Archaeologists have discovered the remains of a Roman building complex and ruins of 2,000-year-old wall in the Swiss Alps dgtl
আল্পসের খনিতে হাজার হাজার বছরের পুরনো প্রায় অক্ষত বাড়ি! ধ্বংসাবশেষ ঘিরে বাড়ছে রহস্য
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, প্রায় ১০০ বছর আগে সুইস আল্পসে একটি রোমান ভবনের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। এক শতক পর এই প্রথম এ ধরনের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন তাঁরা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
জেনিভাশেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সুইৎজ়ারল্যান্ডের এক নুড়িপাথরের খনিতে খোঁড়াখুঁড়ি চালিয়ে রোমান আমলের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করলেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। যা ঘিরে বিশ্ব জুড়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে সাড়া পড়ে গিয়েছে। কেন গুরুত্ব পাচ্ছে এই খননকাজ?
০২১৫
আল্পসের ছায়ায় ওই খনিতে খননকাজ চালাতে গিয়ে গোড়ায় একটি পাথরের দেওয়াল খুঁজে পেয়েছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। মাটি থেকে মোটে কয়েক সেন্টিমিটার নীচে সেটি ছিল। পরীক্ষার পর জানা গিয়েছে, ওই দেওয়ালটি দু’হাজার বছরের পুরনো।
০৩১৫
দেওয়ালের পর ধীরে ধীরে প্রায় ৫,৩০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে একটি বিশাল রোমান ভবনের ভাঙাচোরা অংশও খুঁজে পান প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। সেই সঙ্গে মিলেছে অংসখ্য পেরেক, কাচের পাত্র, বাসনকোসন, চোঙার মতো গলার জার-সহ বহু শিল্প নিদর্শন।
০৪১৫
প্রত্নতাত্ত্বিকেরা জানিয়েছেন, প্রায় ১০০ বছর আগে সুইস আল্পসে একটি রোমান ভবনের অংশবিশেষ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। এক শতক পর এই প্রথম এ ধরনের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন তাঁরা।
০৫১৫
খননকাজে সাফল্যের পর একটি বিবৃতি জারি করেছে সুইৎজ়ারল্যান্ডের প্রিজ়ার্ভেশন অফ মনুমেন্টস অ্যান্ড আর্কিয়োলজি অফিস। তাতে জানানো হয়েছে, দেশের মধ্যাঞ্চলে জ়াগ ক্যান্টন এলাকার চাম শহরে রয়েছে ওই খনিটি।
০৬১৫
সুইৎজ়ারল্যান্ডের বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ ক্রিস্টা ইবনোথার ওই বিবৃতিতে বলেন, ‘‘প্রি-আলপাইন অঞ্চলে রোমান আমলের এ ধরনের মোটে কয়েকটি ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। তবে যেটা আশ্চর্যের তা হল, চাম শহরের খনিতে উদ্ধার হওয়া এই ভাঙাচোরা ভবনটির বিশেষ ক্ষয় হয়নি।’’
০৭১৫
খননকাজের সময় ওই দেওয়ালটির কয়েকটি পাথর মাটির উপরে দেখা যাচ্ছিল। এর পর আরও খোঁড়াখুঁড়ির পর দেখা যায়, দেওয়াল ছাড়াও সেখানে ওই ভবনটি রয়েছে। তবে কী উদ্দেশ্যে সেটি নির্মাণ করা হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওই এলাকায় কোনও সুবিশাল ভিলা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
০৮১৫
উদ্ধার হওয়া লোহার পেরেকগুলি যে কোনও কাঠের তৈরি ভিত্তির গায়ে লাগানো ছিল, সে বিষয়ে নিশ্চিত প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। কালের নিয়মে সেই কাঠের নির্মাণটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পেরেকগুলি ঝরে পড়েছে।
০৯১৫
‘হিস্ট্রি ব্লগ’ নামে ওয়েবসাইটে গবেষকেরা জানিয়েছেন, খনিতে যে সমস্ত শিল্প নিদর্শন পাওয়া গিয়েছে, তা দেখে বোঝা যায় যে এখানকার নানা অঞ্চলের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য চলত।
১০১৫
ওই নিদর্শনগুলির মধ্যে অনেকগুলিই বহুমূল্য। ফলে ভবনটিতে যে এককালে সমাজের অভিজাত ব্যক্তিরা যাতায়াত করতেন, তা মনে করছেন গবেষকেরা।
১১১৫
ভবনে নানা কিছুর মধ্যে অসংখ্য তামা, ব্রোঞ্জ এবং রুপোর মুদ্রাও পাওয়া গিয়েছে। সেগুলির একটিতে আবার জুলিয়াস সিজ়ারের অবয়ব খোদাই করা হয়েছে। অন্য একটিতে সাপ বা ড্রাগনের উপর একটি হাতিকে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখা যাচ্ছে।
১২১৫
গলাউঁচু জারগুলির বহু অংশবিশেষ উদ্ধার হয়েছে। গবেষকদের অনুমান, সেগুলিতে সদ্য তৈরি সস, অলিভ অয়েল এবং সুরা রাখা হত।
১৩১৫
প্রিজ়ার্ভেশন অফ মনুমেন্টস অ্যান্ড আর্কিয়োলজি অফিসের প্রধান কারিন আর্থো বলেন, ‘‘এ ধরনের প্রত্ননিদর্শন থেকে একটি ধাঁধার উত্তর পাওয়া সম্ভব। এগুলির মাধ্যমে আমাদের পূর্বপুরুষের জীবনযাপন সম্পর্কে জানা যেতে পারে। সেই সঙ্গে ইতিহাসকে ভাল ভাবে বোঝার জন্যও এগুলি গুরুত্বপূর্ণ নমুনাস্বরূপ।’’
১৪১৫
সব মিলিয়ে একে প্রত্নতাত্ত্বিক ক্ষেত্রে ‘সাড়াজাগানো’ খননকাজ বলে তকমা দিয়েছেন কারিনেরা। ‘পপুলার সায়েন্স’ নামে আমেরিকার একটি পত্রিকার মতে, ‘‘রোমানরা আসার বহু হাজার বছর আগে খনির আশপাশে পাহাড়ি এলাকায় বসতি ছিল।’’ এই এলাকায় যে অভিজাতদের ঘরবাড়ি ছিল, তা-ও মনে করছেন গবেষকেরা।
১৫১৫
ভাঙাচোরা ভিলাটি প্রকৃত অর্থে কী কাজে লাগানো হত? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন গবেষকেরা। তাঁরা লিখেছেন, ‘‘সেটির উত্তর খুঁজতে আরও তদন্তের প্রয়োজন।’’