে এখানে আচমকাই যেন গজিয়ে উঠেছিল বিশালাকার কিছু গর্ত।

০২ ১৫
Batagaika Crater

১৯৬০-এর দশকে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার বাটাগে অঞ্চলে বরফ গলে যাওয়ার পর আশপাশের জঙ্গল পরিষ্কারের কারণে প্রথম দেখা যায় এই গর্তগুলি। রহস্যজনক এই গর্তগুলো নিয়ে গবেষণা করার জন্য তার পর থেকে বার বার সেখানে ছুটে গিয়েছেন গবেষকেরা।

০৩ ১৫
Batagaika Crater

রহস্যজনক এই গর্ত বা সিঙ্ক হোলগুলি সাইবেরিয়ার ‘বাটাগাইকা ক্র্যাটার’ বা নরকের প্রবেশদ্বার নামেও পরিচিত। এগুলির মধ্যে একটির আকার প্রতি বছর লক্ষণীয় ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বিশাল আকারের এই গর্তটি ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ছে চার দিকে। এই গর্তের ভিতরে পাহাড় ও উপত্যকাও তৈরি হচ্ছে।

০৪ ১৫
Batagaika Crater

এই গর্তের আকার ১৯৯১ সালে যতটা ছিল ২০২৪ সালের পর তিন গুণ বেড়েছে। কেন ক্রমাগত এই গর্ত আকারে বড় হচ্ছে, তা নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরা। বরফে ঢাকা সাইবেরিয়ায় কোথা থেকেই বা উদয় হল এই গর্তগুলি?

০৫ ১৫
Batagaika Crater

মাত্র ৩০ বছরে হয়েছে এই বিপুল বৃদ্ধি, এমনটাই বলছে গবেষণা। দীর্ঘ দিন ধরে বনভূমি উজারের পর সূর্যের আলো মাটির ভিতরের বরফ গলিয়ে দিতে শুরু করলে বিশাল এই গর্তটি ধীরে ধীরে ভূপৃষ্ঠের উপর প্রকাশিত হতে থাকে। সাধারণত যেখানে ভূপৃষ্ঠের নীচের শিলায় চুনাপাথর, কার্বনেট বা অন্যান্য লবণ থাকে, সেগুলি জলে দ্রবীভূত হয়ে গেলে সেখানে এই ধরনের সিঙ্কহোল তৈরি হয়।

০৬ ১৫
Batagaika Crater

রাশিয়ার চেরস্কি পর্বতমালায় অবস্থিত এই ‘নরকের দরজা’। এর নামকরণ করা হয়েছে বাটাগাইকা নদীর নামে। বাটাগাইকা গর্ত বলে পরিচিত এটি আদতে পারমাফ্রস্টের একটি অংশ। এই পারমাফ্রস্টটি বিশ্ব উষ্ণায়নের ফল ভোগ করতে করতে একটু একটু করে আয়তনে বাড়ছে।

০৭ ১৫
Batagaika Crater

পারমাফ্রস্ট বলতে বোঝায় এমন একটি ভূমি বা স্থান, যা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসে অন্তত দু’বছর ধরে সম্পূর্ণ হিমায়িত রয়েছে। সেই বরফগুলি মাটি, শিলা এবং বালির সংমিশ্রণে গঠিত হতে হবে। পারমাফ্রস্ট উত্তর এবং দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি অঞ্চলে থাকে। বাটাগাইকা গর্তটি পৃথিবীর দ্বিতীয় প্রাচীনতম পারমাফ্রস্ট।

০৮ ১৫
Batagaika Crater

বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে দ্রুত সাইবেরিয়ার জমাট বাঁধা সমস্ত বরফ গলতে শুরু করেছে। গর্তগুলোও দ্রুত জলে ভরে যাচ্ছে। আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে জলে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তখন আর এই গর্তগুলোর রহস্যভেদ করার জন্য গবেষণাও চালানো সম্ভব হবে না।

০৯ ১৫
Batagaika Crater

পৃথিবীর বুকে জমে থাকা বরফ পরিবেশে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। কারণ এগুলো কার্বন গ্যাস শোষণ করে নেয়। কিন্তু সাইবেরিয়ার ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাড়তে থাকা তাপমাত্রার জেরে মাটির নীচে জমে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেন গ্যাস আরও বেশি পরিমাণে পরিবেশে মুক্ত হয়ে পড়ছে।

১০ ১৫
Batagaika Crater

গবেষণা বলছে বাটাগাইকা গর্তটি প্রায় ১ কিলোমিটার লম্বা এবং ৮৬ মিটার গভীর। মাটির উন্মুক্ত স্তরগুলি ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ বছরের পুরনো। এটি বর্তমানে অস্থির এবং এর বৃদ্ধি অপ্রতিরোধ্য। এটি বছরে প্রায় ২০ থেকে ৩০ মিটার প্রসারিত হচ্ছে। এই হারে গর্তের আকার বাড়তে থাকলে এর আশপাশের সব কিছু গ্রাস করতে বেশি দিন সময় লাগবে না বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

১১ ১৫
Batagaika Crater

উপগ্রহ চিত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করে উচ্চ-রেজ়োলিউশনের রিমোট সেন্সিং, ভূতাত্ত্বিক কাঠামো মডেলিং ব্যবহার এবং সেখানকার ভূমির তথ্যের উপর নির্ভর করে জার্মানি এবং রাশিয়ার গবেষক দলগুলি নির্ধারণ করেছে যে, বাটাগাইকা প্রতি বছর ৩.৫ কোটি ঘনফুট অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

১২ ১৫
Batagaika Crater

পারমাফ্রস্ট গলে গর্ত তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পারমাফ্রস্টে জমাট বাঁধা জৈব পদার্থেরও ক্ষয় হতে শুরু করে এবং বায়ুমণ্ডলে আরও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। এই প্রক্রিয়া পৃথিবীকে আরও উষ্ণ করে তোলে এবং আরও বেশি পরিমাণে পারমাফ্রস্ট গলানোর দিকে পরিচালিত করে। এই চক্র চলতেই থাকে অবিরত। একে আটকানো বেশ কঠিন।

১৩ ১৫
Batagaika Crater

বাটাগাইকা গলে যাওয়ার ফলে প্রতি বছর বায়ুমণ্ডলে প্রায় পাঁচ হাজার টন কার্বন নির্গত হয়। গবেষকেরা তাঁদের গবেষণাপত্রে বলেছেন, ১৯৭০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে শুধুমাত্র এই ভূতাত্ত্বিক স্থানটিই ১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৫০০ টন জৈব কার্বন নির্গত করেছে।

১৪ ১৫
Batagaika Crater

নির্গত হওয়া কার্বন পরিবেশের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং ফল হিসাবে আরও বেশি পরিমাণ গ্যাস পরিবেশে মুক্ত হতে সাহায্য করছে। সমগ্রিক ভাবে এর ক্ষতিকর প্রভাব ইতিমধ্যেই সাইবেরিয়ার ওই অঞ্চলে পড়তে শুরু করেছে বলে জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

১৫ ১৫
Batagaika Crater

যে হেতু গর্তটি এখনও গলে যাচ্ছে, বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়েছেন, এই প্রবেশদ্বারটি বেশির ভাগ জমি গ্রাস করতে পারে এবং তা কাছাকাছি গ্রামগুলির জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়াবে। নিকটবর্তী বাটাগাই নদীর জন্যও এটি ডেকে আনবে বিপদ। কারণ এটি নদীর তীরের ক্ষয় বৃদ্ধি করবে এবং আশপাশের জনজীবনকে প্রভাবিত করবে বলে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy