All needs to know about former principal of RG Kar medical college and hospital Sandip Ghosh dgtl
Sandip Ghosh
জন্ম বনগাঁয়, পড়াশোনা আরজি করেই, প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের বিরুদ্ধে রয়েছে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের যাত্রা শুরু হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে। ১৯৮৯ সালে বনগাঁ হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ১৯৮৯ সালের উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি ৭৯.৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্কুলে প্রথম তিন জনের মধ্যে জায়গা করে নেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
আরজি করের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকেই তিনি নজরে। পুরো ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ উঠেছে তাঁর ‘প্রভাবশালী’ হওয়ারও। ইতিমধ্যেই তাঁকে ডেকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তিনি সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর-কাণ্ডের সময় তিনিই ছিলেন এই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
০২১৬
বর্তমানে সারা দেশের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন সন্দীপ। পাশাপাশি কৌতূহল তৈরি হয়েছে তাঁর পরিচয়, শিক্ষা নিয়েও।
০৩১৬
আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের যাত্রা শুরু হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে। ১৯৮৯ সালে বনগাঁ হাই স্কুল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। ১৯৮৯ সালের উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি ৭৯.৭ শতাংশ নম্বর পেয়ে স্কুলে প্রথম তিন জনের মধ্যে জায়গা করে নেন। এর পরেই ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়ে যান মেধাবী সন্দীপ। ভর্তি হন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজেই।
০৪১৬
১৯৯৪ সালে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন সন্দীপ। প্র্যাকটিসও শুরু করেন। সেখান থেকেই উত্থান। কর্মজীবনে চিকিৎসাক্ষেত্রের বিভিন্ন পদে কর্তব্যরত ছিলেন সন্দীপ।
০৫১৬
তবে ২০২১ সালে আরজি করের অধ্যক্ষ হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে পরিচিতি আরও বাড়ে সন্দীপের। ঘটনাচক্রে যে কলেজ থেকে তিনি ডাক্তারি পড়েন, সেখানকারই অধ্যক্ষ হয়ে যোগ দিয়েছিলেন।
০৬১৬
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যোগ দেওয়ার আগে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে উপাধ্যক্ষ ছিলেন সন্দীপ। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে পদোন্নতির পর আরজি করে আসেন তিনি।
০৭১৬
একজন অর্থোপেডিক সার্জন এবং অধ্যাপক হওয়া সত্ত্বেও, পেশাগত অনিয়মের কারণে খুব একটা সুখ্যাতি প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি সন্দীপ। আর সে কারণেই আরজি করের অধ্যক্ষ হওয়ার পর বিতর্কের মুখে পড়েন তিনি।
০৮১৬
অন্য বিতর্কেও নাম জড়িয়েছিল সন্দীপের। ২০২৩ সালের জুনে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে সন্দীপের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ২০২১ সালের জানুয়ারি মাস থেকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্তে একটি সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ঘটনাচক্রে, এই তিন বছরের বেশির ভাগ সময়ে কলেজের দায়িত্বে ছিলেন সন্দীপই।
০৯১৬
অধ্যক্ষ থাকাকালীন সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ছাড়াও সরকারি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে। কোভিডের সময় অত্যাধুনিক যন্ত্র কিনেছিল আরজি কর হাসপাতাল। খরচ হয়েছিল ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। পরে জানা যায়, এই যন্ত্রের বাজারমূল্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। সন্দীপ ঘোষ নাকি টেন্ডারের ক্ষেত্রেও নিজের প্রভাব খাটিয়েছিলেন।
১০১৬
ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়োগের ক্ষেত্রেও সন্দীপের বিরুদ্ধে উঠেছে স্বজনপোষণের অভিযোগ। অবৈধ ভাবে ইন্টার্ন নিয়োগের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
১১১৬
আরজি কর হাসপাতালের ছাত্রাবাসের র্যাগিং বিতর্কে জড়িয়ে বদলি হয়েছিলেন সন্দীপ। প্রথম বার আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষের চেয়ার থেকে সরিয়ে তাঁকে পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। সে বার তিনি ফিরে এসেছিলেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আবার বদলি। সে বার ফিরতে সময় নিয়েছিলেন ২১ দিন।
১২১৬
এর পর আরজি করের চিকিৎসক খুনের ঘটনা নিয়ে বিক্ষোভ যখন বড় আকার ধারণ করছে, তখন নিজেই পদত্যাগ করেন সন্দীপ। তবে সে দিনই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বও পেয়ে যান। এ নিয়েও কম বিতর্ক হচ্ছে না। যদিও কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ছুটিতে যেতে হয়েছে আরজি করের সদ্যপ্রাক্তন অধ্যক্ষকে।
১৩১৬
আদালতের প্রশ্ন ছিল, কতটা ক্ষমতাবান হলে পদত্যাগের ৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে আবার নিয়োগ দেওয়া হয়! এটা কী ভাবে সম্ভব? প্রধান বিচারপতি টি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সন্দীপ ঘোষকে এখনই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না।
১৪১৬
এর পর থেকেই সন্দীপকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। বুধবারও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
১৫১৬
আরজি করে ডাক্তার ছাত্রীর খুন ও ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন তো আছেই। সেই সঙ্গে হাসপাতালের কর্তাব্যক্তিদের ‘কর্তব্যে গাফিলতি’ এবং তা ‘আড়াল করার চেষ্টা’র অভিযোগ নিয়েও নানা তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ যা বলছেন, তার গরমিল খুঁজে বার করতে পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানোর কথাও ভাবছে সিবিআই। এমনটাই জানা গিয়েছে সূত্র মারফত।
১৬১৬
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সন্দীপের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সরকারি নিষ্ক্রিয়তা এবং ইডি তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাসপাতালেরই এক প্রাক্তন পদাধিকারী। বুধবার বিষয়টিতে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত শুনানির আবেদন করা হয়। প্রধান বিচারপতি সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন।